আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হুজুরদের হরতাল ও এরশাদ চাচার মিথ্যা কথা বলা

হরতাল ডাকার কারণগুলা হলো_সংবিধানে পুনর্বহাল করা ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, বিসমিল্লাহর বিকৃত অনুবাদ, নারী উন্নয়ন বাতিলসহ বিভিন্ন দাবি। এই দাবিগুলার একটাও কিন্তু অর্থনৈতিক বা দেশের মানুষের চলতি দুর্ভোগের জীবনের সঙ্গে জড়িত নয়। না মানুষের দুর্ভোগের বিষয়গুলো নিয়ে বেশি আন্দোলন-সংগ্রামও করে না বাংলাদেশি হুজুররা! এই সমস্যাগুলা হয় তাদের জীবনে নেই অথবা ইহকালের এ বিষয়গুলো নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করাকে তারা প্রয়োজনীয় মনে করে না! একসময় বাংলার একশ্রেণীর হুজুর 'দোয়াললিন', 'যোয়াললিন' বিতর্ক-দ্বন্দ্ব নিয়েও রায়ট লাগিয়ে দিত! কিন্তু সামাজিক ও রাজনৈতিক অনেক ইসলামবিরোধী ব্যাপারে তাদের সক্রিয় হয়ে উঠতে দেখা যায়নি। বরং গণতান্ত্রিক রাজনীতির বাইরের সামরিক শাসকদের সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক দহরম মহরম হরহামেশা দেখা গেছে। এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হতে পারেন জেনারেল এরশাদ।

এই লোক মসজিদে নামাজ পড়া নিয়েও মিথ্যা বলতেন। বাইরে পাবলিকের অনেক প্রতিবাদ সমস্যার কারণে এরশাদকে কোন মসজিদে কোন শুক্রবারে বক্তৃতা দিতে নেওয়া হবে, তা ঠিক করতেন গোয়েন্দারা। সেভাবে মসজিদগুলোতে আগে থেকে চলত গোয়েন্দা নজরদারি। ইমাম, মসজিদ কমিটির সঙ্গে আগে থেকে কথা বলতেন গোয়েন্দারা। আর এরশাদ মসজিদে দাঁড়িয়ে ঢাউস একটা মিথ্যা বলে ফেলতেন! তিনি বলতেন, এই যে মসজিদটিতে নামাজ পড়তে এসেছেন, তা তিনি আগের রাতে স্বপ্নে দেখেছেন! সেই মসজিদের বা এমন কোনো একটি মসজিদের কোনো একজন ইমাম সাহেব এমন জ্বলজ্যান্ত মিথ্যার প্রতিবাদ করেননি।

একবারও বলেননি, গত কয়েক দিন ধরে যে গোয়েন্দারা মসজিদে আসছিল, সেগুলোও কি স্বপ্নে না বাস্তবে? ইসলামী আইনে নিষিদ্ধ পরনারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে চলতেন এরশাদ। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে করতেন। একজন হুজুর কিন্তু কখনো এর প্রতিবাদ করেনি। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, শামছুর রহমান, হুমায়ুন আজাদের মতো জাতীয় ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে হুজুররা বহু ফতোয়া দিয়েছে। কিন্তু বন্দুকের ডরে এরশাদের কায়কারবারগুলো জেনা কি না তা কখনো বলেনি।

সেই এরশাদ যখন গণআন্দোলনে কাবু, তখন বাঁচার কোনো পথ না পেয়ে বললেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। হুজুররা বলল, আহা! বেশ! বেশ! বেশ! সেই থেকে বহুদিন ধরে বিসমিল্লাহ আর ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম আছে বাংলাদেশের সংবিধানে। কিন্তু জনগণের বেহেশত যাওয়ার কদ্দুর? বা এখন যদি প্রশ্ন রাখা হয়, প্রিয় হুজুরবৃন্দ, আপনারা কী কারণে মনোক্ষুণ্ন? লাস্ট ইলেকশনে বিপুলভাবে জেতার পরও 'আপনাদের' ভয়ে নিজ দলের ভোটার, রাজনৈতিক মিত্র, সংখ্যালঘু ভোটারদের বেজার করে শেখ হাসিনা যা করেছেন, তাতে কি আপনাদের পুরো মনোবল নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার পথ জটিল করে দেওয়ায় আপনারা কি তাঁর ওপর যথেষ্ট অসন্তুষ্ট? যে দুই সাবেক জেনারেলের ক্ষমতা দখলে রাখার রাজনৈতিক ধান্ধাবাজির উদ্দেশে সংবিধানে সনি্নবেশিত বিসমিল্লাহ, আর রাষ্ট্রধর্ম জিন্দা রাখলেন, এতে করে কি বেহেশতে চলে যাবে দেশের মানুষ? না 'ধর্মনিরপেক্ষতা' আর 'সমাজতন্ত্র' নামের আওয়ামী রাজনৈতিক দুটি সংবিধানে পুনঃসংযোজনের কারণে সেকুলার, কমিউনিস্ট দেশ হয়ে যাবে বাংলাদেশ? শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়ার বেশভুষা দেখে না প্রিয় হুজুররা? বিএনপির চেয়ে গোলটুপি কি আওয়ামী লীগের নেতাগুলোর বেশি না? এই আওয়ামী লীগ কি আপনাদের সঙ্গে ফতোয়া চুক্তি করেনি? পত্রিকায় এসেছে খালেদা জিয়ার ছেলে কোকোর বিদেশে টাকা পাচারের মামলাটি আমেরিকা-সিঙ্গাপুর-বাংলাদেশ, তিন দেশে প্রমাণ হওয়াতে বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়েছে বিএনপি। তারেকের বিরুদ্ধেও তেমন একটি মামলা আসছে। বিএনপির প্রতিমন্ত্রী মোশাররফের ঘুষের বিষয়টিও প্রমাণিত কানাডায়।

এসব কারণে বিব্রত বিএনপি কেয়ারটেকার নিয়ে আওয়ামী লীগের একতরফা অবস্থানের পরও তাৎক্ষণিক কর্মসূচি দিতে পারেনি। সে কারণে নিজেদের সি, ডি গ্রুপের মাধ্যমে দিয়েছে ১০ জুলাইয়ের হরতাল! হুজুররা কি তেমন ভাড়াখাটা কেউ। নাউজুবিল্লাহ বলে এর কী প্রতিবাদ করবে হুজুররা? সূত্র ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.