আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুরুষরা কি মানুষ হবে কখনো ?



লুকিয়ে বড়দের পত্রিকায় প্রথম যেদিন পড়ি বাবা কর্তৃক মেয়ে নিগৃহীত হবার ঘটনা । ভীষণ ভীত হয়ে পড়ি । বাবাকে নিয়ে আমার ভীষণ ভয় হয় । আমার বাবাও তো ঐ রকমের । আমার বান্ধবীদের দিকে কেমন কুৎসিত চোখে তাকায় ।

মাঝে মাঝে মনে হয় আমাকেই কি দেখছে অন্য চোখে ! সব বাচ্চার মতই আমি আমার বাবাকে ভলবাসতে চাইতাম । কিন্তু পারতাম না । বাবার মধ্যে কোথায় যেন একটা গোপন কলৃস লুকিয়ে থাকতো । বাবার চোখকে কখনো আপন মনে হয়নি । রাস্তার বখাটেদের চোখের মতই মনে হত ।

মাকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম কে আমার প্রকৃত বাবা । এরকম অপ্রচলিত প্রশ্নে মা নিজের চরিত্র নিয়ে প্রশ্নের কারণে আমাকে বেদম মেরেছিলেন । এক সপ্তাহ বাসা থেকে বের হতে পারিনি । তারপর এক রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে মাকে দেখলাম আমার সাথে মেঝেতে শুয়ে আছে । আর বাবার সাথে অন্য কেউ, অন্য কোন নারী ।

মা কিভাবে যেন টের পেয়েছিলেন আমি জেনে গেছি সব । মা আমাকে বোঝালেন, দেখ বাবা সবার ভাল হয়না । তাই বলে মানুষের পিতৃ পরিচয় তো আর মিথ্যে হয়ে যায়না । রাতে বাড়িতে মেয়ে মানুষ নিয়ে আসা নাকি বড় বড় রাজনীতিবিদদের একটা ফ্যাশন । আমার বাবাও তো একজন রাজনীতিবিদ ।

সে এরকম না করলে মানায়না । তাই মাঝে মধ্যে এরকম এক আধটু করতে হয় । নাহলে যে রাজনীতিবিদের তকমা গায়ে লাগেনা । হায়! আমার জনমদুখিনী মা ! তোমার মেয়ে কি এতই ছোট এটুকু বোঝার বয়স হয়নি? আমার বয়সেই মাকে জোর করে বাবার হাতে তুলে দিয়েছিলেন আমার নানা । তাতে টাকার লোভ যতটা ছিল ।

তার চেয়ে লোভ ছিল একজন ক্ষমতাবানের শ্বশুর হবার বাসনা । বিয়ের দিন থেকে যে কান্না মা শুরু করেছেন তা আজো চলছে । চলছে তার মেয়ের চোখেও । না, আমার বাবা অত খারাপ নন । যতটা হলে নিজের মেয়েকেই মানুষ অসূচী করে ।

তবু যখন মাকে কাঁদতে দেখি । আর রাতের আঁধারে অন্য কোন নারীর শিৎকারে ভেঙ্গে যায় ঘুম - পিতৃহন্তারক হয়ে দেখে নিতে ইচ্ছে করে এই দেশ-সমাজ -জনপদ । বন্ধুরা আমার সৌভাগ্যে ইর্ষান্বিত হয় । বলে- কত বড় নেতার মেয়ে তুই, তোর জীবনে সাফল্য তো হাতের ময়লা । বড় বড় লোকদের সাথে তোর জানাশোনা ।

তোর বর দেখে নিস কোটিপতি কেউ হবে । আমি শুধু ওদের কথা শুনে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি । একবার এক বান্ধবী যখন এমন কথা বলছিল । ওর হাত চেপে ধরলাম । 'আমার জীবন নিয়ে তোর এত ইর্ষা ! ঠিক আছে তুই আমার সাথে জীবন বদল করে নে ।

' আমার প্রস্তাবে প্রথমে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় ও । কিছুক্ষণ পর যখন বুঝতে পারে কি বলেছি আমি; বলে- তা কি করে সম্ভব ! তোর বাবা কেন আমাকে তার মেয়ে বলতে যাবে । আমি বললাম 'সার্জারি করে তুই আমার চেহারা নিবি আর আমি তোর । ' ও ক্লিস্ট হেসে বলে 'সেই প্রযুক্তি এখনও এদেশে আসেনি । আসলে তোর প্রস্তাবে রাজী হয়ে যেতাম' ! হায়রে মানুষের সুখ ! কে যে কোথায় সুখ পায় ! আমি এখন ভার্সিটিতে পড়ি ।

রাজনীতি করি । বাবার মত হবার চেষ্টা করি । কারণ এখানেই এখন ক্ষমতা । বন্ধুরা আমাকে সমীহ করে । আমার কাছে নিজেদের উন্নতির জন্য ধর্ণা দেয় ।

আমি হয়তো বাবার মত হয়ে উঠবো । কিন্তু পারবো কি স্বামীকে সন্তানের সাথে মেঝেতে রেখে অন্য কারো সাথে উল্লাসে মেতে উঠতে ? (সত্য ঘটনা অবলম্বনে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.