আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাগুর প্রকারভেদ

লাল তরঙ্গ, লাল বিপ্লবের বার্তা বয়ে আনে

বঙ্গীয় ছাগল সমাজের তৃতীয় প্লেনাম। কমরেড সম্পাদক বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করছেন উপস্থিত সাধারণ কমরেড ছাগলদের মধ্যে। তিনি পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা ও সমাজতন্ত্রের বৈশিষ্ট বর্ননা করলেন প্রথমে। তার পর সাম্রাজ্যবাদ, বাজার অর্থনীতি, যুদ্ধ, মানবিক সঙ্কট, কর্পোরেট সংস্কৃতির ইত্যাদির উপর সমাজতান্ত্রিক ছাগ পার্টির এক বছরের সর্বাত্মক বিপ্লবী কর্মসূচি, আন্দোলন, সাফল্য ও সম্ভাবনা নিয়ে নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দিলেন। এরপর তিনি সম্প্রসারণবাদ অংশে পৌছলেন।

অত্যন্ত উদ্বেগাকুল হয়ে, দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তিনি একটি অশ্লীল গালি উচ্চারণ করিলেন-বানচোত। উচ্চ আওয়াজের গালিখানা সবেগে তার মুখ থেকে নিঃসৃত হয়ে বিশাল মিলনায়তনের চার দেয়ালের মধ্যে আরো বেশি জোরদার হয়ে প্রতিধ্বনিত হতে শুরু করলো। সাধারন কমরেড ছাগলবৃন্দ গগণবিধারী চিৎকার দিয়ে বলতে লাগল- সমাজতান্ত্রিক ছাগ পার্টি, সমাজতান্ত্রিক ছাগ পার্টি, জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ। বিপ্লব, বিপ্লব! ছাগল সমাজের বিপ্লব! দোহারীগণ নিয়ম মতো বেশ কিছু স্লোগান উচ্চারণ শেষে কমরেড সম্পাদকের প্রবল বেগে নাড়ানো হাতের নির্দেশ প্রতিপালন করার স্বার্থে আবারো মিলনায়তন জুড়ে পিনপতন নিরবতার আমদানি করল। সম্পাদক মশাই আগের উচ্চারিত শব্দটি আরেকটি শব্দযোগ করে আবারো উচচারণ করলেন-বানচোত মানুষ।

তারপর দুই হাত শূণ্যে ছুড়ে দিয়ে বললেন-আমাদের ছাগলের সমাজের উপর মানুষের আক্রমণ প্রবলতর হয়েছে। প্রাকৃতিক বিবর্তনের ধুয়া তুলে তারা ছাগল সমাজকে আদিম সমাজ থেকেই কোন ঠাসা করে রেখেছিল। ছাগলের বন্ধু অন্য সব চার পেয়ে প্রাণীর বিরুদ্ধে তারা প্রতি নিয়ত গণহত্যা, জেনোসাইড সংঘটিত করছে। তিনি প্রাণীসংঘের সাম্প্রতিক সমীক্ষা পত্র ঘেটে দেখালেন প্রতিদিন ৫ লাখ গরুকেই ঠান্ডা মাথায় জবাই করে হত্যা করা হচ্ছে। নারী গরুদের উপর যৌন নিপীড়ন করে তাদের স্পর্শ কাতর অঙ্গের উপর সহিংসতা করা হচ্ছে।

তাদের স্তন থেকে জোরপূর্বক দুধ দোয়ানো হচ্ছে। মিলনায়তনটিতে পিনপতন নিরবতা বিরাজমান থাকলেও কমরেড ছাগলদের চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করল। তারা এতই ক্রোধান্বিত হয়ে গেলেন যে, সবাই দুই পায়ে শূণ্যে তুলে দিল। কমরেড সম্পাদক জলদ গম্ভীর কণ্ঠে বলে যাচ্ছিলেন, কমরেড! খুনী, লুম্পেন, অসভ্যতা বিরোধী বানচোত মানব সমাজের আগ্রাসন আজ ছাগল সমাজেও সম্প্রসারিত হয়েছে। তাদের সম্প্রসারণবাদী কর্মকান্ডের ফলে ছাগল সমাজের সামাজিক সম্মান, আধিপত্য, রীতি-নীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও প্রগতি চরম হুমকিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

তিনি বলতে লাগলেন-আজ আমাদের দাড়ির সংস্কৃতি সব মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। চ্যাংড়া পোলাপান আমাদের মতো দাড়ি রেখে স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করতেছে। তারা পুঁজিতান্ত্রিক অপকর্ম করতে যাচ্ছে আমাদের মতো দাড়ি রেখে। ব্যাংক, বীমা, কর্পোরেট অফিস সর্বত্র গিয়ে দেখবেন ছাগল সমাজের দাড়ি রেখে একদল চ্যাংড়া বসে আছে। মনে হবে স্মার্ট এই সব পোলাপান সত্যি খুব ভালো।

কিন্তু এরা মূলতঃ অবলা নারীদের ফুসলিয়ে দৈহিক ও মানসিকভাবে শোষণ করে। এরা নারীদের সঙ্গে একান্ত সময় কাটিয়ে সেই সময়কার সব গোপণীয়তা ভিডিও করে বাজারে ছাড়ে। এরা মদখোর, ঘুষখোর, ছিনতাইকারী ও মাদকসেবী। বেসিকালি এরা পূঁজিতন্ত্রের দালাল। সাম্রাজ্যবাদের ভাড়াটে খুনী।

আমাদের মতো দাড়ি রাখার ফলে প্রাণী সমাজে এমন ধারণা তৈরি হতে পারে ছাগল সমাজও পুঁজিতান্ত্রিক কিন্তু আমি দৃড়তার সাথে বলতে চাই ছাগল সমাজ শতভাগ সমাজতান্ত্রিক সমাজ হওয়ার নিরন্তর সংগ্রামে লিপ্ত। আমি বলতে চাই মানুষ ছাগল সমাজের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্তে লিপ্ত হয়ে গেছে। আমাদের অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে। অতন্দ্র প্রহরীর মতো এদের কর্মকান্ডের উপর নজরদারি করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে..বর্তমানে মানুষের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিকারগ্রস্ত এক বিশাল অংশ পরষ্পরকে ছাগু বলে পঁচানোর চেষ্টা করতেছে।

তারা এর দ্বারা প্রমাণ করার চেষ্টা করতেছে ছাগল সমাজ পঁচা সমাজ। কিন্তু এই জাতীয় প্লেনাম থেকে আমি আপনাদের সদয় সম্মতি সাপেক্ষে হুশিয়ারি উচ্চারণ করতে চাই-যারা ছাগু বলে, যাদেরকে ছাগু বলা হয় উভয়েই আমাদের লাদির সমানও না কমরেড সম্পাদক এই কথা বলার পর পরই মিলনায়তন জুড়ে তারস্বরে ভ্যা ভ্যা ভ্যা শুরু করল। মেজাজী ব্যক্তিত্ববান কমরেড সম্পাদক প্রচন্ড জোরে খামোশ উচ্চারণ করলেন। বললেন ওরা আমাদের লাদির সমান জেনেই কলহাস্য করে ভ্যা ভ্যা ভ্যা করার কোন মানে হয় না। সাংস্কৃতিকভাবে আপনাদের উচিত বুর্জোয়া চরিত্রের সংশোধন করা।

তিনি বলেন নিশ্চয় আমরা বিপ্লবের পরে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে এই সংশোধনী নিশ্চিত করব। কিন্তু আজকের প্লেনামে আপনাদের বলতে চাই ধর্ম, বর্ন, শ্রেণী, গোষ্ঠী, দল, উপদল ও পেশায় বিভক্ত মানব সমাজে ছাগুদের চিহ্নিত করতে হলে আমাদের বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে। অবজেক্টিভলি দেখতে হবে আসলের তাদের মধ্যে ছাগু সংক্রান্ত ব্যাপারে কত জন জড়িত? তাদের বিস্তারিত তথ্য কি? তাদের কয় ভাগে ভাগ করা যায়? কমরেড সম্পাদক বললেন আমরা নমুনা জরিপ করতে গিয়ে দেখলাম আসলে বাংলাদেশে ছাগু বলে চিহ্নিত মানুষ পাঁচ প্রকার। উহাদের সচিত্র পরিচিত কমরেড সম্পাদক প্রজেক্টরে প্রদর্শন করলেন। জামাতী ছাগু, ২. আওয়ামী ছাগু ৩. সুশীল ছাগু ৪. নাস্তিক ছাগু ৫. আস্তিক ছাগু অতপর প্লেনামের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে সমাজতান্ত্রিক ছাগল পার্টির কমরেডরা স্বগৃহে প্রত্যবর্তনের যাত্রা শুরু করলেন।

যাওয়ার সময় তারা শপথ নিয়ে গেলেন যে কোন মূল্যে তারা ছাগুদের প্রতিরোধ করবেন। মিলনায়তন থেকে বের হওয়ার সময় তাদের সামনে পরে গেল- ব্লগারদের কেউ বলতে পারবেন এই ছাগুটা কে?


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।