আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাননীয় দুই নেত্রীর মনে কি পড়ে?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার দিকে গোটা দেশ তাকিয়ে আছে। গোটা পশ্চিমা দুনিয়াসহ গণতান্ত্রিক বিশ্ব তাকিয়ে আছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির নিরবচ্ছিন্ন ধারা অব্যাহত রাখতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহল সবার প্রত্যাশা- আপনারা খোলা মনে সংলাপে বসবেন। খোলা মনে সংলাপে বসে চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান বের করবেন, এটা অনেকেই অসম্ভব ব্যাপার মনে করলেও আপনারাই পারবেন মানুষের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে। সেনাশাসক এরশাদ জমানার অবসান ঘটাতে আপনারা এক টেবিলে বসেছিলেন।

সেনাশাসন-উত্তর গণতন্ত্রের শুভযাত্রায় আপনারাই জাতিকে একটি সুখের রজনী দিয়েছিলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে পঞ্চম সংসদে সংবিধানের একাদশ ও দ্বাদশ সংশোধনী বিল পাস করার মাধ্যমে। দুটি সেনাশাসনের সময় রাষ্ট্রপতিশাসিত ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বৈরতন্ত্রের কবলে পতিত বাংলাদেশকে সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারায় আপনারাই ফিরিয়ে এনেছিলেন। সেই ইতিহাস আপনারা গড়েছিলেন শত শত গণতন্ত্রকামী শহীদের রক্তের বিনিময়ে। বাংলাদেশের রাজপথ থেকে সেই রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। শত মায়ের বুকের দীর্ঘশ্বাস এখনো ফুরিয়ে যায়নি।

মাননীয় দুই নেত্রী মনে কি পড়ে? সেই সেনাশাসন জমানায় এ দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করে আপনারা গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেদিন গণতন্ত্রের সংগ্রামের কত পথের সাথী আপনাদের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে জীবন দিতে কার্পণ্য করেনি। আপনারাও জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। সেনাশাসক এরশাদ জমানায় অবরুদ্ধ হয়েছেন। সেনাশাসকের পুলিশ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনার গাড়ি রেকার দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়েছিল।

ধানমন্ডির সেই বাড়িটিতে রেখেছিল অবরুদ্ধ করে, যে বাড়িতে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সে বাড়ি ছিল মুক্তিকামী বাঙালির ঠিকানা। সে বাড়িটিতে '৭৫-এর ১৫ আগস্ট বাঙালির মহত্তম নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঘাতকরা পরিবার-পরিজনসহ নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। স্বজন হারানোর বুকভরা বেদনা আর দীর্ঘশ্বাস নিয়ে সেই রক্তাক্ত বাড়িটিতে মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা আপনি অবরুদ্ধ থেকেছেন। তাই নয়, বার বার গুলি, হামলা আর মৃত্যুকে পায়ের সঙ্গী করে মানুষের গণতন্ত্র তথা ভোটের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছেন।

মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরন্তর আন্দোলন-সংগ্রাম করে ব্যাপক গণআন্দোলনের মাধ্যমে তাও আদায় করেছেন। বিএনপি-জামায়াত জমানায় আপনাকে হত্যার জন্য পরিচালিত একুশের গ্রেনেড হামলা শুধু বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটায়নি, বিশ্ববিবেককে স্তম্ভিত করেছে। সেনাসমর্থিত ওয়ান-ইলেভেন সরকার আপনার কণ্ঠ রোধ করতে পারেনি। ভোট ও গণতন্ত্রের অধিকারে আপনি মুখ খুলেছেন নিরন্তর। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গভীর রাতে যৌথবাহিনী আপনার সুধাসদনের বাসভবনে অভিযান চালিয়ে আপনাকে গ্রেফতার করে আদালতে নিয়েছে টানাহেঁচড়া করে।

সেদিন মানুষ ব্যথিতই হয়নি, বিষাদের ছায়া নেমে এসেছিল সর্বত্র। সেই গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজ যারা আপনার ডানে-বামে তারা একটি হরতালের কর্মসূচি দিতে পারেননি। কিন্তু গণমানুষের মানসিক সমর্থন ছিল আপনার শক্তির উৎস। ২০০৮ সালের ১১ জুন আপনাকে মুক্তি দিয়ে সেদিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টারা সাক্ষাৎপ্রার্থী হয়েছিলেন সুধাসদনের বাড়িতে। সে সময় বিদেশ থেকে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং তার প্রতিবাদে আপনার অনড় অবস্থান বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছিল।

অবরুদ্ধ বাংলাদেশের মানুষের মনে জাগিয়েছিল শক্তি ও সাহস। সেই দিনগুলোর কথা কি মনে পড়ে? মনে কি পড়ে আপনার দীর্ঘ গণতন্ত্রের সংগ্রামের সিঁড়িপথে আপনার আবেগপ্রবণ কর্মী ও সমর্থকরা ভালোবেসে কত নামেই না ডেকেছে আপনাকে? গণতন্ত্রের মানসকন্যা ও জননেত্রী শেখ হাসিনা ডাকখানি কতবার আপনি শুনেছেন মনে পড়ে?

আজকের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ১৯৮১ সালের ৩০ মে ব্যর্থ সেনাঅভ্যুত্থানে নিহত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হারিয়ে দুটি নাবালক সন্তানকে বুকে নিয়ে অকাল বৈধব্যের যন্ত্রণায় সেনাশাসক এরশাদ আমলে বিএনপির চরম দুঃসময়ে দলের হাল ধরতে রাজনীতিতে এসেছিলেন। যতটুকু রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রাজপথের সংগ্রাম থেকেই নিয়েছিলেন। সেনাশাসনের অবসান ঘটাতে আপনার ভূমিকাই আপনাকে জনগণের হৃদয়ে ঠাঁই দিয়েছিল। বিএনপির বড় বড় নেতারা ভাঙাগড়ার খেলা খেলে সেনাশাসকের হেরেমে চলে গিয়েছিলেন।

তারুণ্যনির্ভর ছাত্রদলের ওপর ভর করে আন্দোলন চালিয়েছিলেন। কর্মী-সমর্থকরা ভালোবেসে আপসহীন নেত্রী বলে আপনাকে সামনে নিয়ে এসেছিলেন। সেনাশাসন-উত্তর জমানায় ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে আপনি জনতার ম্যান্ডেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। '৯১-'৯৬ শাসনামলে আপনার অভিজ্ঞতা না থাকলেও সরকার পরিচালনা ছিল অনন্যসাধারণ। এরশাদ ও তার জাতীয় পার্টির ওপর স্টিমরোলার চালালেও সরকার ও দল দুর্নীতি-দুঃশাসন থেকে অনেক দূরেই বাস করেছিল।

বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে সাংবিধানিক আওতায় এনে নির্বাচনে গিয়েছিলেন। ২০০১ সালে আবার গণরায় নিয়ে এসে দুর্নীতি, দলীয়করণ, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের ছোবলে আপনার ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধই করেনি, বিএনপি শাসনামলকে টাইটানিকের মতো ডুবিয়েছিল। ইয়াজউদ্দিনের ওপর ভর করে একতরফা নির্বাচনে ক্ষমতায় ফিরতে গিয়ে রাজনৈতিক সংঘাত, সহিংসতার পথে দেশ অচল-অবরুদ্ধ হয়েছিল। তাই জাতির জীবনে এসেছিল ওয়ান-ইলেভেন গণসমর্থন নিয়ে। আপনার পুত্রদের ওপর কারা নির্যাতন, রিমান্ড নেমে এসেছিল।

২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে আপনাকে গ্রেফতার করে নেওয়া হয়েছিল। এরপর যন্ত্রণাময় দিনগুলো আপনার ভোলার কথা নয়। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলেই থাকতে হয়েছে। এখনো ছেলেরা নির্বাসিত।

মাননীয় দুই নেত্রী, সেদিন সাবজেলে পাশাপাশি নিঃসঙ্গ বন্দীজীবনের দুঃসময় আপনাদের ভোলার কথা নয়।

মনে কি পড়ে সেদিন শুধু আপনাদের জন্যই দুঃসময় আসেনি, সেদিন আপনাদের দল, নেতা-কর্মী, দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীর ওপরও দমন-নির্যাতনের খড়গ নেমে এসেছিল। কেউ কারাগারে, কেউ বা দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। রাজনৈতিক দল, সিভিল সোসাইটি সর্বত্র সন্দেহ, অবিশ্বাসের বীজ বপন করা হয়েছিল। সেই ওয়ান-ইলেভেনের দুঃসহ স্মৃতির প্রতীক হয়ে আপনারা দুজনই আছেন। অনেককে কারাগারে বসে স্বজনের মৃত্যুসংবাদ শুনতে হয়েছে।

অনেকের পরিবার-পরিজনকে টেনেহিঁচড়ে জেল, আদালত, রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অনেকের মান-সম্মান, ইজ্জত-সম্ভ্রম লুটে নেওয়া হয়েছে। সেসব দুঃসময়ের দীর্ঘশ্বাসের বর্ণমালায় সাজানো ঘটনাপ্রবাহ আপনাদের ভুলে যাওয়ার কথা নয়।

মাননীয় দুই নেত্রী, লাখো লাখো মানুষের রক্তেভেজা বাংলাদেশ, শত শত সন্তানহারা মায়ের বুকভরা কান্নায় পাওয়া আমাদের গণতন্ত্র ২২ বছরেও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেয়নি। সরকার ও বিরোধী দলের জাতীয় ইস্যুতে ঐক্য গড়ে ওঠেনি।

মূল্যবোধহীন অবক্ষয়ের পথে হাঁটতে হাঁটতে আমাদের জাতীয় রাজনীতির সংস্কৃতি এখন শেষ তলানিতে। আমরা কৃষকের বন্ধু শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ও বার বার জেল-জুলুম, নির্যাতন সয়ে ফাঁসির মঞ্চে গিয়ে কিংবা কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সংস্কৃতির উত্তরাধিকারিত্ব দিনে দিনে নির্বাসনে পাঠিয়েছি। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বদলে প্রতিহিংসার রাজনীতি দৈত্যের মতো দেখা দিয়েছে। সর্বগ্রাসী দলীয়করণ, দুর্নীতি, অকার্যকর সংসদ মিলে দেশ আজ গভীর সংকটে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমনে মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা সাফল্য কুড়ালেও তার সরকারের ছায়ায় দলীয়করণ ও দুর্নীতি ডালপালা কমেনি, বেড়েছে।

মানুষের ক্ষোভ, হতাশা বাড়ছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি দুই দলই আজ ইমেজ সংকটে। দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নির্বাসিত। যখন যারা ক্ষমতায় আসছে দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। সুশাসন, আইনের শাসন এখনো স্বপ্নের মতো।

দেখাও যায় না, ছোঁয়াও যায় না। যখন যারা ক্ষমতায় আসে দলকানা, দলদাসদের গুণকীর্তন শুনতে শুনতে মানুষের ভাষা শোনার শক্তি হারিয়ে ফেলে। দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, লাইসেন্স, ব্যাংক, বীমা, টেলিভিশন লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। রাজনীতিতে এসেই বা সরকারের আনুগত্য পেয়েই রাতারাতি কেউ কেউ বিত্তবৈভবের মালিক হচ্ছেন। এই রাজনীতির প্রতি গণঅসন্তোষ দিনে দিনে বাড়ছে।

বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি না থাকায় একবার আওয়ামী লীগের বিকল্প বিএনপি, আরেকবার বিএনপির বিকল্প আওয়ামী লীগকেই মানুষ ভোটের লড়াইয়ে বেছে নিচ্ছে। কিন্তু দুই দলই গণমানুষের হৃদয় জয় করে জনপ্রিয় হতে পারছে না। মাননীয় দুই নেত্রী এটি কতটা উপলব্ধি করতে পারছেন জানি না। তবে খলিফা হারুন অর রশিদের মতো ছদ্মবেশে মানুষের কাতারে মিশলে জানতে পারতেন তাদের মনের ভাষা কী। মানুষ কী চায়।

বিনিময়ে কী পায়। মানুষের প্রতিনিধিদের নিয়ে তাদের কথাবার্তা কী।

মাননীয় দুই নেত্রী, জাতীয় নির্বাচন দোরগোড়ায়। সর্বত্র উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। সবার অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেশের মানুষ চায়।

বিদেশিরাও চায়। কেউ জানে না শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে হচ্ছে কি না। বিরোধী দল বিএনপিকে বাদ দিয়ে কি সরকার একতরফা নির্বাচন করবে? বিএনপি কি তবে আন্দোলনে নামবে? রাজনীতি কি তাহলে সংঘাত-সহিংস হয়ে উঠবে? গণতন্ত্র কি আবার হোঁচট খেয়ে ওয়ান-ইলেভেন দেখবে? এতসব প্রশ্নের ভিড়ে মানুষের সব প্রশ্ন ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সমাধান মাননীয় দুই নেত্রী আপনারাই দিতে পারেন। সংলাপ এবং সংলাপের মাধ্যমেই সমঝোতার দুয়ারে হাজির হয়ে সবার অংশগ্রহণে একটি জাতীয় নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারেন। সেই নির্বাচনে মানুষ অতীতের মতো যাকে খুশি তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারে।

মাননীয় দুই নেত্রী মানুষের কল্যাণেই রাজনীতি করেন। আপনারা আরও বেশি ভালো জানেন রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতায় কীভাবে ১৬ কোটি মানুষের অল্প সম্পদ কাজে লাগিয়ে একটি উন্নত আধুনিক বাংলাদেশ গড়া যায়। আমাদের জনসংখ্যা সমস্যা, দুর্নীতি, দলীয়করণের লাগাম টানতেই হবে। আমাদের মেধাবী সন্তানদের মেধার ভিত্তিতে চাকরি-বাকরিতে ঢোকার নিশ্চয়তা দিতে হবে। সর্বোপরি বেকারত্বের আগ্রাসন থেকে তারুণ্যকে মুক্তি দিতে হলে কর্মসংস্থানের জন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে বিনিয়োগকারীদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।

সরকারকে হতে হবে ব্যবসাবান্ধব। অর্থনীতির চাকা গতিশীল করতে হবে। তাই নয়, ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংক-ঋণ সহজ করে দিতে হবে, লুটেরাদের জন্য নয়। হলমার্ক কেলেঙ্কারি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়তে ও বিকশিত করতে শিল্পপতিদের প্রতি সরকারকে উদার হতে হবে। আমাদের রাজনীতিকে আদর্শনির্ভর করতে হলে আদর্শবান কর্মীনির্ভর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রে দলকে ঢেলে সাজিয়ে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে।

মাননীয় দুই নেত্রী, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনাদের বার বার শত বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন। জনগণের ভালোবাসায় বার বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অভিষিক্ত করেছেন। চলমান রাজনৈতিক সংকটে আপনাদের সামনে প্রশ্ন- এই সংকট সমাধানের মাধ্যমে সবার অংশগ্রহণে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিরবচ্ছিন্ন রেখে আপনারা ইতিহাসে অমরত্ব নেবেন কি না? মন খুলে আলোচনার টেবিলে সংকটের সমাধান খুঁজলে আপনারাই পথ বের করতে পারবেন এটি মানুষের বিশ্বাস। মানুষের বিশ্বাসের ওপর আপনারা পথ হাঁটুন। দেশ ও মানুষের কল্যাণে অন্তরাত্দার ডাক শুনে সিদ্ধান্ত নিন।

সর্বশেষ ওয়ান-ইলেভেনে প্রমাণ হয়ে গেছে, সংবিধান দিয়ে অগণতান্ত্রিক শক্তিকে আটকানো যায় না। কেবল রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি দিয়েই আটকানো যায় ওয়ান-ইলেভেনের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিকে। রাজনীতি যখন সহিংস ও সংঘাতময় হয়ে ওঠে তখনই সুযোগ নেয় তৃতীয় পক্ষ। রাজনৈতিক বিভক্তি ও সংঘাত-সহিংসতার পথ ধরে ওয়ান-ইলেভেন এসেছিল গণমানুষের সমর্থন নিয়েই। দেশের সেই আম-জনতার প্রত্যাশা- গণতন্ত্রের স্বার্থে সরকার ও বিরোধী দলের সমঝোতা।

সে পথেই হাঁটতে হবে দুই পক্ষকে, আপনাদের দুজনকে। সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। একবার রাজপথে আগুন জ্বলে উঠলে আর নেভানো যায় না। আপনারাই তা ভালো জানেন।

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.