আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাননীয় পেরদানমন্ত্রী, মোর এই চিডিহান এট্টু পড়বেন?

শিক্ষা যেখানে অসম্পূর্ণ, জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

মাননীয় পেরদানমন্ত্রী, চিডির পেরথমেই মোর শতকুটি কদমবুচি গেরন করবেন। আল্লার দোয়ায় আর সংবিধানের বিসমিল্লার কইল্যানে আন্নে মনে অয় ভালই আছেন। আন্নের দলের পোলাপান অইতে বুড়াগুলান যেভাবে গেরামে গেরামে গুণ্ডামি, বদমাশী, মাতলামী কইর‌্যা বেড়াইতে আছে তাতে আন্নে যে খুব সহি সালামতে আছেন এইডাই বুঝা যাইতে আছে। হাচা কইতাছি মা জান, এই গেরাইম্যা বলদগুলারে যদি আন্নে এই মওকাডা না দেতেন তাইলে হেরা কি আন্নের দলের পিছে এ্যামনে এ্যামনে ঘোরতে আর শেখ মুজিব, শেখ হাচিনা কইয়া চিল্লাইতে? এই চিল্লাইন্যা বলদগুলা আন্নের দলের পিছে আছে বইল্যাই আন্নে সুহে শান্তিতে দ্যাশ চালাইতে আছেন।

তয় এই উজাইন্যা বলদগুলার বিরুদ্ধে মোর কিছু বয়ান আছে, হেইডা কওয়ার লইগ্যাই মুই আন্নের ধারে চিডি ল্যাখতে বইছি। মোগ গেউদ্যার বাপে যে সমায় বাইচ্যা আছেলে হে আন্নের ফটো দেহাইয়া কি জানি আউ আউ কইর‌্যা কইতে। মুই বোঝতাম যে হে কয় আন্নের খুউব দয়ার শরীল। হের হাত দুহান আছেলে ব্যাহা, হে হাইদ্যা কিছু শক্ত কইর‌্যা ধরতে আরতে না; কানেও হেবাইল হোনতে না; কথা তো কইতেই আরতে না। হক্কলে হেরে কালা বোলাইতে।

মোরে এল্লারে ফালাইয়া রাইখ্যা খালেদা বুয়ার আমোলে হে মইর‌্যা গ্যাছে। এউক্কা পোলা থুইয়া গ্যাছেলে, হেডায়ও বাপ মরার পর কোথায় যে গ্যাছে আর ফিইর‌্যা আয় নায়। যেদিন মুই হুনছি যে নাও মার্কা জেতছে হেদিন মোর মোনডা খুশীতে ভইর‌্যা গ্যাছেলে। মুইও যে নাওতে একটা ভোড দেছালাম। কয়দিন আগে মোগো মেম্বারে আইয়া কয় কি, "ও কালার বউ, এদিগে আও, তোমার নামে একটা ভি.জি.এফ কার্ড অইবে।

" মুই ভি.জি.এফ টেফ বুঝি না। মেম্বারে বুঝাইয়া কইল যে মাসে মাসে ১৫ কেজি কইর‌্যা গোম পামু। মুই মেম্বারের কতায় এত খুশী অইছিলাম যে কী কমু! এতদিনে আমার পিরতি আন্নের দয়া অইছে দেইখ্যা মোর খুবই ভালো লাগজেলে। খুশীর চোডে মেম্বাররে দুউগ্যা মুড়িও খাওয়াইছিলাম। হেইয়ার পর মেম্বারে মোর নাম ধাম লেইখ্যা নেছেলে।

কয়দিন পর মেম্বারে আবার আইছে মোগো বাড়ি। আইয়া কয়, "হোন কালার বউ, তোমার কার্ড করাইতে ৩০০০ টাহা লাগবে। " মুই তো হুইন্যা বেহুশ। মোর ঘরে ৫ টাহাও নাই, মুই ক্যামনে ৩০০০ টাহা দিমু? হে কইল, "টাহা না দেলে অইবে না। আওয়ামীলীগের পোলাপান এইডা নির্ধারিত কইর‌্যা দিছে।

হেগো মোনে এত দয়ামায়া নাই। ৩০০০ টাহার এক টাহা কম পাইলে কার্ড অইবে না। " মুই মেম্বারের ধারে অনেক কান্দাকাডি হরছিলাম। মেম্বারে ভাল মানুষ, হের কিচু হরার আছেলে না। আমারে নিয়া অনেক দৌড়াদৌড়িও হরছে, কিচু হরতে আরে নায়।

মা জান, আন্নের দলের বলদগুলার লইগ্যা মোর ভি.জি.এফ কার্ড অয় নায়। মুই আগের মতো পরের বাড়ি কাম কইর‌্যাই খাই। কাম না হরতে না পারলে না খাইয়া থাহি। আপনাদের সর্দি অইলেই আন্নেরা বিদেশে যাইয়া ডাক্তার দেহান, মোর অসুখ বিসুখ অয় না; অইলেও চিত্ত মাস্টারের প্যারাসিটামলে সাইর‌্যা যায়। হাচিনা বু, আন্নে মোগো দেশের পেরদানমন্ত্রী, মোগো মা-বাপ।

কয়দিন আগে হোনলাম যে আন্নে পেরতেক ঘরে একজন কইর‌্যা চাকরীজীবি দেয়ার ঘোষণা দেছেন। মোগ গেরামে আপনের হেই 'ন্যাশনাল সার্ভিস'-এ কয়জনার চাকরীও অইছে। আন্নের এই কামডায় হেগো খুউব উপগারও অইছে। কিন্তু বুজান, এই চাকরীর লইগ্যাও আন্নের পোষা বলদগুলায় হক্কলের ধাইরদা ১৫০০০/- কইর‌্যা টাহা নেছে। মোগো গেরামের আবুলের বাপ আবুলের লইগ্যা একটা চাকরীর বহুত চেষ্টা তদবির করছেলে।

মাইনষের ধাইরদা ধার কইর‌্যা, পরের বাড়ি কামলা খাইট্যা ১২০০০ টাহা এলাকার এক নেতার হাতে দেছেলে। আবুইল্যার চাকরীডা অয় নায়, আবুইল্যার বাপেরে আন্নের বলদগুলায় টাহা ১২০০০/- ও ফেরত দে নায়। হে ব্যাডা একদিগে ধারের টাহার সুদ দে এদিগে আবুইল্যার বাহের টাহাইদ্যা আন্নের বলদগুলায় বাংলা মদ খাইয়া মাতলামি হরে। আর কী কমু বুজান। আন্নের বলদগুলায় কোন কাম কাজের ধার ধারে না।

খালি জিহ্বা বাইর কইর‌্যা থাহে কোন সময় আন্নে একটা পোজেক্ট ছাড়েন। আন্নে পোজেক্ট ছাড়লেই হেগো লাভ। মা জান, সিডরের সোমায় এন.জি.ও গুলা মোগো অনেক সাহায্য হরছে। হেরা কী খাইছে না খাইছে মোরা জানিনা, তয় মোরা টাহা ছাড়াই কিছু পাইছিলাম। কিন্তু আন্নের কোন পোজেক্টের কিছু পাইতে অইলে মোগ টাহা ঢালন লাগেই।

কন বুজান, মোর মতো গরীব মানুষ একবারে এ্যাত টাহা কই পাই? দোয়া করি বুজান আন্নে যেন আরো আরো পোজেক্ট ছাড়তে পারেন যাতে আন্নের পোষা বলদগুলায় মোগো আরো বেশি বেশি .........মারতে পারে। মাগো, মুই মহিলা মানুষ, আন্নেও তাই; হেইর লইগ্যা মুই খারাপ কথাডা ল্যাখতে পারলাম না। আপনে বুইঝ্যা নিয়েন। ইতি, কালার বউ =================================== প্রায় ৪ মাসের বেশিদিন পর সেদিন বাড়ি গেলাম। গায়ের দুটি সংবাদ খুব নাড়া দিয়েছিল।

সংবাদ দুটোই এই চিঠির উপজীব্য। সংবাদদুটোর উৎপত্তি যেহেতু বরিশালের প্রত্যন্ত এক গ্রামে তাই চিঠিটি বরিশালের সে গ্রামের ভাষায় লেখার চেষ্টা করেছি। কারো বুঝতে সমস্যা হলে মন্তব্যে জানাবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.