আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাবিজাবি কথন......

পরাঞ্জয়ী... দেশের বর্তমান সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি যে কোন সচেতন নাগরিককে চিন্তিত করবে। ক্রমাগত নিত্যপন্যের মূল্যবৃদ্ধি, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, শিক্ষাক্ষেত্রে নৈতিকতার স্খলন, হত্যা, ধর্ষণ, প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অসহিষ্ণুতা এসব কিছুই একটি দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়ার উপকরন বৈ কিছুই নয়! প্রথমেই আসে নিত্যপন্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রসংগটি। আমরা প্রায় সকলেই জানি বিশ্ব মন্দার কারনে বিশ্বব্যাপি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমাদের দেশেও তার প্রভাব পড়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু রমজান মাস আসলেই কি বিশ্বব্যাপি মন্দার প্রকোপ বেড়ে যায়, নাকি আমাদের ব্যবসায়ী শ্রেণির নৈতিকতার মন্দা দেখা দেয়? মন্দার প্রভাবে শুরু থেকেই নাস্তানাবুদ মানুষগুলোকে এই অরাজকতার দিকে ঠেলে দেয়া কেন? সরকার কিংবা প্রশাসনের কি কোন দায়ভার নেই? দেশে বর্তমানে প্রায় ২৬লাখ ছেলেমেয়ে বেকার।

যদিও প্রকৃত সংখ্যা এর বেশিই হবে। তাদের কর্মসংস্থান নেই। এমতাবস্থায় একটি অপ্রয়োজনীয় বিমান বন্দরের পেছনে ১২শত কোটি টাকা খরচের ব্যাখ্যাই বা কি? আমি আদার ব্যাপারী তাই বিমান বন্দরের মত জাহাজের খবরের পেছনে দৌড়ানো টা আমার পোষাবে না। ছোট একটা হিসেব দিয়েই বুঝি। ভারতের প্রাক্তন প্রধান ইন্দিরা গান্ধিকে স্বাধিনতা সংগ্রামে অসমান্য অবদানের জন্য ২০০ভরি স্বর্নের পদক দেয়া হবে, যার বাজার মূল্য ১ কোটি টাকা! এই বিলাসিতার জবাবদিহিতা কি? এই এক কোটি টাকা দশ হাজার টাকা মাথাপিছু হারে দিলে ১০০০ ছেলেমেয়ের আত্বকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হত।

যদিও ১০০০০টাকায় এখন কোন কর্মসংস্থানের যোগাড় হয় কি না, তা নিয়ে আমি নিশ্চিত নই। কিংবা এই ১ কোটি টাকায় কতটি ভাসমান পরিবারের পূনর্বাসন সম্ভব সেটা কি কেউ ভেবে দেখেছেন? যে দেশের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে সেই দেশের ক্ষমতায় বসে জনগনের টাকায় বিলাসিতা দেখানোর মত অপরিনামদর্শী কাজটি করবেন না দয়া করে। সর্বোপরি সন্মান দিতে হয় হৃদয় থেকে, রাজকোষ খালি করে না। সম্প্রতি ঢাকার সাভারের আমিনবাজারে ৬ ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কোন কিছুই আর স্বাভাবিক গতিতে চলছে না। গত ২১ জুলাই একুশে টেলিভিশনের একটি টক শো তে একজন আওয়ামিলীগ নেতা সুভাষ সিংহ রায় এই ঘটনার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লিফট ছিড়ে মৃত্যুবরণ করা, বাসা থেকে বাসে উঠে অনিশ্চিত যাত্রা এমনকি সারা বিশ্বে কোন কোন দেশে প্রতি ঘন্টায় বা প্রতি মিনিটে কি পরিমান মানুষ খুন হচ্ছে এসবের পরিসংখ্যান পেশ করলেন।

কিন্তু একসিডেন্টে প্রান হারানো কিংবা উন্নত বিশ্বের হত্যার পরিসংখ্যান এসব কিছুই ৬টি তাজা প্রাণ ঝরে যাওয়ার ব্যাখ্যা হতে পারেনা, কিছুতেই না। আর সারা বিশ্বে খুন, হত্যা, স্কুলে ঢুকে গুলি করে মারার ঘটনা ঘটছে বলেই এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে এটা কেমনতর যুক্তি হতে পারে? যে ঘটনাটি প্রত্যেকটা বিবেকবান মানুষকে নাড়া দিয়েছে তা হল রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের কুখ্যাত ফাঁসির আসামির সাজা মওকুফের ঘটনাটি। কে এই বিপ্লব, কি তার পরিবার তা সবাই জানে। কোন যুক্তিতে তার সাজা মওকুফ হয়? দেশের কোন বিশিষ্ট ব্যক্তি নয় সে যে অনিচ্ছাকৃত খুনটি করে ফেলেছে, সে চায়নি লোকটি মারা যাক, দূর্ঘটনাক্রমে মারা গেছেন। ঘটনাটি কি আদৌ এরকম?মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যদি এমন যুক্তি দেখান বিগত সরকারের আমলেও এমন মওকুফের ঘটনা ঘটেছিল, তবে আপনার ক্যালকুলেশনে একটু ভুল হয়েছে।

যদি মন্দের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হয় তবে জনগন আপনাদের ক্ষমতায় বসালো কেন? কেন ৪দলীয় সরকারকে প্রত্যাখান করলো? কেন এই ট্রান্সফরমেশন? আপনাদের কাছে জনগন বিগত সরকারের অন্যায় অবিচারের ন্যায্য বিচার আশা করেছিল, অন্যায়ের পারপিট্রেটর হওয়ার না! এইখানেই আপনারা ব্যর্থ হলেন! এমন তো না যে, শাসকদলের যে কারও পিতা, পিতা, আর অন্যান্যদের পিতা পিতা না, তালুই! তাই তাদের পিতৃ হত্যার বিচার হবেনা! মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসি বলে দাবি করে যখন নিজেরাই মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করে তখন সত্যিই নির্বাক হয়ে যেতে হয়। মুক্তিযুদ্ধও এখন যেন পরিহাসের বিষয়, যে কেউ যখন তখন সার্টিফিকেটধারী মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাচ্ছে। চারিদিকে নষ্টামি আর ধ্বংসযজ্ঞ! গণতন্ত্রের যে সংজ্ঞা বইয়ে পড়েছি তার ছিটেফোটাও কোথাও দেখিনা। গনতন্ত্রকে এখন সাধারন জনগনের ঠকানোর অস্ত্র মনে হয়। দেশটা কারও স্বামীর সম্পত্তি, কারও পিতার কারও কারও নিজেরই! আমরা আমজনতা হলাম ছাগলের ৬নাম্বার বাচ্চা, যাদের কাজ হল ৫বছর পর পর রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ভোট দেয়া, তারপর তার কুফল ভোগ করা! গনতন্ত্র হল দেশটাকে বাপের জমিদারী ভাববার মডিফাইড মেকানিজম! তবুও স্বপ্ন দেখি, কোন একদিন কোন এক পাণ্জেরী এসে এই দূর্ভাগা দেশটার হাল ধরবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।