আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নামবে কনোকোফিলিপস

আমি বেশ চুপচাপ!! বহুজাতিক কোম্পানি কনোকোফিলিপস এর দাবি মেনে চুড়ান্ত পিএসসি (উৎপাদন বন্টন চুক্তি) স্বাক্ষরের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সোমবার অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির এক বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাটারো হবে তিনি অনুমোদন দিলে গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে যক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কোম্পানি কনোকোফিলিপস এর সঙ্গে চুড়ান্ত পিএসসি স্বাক্ষর করবে পেট্রোবাংলা। পেট্রোবাংলার সূত্রে জানা গেছে, গত বছর শেষের দিকে কনোকোফিলিস এর সঙ্গে একটি খসড়া পিএসসি অনুস্বাক্ষরিত হয়। এরপর এ খসড়া পিএসসি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগে প্রেরণ করে জ্বালানি বিভাগ।

আইন মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ২৭ মার্চ চুড়ান্ত মতামত প্রদান করে। তবে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত অনুযায়ী পিএসসিতে কিছু শব্দের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে কনোকোফিলিপস এর আপত্তি রয়েছে। কনোকোর দাবি মেনেই জ্বালানী মন্ত্রণালয় পিএসসি স্বাক্ষরের অনুমোদন দিয়েছে। পিএসসি বাতিল করার বিধান সম্বলিত অনুচ্ছেদ (২৮.১-খ) উল্লেখ রয়েছে অনুচ্ছেদ-৬ (সর্বনিম্ন অনুসন্ধান কার্যক্রম সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা)-এর কোনো শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ চাইলে চুক্তি বাতিল করতে পারবে। আইন মন্ত্রণালয় অনুচ্ছেদ ৬ এর সঙ্গে অনুচ্ছেদ ১০(কন্ট্রাক্টরের বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত) শব্দটি যুক্ত করতে বলেছে।

কিন্তু কনোকো এতে অস্মতি জানিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে জ্বালানী বিভাগ মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রেরিত সারসংক্ষেপে জানিয়েছে, শুধু মাত্র বড় বড় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য পিএসসি বাতিল করা যেতে পারে, যা অনুচ্ছেদ-৬ এ বর্ণিত আছে। এজন্য অনুচ্ছেদ ১০-এর বাধ্যবাধকতা আরোপের প্রয়োজন নেই। এযাবৎকাল স্বাক্ষরিত পিএসসিতে অনুচ্ছেদ-৬ এর শর্তগুলো না মানলে ‘পিএসসি’ বাতিল করা যাবে বিষয়টি উল্লেখ আছে। অনুচ্ছেদ ১০ এর কথা বলা নেই।

তাই এটি অন্তুর্ভূক্ত না করলেও চলে। আর এটি করা হলে কনোকোফিলিস এর সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হবে। কিন্তু পেট্রোবাংলার প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক কর্মকর্তারা বলছের, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত অনুযায়ী অনুচ্ছেদ ১০ শব্দটি সংযুক্ত করলে কন্ট্রাক্টর কোম্পানি অনুচ্ছেদ ১০-এ তার জন্য নির্ধারিত বাধ্যবাধকতা মানতে বাধ্য হবে। এর ব্যতিক্রম হলে বাংলাদেশ চাইলে চুক্তি বাতিল করতে পারবে। কিন্তু জ্বালানি বিভাগ অনুচ্ছেদ ১০ প্রয়োজন নেই বলে যে কথা বলেছে তা দেশের স্বার্থের পরিপন্থি।

কারণ চুক্তিবদ্ধ কোম্পানিকে তার জন্য নির্ধারিত বাধ্যবাধকতা মানতেই হবে। না হলে দেশের স্বার্থেই তার সাথে সম্পাদিত পিএসসি বাতিল করতে হবে। তাই আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ অনুযায়ী উল্লেখিত শব্দ অবশ্যই যুক্ত করা উচিত বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তারা। এদিকে মডেল পিএসসি ২০০৮-এ অনুচ্ছেদ ১০(২৭) এ ইনইফিসিয়েন্ট (অদক্ষ) শব্দের উল্লেখ থাকায় অনুসম্পাদিত পিএসসির একই ধারায় শব্দটি সংযোজনের পরামর্শ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। ।

কিন্তু কনোকো ইনইফিসিয়েন্ট শব্দটি বহাল রেখে পিএসসি স্বাক্ষরে অসম্মতি জানিয়েছে। এক্ষেত্রে জ্বালানী বিভাগ আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে শব্দটির বদলে কেয়ারলেস (অসতর্ক) বা নেগলেক্ট (অবহেলা) শব্দ প্রয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে । তাদের মতে এ দুটি শব্দের মাধ্যমে ইনইফিসিয়েন্ট শব্দটির উদ্দেশ্য সাধন হবে। জ্বালানী বিভাগ বলছে, ইনইফিসিয়েন্ট শব্দের কোন গ্রহনযোগ্য সংজ্ঞা পেট্রোলিয়াম সেক্টারে নেই। এছাড়া এক একটি কোম্পানির দক্ষতা একেক রকম।

বলছেন, অসতর্ক ও অবহেলা আর অদক্ষতা এক নয়। অদক্ষতার জায়গায় অসতর্ক ও অবহেলা যোগ করলে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি লাভবান হবে। কারণ ওই কোম্পানির অদক্ষতায় গ্যাস ক্ষেত্রের ক্ষতি হলে, কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশ ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবে না। শুধু অবহেলা আর অসতর্কতার জন্য দায়ী থাকবে। তবে গ্যাস অনুসন্ধানের সময় উদ্ভুত কোন বিরোধের কারণে অনুসন্ধান বন্ধ হয়ে গেলে অনুসন্ধানকারী কোম্পানি কোন ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবে না।

আইন মন্ত্রণালয় বিষয়টিকে পিএসসির ৬.১৩ এবং ৮.১৩ ধারায় সংযোজন করার পরামর্শ দিয়েছে। আর কনোকো এতে সম্মত আছে বলে জানিয়েছে। । অফশোর ‘বিডিং রাউন্ড ২০০৮’ এ দেশের সমুদ্র এলাকায় তেল গ্যাস অনুসন্ধান এবং উত্তোলনের জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ এ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে সাতটি আন্তর্জাতিক তেল গ্যাস কোম্পানি ১৫ টি ব্লকের জন্য দরপত্র আহ্বান করে।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কনোকো ফিলিপস এর সঙ্গে ১০,১১, ১৫, ১৬, ২৯,২১, ১২ এবং ১৭ মোট আটটি ব্লকের জন্য চারটি পিএসসি স্বাক্ষরের সুপারিশ করে। পরের বছর ২৪ আগষ্ট অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ১০ এবং ১১ নম্বর ব্লকের জন্য পিএসসি স্বাক্ষরের অনুমোদন দেয়। তবে এরমধ্যে ১০ ব্লকে ৩০ ভাগ এবং ১১ ব্লকে ১৫ ভাগ এলাকা নিজেদের দাবি করে মায়ানমার এবং ভারত চুক্তির বিষয়ে আপত্তি জানায়। এজন্য দুটি ব্লকের বিরোধপূর্ন এলাকা বাদ দিয়ে চুক্তি করার অনুমোদন দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। বিরোধ মিমাংসা হওয়ার পর ওই এলাকাও কনোকোকে দেয়ার বিষয়ে একটি সাইড লেটার এগরিমেন্ট (এসএলএ) করে মূল পিএসসিতে সংযোজন করার সুপারিশ করা হয়।

এসএলএ করার ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন নেয়া প্রয়োজন বলে মতামত দিয়েছে। পেট্রোবাংলা বলছে, এসএলএ করার ক্ষেত্রে কনোকো ফিলিপস সম্মত আছে। এ বিষেয়ে কোন সমস্যা হবে না। সূত্র - Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।