আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারের কর্মকাণ্ড সংকট উত্তরণে সহায়ক নয় এবং বিরোধীদলের অবস্থান।

প্রথমেই বলি, আমি ভালো লেখতে পারি না, তাই বিভিন্ন জনের মতামত রিভিউ করলাম। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে সহিংসতার বিস্তারের পাশাপাশি যেসব ঘটনা ঘটছে এবং সেসব ঘটনার যেসব প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে, সে বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। যুদ্ধাপরাধের বিচার-প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য জামায়াতের সহিংসতায় দেশে এক ভয়াবহ অবস্থার সূচনা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় শক্তি প্রয়োগকে একমাত্র কৌশল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে বলেই মনে হয়। তা পরিস্থিতির উন্নতির সহায়ক হচ্ছে না, বরং ক্ষেত্রবিশেষে অবস্থার অবনতিতেই ভূমিকা রাখছে।

গণজাগরণ মঞ্চের অবস্থান স্পষ্ট করার পরও তাদের ইসলামবিরোধী বলে প্রমাণ করার জন্য জামায়াতের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই চেষ্টায় তারা যে আংশিক হলেও সাফল্য লাভ করছে এবং দেশের ভেতরে একাংশের মধ্যে এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও এই বাস্তবতাকে অস্বীকারের উপায় নেই। ইতিমধ্যে কিছু হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যা উদ্বেগজনক। এর মধ্যে রয়েছে ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার বাদীপক্ষের একজন সাক্ষী এবং গোলাম আযমের মামলার একজন সাক্ষীর ভাই। সাক্ষী এবং সাক্ষীদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে, এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তদের খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে সরকারের জোরদার পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি।

সংশ্লিষ্টদের সাবধানতা অবলম্বন করতে বলাই সরকারের যথাযথ ভূমিকা হতে পারে না। সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে ও মন্দিরে হামলার ঘটনা চলছেই। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা খুবই দুর্বল, ক্ষেত্রবিশেষে প্রশ্নসাপেক্ষ। এই অবস্থা অব্যাহত থাকার কারণে দেশে জরুরি অবস্থা জারির আশঙ্কার বিষয়টি সাধারণভাবে এতটাই আলোচিত হচ্ছে যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে হয়েছে, এ মুহূর্তে জরুরি অবস্থা জারির পরিকল্পনা নেই। ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের পক্ষ থেকে গণজাগরণ মঞ্চের দাবিদাওয়ার সঙ্গে ঐকমত্যের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এই আন্দোলনের মর্মবস্তুর সাফল্যের চেয়ে ক্ষমতাসীন দল নিজের সাফল্য, ভবিষ্যতে নির্বাচনী রাজনীতিতে তার সুবিধার দিকেই বেশি ঝুঁকে পড়ছে। তাদের এসব আচরণ আন্দোলনের জন্য ক্ষতির কারণ হয়েছে এবং হচ্ছে। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দিক থেকে সরকার এমন কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে কিংবা এমন পদক্ষেপ নিতে পিছপা হচ্ছে, যার ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার একদিকে কেবল প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে প্রধান বলে বিবেচনা করছে, অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবে সাধারণ মানুষকে সংশ্লিষ্ট করার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। তা ছাড়া অনেকে এমন প্রশ্নও তুলছেন, সরকার জামায়াত নেতাদের আটক করার ব্যাপারে যতটা সচেষ্ট, তার চেয়ে বেশি সচেষ্ট বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।

সরকার এযাবৎ তার গৃহীত পদক্ষেপগুলো স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে মোটেই সাফল্য অর্জন করেনি। গত চার বছরের অপশাসনের ফলে সরকারি দলের গ্রহণযোগ্যতার যে সংকট, তা এই ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে চোখে পড়ছে। সরকারি দলের জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের নিজ নিজ এলাকার সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রস্তুত করছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন—এ রকম কোনো উদাহরণ আমরা দেখতে পাইনি। সরকারের আচরণ থেকে মনে হয়, তারা আশা করছে যে গণজাগরণ মঞ্চ তাদের হয়ে এই দায়িত্ব পালন করবে। সরকারের হয়ে এই দায়িত্ব নেওয়া গণজাগরণ মঞ্চের কাজ হতে পারে না।

তা নিলে মঞ্চের জাতীয় রূপ তিরোহিত হবে। উদ্বেগের বিষয় হলো, সরকারের এসব কার্যক্রম শেষাবধি গণজাগরণ মঞ্চের ওপর বর্তাবে বলে আমার আশঙ্কা এবং তা লক্ষ্য অর্জনের পথে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি করবে। সরকারের যেসব সাম্প্রতিক কার্যক্রম বর্তমান সংকট উত্তরণে সহায়ক নয়, তার কিছু দিক আইনি, কিছু দিক রাজনৈতিক। গণজাগরণ মঞ্চের দাবি ও দেশব্যাপী সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের প্রেক্ষাপটে সরকার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আইনে যে সংশোধনী আনে, তাতে কয়েকটা বড় ধরনের ফাঁক রয়ে গেছে। এর একটি হলো, যদিও সংশোধিত আইনে সংগঠনকে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত করা যাবে এবং বিচারের সম্মুখীন করা যাবে, কিন্তু তার শাস্তি বিচারক বা আদালত নির্ধারণ করবেন।

ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আপিলের বিধান এবং আপিল ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান করা হয়। এই সংশোধিত রূপের কারণে সরকারের পক্ষ থেকে গত ৩ মার্চ আদালতে আপিল করা হলেও নির্ধারিত ৬০ দিনের মধ্যে আপিলের নিষ্পত্তি হবে বলে মনে হয় না। ৩১ মার্চ শুনানি শুরু হবে। এর অর্থ হলো, পুরো তিন সপ্তাহ পার করে শুনানি শুরু হচ্ছে। তদুপরি আরও বেশ কিছু আইনি বিষয় রয়েছে, যা এই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে পারে।

গত ১১ মার্চ প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক নিবন্ধে মিজানুর রহমান খান ‘নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি আপিল বিভাগ’ শিরোনামের এক নিবন্ধে আলোকপাত করেছেন। বিচার-প্রক্রিয়া কেবল যে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ের মধ্য দিয়েই শেষ হয়ে যাবে, তা নয়। সরকারের পক্ষ থেকে বিচার দ্রুত সম্পাদন করার যে তাগিদ আগেও ছিল না, এখনো নেই, সেটা তাদের কার্যকলাপেই স্পষ্ট। কেননা এই বিচার-প্রক্রিয়া শুরু করতে সরকারের মেয়াদকালের প্রথম ১৫ মাসে যে নষ্ট করা হয়েছে, তার পরিণতি এখন বোঝা যাচ্ছে। এখন এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যে ধরনের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করতে না পারলে বিচার-প্রক্রিয়া নির্বাচনের আগে শেষ হবে না এবং তার পরিণতি হবে এ নিয়ে ক্ষুদ্র দলীয় ও নির্বাচনী রাজনীতি।

জাতীয় দাবিকে দলীয়ভাবে ব্যবহারের কোনো রকম চেষ্টা বুমেরাং হতে পারে। শাহবাগে সূচিত আন্দোলনের একটি প্রধান দাবি হচ্ছে জামায়াতের নিষিদ্ধকরণ। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে কিছু তো বলা হচ্ছেই না, উপরন্তু বিভিন্ন রকম বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। জামায়াতকে নিষিদ্ধ না করার পক্ষে যেসব যুক্তি রয়েছে, সরকার যদি তা সংগত বলে মনে করে, তাহলে তা বলা আবশ্যক। তাতে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হবে বলে যেসব প্রচারণা চলছে, তা সরকার সহজেই মোকাবিলা করতে পারবে।

এই অবস্থান গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে বলে সরকার সুস্পষ্ট অবস্থান নিচ্ছে না বলে অনুমান করা যায়। মনে হয় সরকার এই দাবি থেকে সুবিধা নিতে আগ্রহী, কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কুণ্ঠিত। অন্যদিকে আদালতে ২০০৯ সালের যে রিট আবেদন বিবেচিত হচ্ছে, তাতে যদি জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের পক্ষে রায় দেওয়া হয়, তবে তা সামগ্রিক পরিস্থিতিতে ইতিবাচক ফল দেবে না। নিবন্ধন বাতিলের রায় এ ধারণাই প্রতিষ্ঠা করবে যে দলটি ইসলামপন্থী বলে বাতিল হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে অন্য ইসলামপন্থী দলের জন্য তা হুমকির কারণ। যেসব ইসলামপন্থী দল এখনো জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব রাখছে, তারা তখন অস্তিত্বের তাগিদে জামায়াতের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে।

এ ধরনের পরিস্থিতি না সরকারের অনুকূলে যাবে, না চলমান গণজাগরণকে লাভবান করবে। সামগ্রিকভাবে আরও অস্থিতিশীলতাই তৈরি করবে। প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি যে কেবল তার যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ, তা-ই নয়, জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠন বা আদর্শিক অবস্থান থেকে, যে বিবেচনায়ই হোক না কেন, তারা সহিংসতার রাশ টেনে ধরার বদলে তাতে বিভিন্নভাবে উসকানি দিচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় তাদের দলই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক দিন ধরেই বিএনপির সাংগঠনিক শক্তিতে ধস নেমেছে।

সেটা তাদের জামায়াত-নির্ভরতার কারণ না ফল, বিএনপির নেতারা তা ভেবে দেখেছেন বলে মনে হয় না। কেবল উপর্যুপরি হরতাল দিয়ে, জনগণের জীবনে দুর্ভোগ টেনে এনে তাঁরা জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবেন না। অপরিণামদর্শী পদক্ষেপ ও দায়িত্বহীন বক্তব্যের ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাঁদের প্রাসঙ্গিকতারও অবসান ঘটতে পারে। দেশের এবং দলের স্বার্থে বিএনপির প্রয়োজন নিজেদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে জনগণের মনোভাব উপলব্ধি করা এবং তার সঙ্গে সংগতি রেখে রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ করা। জোটের শরিক হিসেবে জামায়াতের ওপর বিএনপির কোনো প্রভাব থাকলে তা ব্যবহার করে জামায়াতের সহিংস আচরণ বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া বিএনপি নেতাদের কর্তব্য।

অব্যাহত সহিংসতা ও অস্থিতিশীল রাজনীতি দেশ ও রাজনীতির জন্য ক্ষতিকর। তা থেকে স্বল্প মেয়াদেও বিএনপির লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই, দলীয়ভাবে ক্ষতি হলে তা বিএনপিরই হবে বেশি। দেশের রাজনীতি একটা বড় রকমের সংকটের মুখে পড়েছে। সামনের দিনগুলোতে সামগ্রিক পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে যে শঙ্কা-উদ্বেগ বিরাজ করছে, সেটা বলাই বাহুল্য। এই অবস্থায় দেশের সামগ্রিক ভবিষ্যৎকে বিবেচনায় নিয়ে বিরাজমান রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে।

অন্যথায় দেশকে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি মোকাবিলা করতে হতে পারে। ইলিনয়, ১৩ মার্চ ২০১৩ আলী রীয়াজ: যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক। (উৎসঃ Click This Link) ‘গণহত্যার’ জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী, বিচার হবে ট্রাইব্যুনালেঃ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ‘এ গণহত্যার জন্য বর্তমান সরকারের এক নম্বর থেকে যতগুলো আছে, সবাইকে’ বিচারের সম্মুখীন হতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি। পুলিশের অভিযানের সময় তছনছ হওয়া নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘুরে দেখার পর গতকাল বুধবার বিকেলে নেতা-কর্মীদের এক সমাবেশে বক্তৃতাকালে খালেদা জিয়া এ হুঁশিয়ারি জানান।

খালেদা জিয়া বলেন, পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে মানুষ হত্যা করেছে। এ পর্যন্ত ১৭০ জনকে তারা হত্যা করেছে। এ গণহত্যার জন্য তাঁদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। এর জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দায়ী। তিনি কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারেন না।

তিনি বলেন, ‘এই গণহত্যার জন্য আবারও বিচার হবে, ট্রাইব্যুনাল হবে। ’ এর আগে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছান খালেদা জিয়া। এ সময় দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মী মুহুর্মুহু স্লোগান ও করতালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে বেলা তিনটা থেকে নেতা-কর্মীরা নয়াপল্টনে জড়ো হয়ে রাস্তা দখলে নেন। খালেদা জিয়া গত সোমবার রাতে পুলিশের অভিযানের সময় বিএনপির মহাসচিবের কক্ষসহ দলীয় কার্যালয়ের আসবাব তছনছ করার দৃশ্য ঘুরে দেখেন।

অভিযানের সময় পুলিশ বিএনপির নেতাদের গালাগাল, আসবাব তছনছ এবং জরুরি কাগজপত্র, কম্পিউটার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘এ সরকারকে এখন আর সময় দেওয়া যায় না। সরকার একদিকে আমাদের মিছিল-মিটিংয়ে গুলি করছে, অন্যদিকে বিধর্মী নাস্তিকদের পাহারা দিয়ে, খাওয়া-দাওয়া দিয়ে লালন করছে। সরকারের অপকর্ম ঢাকা দেওয়া এবং দুর্নীতি চাপা দিয়ে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর জন্য এ কাজগুলো করছে। ’ শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের প্রতি ইঙ্গিত করে সরকারের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এই যে মঞ্চ-ফঞ্চ বানাচ্ছেন আর পাহারা দিচ্ছেন, এসব বন্ধ করুন।

না হলে জনগণের মঞ্চ যখন তৈরি হবে, তখন আর কেউ আপনাদের বাঁচাতে পারবে না। ’ তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এভাবে কথায় কথায় গুলি চালানো বন্ধ করুন, সরকারের অন্যায় আদেশ মানা বন্ধ করুন। আর যদি এভাবে গুলি চালাতে থাকেন, একদিন আপনাদের অবশ্যই জবাব দিতে হবে। শুধু জবাবদিহি নয়, এই গণহত্যার জন্য আপনাদের বিচার হবে, ট্রাইব্যুনাল হবে। ’ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই একজন রাজাকার।

আওয়ামী লীগেও বহু রাজাকার আছে, তাদের আগে ধরতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরাও যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই। সে বিচার হবে স্বচ্ছ, আন্তর্জাতিক মানের। আমরা ক্ষমতায় গেলে সেই বিচার করব। ’ খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, ‘এখন মানুষের দৃষ্টি ফেরানোর জন্য সরকারের লোকজন সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করছে, তাদের বাড়িঘর ভাঙছে, নির্যাতন করছে।

আমি সরকারকে বলব, সংখ্যালঘুদের হামলা বন্ধ করুন। নইলে এর জন্য আপনাদের শাস্তি পেতে হবে। ’ তিনি সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে আছি, থাকব, সব রকম সহায়তা দেব। ’ বিরোধীদলীয় নেতা সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ সরকারকে অবশ্যই বিদায় হতে হবে। জনগণের আন্দোলন কখনো বৃথা যায়নি, বৃথা যাবে না।

তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এখনো সময় আছে, যদি বোধোদয় হয় তাহলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে পদত্যাগ করুন। নইলে জনগণ বাধ্য হবে জোর করে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করতে। ’ বিএনপির কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে মুক্তি না দিলে ১৮ ও ১৯ মার্চ সারা দেশে সর্বাত্মক হরতাল পালন করার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, এরপর হরতাল, অবরোধসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকাসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দলীয় কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়া ১২ মিনিট বক্তব্য দেন। এরপর তিনি কার্যালয়ে নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে তিনি নয়াপল্টন থেকে গুলশানের কার্যালয়ে যান। (উৎসঃ Click This Link) বর্তমানে যে অবস্থা দাঁড়িয়ে যে তারা নিজেরা কোন সমাধানে যেতে কিংবা এক হয়ে সমাধান খুঁজতে তাদের মানে বাধে। তাঁরা নিজের নেতা ছাড়া আর কারো মতামত নিতে নারাজ।

দুই নেত্রীকে মিজানুর চা-পানের জন্য হলেও একবার বসুন দুই নেত্রীকে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। প্রয়োজনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তাঁদের এক টেবিলে বসানোর উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে মিজানুর রহমান এ অনুরোধ জানান। ড. মিজানুর বলেন, ‘আপনারা অন্তত একবার একসঙ্গে বসুন। কোনো এজেন্ডার প্রয়োজন নেই।

শুধু চা-পানের জন্যই বসুন। আপনাদের মুখ দেখাদেখি হোক, কুশলবিনিময় হোক। সমগ্র জাতিকে আপনারা মুক্তির পথ দেখাতে পারেন। জনগণের কল্যাণই যদি আপনাদের লক্ষ্য হয়, তাহলে সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে। ’ এ ছাড়া মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান সাম্প্রতিক সহিংসতায় যেসব সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর নির্যাতন হয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়াতে সরকারে প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা ধর্মের অপব্যবহার করে, তারা আমাদের শান্তির ধর্ম ইসলামকে নিয়ে কটূক্তি করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে। ’ একই সঙ্গে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো নিয়ে যারা অপপ্রচার চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। (উৎসঃ Click This Link) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.