আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আষাঢ়ের এই ঝুম বৃষ্টিতে

ব্যস্ত শহরে বৃষ্টি দেখার সময় কই? তবুও বৃষ্টি দেখি। চলতি পথে, অফিসের ব্যস্ততায় যখন রেইন কোটটা পরে পেছনে ল্যাপটপটা রেখে পঞ্চাশের গতিতে মোটর সাইকেল চালায় ভর বৃষ্টিতে, মনটা আপনা আপনি চলে যায় পেছনে। সেই গ্রামে। ঝিনাইদহে, শৈলকুপায়, হাবিবপুরের মেঠোপথে। যে বৃষ্টির দিন আম-বাগানে কাদায় ফুটবল খেলা, ইচ্ছে করে গায়ে কাদা মাখা, জিকে ক্যানালে ভর বৃষ্টির মধ্যে গোসল।

বৃষ্টির ফোটা যেন জুই ফুলের মতো সাদা পানির ওপর পড়ে। গরুর পাল নিয়ে রাখাল ছুটে যায় বাড়ির পথে, মাথায় ঘাসের আটি, ধান, আরও কত কি? কাচি হাতে, মাথাল মাথায় আবার গায়ে সারের বস্তার ভেতরের সাদা র্র্যাপার জড়ানো... কত সব ছবি। আমি সেগুলো মনের পর্দায় দেখি। আমার লাল চকচকে স্পিলিন্ডার প্লাস হোন্ডাটা ততক্ষণে বাংলা মোটর, রূপসী বাংলা হোটেল, শাহবাগ মোড় পার হয়ে ছুটে চলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে। গায়ে ফুটছে তীরের বেগে বৃষ্টির ফোটা।

তাতে কি? আমি তো আর টিএসসির সামনের মোড়ের ওই টোকাই ছেলে দুটোর মতো টায়ার নিয়ে বৃষ্টির পানিতে রাস্তায় খালি গায়ে খেলতে পারব না। পারব না দোয়েল চত্বর কিংবা কার্জন হলের সামনের কদম ফুল নিয়ে হেটে যাওয়া যুগলদের মতো কোথাও যেতে, কোথাও বসতে। হাতে যে অনেক কাজ। অ্যাসাইনমেন্ট। রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

আমার লেখা রিপোর্ট কালকের কাগজে পড়ার জন্য হয়তো তাকিয়ে আছে অগণিত প্রথম আলোর পাঠক। জানিনা কেন এসব ভাবছি। কিন্তু বৃষ্টি যে আমাকে সত্যি নস্টালজিক করে তুলেছে এতে সন্দেহ নেই। আমার মোটর বাইক এখন ছুটে চলছে সচিবালয়ের সামনে দিয়ে। রাস্তায় গাড়ি খুব কম।

দু একটা প্রাইভেট কার ভোশ করে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। ছিটিয়ে দিয়ে যাচ্ছে এক পশলা বৃষ্টির পানি। এই বৃষ্টির দিনে কার কি ভালো লাগে জানি না। আমার খুব ইচ্ছা করে ওই দুষ্টু ছেলেদের মতো দাপাদাপি করতে। রাস্তায় খেলতে ভর বৃষ্টিতে।

কিন্তু আমি, আমরা যারা ব্যস্ত নাগরিক জীবনের ইট কাঠে অভ্যস্ত তারা কি এই বৃষ্টিতে নস্টালজিক হওয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারি? তাইতো বৃষ্টিতে ভিজতে না পারি, রেইন কোট পরে ভর বৃষ্টিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে মনের ভেতরের না পাওয়ার হাহাকারটা ঠান্ডা করার চেষ্টা করি। আপনিও কি তাই করেন? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।