আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে চাও



বিশ্বের সেরা ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশেরই ঠিকানা হলো মার্কিন মুলুক। বিশ্বের সেরা সব মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের কনসুলার অ্যাফেয়ার্স-বিষয়ক প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাইকেল ডি কার্বি বলছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র খুবই আগ্রহী এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারে। ’ এমন অবস্থায় সরাসরি প্রশ্ন করেই বসলাম, তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের প্রতি কেন এত আগ্রহ যুক্তরাষ্ট্রের সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর? স্মিত হেসে চমৎকার উত্তর দিলেন মাইকেল ডি কার্বি। ‘আপনাদের নিশ্চয় জানা আছে আমেরিকা সরকারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি বৃত্তি হলো “ফুল ব্রাইট স্কলারশিপ”।

দুনিয়াজোড়া সেরা মেধাবীদের মধ্য থেকে বাছাই করা গুটিকয়েক শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় এই বৃত্তি। পাঁচ বছর ধরে এই ফুল ব্রাইট স্কলারশিপ সবচেয়ে বেশি অর্জন করেছেন বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে। ’ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ এবং সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে প্রথম আলো, দ্য ডেইলি ইনডিপেনডেন্ট ও রেডিও টুডে তিন তরুণ সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়েছিলেন মার্কিন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মাইকেল ডি কার্বি। ভিসা জটিলতা, স্কলারশিপ নিয়ে তরুণ সাংবাদিকদের সোজাসাপ্টা প্রশ্নের সহজ-সরল উত্তর দিলেন মার্কিন সরকারের উচ্চপদস্থ এই কর্মকর্তা।

সেই সঙ্গে জানালেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সামনে খোলা অবারিত সম্ভাবনার কথা। এখন বছরে প্রায় এক হাজার ৩০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার সুযোগ পান, যেখানে পাঁচ বছর আগেও সংখ্যাটি ছিল মাত্র ৭০০। এ সংখ্যা আরও বাড়ানো সম্ভব যদি সঠিক সময়ে সঠিকভাবে আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা। তিনি বলেন, ‘আবেদনের শেষ দিনের জন্য অপেক্ষা না করে হাতে প্রচুর সময় রেখে সঠিক নিয়মে আবেদন করতে হবে। অনেক সময় একেবারে শেষ সময়ে পাঠানো আবেদনপত্র সঠিকভাবে মূল্যায়নের সময় পাওয়া যায় না।

এ কারণে মূল্যবান সুযোগ হারান শিক্ষার্থীরা। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঠিকভাবে আবেদনপত্র পূরণেও গাফিলতি দেখা যায়। ’ যোগ করেন তিনি। প্রশ্ন করি যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যেতে চাইলে কী কী ধাপ অনুসরণ করা উচিত। উত্তর মেলে ‘প্রথম ধাপ হলো যুক্তরাজ্যে পড়তে যাওয়ার ইচ্ছাটাকে চূড়ান্ত করা।

এরপর দ্বিতীয় ধাপ হলো যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে চান, এ সম্পর্কে যাবতীয় খোঁজখবর নেওয়া। এ ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সাহায্য নেওয়া উচিত। তৃতীয় ধাপে পছন্দনীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদনপত্র পাঠাতে হবে সঠিক নিয়মে। সর্বশেষ চতুর্থ ধাপে ভিসার জন্য যোগাযোগ করতে হবে দূতাবাসে। ভিসার প্রসঙ্গ উঠতেই প্রশ্ন আসে ভিসা প্রক্রিয়ার জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে।

আমরা প্রশ্ন করি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া এতটা জটিল কেন। বিষয়টি খোলাসা করেন মাইকেল ডি কার্বি। ‘প্রতিবছর বিভিন্ন প্রয়োজনে সারা বিশ্বের অসংখ্য মানুষ চায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে। আমরা এদের মধ্য থেকে প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সুযোগ দিই। ১০ লাখ সংখ্যাটা আসলে অনেক বড়।

এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই দেশের নিরাপত্তা, অবকাঠামো, সুযোগ-সুবিধা সবকিছুর কথা চিন্তা করে ভিসাপ্রক্রিয়া এভাবে সাজানো হয়েছে। তবে এ প্রক্রিয়া যত সম্ভব সহজবোধ্য এবং দ্রুত করার চেষ্টা চলছে সব সময়ই। ’ এ প্রক্রিয়া সত্যিই আর্র কিছুটা সহজ হয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য গত সপ্তাহ থেকে। ৯/১১-এর পর বিশ্বের ২৫টি দেশের জন্য মার্কিন ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাজনিত কারণে NSSERs (National Security Entry-Exit) ফরম পূরণ ছিল বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে বাংলাদেশও ছিল।

কিন্তু এখন থেকে বাংলাদেশিদের আর এ ফরমটি পূরণ করতে হবে না। ফলে ভিসাপ্রক্রিয়া আরও সহজ হবে। এসব সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে যাওয়ার পথ আরও সহজ করবে। তবে ভিসাপ্রক্রিয়ার চেয়েও আরও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে অন্যকিছু, তা জানাতে ভুললেন না মাইকেল ডি কার্বি। কারণ ছাত্রজীবনের প্রাতিষ্ঠানিক ফলাফল, স্বাচ্ছন্দ্যে ইংরেজি বলা, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোতে (জিম্যাট, জিআরই, স্যাট) ভালো স্কোর এবং যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণাই আসলে মার্কিন মুলুকের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রবেশের দরজা হিসেবে কাজ করবে।

তাই এগুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে বেশি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.