আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গোলাম মাওলা রনি-লঘু পাপে গুরু দন্ড

লেখিতে এবং পড়িতে ভালবাসি।

গোলাম মাওলা রনি, পটুয়াখালী-৩ আসনের মাননীয় সাংসদ। বর্তমান সময়ের সব চেয়ে আলোচিত ব্যক্তি। আওয়ামী অপরাজনীতির বলীর পাঠা। গোলাপ মাওলা রনির গ্রেফতারে যারা উচ্ছ্বসিত, যারা মনে করেন আইনের শাষন প্রতিস্ঠিত হয়ে গেছে, যারা মনে করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে দলীয় বিবেচনা করে না, তাদের জ্ঞাতার্থে আমার ছোট্ট নিবেদন।

গোলাম মাওলা রনি অবশ্যই অন্যায় করেছেন, গর্হিত কাজ করেছেন, সম্মানিত সাংবাদিকদের উপর হাত তুলে সাংসদ হিসেবে সমস্ত সাংসদদের অপমানিত করেছে। সাংবাদিক সমাজের উপর আঘাত করে নিরপেক্ষ সাংবাদিকদের টুটি চেপে ধরার মত গুরু পাপ করেছেন। মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে জনগণের সাংবিধানিক অধিকারকে অবজ্ঞা করেছেন। এই অপরাধের জন্য অবশ্যই তাঁর সাজা হওয়া উচিত। বিগত চার বছর ধরে টিভি টক শো গুলোতে নিয়মিত আলোচক হিসেবে গোলাম মাওলা রনির প্রানবন্ত উপস্থিতি ছিল।

কখনো কখনো নিজ দলের কর্মকান্ডের কঠোর সমালোচনা করেছেন, আবুল হোসেনের দৌড় প্রতিযোগিতা এবং অতপর মন্ত্রীবনে যাওয়ার তত্ত্বের উদ্ভাবক। শেয়ার কেলেংকারীর কঠোর সমালোচক। পদ্মা সেতু কেলেংকারীর বিরুদ্ধে ছিল তাঁর কঠোর অবস্থান। মাঝে মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেফাঁস কথারও প্রকাশ্যে নির্ভয়ে সমালোচনা করেছেন। তাঁর আলোচনার ধরন এবং তথ্য উপাত্তের শক্ত অবস্থান দেখে সাধারন মানুষ তাঁকে একজন সৎ, নিষ্ঠাবান এবং নীতিবান বলেই মনে করেন।

সেই দিন টিভি ফুটেজে তাঁর আক্রমণাত্বক আচরণ দেখে সবাই নির্বাক হয়েছে এবং তাঁর সততা, নিষ্ঠাবান ও নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আসলে প্রকৃত ঘটনার আড়ালে কী ছিল সেটা সাধারণ মানুষের কাছে অজানা, আমাদের কাছেও অজানা। আমরা খোলা চোখে সাদা মনে যা দেখেছি, এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পড়ে যা জেনেছি তাতে সাংসদ গোলাম মাওলা রনি পুরোই দোষী। এই ঘটনার জন্য তাঁর প্রাপ্য সাজাটুকু পাওয়া উচিত বলেই আমি মনে করি এবং সবাই তাই মনে করে বলে আমার বিশ্বাস। এখন কথা হলো আওয়ামী লীগের সাড়ে চার বছরের শাসনামলে গোলাম মাওলা রনির ঘটনাই কি একক এবং একমাত্র ঘটনা?? যার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এর বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করে উদাহরণ তৈরি করার চেষ্টা করছেন? মানুষের কাছে নিরপেক্ষতা প্রমানের চেষ্টা করছেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে ক্রেডিট নিতে চান।

নাকি সামনে নির্বাচনকে সামনে রেখে গোলাম মাওলা রনিকে বলির পাঠা বানাতে চান? গোলাম মাওলা রনির কাতাঁরে বিগত সাড়ে চার বছর যারা ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি ব্যবস্থা নিয়েছিলেন? চলুন সেদিকে একটু চোখ বুলাই- প্রথম ঘটনা: "জনতাকে লক্ষ্য করে আওয়ামী লীগ এমপি গিয়াস উদ্দিনের গুলি" বিক্ষুব্ধ দলীয় সমর্থক ও এলাকাবাসী ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের সাংসদের গাড়ি ভাংচুর করলে এমপি ক্যাপ্টেন (অব.) গিয়াস উদ্দিন তাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেন। (সূত্র: http://forum.projanmo.com/topic36207.html) ধরে নিলাম জনগণ গাড়ী ভাবগচুর করে অন্যায় করেছেন, তাই বলে সাংসদ মানুষকে লক্ষ্য করে পিস্তল থেকে গুলি ছুড়বেন? আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেদিন কোথায় ছিলেন, নিউজটি কি পড়েন নি? আর আমাদের আজকের সাংবাদিক সমাজ সেদিন কি সাংসদের গ্রেফতারের দাবী তুলে মানববন্ধন করে ছিলেন? নাকি শুধু নিজের উপর হামলা এলেই আন্দোলন, মানববন্ধন করতে হয়, সাধারণ মানুষের জন্য কি কোন আন্দোলন, মানববন্ধন প্রয়োজন নেই?? প্রশ্ন সেদিন কেন তাঁর বিরুদ্ধে সরকার গ্রেফতারী পরোয়ানা দিলেন না? নাকি তখনো নির্বাচন অনে দূরে ছিল বলে চেপে গেছেন? ২য় ঘটনা: "সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদারের আর টিভির নারী সাংবাদিকের উপর হামলা" আওয়ামী লীগের সাংসদ কামাল মজুমদারের হামলায় আহত হয়েছেন আরটিভির একজন নারী সাংবাদিক। ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজে ১লা এপ্রিল ২০১২ বিকাল ০৪:০৭ মিনিটে। সাংবাদিকের উপর হামলার পর পুলিশি পাহারায় নিজের লোকজন নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদার। সেদিনের এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় সারা দেশ নির্বাক হয়েছে গিয়েছিলেন।

চারিদিকে ছি ছি আওয়াজ উঠলেও আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেদিন চুপ ছিলেন, সচেত সাংবাদিক ভাইয়েরা কতটুকু দাবী তুলেছিলেন তাঁর গ্রেফতারে? নাকি আরটিভির সাংবাদিক বলে আন্দোলনের প্রয়োজন ছিলো না? আর নারী অধিকার নিয়ে সোচ্চার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সচেতন নারী নেত্রীরা সেদিন কি ভূমিকা রেখছিলেন যখন একজন নারী সাংবাদিকের উপর সাংসদ নিজেই হামলা করলেন! কিছুই হয়নি, মামলা ও না, গ্রেফতারতো সুদূরপরাহত। রনির বিরুদ্ধে তাহলে কেন এই গ্রেফতার ও মামলা? সেটা কি দরবেশ বাবার অলৌকিক হাতের কারসাজি না আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বৈতরনী পাড় পাবার কূটকৌশল। রনি কি মানুষের আই ওয়াশের হুইলের গুড়ু সাবান না সার্ফ এক্সেল? সব কিছু ওনারা বুঝেন সাধারণ পাবলিক কিছুই বুঝে না। শেয়ার কেলেংকারীর ঘটনার মহানায়ক কে সেটা শেয়ারে বাজারে নিঃস্ব হওয়া প্রতিটি বিনিয়োগকারী জানেন, আর রনি সাহেব যে টিভি টক শো গুলো এর বিরু্দ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন সেটাও মানুষ জানেন। তাই বলে আমি রনির এহেন ন্যাক্কার জনক কাজকে সমর্থন দিচ্ছি না।

৩য় ঘটনা: "ফরিদপুরে সাজেদা চৌধুরীর সমর্থকদের হাতে হালিম সমর্থকদের উপর হামলা, সাংবাদিকদের গাড়ী ভাংচুর" সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৩) ফরিদপুর-২ (সালথা ও নগরকান্দা) আসনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রাথী মেজর (অব.) আ ত ম হালিমের গাড়ি বহরে হামলা চালিয়েছে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সমর্থকেরা। এতে মেজর (অব.) হালিম ও সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গাড়িবহরে হামলা চলিয়ে ১০ থেকে ১২টি গাড়ি ভাঙচুর করে ও দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় হালিমের ভাগ্নে নজরুল ইসলাম (৩৫) গুলিবিদ্ধ হন। হামলার সময় হালিমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়।

হামলায় হালিম ও দৈনিক ইত্তেফাকের ফরিদপুর প্রতিনিধি তরিকুল ইসলাম হিমেলসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়। হামলাকারীরা হালিমের গাড়িবহরে থাকা ১০/১২টি মাইক্রোবাস ভাঙচুর ও একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর মধ্যে সাংবাদিকদের বহনকারী তিনটি মাইক্রো রয়েছে। মেজর (অব.) হালিমের সমর্থকরা অভিযোগ করেছেন, ঘটনার দুই ঘণ্টা পরও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি। এ বিষয়ে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবসার উদ্দিনকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।

পক্ষান্তরে অন্য একটি রিপোর্ট: জনতার হাতে গণধোলাইয়ের শিকার মেজর হালিম স্টাফ করেসপন্ডেন্ট: অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, দুপুর ১২টায় প্রগ্রেসিভ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) ফরিদপুর জেলা আহ্বায়ক মেজর (অব.) আ ত ম হালিম পিডিপির একটি মিটিংয়ে যাচ্ছিলেন। পথে মাদ্রাসাগোট্টি নামক স্থানে জনতার বাধার মুখে পড়েন তিনি ও তার সমর্থকরা। এসময় তিনি বাধা পেরিয়ে যেতে চান এবং তার হাতে শটগান থেকে জনতার উদ্দেশে গুলি ছোড়েন। এতে এলাকার ৭/৮ জন নিরীহ মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ মেজর (অব.) হালিমকে গণধোলাই দেয়।

হালিম শটগোন ফেলে পালিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ শটগান ও কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। কথা হলো এই হামলা ঘটনায় জড়িত দুইজনি আওয়ামী লীগ নেতা। একজন সংসদ উপনেতা আর অন্যজন মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা। নিজেরা নিজেরা মারামারি করেছে সেটা নিয়ে আমাদের কোন প্রশ্ন নাই, প্রশ্ন হলো সাংবাদিকরা আহত হয়েছেন, আবং সাংবাদিকদের গাড়ী ভাংচুর করা হয়েছে।

কোথায় আমাদের সাংবাদিক সমাজ। রনি এবং সাজেদা চৌধুরীর ঘটনা কাকতালীয় ভাবে একই দিন ঘটেছে। কিন্তু একজনের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজ সোচ্চার হয়ে শ্রীঘরে পাঠালেন অন্য জনের বিরুদ্ধের কোন কর্মসূচই দেখা গেলনো। কোন মামলাও হলো না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি রনির ঘটনাই দেখলেন, সাজেদার ঘটনাটি কি তাঁর চোখের আড়ালেই রয়ে গেল? সাংবাদিক ভাইয়েরা কি নিজেদের বিবেক বিসর্জন দিয়ে দরবেশ বাবার কথায় উঠেন-বসেন, নাকি নিজেদের বিবেকের তাড়নায় সোচ্চার হয়েছেন, এই প্রশ্ন কি থেকে যায় না? নাকি রনি নবাগত সাংসদ বলে বলীর পাঠা আর সাজেদা চৌধুরী কাছের লোক বলে ধোয়া তুলসী পাতা।

ঘটনা- ৪ "সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী নিজ শোবার ঘরে খুন" ঘটনার একবছর পেরিয়ে গেলেও কে বা কারা খুন করেছে সরকার সেটা উদ্ধার করতে পারেনি। আইন -আদালত, পুলিশ-ডিবি-র‌্যাব গড়িয়ে- আমেরিকা -ডিএনএ পরীক্ষা কতকিছু দেখলাম শুধু দেখলাম না খুনীদের নামের তালিকা। প্রথমে সাংবাদিক ভাইয়েরা অনেক আন্দোলন- সংগ্রাম করলেও এখন নীরব। এই ঘটনার পর সন্দেহ ভাজন যাদের নাম সাংবাদিক বন্ধুরা বলেছেন বা দাবী করেছেন, তাদের কাউকে কি পুলিশ গ্রেফতার করেছেন? না তাদের আইনের কাঠ গড়ায় দাড় করানো হয়েছে? তারা আজও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। সাংবাদিক বন্ধুরা সেদিন যে কঠোন অবস্থান নিয়েছিলেন তাঁর চেয়েও অনেক কম অবস্থান অন্দোলনে রনিকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হলো।

প্রশ্ন হলো এর পেছনে আসল রহস্য কি? সেটা কি রহস্য পুরুষ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা কথিত দরবেশ বাবার অদৃশ্য হাতের নিপূন কারুকাজ না আগামী নির্বাচনে জয়ী হবার জন্য জনগণের কাছে স্বচ্ছ হিমেজ প্রতিষ্ঠায় রনিকে বলীর পাঠা বানানো হলো। নির্বাচনী বৈতরনী পার পাবার জন্য কৌশল হলে সাজেদা-হালিম কেন লোক চুক্ষের আড়ালে রয়ে গেল? স্বচ্ছতা জবাবদিহিতার একি উলঙ্গ উদাহরণ। রাজনীতিবিদরা নিজেদের নোংরামী না বুঝলেও জনগণ বুঝে এবং সেই ভাবে প্রতি পাঁচ বছরে একবার সুচিন্তিত রায় দেন। সিটি কর্পোরেশন তাঁর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ঘটনা-৫ নারায়ণগঞ্জের ত্বকী হত্যা এবং মামলা ও আসামী: পুরো নারায়ণগঞ্জ বাসী যাকে এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বলে দাবী করে আসছেন কেন সরকার বা আইন শৃঙ্গলা বাহিনী তাঁকে ধরে রিমান্ডে নিয়ে আসল ঘটনা উদ্ধারে আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন না।

রনিতো হামলা করেছে, চর লাথি পেরেছে, খুনতো করেনি! যেখানে পুরো নারায়ণগঞ্জবাসী আন্দোলন- সংগ্রাম করছে সেখানে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে কিছু সাংবাদিকদের মানববন্ধনেই রনির জামিন বাদ দিয়ে তাৎক্ষণিক গ্রেফতারের হেতু কি জনগণের মনে এখন সেই প্রশ্ন এবং এর উত্তর দিতে না পারলে, বুমেরাং হবে সকল কূটকৌশল। রনি যে আগামী নির্বাচনে মানুষকে ধোঁকা দেয়ার একটা উদাহরণ সেটা অনুমেয়। দরবেশ বাবা যে সরকারের উপর প্রভাব খাটিয়ে এই কাজটি করেছেন সেটাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। হয়তো আগামী নির্বাচনের ব্যয় নির্বাহের জন্য মোটা অংকের অনুদানের প্রতিশ্রুতি সরকার পেয়েছে বলেই রনিকে বলীর পাঠা বানিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। রাজনীতিতে জেতার জন্য নেতা-নেত্রীরা লাশ চায়, রনির কারাগার তো সেখানে মামুলী ব্যবপার।

হয়তো কোন একদিন সমঝোতার আড়ালে রনি কারাগার থেকে বের হয়ে আসবে অথবা ২/৩বছরের সাজা ভোগ করবে। রাজনীতির খেলায় শিশু রনি দরবেশের নখের সমানও না। ঘটনা-৬" নরসিংদীর পৌর মেয়র লোকমান হত্যায় মন্ত্রীর নাম জড়িত থাকলেও তাঁর মন্ত্রীত্ব বহাল তবিয়েত থাকে, তাকে মন্ত্রীর দফতর পরিবর্তন করে দেয়া হয় কিন্তু রনীর কপালে জোটে গ্রেফতার এবং কারাভোগ। ঘটনা-৭: পদ্মা সেতু দূর্নীতির দায়ে আবুলের বিলম্ব পদত্যাগে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের সেতু তৈরী না হলেও আবুল দেশপ্রেমিক উপাধী পান। তাকে বিশ্ব ব্যাংক থেকে বার বার আসামী হিসেবে অন্তর্ভূক্তির অনুরোধ করলেও অনেক কষ্টে মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেন।

আবুলের জন্য যে আওয়ামী লীগ দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের কাছে কতটা জনপ্রিয়তা হারিয়েছে সেটা আগামী নির্বাচনে টের পাবে। রনি যদি সাংবাদিক সমাজকে অপদস্ত করে, অপমান করে, লাঞ্ছিত করে গ্রেফতার হয়ে কারাবাসি হতে পারেন তাহলে আবুল হোসেন কেন সারা জাতীর কপালে দূর্ণীতির কলংকের তিলক পরিয়েও কারাভোগ করবেন না? সম্মানিত পাঠক আপনারা কি বলেন। একটি ইতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল কিভাবে এতো এতো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে আমার বধোগম্য হয় না, আপনাদের হয় কি? হলে প্লিজ কমেন্টে বলুন। যে ঘটনা গুলোর কথা বললাম এমন ঘটনা গত সাড়ে চার বছরের অনেক ঘটেছে। মিরপুরের আরো দুই সাংসদ (আসলামুল হক এবং ইলিয়াস আলী মোল্লা) বিরুদ্ধেও অভিযোগ ছিল কি আইনী ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।

ইলিয়াস আলী মোল্লা ট্র‌্যাফিক পুলিশ চড় মেরেছিলেন কি ব্যবস্থা তাঁর বিরুদ্ধে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নিয়েছে? আসলামের বিরুদ্ধে কল্যানপুরের খাল দখলের অভিযোগ আছে কি ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার বা দল? আসলামুল হক ম্যাজিস্ট্রেট দখল উদ্ধারে গেলে কাজ থামিয়ে দিয়ে হুমকি দমকি দিয়েছেন, জাতীয় পত্রিকায় নিউজ হয়েছে দল বা সরকার কি ব্যবস্থা নিয়েছে? পরিশেষে আমি রনির পক্ষে সাফাই বা অপকর্মের সমর্থন দেয়ার জন্য কথা গুলো বিলিনি, বা ঘটনা গুলো তুলে ধরিনি। আমি তুলে ধরেছি এর জন্য যে, বর্তমান সরকার জোড় গলায় বলে "আইন সবার জন্য সমান। " তাহলে রনির জন্য একরকম আর বাকীদের জন্য অন্যরকম হলো কেন?? নাকি বাকি ঘটনায় দরবেশ বাবা জড়িত ছিলোনা বলেই ভিন্নতা? রনি একজন সাংসদ এবং সাংসদ হিসেবে জামিনে মুক্ত থাকা বাংলাদেশে অসম্ভব কিছু না। রনির লঘু অপকর্মের জন্য যদি জামিনে থাকা অবস্থায় আদালতে গিয়ে জামিন বাদ করিয়ে গ্রেফতার করানো যায়, তাও আবার দেড়ঘন্টার মধ্যে তাহলে বাকী ঘটনায় দোষী সাংসদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হলো না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলবেন কি?? নির্বচন এলেই আমাদের দেশের রাজনৈতিক দল গুলো ভাল হবার আপ্রাণ চেষ্টা করেন, কিছু ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ কেন এর ব্যতিক্রম হবে।

তাইতো চট্টগ্রামে যুবলীগ নেতাকে শেষ সময়ে গ্রেফতার করতে দেখা যায়, রনিকে কারাগারে পাঠানো হয়, বিশ্বজিতের মামলা দ্রুত আদালতে পাঠানো হয় (যদিও আসল আসামীরা এখনো পলাতক)। অথচ সাড়ে সার বছরে হাজার হাজার ঘটনা ঘটকেও কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। পিস্তল উঠিয়ে প্রতিপক্ষকে গুলি করা সন্ত্রাসী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হলেও জননেত্রীর সমস্যা নেই, বিরোধী ছাত্র সংঠনের নেতাদের পিটিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়া করলেও তাতে কিছু যায় আসে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.