আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রথম জীবনে যারা কষ্ট পায় তারা ২য় জীবনে সুখী হয়........

আর পোস্ট প্রিয়তে নিই

মুখ তুলে নিশা দেখলো বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। আরি!আজ বৃষ্টিটা এরকম অদ্ভুত সুন্দর কেন?নিউইয়রকে তো কখনো এরকম হয় না.........আজ হঠাৎ হলোটা কি এ শহরটার???ঢাকার কথা মনে পড়ে গেল হঠাৎ। মেডিকেল কলেজের বারান্দা............হলের ছাদ........ঢাকা ভারসিটির রাস্তায় হুড ফেলে ঘোরা.........ডিউটি ফাঁকি দিয়ে ঘুরা...........এক ঝাঁক আনন্দ হঠাৎ ছড়িয়ে গেল মনে। কাজে আবার ডুবে গেল সে,এখুনি আবার প্রফেসর এসে পড়বেন। চশমা এটেঁ আবার সে গম্ভীর ডা.নাহিয়ান নিশা হয়ে গেল।

থিসিস টা শেষ হলে লন্ডনে তার চাকরি ঠিক করা আছে,এসব ভাবাবেগ র সময় এখন নাই। আরও কাজ চাই তার,আরও বেশী ব্যস্ততা যেন সবকিছু ভুলে থাকা যায়। কি এমন হয়েছিল নিশার জীবনে?আমরা জানতে চাই,দেখে আসি কি এমন হয়েছিল ওর জীবনে ............ ২০ বছর আগের ঢাকা মগবাজারের ছোট্ট একটা বাসা,বাবা মা আর ছোট্ট একটা মেয়ে। আর বাসার মত এই বাসাটাও হতে পারতো সুখী সুন্দর পরিবার। হয়নি।

ছোট্ট মেয়ে টার বাবা মা কখোনই নিজেদের প্রতি বিশ্বস্ত ছিল না,দুজন দুজনের মত চলতো আর রোওওওওওওওজ ভীষন ঝগড়া করতো। কি কুৎসিত ছিল সেসব ঝগড়া। অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করতো দুজন, কখনো খেয়াল করতো না যে ছোট্ট মেয়ে টাও এসব দেখছে,শুনছে। ছোট্ট মেয়ে টা শুধু দেখতো,সইয়ে নিত সব। কখনো তাদের মনে হয় নি যে বিত্ব আর বৈভব আর 'স্ট্যাটাসের' পিছনে তারা ঘুরছেন তা শুধু মোহ মাত্র।

হঠাৎ যেমন আসে মরিচীকার মত আবার হঠাৎই চলে যাবে। বহতা স্রোতের মত গা ভাসিয়ে তারা অবহেলা করেছে তাদের সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে অমূল্য, পরম পাওয়া স ন্তানটিকে। অবহেলায়,নিরানন্দে,এ ঘর ও ঘর ঘুরে নিঃশব্দে বনধু বরজিত হয়ে কেটে গেল আরও ৮টা বছর। মেয়েটা আরো বড় হল। ঘরের সমস্যা ত কমলো না বরং বেড়েই চলতে লাগলো।

ছোট বেলায় হয়তো বা খুব খারাপ লাগতো এখন আর লাগে না জোর করে আটকে রাখে চোখের পানি। ছোট্ট মেয়ে টা আর কয়দিন পর উচচ মাধ্যমিক দিবে। খুব মনযোগ দিয়ে সে পড়ে। তাকে খুব ভাল রেজাল্ট করতে হবে। চাকরি নিয়ে সে চলে যাবে দূরে কোথাও,এখানে আর ও থাকবে না।

বাবা মার কাছ থেকে সে কখনও স্নেহ পায় নি,দুটো ভালো কথা শুনে নি। প্রচন্ড জ্বরের সময় সে যখন একটু সেবা চাইতো মাথার পাশে কাউকে পেত না। ভালো হবার পরও না। এসব কথা মনে হলে অভিমানে ঠোঁট ফুলে ওঠে,কাঁদতে চায় না তবুও দু এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে যায়। আবার ও শক্ত হয়ে ওঠে।

কেন সে চোখে র পানি ফেলবে এদের জন্য যাদের কিনা তার জন্য কোন অনুভূতিই নেই। না আমি কাঁদব না একটুও না,মনে মনে চিন্তা করে সে। অবশেষে তার পরীক্ষা শেষ হয়,শেষ হয় আডমিসন টেস্ট ও। নিজের পরিশ্রম আর মেধা র জন্য সে অবশেষে দেশের শ্রেষঠ মেডিকেল গুলোর একটিতে নিজের জায়গা করে নেয়। বিধাতা কিছু নিলে তার চেয়ে হাজার গুন ফিরিয়ে দেন -একথা টা মেয়ে টার জন্য একবারে সত্য হল।

থ নিজের স্বপ্নের দিকে এবার শুধু এগিয়ে যাওয়া.......... সত্যি হবে তো স্বপ্ন?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।