আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্পেনে ইসলাম( Islam in Spain)

প্রবাসী স্পেনে ইসলাম। পর্ব-১ ইসলাম ধর্মের প্রবর্তন হয় আরব উপদ্বীপে। অতঃপর তা বিস্তার লাভ করে এক বিশাল সাম্রাজ্যে। হযরত মোহাম্মদ(সা মারা যান ৬৩২ খৃষ্টাব্দে। তার মৃত্যুর পর রশিদুন বা সর্বজন স্বীকৃত খলিফাদের রাজত্বকালে এবং উম্মাইয়া খলিফাদের নেত্তৃত্বে ইউরোপের স্পেন থেকে শুর করে চীনের সীমানা , ভারতবর্ষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয় এক বিশাল সাম্রাজ্য।

সপ্তম শতাব্দীতে শুরু হওয়া ইসলামিক সাম্রাজ্য টিকে ছিল ১৬শ’ শতাব্দী পর্যন্ত। কিভাবে এত বড় সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন এবং বিস্তার হল আর কেনই বা পতন ঘটলো তা এক বিস্ময়। Monoatehism বা একশ্বরবাদী তিন প্রধান ধর্ম হল খৃষ্টান, ইসলাম এবং ইহুদী। কোরানে খৃষ্টান এবং ইহুদিদের উল্ল্যেখ আছে “Religion of the book” হিসেবে। ।

ইহুদী এবং খৃষ্টানদের দের নবীদেরকেও স্বীকার করা আছে। ৭১১ খৃষ্টাব্দ থেকে ১৪৯২ বছর এই সুদীর্ঘ ৭৮১ বছর স্পেন ছিল মুসলমান শাসনাধীন, সে সময় শিক্ষা সংস্কৃতিতেও স্পেন ছিল প্রথম সারিতে। কিভাবে স্পেন মুসলিম শাসনাধীন হল এবং কেনই বা তা বিলুপ্ত হল? খৃষ্টিয় সপ্তম শতাব্দীতে আরব উপদ্বীপে ইসলামের শুরু। ইসলাম শব্দের অর্থ হল “আত্মসমর্পন” , যে ব্যাক্তি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পন করবে সেই হল ইসলামের অনুসারি মুসলমান। যীশু খৃষ্টের অনুসারীরা যেমন খৃষ্টান একই ভাবে মুসলিমদের মোহাম্মদের অনুসারী বা মোহামেডান বলা হলেও তা মুসলমানদের কাছে গ্রহনযোগ্য নয়।

। আজ ইসলাম পৃথিবীর দ্বিতিয় বৃহত্তম ধর্ম। সাম্প্রতিক হিসেব অনুযায়ী ১৫৭ কোটি মানুষ বা পৃথিবীর ২৫% লোক ইসলামের অনুসারী, দ্রুত তা বাড়ছে,। মুসলিম জন সংখ্যা বৃদ্ধির হার,বৃহত্তম ধর্ম খ্রিস্টানদের চেয়ে বেশী এবং কিছুদিন পর ইসলাম হবে বৃহত্তম ধর্ম। ইসলাম আগমনের সময় আরব উপদ্বীপ এবং পার্শবর্তী এলাকা গুলোর রাজনৈতিক অবস্থা কি ছিল তা বুঝে নেওয়া গুরুত্বপুর্ন।

ভুমিকাঃ- রোম ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য;- খৃস্ট পুর্ব ৬ষ্ট শতাব্দী থেকে ইউরোপে রোম সাম্রাজ্য ছিল সবেচে' শক্তিশালী। প্রথমে রাজতন্ত্র থাকলেও তা ৫০০ খৃষ্ট পুর্বাইব্দে এসে হয় রিপাবলিক বা প্রজাতন্ত্র। ৩য় খ্রিষ্ট পুর্বাব্দে রোম সাম্রাজ্য পুনিক (Punic war) যুদ্ধে কার্থেজ সাম্রাজ্যকে পরাজিত করে দখল করে নেয় ফলে, স্পেন, উত্তর আফ্রিকা, মিশর এশিয়া মাইনর এই বিস্তৃত এলাকা জুড়ে রোম সাম্রাজ্য স্থাপিত হয়। ৩য় খৃষ্টাব্দে এসে রোম সাম্রাজ্যে বিশৃংখলা শুরু হয়। সম্রাট কনস্ট্যানটাইন খৃষ্ট ধর্ম গ্রহন করেন এবং খৃষ্ট ধর্ম প্রসারে উদ্যগ নেন।

তিনি ৩৩০ খৃষ্টাব্দে পুরান গ্রীক নগরী বাইজেনটাইন এর স্থলে কনস্ট্যান্টিনোপল স্থাপন করেন এবং তা হয় রোম সাম্রাজ্যের রাজধানী। সম্রাট থিওডিসিয়াস (৩৭৯-৩৯৫) খৃষ্টান ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষনা করেন। তার ছেলে হনরিয়াসকে পশ্চিমের সাম্রাজ্য এবং আরেক ছেলে আরকেডিয়াসকে পুর্বের সাম্রাজ্য ভাগ করে দেন। তখন থেকে দুই সাম্রাজ্য আলাদা ভাবে শাসিত হতে থাকে। ৫ম শতাব্দিতে পশ্চিমের সাম্রাজ্যের জার্মানদের হাতে পতন ঘটে।

পুর্বের সাম্রাজ্য আলাদা ভাবে শাসিত হতে থাকে। পুর্বের সাম্রাজ্য বাইজেন্টাইন সম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত হতে থাকে। বাইজেন্টাইন সম্রাট জাস্তিনিয়ান (৫২৭-৫৬৫), ভিসিগথদের কাছ থেক ইটালী ভুমধ্য সাগরিয় অঞ্চল উত্তর আফ্রিকা স্পেন বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধিনে আনেন। ৪৫১ খৃষ্টাব্দে ৫টি এলাকাতে বিভক্ত হয় খৃষ্টান প্রধান রোম সাম্রাজ্য, রোম, কন্সটয়ান্টিনোপল, জেরুজালেম, আন্টিওচ, এবং আলেকজান্দ্রিয়া। এর মধ্যে শেষ তিনটি এলাকা ৭ম শতাব্দীতে মুসলিমদের পদানত হয়।

পশ্চিমের শেষ রোমান সম্রাট ৪৬১ সালে বহিস্কৃত হন। পুর্বের সাম্রাজ্য টিকে থাকে এবং ১০৫৪ সালে আবার তা পশ্চিমের রোম কেন্দ্রিক “ক্যাথলিক রোমান” এবং পুর্বের “অর্থোডক্স ইস্ট” এ বিভক্ত হয়ে পড়ে। ইরানের সাসানিদ সাম্রাজ্যের সাথে বাইজেন্টাইন সাম্রজ্যের যে সঙ্ঘাত ছিল আগে থেকেই তা বিস্ত্রিতি লাভ করে ৬১০ সালে , যে বছর হজরত মোহাম্মদের নবুয়ত প্রাপ্তি ঘটে। আরব, বাইজেন্টাইন এবং ফার্সী সাম্রাজ্য যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং ৩০ বছরের মধ্যে আরবেরা সম্পুর্ন ফার্সী সাম্রাজ্য এবং বাইজেন্টাইন সামরাজ্যের উত্তর আফ্রিকা এবং মেসপটেমিয়ার উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে নেয়। মুসলিম এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সঙ্ঘাত চলতে থাকে এবং অবশেষে ১৪৫৯ খৃস্টাব্দে কনস্ট্যান্টিনোপল মুসলিমদের অধিকারে আসে।

পারস্য সাম্রাজ্যঃ-৯ম খৃঃপুর্বাব্দ মেদ এবং ৮ম শতাব্দীতে পারসিরা এখনকার ইরানে আলাদা ভাবে সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। মেদরা পশ্চিমের এসিরিয় সভ্যতাকে পরাস্ত করে তা নিজেদের সাম্রাজ্যের অধীনে নিয়ে আসে। পারসী সম্রাট সাইরাস মেদ দের পরজিত করেন এবং ব্যাবিলন দখল করেন। সাইরাসের বিজয়ের ফলে পরব্ররতীতে জন্ম নেয় ফ্ররসী আকামেনিদ সাম্রাজ্য যা টিকে থাকে খৃঃপুঃ ২য় শতাব্দী পর্যন্ত। েই সময় আকামেনিদ স্মারাজ্যের বিস্তার ছিল পুর্ব দিকে আজকের আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পর্বত থেকে তুরস্ক পর্যন্ত।

খৃঃপুঃ ৪র্থ শতাব্দীতে মেসোপটেমিয়া শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং ৩৩০ খৃঃপুঃতে আলেকজ়ান্ডার পার্সিপোলিস অধিকার করে আকামেনিদ সাম্রাজ্যের পতন ঘটান। ২২৪ খৃষ্টাব্দে ইরানের ফার্স প্রদেশের গভর্নর ্বিস্তির্ন এলাকা দখল করে সাসানিদ সাম্রাজ্যের গোড়া পত্তন করেন এবং আরদশির -১ নাম গ্রহন করেন। সাআনিদ সাম্রাজ্য টিকে থাকে প্রায় ৪০০ বছর আরব্দের হাতে পতন পর্যন্ত। সাসানিদ দের ধর্ম ছিল ‘জোরোএস্ট্রিয়ানিজম” সাসানিদ দের সাথে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের বিবাদ লেগেই ছিল। সাসানিদ সম্রাট খসরু-২ বাইজেন্টাইন্দের কাছ থেকে জেরুজালেম এবং আলেকজান্দ্রিয়া দখল করে নেন এবং কনস্ট্যান্টিনোপল অবরোধ করে রাখেন।

বাইজেন্টাইনরা ককেসাস পর্বতমালার মধ্য দিয়ে উত্তর দিক থেকে সাসানিদ সাম্রাজ্য দখল করে নেয় এবং খসরু-২ কে হত্যা করে। ইসলামের পর আরবেরা সাসানিদ সাম্রাজ্য দখল করে নেয় এবং ইরান মুসলিম অধিকারে আসে। আরবঃ- পুর্বের পারস্য উপসাগর ,পশ্চিমের লোহিত সাগর এবং উত্তরের সিরিয়া ও মেসোপটেমিয়া। এর মধ্যবর্তী স্থান হল আরব উপদ্বীপ। আরবেরা ছিল যাযাবর শ্রেনীর।

শুস্ক অনুর্বর মরুভুমিতে তারা পশুর পাল নিয়ে ঘুরে বেড়াত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। ছিল বিভিন্ন গোত্র। ৫ম শতাব্দীতে আরবের মক্কা নগরীতে স্থায়ী বসতি গড়ে ওঠে। মক্কাতে ঐ সময়ে প্রভাবশালী ছিল কুরাইশ গোত্র। এই কুরাইশ বংশে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে হযরত মোহাম্মাদের(সা জন্ম।

জন্মের আগে তার বাবা মারা যান। ৬ বছর বয়স পর্যন্ত দাদার কাছে বড় হন তারপর চাচা আব্দুল মোতালেবের কাছে। আরবেরা ছিল বহু দেব দেবীতে বিশাসী। এদের মধ্যে শ্রেষ্ট বিবেচিত হত “আল-ইলিয়া” দেবতা। “আল্লাহ” শব্দটির উতপত্তি এখান থেকেই।

মোহাম্মদ (সা৪০ বৎসর বয়স থেকে শুরু করে জিব্রাইলের মাধ্যমে আল্লহর বানী লাভ করতে শুরু করেন যা হল কুরান যার আক্ষরিক অর্থ হল “পুনরাবৃত্তি”হযরত মোহাম্মদের(সা উত্তরাধিকার ছিল না এবং কাউকে উত্তরাধিকারী নির্বাচন করে যান নি। হযরত মহাম্মদে(সার মৃত্যুর পর পতিষ্ঠিত হয় পর চার খিলাফত বা রাজনৈতিক উত্তরসুরী ১) খোলাফায়ে রাশেদিন, ২) উম্মাইয়া খিলাফত,৩)আব্বাসীয় খিলাফত ৪) অটোমান তুর্ক খিলাফত। ক্ষমতা গ্রহনকারী দের মধ্যে চার জনকে প্রকৃত খলিফা বা রাশিদুন বলা হয়,তার পরের খলিফারা সর্বজন স্বীকৃত নন। খলিফা এবং খিলাফতকালঃ- আবু বক্কর(৬৩২-৬৩৪)(রা হন প্রথম খলিফা বা রাজনৈতিক উত্তরসুরী । আবু বক্কর ছিলেন মোহাম্মদের(সা প্রিয় স্ত্রী আয়েশার বাবা বা শ্বশুর।

ওমর বিন খাত্তাব(রা (৬৩৪-৬৪৪) ২য় খলিফা ছিলেন। ওমর ছিলেন মোহাম্মদের(সা স্ত্রী হাফসা’র বাবা অর্থাৎ ওমর ও হযরত মোহাম্মদের(সা শ্বশুর ছিলেন। ৩য় খলিফা উসমান(রা (৬৪৪-৬৫৫) ছিলেন মোহাম্মদের(সা জামাতা, তার ৮ জন স্ত্রীর মধ্যে দুই জন(রুকাইয়া এবং জয়নব) ছিলেন মোহাম্মদ (সাকন্যা । এর পর মোহাম্মদের(সা চাচাত ভাই আব্দুল মোতালেবের পুত্র আলী ছিলেন ৪র্থ খলিফা (৬৫৬-৬৬১).আলী(রা রাজধানী মদিনা থেকে কুফা তে স্থানান্তর করেন। হযরত আলীর সাথে মোহাম্মদ স্ত্রী আয়েশার বিরোধ শুরু হয় এবং মুসলমানদের নিজদের মধ্যেকার বসরার যুদ্ধ কে বলা হয় প্রথম ফিতনা।

খলিফা দের মধ্যে একমাত্র আবু বক্কর স্বাভাবিক মৃত্যুবরন করেন এবং অনান্যেরা আততায়ীর হাতে নিহত হন। হযরত আলীর(রা মৃত্যুর পর এবং কারবালার যুদ্ধে ইমাম হোসেনের মৃত্যুর পর একচ্ছত্র ভাবে ইসলামের দ্বিতীয় খিলাফত “ উম্মাইয়া খিলাফত” প্রতিষ্ঠিত হয়। উম্মাইয়া খিলাফতের রাজধানী ছিল দামেস্ক এবং মুয়াবিয়া কে প্রথম খলিফা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মুয়াবিয়ায় পুত্র ইয়াজিদ কারবালার যুদ্ধে আলীর পুত্র হোসেনকে নির্মম ভাবে হত্যা করেন। উম্মাইয়া এবং হযরত মোহাম্মদের ছিলেন একই পুর্ব পুরুষের অধস্তনঃ।

কুরাইশদের বানু হাশিম এবং বানু উম্মাইয়া উপগোত্র এই ছিল দুই ভিন্ন উপগোত্র এবং একে অপরের ঘোর শত্রু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। মক্কার আব্দ মানাফ ইবনে কুশাই এর পুত্র হাশিম, এবং অপর পুত্র আব্দ শামস, হাশিমের থেকে বানু হাশিম এবং আব্দ শামসের পুত্র উমাইয়া থেকে উমাইয়া উপগোত্র। হযরত মোহাম্মদ (সাছিলেন বানু হাসিম উপগোত্রের। বদরের যুদ্ধে মক্কার সেনাবাহিনী পরাজিত হলে কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান অহুদের যুদ্ধে মুসলিম সেনাবাহিনীকে পর্যুদস্ত করেন মোহাম্মদ (সানিজেও আহত হন। আবু সুফিয়ান পুত্র ছিলেন মাবিয়া।

৩য় খলিফা উসমান ছিলেন উমাইয়া গোত্রের। মুসলিম বাহিনী মক্কা দখল করার পর আবু সুফিয়ান ইসলাম গ্রহন করেন , কিন্তু সেই গোত্র উপগোত্র দ্বন্দ শেষ হয় নি। মুয়াবিয়া-১, ৬৬১ থেকে ৬৮০ সাল পর্যন্ত খলিফা ছিলেন। তিনি এক সুসজ্জিত সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন এবং তিন বৎসর যাবত কনস্ট্যান্টিনোপল অবোরোধ করেন(৬৭৪-৬৭৭)কনস্ট্যান্টিনোপল দখল করতে ব্যার্থ হলেও মোয়াবিয়ার শক্তিশালী সেনা বাহিনী পুর্ব দিকে খোরাসান থেকে পশ্চীমে উত্তর আফ্রিকার অনেক এলাকা দখল করেন। মুয়াবিয়া পুত্র এজিদ স্বল্পকালের জন্য খলিফা ছিলেন।

এরপর খলিফা ছিলেন আব্দ-আল মালিক। মালিক পুত্র ওয়ালিদ এবং সুলাইমানের সময় মুসলিম সাম্রাজ্য স্পেন হয়ে ইউরোপে বিস্তারলাভ করে। উম্মাইয়া খিলাফতের আমলে মুসলিম সাম্রাজ্য ছিল সর্বোচ্চ ১ কোটি ৩০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে যা আংশিক বা সম্পুর্নভাবে এখনকার ৪১টি দেশ ব্যাপী এলাকা। এটি ছিল পৃথিবীতে পঞ্চম বৃহত্তম সাম্রাজ্য। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।