আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনে র জল রং -১০



অপু কিছু বলতে চাইছিলো তার আগেই ঋতু চেচিয়ে উঠল- ক্স বাবা তুমি সবার কথা বললে আমার নামটাও মুখে নিলে না? আমি কি বুঁড়ি হয়ে তোমার সেবা করতে করতে ইহলোক ত্যাগ করবো? ক্স দূর পাগলী মেয়ে তোর সময় এলেই তোকে তোর শশুর বাড়ী পাঠানো হবে। তোর যা বয়স তাতে আমার ভয় হচ্ছিল বলতে যে তোকে সুমনের পর পরই বিয়ে দিয়ে দেবো পাছে আবার তুই রেগে বলিস্- “আমি কি তোমার চোখের বালি বাবা?” ক্স সবাই হাসান সাহেবের কথা শুনে হু হু করে হেসে উঠল। ঋতু নীতুর খাওয়া শেষ হলে তারা উঠে পড়লো। অপু হাতটা ধোয়ে সুমনের কামরায় চলে এলো ঝটপট কেটা সিগারেট খেয়ে নেয়া যাক। চাচা যেকোন মুহুর্তে ডেকে উঠতে পারেন।

সিগারেটটা শেষ করে সে হল রুমে চলে এলো। নীতু, সুমন ও হাসান সাহেব আগেই থেকে বসে আছেন। ক্স অপু তোমার পড়াশোনাতো শেষ হলো। যতদূর জানলাম তুমি ব্যবসা করবে বলে ঠিক করেছ, তাইনা? ক্স জী শুধু ভেবেছি ব্যবসা করবো। নানীজান যে টাকাটা দিয়েছিলেন তাতে একটা ব্যবসা করতে পারবো নিশ্চয়ই।

ক্স জী শুধু ভেবেছি ব্যবসা করব্ োনানীজান যে টাকাটা দিয়েছিলেন তাতে একটা ব্যবসা করতে পারবো নিশ্চয়ই। ক্স তা পারবে। তবে তুমি আমার সš-ানের মত্ োসেই ছোট বেলা থেকে তোমাকে আমি পিতৃস্নেহে বড় করে তুলেছি। সুমন আর তোমার মধ্যে আমি কোন পার্থক্য দেখিনি আমার ছেরে মতোই তুমি, তাইনা? ক্স জী, চাচা। ক্স আমি তোমাকে তোমার ভবিষ্যত গড়ে নিতে সাহায্য করতে পারি সেই দাবী নিয়েই তাই আমি নীতু ও সুন যারা একাধারে তোমার বন্ধুর মতো আবার ভাইবোনের মতো।

আমরা সিদ্ধাš- নিয়েছি তোমাকে একটা বাড়ী ও একটা ফ্যাক্টরী উপহার দিতে। নীতু ফাইলটা অপুর দিকে বাড়িয়ে দিলো। হাসান সাহেব অপুকে তা নিতে বললেন। সে ফঅইলটা হাতে নিয়ে সুমনের দিকে তাকাল। সুমন তাকে হাসি দিয়ে সম্ভাসব জানালো।

হাসান সাহেব বলে চললেন- তোমাকে হাসান এন্ড হাসান ষ্টীল মিলটার স্থাবর অস্থাবর সব কিছু আমরা লিখেদিলাম আজ থেকে তুমি ওটার মালিক। আমি অত্যš- আশাবাদী তুমি ঐ ফ্যাক্টরীটাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। গোপীবাগে আমাদের একটা দ্বীতল বাড়ী আছে “মরুছায়া”। ওটা তোমার নামে লিখে দিলাম। ওখানে থেকে তুমি তোমার সুন্দর ভবিষ্যত গড়ে নিতে পারবে।

তোমার ব্যবসার ব্যাপারে উৎসাহ আমাকে আনন্দ দিয়েছে। তুমি তোমার জমানো টাকা স্টীল মিলটায় বিনিয়োগ করতে পারো ওটা তোমাকে অভাবনীয় মুনাফা এনে দেবে। আমি এবার বিশ্রাম নিতে যাবো। তোমার কি কিছু বলার আছে অপু? ক্স অপু তার কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। সে নির্বাক হয়েছিলো এতণ এবার সম্বিত ফিরে পেয়ে বলল চাচা আপনার ভালোবাসার ঋণ আমি শোধ করতে পারবো না।

রা¯-া থেকে কুঁড়িয়ে এনে শিা দীা দিয়ে মানুষ করে গড়ে তুললেন। বেঁচে থাকার অবলম্বন গড়ে দিলেন সে আর কিছু বলতে পারলো না তার গলার স্বরটা বদলে গেলো। সে কাঁদছে নীতু চলে গেলো তার রুমে। ওসব পুরুষের নিজেদের ব্যাপার ওখানে নীতুর না থাকাটাই ভালো। ক্স এটা আমার কর্তব্য অপু।

আমি আমার পরিচয়ে তোমাকে মানুষ করেছি। ইম চাই তুমি আমার পরিচয় নিয়েই বেঁচে থাকো। তোমার মাঝে, সুমনের মাঝেইতো আমি বেঁচে থাকবো চিরকাল। আমর বিশ্বাস তোমরা আমাকে নিরাশ করবে না। তিনি কথাটি বলেই তার কামরার দিকে পা বাড়ালেন।

ক্স তা কবে থেকে অফিসে বসছিস বলে টিক করলি? সুমন জানতে চাইলো অপুর কাছে। ক্স ঠিক করলাম মানে শুনতে না শুনতেই একেবারে অফিসে বসাটাও ঠিক করে ফেললাম? তোরও মাথা খারাপ হয়ে গেলো নাকী আমার সাথে সাথে। অনেকগুলো বছর পর বাড়ী গেলাম। নানা নানীর বংশের একমাত্র প্রদীপ হয়ে কবর জিয়ারত করছি আর মায়ের কথা তাকে একমুঠো হাসি উপহার দিতে না পাবার কথা ভাবতে বাবতেই একদিন কোথা থেকে মাওলানা সাহেব উদয় হলেন। আমাকে জিরো থেকে হিরো করে তুললেন মূহুর্তের মাঝে।

সেই ভালোলাগার রেশ কাটতে না কাটতেই পরীার রেজাল্ট হলো আর চাচা আমাকে শিল্পপতি বানিয়ে দিলেন। আজ আমার একটি দ্বীতল বাড়ী, একটি বিশাল কারখানা, অর্ধলাধিক টাকা ব্যাঙক ব্যাল্যন্স কয়েকটি মাস আগে যাকে টিউশনী করতে হতো নিজের হাবিজাবি খরচের জন্য। যে কিনা প্রতি সন্ধ্যায় গাছের গোঁড়ায় বসে আধো আলো আধো অন্ধকারে গাঁজার কল্কিতে নিজের ফুসফুসটাকে ত বিত করতো। চাঁদের আলোকে প্রয়ার মায়াবী চাইনী বলে জোছনা রাতে রং তুলি নিয়ে অজানা প্রিয়অকে নিয়ে ছবি আঁকতো। সেই অপুকেই এখন থেকে ভাবতে হবে যন্ত্রের কথা, মানুষের চালবাজীর কথা অফিস শেষে লাভ লোকসানের কথা।

সত্যিই আবার মাথাটা খারাপ হতে চলেছে সুমন। এতো ভালবাসা কখনও কখনও পাইনিতো তাইবোধ হয়। অপ্রকাশিত ভালোবাসা আমাকে যে আনন্দ দিয়েছিলো এটাইতো যথেষ্ট ছিলো আমার জন্য আজ প্রকাশিত ভালোবাসা আমাকে পাগর প্রায় করে তুলেছে। সুমন আমাকে আমি নিজেই চিনতে ভুল করছি আজকাল। ক্স তোর ওসব প্যাঁচাল বন্ধ করতো বাপ।

এ সবই তোর াপ্রাপ্য ভালোবাসা। ভালো রোক গুরো সব সময় ভালো আচরণই পায়। তোর কষ্ট গুলো তোকে বেশ ভালো করে পরীা করে নিয়ে তুই পাশ করেছিস বলেই তোকে ওমন পুরস্কৃত করছে। কোথাও যাবি বলছিলি না? চলনা বেরিয়ে পড়ি, মনটা একটু চনমনে হবে। চলো চলে যাই বহুদূরে।

কার একটা গান আছে নাহ! “ময়ুর পঙ্খী রাতেরও নীড়ে আকাশে তারাদের ঐ মিছিলে চলো চলে যাই শুধু দু’জনে মিলে” ক্স গানটান বাদ দে, চল হরে যাই। আজ বেজায় রং তামাশার আয়োজন চলছে। অপু উঠে দাড়ালো। গাড়ী বাদ দে, বাইকটাই থাকুক ওটাই চলবে। কি বলিস? বলে অপু তাকালো সুমনের দিকে।

ক্স চলো চাই অচনি পুরে- বলে সে অপুর বাইকে চড়ে বসল। হলের মজার মজার আয়োজন চলছে। কোত্থেকে জোগাড় করা হয়েছে বেশ কিছুস্পট লাইট। মাঠের চতুর্দিকে বাতীগুরৈা জ্বলে উটেছে বেশ খালোকীত চারদিন্ একদিকে বিশাল মঞ্চ তৈরী করা হয়েছে। বুঝা যাচ্ছে আজকের আয়োজন বেশ জমকালো হতে চলেছে।

অপু রেহানকে খুজতে লাগল্ োতাকে রুমেই পাওয়া গেলো। এতনে তবে এলি তুই? রেহান অপুকে অনুযোগ করলো। ক্স কি করতে হবে বল করে দিচ্ছি। হাত তোর মতো আমার মাত্র দু’টা না চারটা। ঐ দেখ সুমনকেও নিয়ে এলাম।

অপু সুমনের দিকে ইংগিত করে রেহানকে বলল। ক্স ভালোই করেছিস আমরাও নিরপে একজন রেফারী খোজছি। সুমন ভাইই সই, তাকে রেফারীর দায়িত্বটা দিয়ে দিলাম। ক্স কি বলছিস? ওকে একবার জিজ্ঞেস করবি না, পারবে কি পারবে না? অপু বলল, কিরে পারবিতো? ক্স পারা না পারাটা বড় কথা নয় গাধা। শোন তবে এটা একটা ডে-নাইট ফুটবল ম্যাচ হবে।

সবার আলাদা আলাদা নতুন নাম থাকবে। যেমন রেহান- কইমাছ, অপু- চিংড়ি মাছ, ফয়েজ - শিং মাছ এমনি করে একটি দলের সবার নাম মাছের নামে থাকবে। অন্য দলের খেলোয়াড়দের নাম থাকবে ঠিক এরকম- বাবুল - লবণ, বাচ্ছু- তেল, ফয়সল - মরিচ, বাছিত - লাউ এভাবে মশলা ও তরকারীর নামে থাকবে তাদের নাম। এবার ঐ রেফারী সাহেব শুধু রান্নাটা সারবেন। এখানে কেউ হারবে কিঙবা জিতবে না শুধুই তরকারী রান্না হবে।

এবার লবণ একটু বেশী হলেই বা কম হলেও তা। রেহান হাসতে হাসতে এরকম বলে একটু শ্বাস নিলো ক্স তার মানে আমাকে রাধতেই হবে? সুমন জানতে চাইলো ক্স আরে ভাই না রাঁধলে চলবে কেন, এই খেলাটাইতো আসল মজা। ধারাভাষ্য দিচ্ছেন কে জানেন, প্রায়ই তাকে টিভিতে ভাষ্যকার হিসাবে আমরা দেখি চৌ. জা. শরাফত সাহেব। হলের অনেক মেয়েরা থাকবে উদ্ভোদনী সঙ্গিত গাইবে আমাদের নাইথ ইয়ারস্ ফাইনাল গোল্ড কাপটা আমদের হাতে তুরে দেবেন কে জানেন? খ্যাতনামা এ আর্টিষ্ট। রাহুল কুদ্দুস যার নাম।

যিনি একাধারে ষাট বছর ধরে রিক্সার পেছরে ছবি ঐকে যাচ্ছেন। তার বয়স বর্তমানে বাহাত্তুর চরছে। আমরা তাকে শ্রদ্ধার সাথে ফুল দিয়ে বরণ করবো তাকে আমরা নগদ বিশ হাজার টাকা ও দিচ্ছি। চাঁদা তুলে, ওটা তার মেয়ের বিয়েতে আমাদের উপহার। ক্স বেশ ভালো উদ্দ্যোগ তোমাদের।

এক কাজ করলে কেমন হয় আমি তোমাদের সাথে একট কিছু করি- রুহুল সাহেবকে বিশের জায়গায় ত্রিশ দিয়ে যাও। দশ হাজার আমিও অপু দু’জনে দিলাম। নিবোতো? ক্স তা নেবো না কেন। রেহান বলল আপনারা এসে গল্প করুন। টানতে চাইলেও পারে আমি চায়ের ব্যবস্থা করি।

সে বাহিরে বেরুল। এখন পর্যš- সব ঠিক ঠাক ভাবে চলছে সবাই নিজ নিজ কাজ ভালোই করতে পারছে। চিš-া কেবল রাতের পার্টিটা নিয়ে না জানি কতোজন হবে। সে আপন মনে গুনগুন করতে করতে মাঠের দিকে এগুতে কাথলো। কাউকে না কাউকে চা আনতে পাঠাতে হবে।

সে ভাবলো খামোকা বোকার মতো চায়ের কথাটা না বললেও পারতো। ব্যাচেলার রুমে চা টা কখনো পাওয়া যায় না এটাইতো স্বভাবিক। এখানে থাকবে সোডা-কোক- বিয়ার আর পানের বদলে সিগারেট। এখানে ব্যক্তি জবিনের স্বাদ আলাদা। সে গান ধরলো চড়া গলায় “চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙ্গেছে উছরে পড়ে আলা ও রজনী গন্ধা তোমার রূপের সুধা ঢালো চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙ্গেছে” (১৩) অফিসে বসতে তার যে খুব একটা খারাপ লাগছে তা না।

তবুও কেন জানি মনে হয় এরকম গৎ বাঁধা জবিনটা ভালো লাগছে না। একাকত্বির জ্বালা তাকে াহিনৃশ দহন করে চলছে কয়লার মত্ োজিনজেকে অসহায় ভাবতে শুরু করেছে সে আজকাল কারো অভাব বোধ তাকে বিদগ্ধ করে তুলেছে যেন। সে বাসায় উঠতে পারছে না ওকানে নিলিরা থাকছে। তবু সে ভাবলো তার একটা বাসা চাই কিছুদিনের ভেতর হল ছেড়ে দিতে হবে। এটাই নিয়ম।

সে সুমনকে কর করলো তার সাথে আরোচনা করা উচিত বাসাটার ব্যাপারে। ক্স কি খবর তোর? কেমন লাগছে ছকবাঁধা জবিনটা? সুমন জানতে চাইরো তার কাছে। ক্স খারাপ না, তবে একাকত্বিটা বড় বেশী যন্ত্রনা দায়ক রাগছে আজকাল্ যাহোজ তুই এক কাজ করনা সন্ধ্যায় তরে আসবি। তোর সাথে জরুরী একটা পরামর্শকরবো। আসবিতো? ক্স আচ্ছা আসবো।

কি ব্যাপার একটু বরে ফের চিš-াা করে রাখতে পারবো। ক্স এতো সিরিয়াস হওয়ার প্রয়োজন নেই বাপধন। আসলেই আলাপ হবে। রাখি বলে অপু সংযোগটা বিচ্ছিন্ন তার কাছে মনোযোগী হয়ে পড়লো আবার। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদদ সুমন অপুর ওখানে পৌছল।

এ রুমটাকে আমূল বদলে ফেলা হয়েছে বোধ হয়। দেয়অলের উপর থেকে নীচে কিসব চিত্রকলার ছড়াছড়ি তবে বেশ পাকা হাতে আঁকা ছবিগুরো। রেহানই ওসব করেছে ওর সুন্দর সার দেখে সুমন অনুমান করতে পারলোতা। কবি মাইকেল মধুসুদন দত্তের কবিতার কয়েকটি লাইন ও রেখা আছে বিছানার ডান দিক বরা বর। বিছানায় শুয়ে পাশ ফিরলেই লেখাগুলো চোখে পড়বে যে কারো।

সুমন ওসব খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে তখনি অপুর ভরাট গলায় ডেকে উঠলো ক্স কিরে তুই তাহলে এসে পড়েছিস। সেই কবে থেকে অপো করছি, আজকের সন্ধ্যাটাও যেন বেশ দেরী করে এসেছে। ক্স সূর্যী মামা বোধ হয় মতিঝিলের ট্রাফিকজ্যামে আটকা পড়েছিলেন। সুমনের রসিকতা শুনে অপু হাসতে হাসতে বলল- হতেও পারে। ক্স কি পরামর্শ করবি বলেছিলি না? কি ব্যাপার বলতো? সুমন নড়ে চড়ে বসল।

চা আনতে রেহান সেই কবে বেরুল এখনো আসছে না যে। চা টা খেয়ে নেই পরে আলাপ করবো এব্যাপারে। আজ পূর্ণীমা জানিস্ তো? পূর্ণীমার আলোতে শেষ বারের মতো বকুলতলায় জমিয়ে সানঝু টানবো তিনজন মিলে। ক্স শেষবার বলতে কি বুঝাতে চাচ্ছিস্ বলতো? তুই হরের দখর ছাড়রে কি আর এখানে আসতে পারবি না। এরকম বিদঘুটে আইন তৈরী হয়েছে নাকি? সুমন সহাস্যে অপুর কাছে জানতে চাইল।

ক্স তা হবে কেন। আমি এবং তুই ইচ্ছে করলেই চলে আসতে পারবো যত ঝামেলা সবই রেহানকে নিয়েই। ও গ্রামে ফিরে যাচ্ছে। বললাম ঢাকাতেই থাক কিছু একটা ম্যানেজ হয়ে যাবে। বলে কিনা- “তোর মতো চাঁনকপালী সবাই নয় অপু, তোর যা হয়েছে সে রকমটা আরও হবে তা কি বলা যায় নিশ্চিত করে।

” ক্স তারমানে কি দাড়ালো, তোর নয় বছরের একান্ড সঙ্গিটি তোকে ফেলে চলে যাচ্ছে। তোর যত ভাবনা তাকে নিয়ে তাইনা? ভাবিস না সব ঠিক হয়ে যাবে। ও আসক দেখি ব্যাটার মাঝার জোর কতটুকু হয়েছে। বল এবার কি ব্যাপারে পরামর্শ করতে হবে। ক্স মরুছায়া হচ্ছে আজকের বিষয়।

নিলিরা কিক্ষাসাটা ছাড়তে পারবে কিছুদিনের ভেতর? অবশ্য তাদের কে যে কিভাবে বাসাটা ছাড়তে বলবো ভেবেই পাচ্ছিনা। তুইই কাজটা করে দেয়। এছাড়া আমার গত্যš-র নেই দশ দিনের ভেতর হলটাও ছাড়তে হবে। ক্স ওরা চলে যাবে দু’দিন পরই। ওদেরকে গত মাসেই বলা হয়ে গেছে।

নীতুই করেছে ওসব। এক কাজ কর তুই একা একা থাকার চেয়ে বরং রেহানকে সাথে নিয়ে নে। আপতত দুজন এক সাথেই থাকলি। ক্স নীতুকে ধন্যবাদটা পৌছে দিস সুমন ওর মতো মেয়েরা যে এতটুকু ভাবতে পারে জানা ছিলোনা। তবে ওদের সিক্সসেনথটা বেশ প্রবল এটা জানতার।

হয়ত এটা তারই প্রমাণ। রেহান শিস দিতে দিতে রুমে ঢুকলো। অনেক ঝামেলা করে তবে এলাম বুঝেছিস। ছেলেরা ধরে বসল একটা গান গগেয়ে শুনাতে হবে। জুনিয়রদের ওমন শেষ আবদারটুকু ফেলতে পারলাম না ফাক্সটাকে তবলা বানিয়ে হেড়ে গলায় শুনিয়ে দিলাম দুটো গান।

তা কি খবর আপনার সুমন ভাই? বেশ লাগছে আপনাকে। পুরোদস্তুর বিজনেস্ ম্যান হয়ে গেছেন দেখছি? সেই কবে এসেছিলেন আর আজ ক্স সময়ই পাইনারে ভাই। ওসব বিজনেস টিজনিস মাথায়ই ঢুকেনা। আমার বাউন্ডলে থাকতেই বেশ ভালোছিলো। ক্স নিন চা টা শেষ করুন।

রেহান অপু ও সুমনকে চা বাড়িয়ে দিলো নিজেও নিল। ক্স তা অপু বলছিলো তুমি গ্রামে ফিরে যাচ্ছে। সত্যি নাকি? ক্স কি করবো বলুন, এখানে যে কাজ টুকু পাই তা কি পুরো মাস থাকবে। একমাস থাকে তো ছ’মাস কিছুই নেই। তার চেয়ে বরং গ্রামে চলে যাই।

মাস কাভারী একটা চাকুরী করবো অবসরে ছবি আঁকবো। মা ছেলের ছোট সংসার বেশ চলে যাবে। ক্স চাকরীতো তোর জন্য অপো করে আছে। অপু রেগে গেলো রেহানের উপর। কত বলছি ঢাকায় থাক এভানে সব জোগাড় করা যাবে।

আরে কোন একটা প্রাইভেট টিউশনী করলেওতো হাজার দুই টাকা পারিব। পত্রিকার কাজ, ডিজাইন কত কাজ পড়ে আছে। একটা রা¯-া বের হবেই, শুনবি না। যা তোর যা ইচ্ছে কর। ক্স শোন রেহান তুমি এক কাজ করো, অপুর সাথে ওর বাসাতেই থাকে।

দ্বিতল বাসা মানুষ বলতে শুধু অপুই থাকবে। ও বিয়ে শাদী করলেও নীচতলাটা তারজন্যে যথেষ্ট বলেই মনে হচ্ছে। তু’তলায় তুমি থাকবে তোমার মাকেও আনিয়ে নিও। তোমার যখন ভালো চাকরী হবে তখন থেকে বাসাটা ভাড়া না হয় নিয়ে নিলে। আপাতত দু’বন্ধু একসাথে থাকো।

কথা দিচ্ছি তোমার চাকরটিা আমি দেখবো। ক্স সুমনের কথা কেড়ে নিয়ে অপু বলল তা উনি মেনে নেবেন না। শালা কত জ্বর নিয়ে রাত বিরাতে কুঁকাতো। কে তোকে মাথায় পানি দিয়েছিলো ভুরে গেছিস? পুরো দু’সপ্তাহ চিকেনফক্সে আক্রাš- হয়ে বিছানায় ছিলি, আমি কি তোকে ফেলে কোথাও ডেটিং করতে গিয়েছিলাম নাকি? শালা হারামী- যেতে চাস চলে যা তোকে আর বাধা দেবো না। গিয়ে রক্সার পেছনের কুমড়ো নায়িকাদের ছবি এঁকে এঁকে বাকী জীবনটা কাটিয়ে দেয়।

ক্স আমাকে একটু ভাবতে দেয় অপু। আমি বলেছি চলে যাবো এখনো চলে যাইনি এতো ভেঙ্গে পড়রে চলবে না। চল বকুলতলায় যাই। রেহান অপুর হাতটা ধরল- চলুন সুমন ভাই পূর্ণীমার আলো রাতের অন্ধকারকে ¤ান করে দিয়েছে। এমন পূর্ণীমা ইহজন্মে আমি আগে দেখিনি।

নব যৌবনা চাঁদ যেন তার আলোকে রাঙ্গিয়ে তুলেছে পৃথিবীটাকে। তারা তিনজন বকুল তলায় এসে দেখলো ওখানে বেশ আড্ডা জমে আছে। তারা হাটতে থাকলো সামনের দিকে। তাদের পুরোনো আড্ডার স্থল গাছটার পাতার ফাঁক ফোঁকর গলিয়ে চাঁদের সিগ্ধ আলো মাটিতে পড়ছে। এমন পূর্ণীমার আলোতে কেবল মাতাল হওয়া যায়, উন্মুত্ততায় উপড়ে ফেলা যায় নিজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা শত গানী, শত পাপবোধ।

নিজের অ¯ি-ত্ত্বের প্রতিমাকে ভেঙ্গে চুরে আবার গড়ে তোলা যায় স্বমহিমায়। সুমন ও অপু কল্কি সাজাতে বসল রেহান গান ধরেছে চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙ্গেছে উপছে পড়ে আলো ও রজনী গন্ধা তোমার রূপের সুধা ঢালো” সে গেয়ে চলছে কাšি-হীন অপু তাকে কল্কিটা ঘুরিয়ে পাঠাল। নে- একটা দম দে তারপর রবীন্দ্রনাথকে বিদেয় কর। নচিকেতাকে নিমন্ত্রন করতে পারিস। এমন জোছনা নচিকেতা দেখেনি তার জনমে দিব্যি কেটে বলতে পারি।

রেহান গান গাইতে শুরু করলো। “হাজার কবিতা বেকার সবিই তা তার কথা কেউ বলে না সে প্রথম প্রেম আমার নীলাঞ্জনা সে প্রথম প্রেম আমার নীলাঞ্জনা। ” অপু রেহানকে বলে রাখলো আজ বাসার জন্য যা যা প্রয়োজন যেন কিনে রাখে। নীতু আসবে আজই নীতু ও রেহান দু’জন মার্কেটে যাবে প্রয়োজনীয় সব কিছু তারা কিনে ফেলবে। কোত্থেকে নীতু একটি কাজের ছেলেও জোগাড় করে ফেলেছে।

ওদের বাসার বোয়ার বোন এসে রান্না বান্না করে দেবে আপাতত। দারোয়ান জোগাড় হয়ে আছে সেই প্রথম থেকেই। ষ্টীল মিলের বাতেন দারোয়ানের চাকরীটা পেয়ে বেশ খুশী বরা যায়। থাকা খাওয়া বাদে মাসে তিন হাজার টাকা পাবে। ওর মাকে নিয়ে ও থাকতে পারবে।

ওর জন্য দু’রুমের একটা ঘরও আছে। বেশ খুশী মনে সে তার ডিউটি করে যাচ্ছে। অপু বাসার সব মালপত্র কিনা শেষ করলেই ও কোন এক শুক্রবারে গিয়ে তার মাকে নিয়ে আসবে। রেহান বাসায় বসে একটা ছবি নিয়ে কাজ করছে তার ভাবনা হচ্ছে নীতু এখনো কেন আসছে না। অপুর কথামতোতো নীতু এগারোটা বাজার আগেই পৌছে যাবার কথা।

সে কাজের ছেলেটাকে ডেকে চা দিতে বলল। ছেলেটা বেশ ভালো চা বানাতে পারে। সে রান্নাও করতে পারে তবে অপু কিংবা রেহান কেউই চায়না ছেলেটা রান্না করুন। দশ বারো বছরের ছেলে তাদেরকে রান্না করে খাওয়াবে তা তারা মেনে নিতে পারে না। সে চা য়ে চুমুক দিতে দিতে কি কি কিনতে হবে একটা লিষ্ট করে নিলো।

অপুর জন্য একটা অ্যালার্ম কক কিনতে হবে ও বলে দিয়েছে। এটা সে প্রথমেই লিখেনিলো- একটা ফ্রিজ, দুটো বেড, চাঁদর, বালিশ, সোফা, খাবার টেবিল চেয়ার, বাসান কোসন একটা কালার টিভি একটা ফোন সেট ব্যাস এ পর্যš- তার মনে আসলো। বাকী যা যা কিনতে হবে নীতু নিজেই বেছে বেছে নেবে। অপুর দেয়া টাকাগুলো রেহানগুনে দেখলো পুরো ষাট হাজার টাকা সে দিয়ে গেছে। সে ঠিক করলো নীতুকে সে টাকা গুলো দিয়ে লিষ্টটা ধরিয়ে দেবে।

নীতু তার পছন্দমতো সব কিনে নিবে। ওসব ঘর সাজানোর প্যাপারে মেয়েরা বরাবরই এক্সপার্ট সে কাঁচা বাজারের লিষ্ট করতে বসল। ছেলেটাকে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করলেই সব ঝামেলা চুকে যাবে। সে তাকে ডাকলো। বলোতো কি কিি কিনতে হবে।

রান্না বান্নার খরছ পাতি লবণ থেকে শুরু করো। ছেলেটা বলতে থাকলো লবণ, মরিছ, হলুদ, আদা, রসুন, বিভিন্ন ধরণের তরকারী, তেল, মাছ, মাংস, জিরা, গরম মসলা। সে লিখে নিলো সবই। এবার কোনটা কি পরিমান কিনতে হবে বলো- লবণ কতটুকু বিনবো ছেলেটা একে একে সব বলে গেল্ োসে আরো এককাপ চা দিতে বলল ছেলেটাকে। পুরনো খবরের একটা কাগজ নিয়ে খুটিয়ে পড়তে লাগলো।

নীতু আসবে এুণী ওর মন বলছে ও এসে পড়বে সে ছেলেটাকে ডেকে দু’কাপ চা বানাতে বলল, সাথে বিস্কুট দিতে বলল। মেহমান আসছে তোর সাহেবের বোন কাপ বালো করে গরম পারিতে ধোাঁয়ে নিস তা না হলে খবর আছে। সে গেট খোলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে বাহিরে দিকে তাকালো নীতুর গাড়ীটা ঢুকছে। সে তাড়াতাড়ি চা দিতে বলল। ক্স চলুন বেরিয়ে পড়া যাক।

তালিকা করেছেন নাকি কি কি কিনবেন? নীতু তাকে বলল। ক্স বসুন, চা খেয়েই বেরুবো। এই নিন আমার মাথায় শুধু এগুলো এসেছে বাকী যা থাকে আপনি ম্যানেজ করে নিন। ক্স একী! এখানে স্ট্রে টাইতো লেখা নেই। গাড়ীতে কার্পেট কিনে এনেছি স্ট্রে না থাকলে অপুভাই ছাই দিয়েতো ওটার সর্বনাশ করে ফেলবে।

ক্স এই একটি জিনিষ আমার মাথায়ই আসেনি আর আপনি ঝট করে তা বুঝে নিলেন। সাথে কি লোকে বলে “নারী না থাকলে পৃথিবী পূর্ণতা পাবে না। ” ক্স তাই নাকি? নিন টাকাটা আপনার পকেটেই রাখুন। আমি পছন্দ করবো টাকাটা আপনিই দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। টাকটা আমার হাতে দিতে হলে লোকে আপনার দিকে বাঁকা চোখে তাকাবে।

ধরে নেবে আমি পৃথিবীর নামজাদা জলাদ বউদের একজন। আমি কিন্তু মোটেই সেরকম না। ক্স বাতেন কে ডেকে বলুন মতি মিয়াকে নিয়ে কার্পেটটা নামিয়ে আনতে হবে ভ্যান থেকে। এটা এ রুমের সাথে বেম মানাবে পুরো কামরাটা আমি নীলাভ করে তুলবো। আজকের সোফাটাও কিনবো নীল।

আপনি নীল পছন্দ করেনতো? নীতু জানতে চাইলো। ক্স অবশ্যই। সব শিল্পিদের কাছে নীল রংটা বেশ প্রিয়। নীল উদারতার প্রতিক, বেদনার প্রতিক, বিশালতার প্রতিক। অপুর প্রিয় একটা রং হচ্ছে নীল।

চা এসে গেছে। নিন, শুরু করুন আমি বাতেনকে বলে আসছি। অনেক সুখের মাঝেও লুকিয়ে থাকে একটু বেদনা বিষাদ। হারিয়ে যাওয়া অতীত বড় বেশী আচ্ছন্ন করে ফেলে আমাদের। অতীত সুখ স্মৃতিগুলো হৃদয়ের গহীন সিন্দুকে তালদদ্ধ করে রাখে তাতে মরীচা পড়ে একদিন সিন্দুকের সাথে সাথে সুখস্মৃতিগুলোও হারিয়ে যায় কিন্তু তার ঠিক উল্টোটা ঘটে বেদনার্ত বিষাদ স্মৃতি গুলোর েেত্র।

তা কেবলই হাতছানী দয়ে আমাদের। বড়বেশী আনমনা করে তুলে আমাদের চলমান দিনগুলোকে। আমরা আহত পারিখর মতো খাঁচার ভেতর আপন ডানা জাপ্টাতে ঝাপ্টাতে কাš- হয়ে পড়ি এক সময়। জীবনের চলমান এ খেলায় আমরা কেবলই এক একজন আহত তীর বিদ্ধ হরিণ শাবক্ তীব্র বিষক্রিয়া আমাদের গ্রাস করে চলছে আর আমরা কেবল বেঁচে থাকার জন্য প্রাণপণ চেস্টা করে যাচ্ছি। যে বিন্দু থেকে জীবনের শুরু সেই বিন্দুতেই জীবনের পরি সমাপ্তি ঘটে।

আমরা আহত হই আক্রাš- হই আবার আমরা সাজিয়ে তুলি আমাদের জীবনের ঢালি। এইতো জীবন! পড়š- বিকালে আসন্ন সন্ধ্যাকাশে তাকিয়ে এসব ছাইপাশ ভাবছিলো রেহান। কেন এমন ঘটে যায় বার বার। জীবনের খাতায় এককালে গভীর মমতায় লিখাছিলেঅ রাবেয়ার নাম। কালের স্রোতে ও হারিয়েছে অবেলায়।

পুরো সত্ত্বা জোড়ে যার ভাবনা বিকশিত ছিলো মাকড়শার জালের মতো করে তাকে হারিয়ে বালোবাসার মানেটাই বদলে গিয়েছিলেঅ আমার কাছে, তবে কেন নিষ্ঠুর নিয়তি আমাকে আবারো আহবান করছে ভালোবাসার চড়-ইভাতি খেলায়। হায়রে হৃদয় আমার তোমার অবস্থান তুমিই বুঝে উঠতে পারো না কোন কোন সময়। সে ভাবছে সে কি তাহলে নীতুকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে অবশ্য নীতু তার বেশ ভালো একজন বন্ধু হয়ে উঠেছে ধীরে ধীরে। ক্স কি খবর রেহান কি ভাবছিস্? অপুর কথা শুনে হকচকিয়ে গেলো সে। ক্স বাবছি পড়š- বিকাল আর দূরš- অতীত দুটোই।

কন ফিরলি? রেহান ভাব লেশহীন ভাবে জানতে চাইলো। ক্স এইতো কিছুণ, চল চা খেয়ে কোথাও বেড়িয়ে আসি। যাবি? ক্স কোথায় যাবি? হলের বকুলতলা ছাড়া এ নেশাধরা সন্ধ্যায় যাবার মতো জায়গা আছে নাকি? ক্স ময়মনসিং যাবো আমার এক মাওলানা চাচা ওকানে আছেন, ইমাম সাহেব। তাকে দেখে আসবো মায়ের ও নানীর কবরটাও দেখে আসবো। আমি ভাবছি চাচাকে এভানে নিয়ে আসবো।

তাকে বলে আসতে হবে যেন তিনি তল্পিতল্পা গুছাতে শুরু কনে। তা তুই খালা কে নিয়ে আয়না। এতবড় একটা বাসা অথচ কত নীরবতা ঘিরে থাকে সব সময়। লোকজন না থাকলে জীবনকে উপভোগ করা যায়ন্ াতোর চাকরী হয়েছে এবার তাকে আনতে কি অসুবিধা আমি বুঝতে পারছি না। ক্স বললেইতো আর আনা যায়না।

গ্রামের জায়গা জমির ঝামেলা মিটিয়ে তবে না আসবেন। বলেছেন সপ্তাহ দু'য়েক পরে বাড়ী যেতে হয়ত তখন নিয়ে আসবো। চল উঠে পড়া যাক। মাওলানা সাহেবকে আমার দেখতে খুব ইচ্ছে ছিলো আজ তা পূর্ণ হবে। চল্ চল্- সে দাড়িয়ে পড়ল এখনই রওয়ানা হবে ময়মনসিং এর উদ্দেশ্যে।

ক্স মাকে নিয়ে এলে আমাদের সময়টা বেশ ভালোই কাটবে। কি বলিস? মার সাথে পাশের বাড়ীগুলোর জম জমাট ভাব জমে উঠবে, তাা আসা যাওয়া করবেন আমরা আবারও বেশ পারিবারিক হয়ে উঠবো। হেসে হেসে অনেকটা কৌতুকের মতো করে কথাগুলো বলল রেহান। ক্স কথাটা তুই মিথ্যে বলিসনি। আসলে কি জানিস আমার কোন বাড়ী ছিলোনা যখন তখন প্রায়ই আমি স্বপ্ন দেখতাম বিশাল বাংলো ধাঁচের বাড়ী থাকবে আমার।

প্রচুর লোকজন যাওয়াত করে সারা দিনমান চা পানের আড্ড চলবে লোকজন নিজের সুখ দুঃখ গুলো বলে বেড়াবে। পাশের বাড়ীর ভদ্রমহিলা তার বউয়ের ব্যাপারে কান মন্ত্রনা দেবেন। মাঝে মধ্যে তুমুল ঝগড়া বাঁধবে বিড়াল ছানাটাকে েিয়। আমার স্বপ্নগুলো ধাপে ধাপে পূর্ণ হতে চলেছে রেহান। আমি আশাবাদী স্বাপ্নগুলো একদিন পূর্ণতা পাবেই।

ক্স স্বপ্ন যখন দেখেছিস বলেই ফেরলি কখন বলনা ঐ দুষ্টু স্বপ্ন গুলোর ফাঁকে ফাঁকে কাউকে কি স্বপ্ন দেখিয়েছিস কিংবা কেউ কি স্বপ্ন দেখছে তোকে নিয়ে? রেহান সিরিয়াস ভাবে কথাটা বলে অপুর দিকে তাকিয়ে আছে। ক্স ইচ্ছেতো ছিলো এরকম স্বপ্ন দেখবো কিন্তু এ পোড়া কপালে স্বপ্নের রাণীরা কখনও স্পর্শ দিয়েও দেখেনি কোন দিন। যাকে নিয়ে একটু আধটু ভাবতার সেও যেন হাত ফসকে ঠিকই বেরিয়ে যেত কোন এক সময়। জানানোর সুযোগ কিঙবা সময় কখনও হয়ে উঠেনি কোন দিন। ভয় যে খানিকটা ছিলো না তা বলা যায় না।

ভাবতাম পিতৃ পরিচয়হীন একজন কে কিভাবে মেনে নেবে এ সমাজেরই একটি মেয়ে। নাম গোত্রহীন, চালচুলোহীন এই আমি ভয়ে সিটকে থাকতাম আমাতেই কখনও সাহস করে বলতে পারিনি তোমাকে হ্যা শ্রেফ তেমাকেই আমি ভালোবাসি। ক্স ভুল করেছিস, চাল চুরোহনি গোত্রহীন ওসব এখন আর কোন সাবজেক্ট না। ভালোবাসার জন্য ওসব ছাইপাশের কোন মানদন্ড নেই। ভালোবাসার জন্য ভালো একটা মন পরিশুদ্ধ হৃদয় এটা দুটোই কেবল বিবেচ্য বিষয়।

তা যা হবার হয়েছে এখন তো তোর মান সম্মান, প্রভাব-প্রতিপত্তি সবই আছে এখন একটা কিছু কর। এভাবে আর কতকাল থাকবি বাপধন। বুয়ার হাতের রান্না আর কতকাল ভণ করবি বলত্ ো ক্স চাচাকে নিয়ে আমি তারপর তুই খালাকে আনতে যাবি। তারা দুজন এলে ঘরটা সাজিয়ে নেবেন। ধীরে ধীরে সব হবে।

এতো তাড়াহুড়া করা প্রয়োজন দেখছিনা। ক্স তা তুই কি বলবি নিলিকে তোর কেমন লাগছে। আজকাল তো বেশ জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিস তোরা। তোর মতি নব্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা সন্ধ্যের স্নিগ্ধ আলোতে টি.এস.টি চত্বরে একা একা একজন সুন্দরীর সাথে আড্ড ওসব কিভাবে ব্যাখ্যা করবি? রেহান বেশ নাটকীয় ভাবে কথাগুলো বলে অপুর দিকে মুখটা ঘরিয়ে হাসতে থাকলো। অপু ভাবছে তাহলে ও সবই জেনে ফেলেছে নাকি।

আড্ডাতো তারা প্রায়ই দিয়ে থাকে ও দিনের ব্যাপারটা আলাদা। ভীষন অন্য রকম দিনছিলো ওটা। ি প্রথম কোন মেয়ের সাথে এতো ঘনিষ্ঠ আড্ডা তার জীবনে। নিলি তাকে বলেছিলো সুমনের সাথে তার ঘটে যাওয়া অতীতের কথা তাদের পারস্পরিক আš-রিকতার কথা, তাদের কপথ বদলে যাওয়ার কথঅ। অকপটে বলে যাওয়া কথাগুরো অপুকে আশান্বিত করেছিল।

ক্স কিরে ব্যাখ্যাটা কি? রেহান আবারো জানতে চাইলো। ক্স কোন ব্যাখ্যাটেখ্যা নেই সোজা সাপ্টা বাংলায় বলা যায় আমি যেন কোথাও ডুবে যাচ্ছি। কারো কোমল স্পর্শ আমাকে জাগিয়ে তোরে গভীর রাতে। চোখ খুলে প্রবল অন্ধকার ছাড়া তখন কিছুই দেখা যায় না। অফিসে কাজের ফাঁকে ফাঁকে ফাইলের কঠিন হিসাবের মাঝে কখনও কখনও ভেসে উঠে কারো মায়াবী মুখ।

আমাকে আহবান করে তালিয়ে যেতে। ক্স রাখ রাখ আর বলতে হবে না এটুকুই যথেষ্ট শুধু বল কে সেই মায়াবী মুখের অধিকারীনি নিশ্চয়ই নিলি। অপু কোন কথা না বলে সোজা সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। সামনের ট্রাকটা সাইড দিতে চাচ্ছে না। সে চেষ্টা করতে থাকলো এবং ওভারটেকও করলো এক সময়।

তারপর মিনিট দুয়েকপর একটা মোড় পেরিয়ে বায়ে মোড় নিলো। তারার মতো জ্বলজ্বল করে জোনাকীরা পাশের ছোট গাছ গাছড়ার মাঝে উড়াউড়ি করছে। গাড়ীটা মেঠোপথ ধরে এগিয়ে চলতে চলতে একসময় একটা মসজিদের সামনে এসে থামলো। রেহান বুঝতে পারছে এখান মাওলানা সাহেবের খোজ পাওয়া যাবে তাকে গাড়ী থেকে নাকতে বলে নিজে নেমে পড়লো। দু’জনে সামনে এগিয়ে গিয়ে একটি গোরস্থান মতো জায়গায় থাকলো অপু জুতাটা খোলে হাতে নিয়ে গোরস্থানের একটি কবরের পাশে এসে থামলো এবং রেহানকে বলল এটা আমার মায়ের কবর আর ঐ যে পূর্বদিকে কবরটা দেখছিস ওটা আমার নানীর।

ভাবছি ওগুলো পাকাকরে দেবো। এই যে টিনের নাম ফলকটা দেখছিস ওটা পাল্টে খোদাই করে নতুন একটা নাম ফলক লাগিয়ে নেবো। চল তোকে বচাচার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। পরে এসে জিয়ারতটা সেরে নেবো। ক্স জিয়ারত করে নে এখনই।

আমিও করে নেবো তোর সাথে সাথে। একথা বলে রেহান তার জুতার ফিতে গুলো আলগা করে নিয়ে জুতা খোলে গোরস্থানের ভেতরে দাড়ানো অপুর পাশে চলেএলো। দুজনে জিয়ারত সেরে নিলো এবং কোন কথা না বলে গোরস্থান থেকে মাথানীচু করে বেরিয়ে এলো। গেইটটা পেরিয়ে অপু একটা কামরার দিকে এগুতে থাকলো তাকে অনুসরণ করে রেহান এগুেেত থাকল্ োসামনেই মাওলানা সাহেবের কামরা। ঝক ঝকে পরিস্কার করা উঠোন দেখেই বুঝা যাচ্ছে বেশ যতœঅত্তি করা হয় জায়গাটার।

পাশেই মসজিদ ওটাতে নতুন চুনকাম করা হয়েছে, নীচে কোথাও কোথাও নুচ ড়ে আছে। অপু মাওলানা সাহেবের কামরায় ঢুকে সালাম করলো তার দেখাদেখি রেহনাও। মাওলানা সাহেব তার ভারী চশমা পরতে পরতে সালামের প্রত্তির দিলেন। যখন অপুকে দেখলেন ঝটপট বিছানা ছেড়ে উঠে বসলেন বলতে থাকলেন ক্স বসো বাবা বসো, তা কি মনে করে এতরাতে এসেছ? সঙ্গিটি তোমার বন্ধু নিশ্চয়ই। ক্স এমনি চাচা, আমরা দু’জন এক জায়গায়ই থাকি।

সন্ধ্যায় বাসায় বসে আলাপ করে সোজা এখানে চলে আসলাম। মা-নানীর কবর জিয়ারত করে নিলাম দু’জনে। ও রেহান আমার বন্ধু। ক্স বেশ ভালো করেছ বাবা। আমারও তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছিলো।

তা তোমার রেজাল্ট বেরিয়েছে নাকি? ক্স হ্যা চাচা আমি পাশ করেছি। হাসান চাচার কথা আপনাকে বলেছিলাম মনে আছে তো তিনি আমার রেজাল্ট বেরুনোর পর একটা ষ্ঠীল মিল ও একটা দ্বীতল বাড়ী আমার নামে লিখে দিয়েছেন। নিতে চাইনি কিন্তু তিনি পিতার মতো আমাকে বড় করেছেন মানুষ করেছেন এসব বলে কেঁদে ফেললেন। আমাকে নিতে হলো শেষ পর্যš-। অবশ্য আমি তাকে আমার বাবার মতোই জানি।

ক্স এটা তুমি ভালোই করেছ বাবা ওটা তার স্নেহের বর্হিপ্রকাশ। তিনি খুশী হয়ে তোমাকে কিছুদিলে তুমি নেবে না কেন হাজার তোজ তিনি তোমার পালক পিতা। তার স্বস্নেহ মাখা হাত তোমার মাথায় না থাকলে আজ তুমি কোথায় বথাকতে আমি ভাবতেই শিউরে উঠি। ফাক্সে চা আছে, ঢেকেল নাও সবাই মিলে চা খাই। তা বাবা আপনি কি করেন পাশ করে বেরিয়েছেন অবশ্যই।

তিনি রেহানের উদ্দেশ্যে প্রশ্নটা করে উত্তরের অপো করতে থাকলেন। ক্স রেহান বলল- একটা ফার্মে চাকরী করছি চাচা। ওটা আমার বন্ধুর বাবার কোম্পানী। অপুর বাবাও বলা যায়। আমি আপনর সব কথা অপুর কাছ থেকে জেনেছি।

ও প্রায় আপনার কথা বলে। চাচা চলুন না আপনিও আমাদের সাথে থাকবেন। এতবড় বাসায় থাকি অথচ আমরা দু’জন আর দারোয়ান বুয়া ও কাজের ছেলে। আমার মাকেও নিয়ে আসবো শীঘ্রই। যদি আপনি আমাদের সাথে থাকেন বেশ ভালো লাগবে।

ক্স সত্যি বলতে কি চাচা এজন্য আমি এখানে এসেছ্ িআমি চাইনা আপনি এখানে একা একা থাকেন। নানীর চিঠিতে লেখাছিলো আপনার সেবা যতœ যেন করি আমি সেটা আমাকে করতে দেবেন নিশ্চয়ই। রেহানের কথা কেড়ে নিয়ে অপু বলল। ক্স মাওলানা সাহেব বেশ চিšি-ত ভাব নিয়ে বললেন বাব এই মসজিদ তোমার মা-নানীর কবর এগুলোর প্রতি আমার ভীষন মায়া ধরে আছে। তবে তোমার প্রাপ্য থেকে আমি তোমাকে বঞ্চিত করতে চাইনা।

আমারও এ বয়সে আর ইমামতি করতে শরিরটা মানতে চায়না। তুমি আমাকে সময় দাও একজন যোগ্য ইমাম সাহে কে পেলেই তোমার কাছে নিশ্চিšে- চলে আসবো। ক্স সময় আপনি পাবেন সপ্তাহ দু'য়েক এর ভেতর সব চুকিয়ে ফেলুন, আমি আপনাকে নিতে আসবো। সেদিন কোন কথা বলবেন না পিজ। ক্স ঠিক আছে বাবা টিক আছে আমি কালই পঞ্চায়েত কমিটিকে জানিয়ে দেবো।

ক্স রেহান দাড়িয়ে বলল তাহেলে চাচা আজ আমরা আসি আবার আপনাকে নিতে আসবো। সালাম জানিয়ে তারা বেরিয়ে পড়লো। (১৪) নীতুর কাছে মাঝে মাঝে কেমন অবাক লাগছে রেহানের অথাবার্তা। মাঝে মাঝে ওর কথাবার্তা কেমন জানি হয়ে যায়। এইতো গতকাল ও বলল “নীতু স্বপ্নের সাথে বা¯-বের কখনও কি কোন মিল হয়, হয়না কারণ স্বপ্নে আমরা চোখ বুঝে থাকি আর বা¯-বে চোখ মুখ শক্ত করে সংগ্রাম করতে হয়।

” কি মানে কথাটার নতিু বুঝে উঠতে পারেনি আজও। তবে নীতু বেশ ভালো করে বুঝতে পারছে রেহান বেশ বালো ছেলে। ওর চাকরীর আবেদন পত্রে গ্রামের বাড়ীর টিকানা দেয়া ছিলো। নীতু মতি মিয়ার গ্রামের নামের সাথে মিল দেখে মতি মিয়ার কাছে রেহানদের পরিবারের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলো। মতি মিয়া জানালো রেহানের বাবা বিদেশের কোন একটা ইউনিভার্সিটিতে চাকরী করতেন।

গ্রামের সবাই তাকে প্রফেসার সাহেব বলতো। তার গ্রামে প্রফেসর বাড়ী বললে যে বাড়ীটা লোকে বুঝায় ওটা রেহানদের বাড়ী প্রফেসর সাহেব মারাযান সাইপ্রাস থেকে ফেরার পথে বিমাান দূর্ঘটনায়। তার একমাত্র ছেলে ঢাকায় পড়াশ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।