আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির ঐতিহাসিক পরিবর্তন .................



পশ্চিমবঙ্গে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন মমতা ব্যানার্জী...হতে যাচ্ছেন প্রথম মহিলা মূখ্যমন্ত্রী...হতে পারেন ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীও !!! এটা বললাম কারন তিনি গতকাল নিজেই বলেছেন ..‘আমাকে কেউ রেলমন্ত্রী বললে আমার ভালো লাগে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা- এটাও যেন কেমন লজ্জা লজ্জা লাগে। ’ তাহলে কি বোঝাতে চাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বললে ভালো লাগবে..!!! আটপৌঢ়ে চেহারার হাওয়াই চটি ও সাদা শাড়িপরা মধ্যবয়সী এই নারী আপামর জনসাধারণের কাছে হয়ে উঠলেন আপনজন। সমর্থকদের কাছে তিনি ‘দিদি’ বলে পরিচিত। সুতির শাড়ি আর সাধারণ চপ্পলেই দিব্যি চলে তাঁর।

যে বাড়িতে তিনি থাকেন, এর পাশেই নালা। এতে রাজ্যে মশার বংশবিস্তার হয়। এ থেকেই বোঝা যায়, তাঁর জীবনযাপন কতটা সাধারণ। এই দিদিই ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গতকাল শুক্রবার ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তিনি তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ওই রাজ্যে বিশ্বের ইতিহাসে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত দীর্ঘস্থায়ী কমিউনিস্ট সরকারের পতনের মূলেও তিনি। ভোট শুরুর আগেই মমতা ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে এবার ইতিহাস সৃষ্টি হবে। ’ গতকাল নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর তাঁর কথাই সত্যি হলো। এমনি এমনি সবার প্রিয় ‘দিদি’ হননি মমতা। অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম মমতাকে এ অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

মমতা রাজনীতি শুরু করেন জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে। ১৯৮৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। হারিয়ে দেন বর্ষীয়ান কমিউনিস্ট নেতা সোমনাথ চ্যাটার্জিকে। পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকবার তিনি লোকসভা সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে কংগ্রেস সরকার গঠন করলে মন্ত্রী হন মমতা।

১৯৯৬ সালে মমতা অভিযোগ করেন, কংগ্রেস দেশজুড়ে দুর্নীতি শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গের বাম সরকারকে দুর্নীতিতে সহযোগিতা করছে। একপর্যায়ে কংগ্রেস ছেড়ে দিয়ে ১৯৯৭ সালে অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) গঠিত সরকারে যোগ দেন। তাঁকে কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

২০০১ সালের শুরুতে এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মমতা। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০০৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিল্পোন্নয়ন নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। বড় ধরনের বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সরকার হাওড়ায় কৃষিজমি দিতে রাজি হয়। এর বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে জনতা।

মমতা সেই আন্দোলনে জনতার পক্ষে অবস্থান নিলে বুদ্ধদেব সরকার শিল্পোন্নয়নের নীতি থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। এরপর ২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো গাড়ি তৈরির প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেন মমতা। এ ছাড়া নন্দীগ্রামে রাজ্যসরকারের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাও বন্ধ করতে সক্ষম হন। ওই আন্দোলনে সরকারের নির্দেশে পুলিশের গুলিতে ১৪ জন গ্রামবাসী নিহত হয়। এসব আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মমতা সাধারণ মানুষের হূদয়ে স্থান করে নেন।

২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চার (ইউপিএ) সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচন করেন মমতা। নির্বাচনে তাঁর দল ১৯টি আসন লাভ করে। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী হন তিনি। এখানেই থেমে থাকেনি দিদি মমতার অগ্রযাত্রা। ২০১০ সালে কলকাতা ও বিধাননগর মিউনিসিপালে জয়লাভ করে তাঁর দল।

আর বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বাম দুর্গের পতন ঘটাল তাঁর দল। এএফপি ও বিবিসি। মমতা বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে হাসিনা দি’র ফোন পেয়েছি। খুব ভালো লাগলো। মনে হচ্ছে যেন দুই বাংলা এক হয়ে গেল।

’ মমতা বলেন, ‘আঞ্চলিক উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার কথা হাসিনা দি আমাকে বলেছেন, আমিও তাই মনে করি। ’ বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবাংলা একসময় এক ছিলো...ভারতের অনেক প্রভাবশালী রাজনীতিবিদেরও জন্ম হয়েছে আমাদের দেশে। তাই আমরা আশা করবো এই পরিবর্তন যেন সকলের জন্যই একটি শুভ ফল বয়ে নিয়ে আসে। আমি তাকে ভালোভাবে জানেছি বেশ কিছুদিন আগে সিঙ্গুরে যখন টাটা শিল্পোগোষ্ঠীর জমি অধিগ্রহনকে কেন্দ্রে করে প্রায় ১ মাস অনশন দেখে...আমদের দেশের নেতা/নেত্রীদের তাকে দেখে অনেক কিছু শেখার আছে। একটি বড় গনতান্ত্রিক দেশে বড় মন্ত্রী (রেল মন্ত্রী) হয়েও তিনি ব্যবহার করেছেন সাধারন গাড়ী এর সঙ্গে তুলনা করলে আমাদের দেশে একজন এমপি যখন ব্যবহার করেন ৫০ লাখ টাকা দামের গাড়ী।

তিনি অবসরে ছবি আকেঁন এবং ঘোষনা দিয়েছেন তাঁর ছবি বিক্রি অর্থ থেকে ১ কোটি টাকা রাষ্ট্যীয় তহবিলে দান করবেন...তাকে যতই জানতে চেষ্টা করছি ততই মুগ্ধ হচ্ছি... পরিবর্তন হলে এমন পরিবর্তন-ই দরকার যার হাত ধরে নতুন কিছুর সৃষ্টি হয় ...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.