আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেয়ার প্রাইস এর আনফেয়ার সিলেকশন

বৃষ্টি যেরকম আসতে আসতে ফিরে যায়..তেমনি বৃষ্টির মতো আমিও ফিরেছি বহুবার...

রাঙামাটি জেলায় সরকারী কর্মচারীদের ফেয়ার প্রাইস কার্যক্রমে খাদ্যশস্য বিতরণের জন্য ডিলার নিয়োগে চরম দলীয়করণের অভিযোগ উঠেছে। জেলার ৪র্থ শ্রেণীর সরকারী কর্মচারী ও গ্রাম পুলিশ(চৌকিদার-দফাদার)দের জন্য নির্ধারিত মূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণের জন্য সদর উপজেলার জন্য জেলা শহরে ২ জন এবং জেলার অন্য নয়টি উপজেলার প্রতিটিতে ডিলার হিসেবে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের যোগ্যতার চেয়েও দলীয় পরিচিতি এবং প্রভাবই ভূমিকা রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বঞ্চিত ব্যবসায়ীরা। ডিলার বাছাইয়ের জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করা হলেও অদৃশ্য যাদুবলে নির্বাচিত ডিলাররা প্রায় সবাই আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতা। রাঙামামাটি জেলা সদরের ৬৭৩ জন এবং সদর উপজেলার ১২০ জন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী/দফাদার-চৌকিদারের জন্য ডিলার হিসেবে নিয়োগে দেয়া হয়েছে তবলছড়ি এলাকার জন্য জেলা যুবলীগের সহসভাপতি অমিত চাকমা রাজু ও বনরূপা এলাকার জন্য বনরূপা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক কানু দাশ গুপ্তকে। একইভাবে কাউখালি উপজেলার ৮৪ জনের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এরশাদ সরকার,কাপ্তাই উপজেলার ২০৫ জনের জন্য ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগে নবাগত মো: আল আমিন,রাজস্থলী উপজেলার ৯৮ জনের জন্য উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক সাধন কুমার তংচঙ্গ্যার স্ত্রী কাঞ্চনা তনচংঘ্যাকে,বিলাইছড়ি উপজেলা ১০২ জনের জন্য দয়াল চৌধুরীকে,জুড়াছড়ি উপজেলার ১০১ জনের জন্য উপজেলা এলডিপির সাধারন সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনকে,নানিয়ারচর উপজেলার ১০৮ জনের জন্য মো: লোকমানকে,বরকল উপজেলার ১০৮ জনের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মেনং রাখাইনকে,লংগদু উপজেলার ১৫২ জনের জন্য ছাত্রলীগের বিদায়ী সভাপতি বাবুল দাশ বাবুকে এবং বাঘাইছড়ি উপজেলায় ১৭০ জনের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ গিয়াসউদ্দিনকে ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে।

নির্বাচিত ডিলাররা সপ্তাহের প্রতি শনি,শুক্র ও মঙ্গলবার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নিজ নিজ ঠিকানায় উল্লেখিত সরকারী কর্মচারীদের মাঝে কার্ড প্রতি ২০ কেজি হারে চাল অথবা গম প্রদান করবে। এর জন্য তারা কেজি প্রতি চাল ২৪ টাকা এবং গম ২০ টাকা হারে গ্রহণ করবে। ২৫ হাজার টাকা ফেরতযোগ্য জামানত এবং ৩০০ টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার দিয়ে ডিলারশিপ পাওয়া এইসব এজেন্টরা উক্ত চাল ও গমের জন্য সরকারকে যথাক্রমে ২২.৫০ টাকা এবং ১৮.৫০ টাকা হারে মূল্য পরিশোধ করবে। নির্বাচিত ডিলারদের বেশিরভাগেরই ডিলার নিয়োগ যোগ্যতা হিসেবে যেসব শর্তাবলীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে,তা নেই বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিটির একটি সূত্র। ফেয়ার প্রাইসের মতো একটি জনকল্যাণমুলক কাজে দলীয়করণের বিষয়টি পুরো জেলায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

ফেয়ার প্রাইস ডিলার নির্বাচন কমিটির সভাপতি ছিলেন জেলা প্রশাসক এবং সদস্য সচিব হলেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন তপন কুমার দাশ। আর সদস্য হিসেবে ছিলেন পুলিশ সুপার,কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের উপপরিচালক,জেলা ত্রান ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা,জেলা প্রশাসকের সমাজসেবক কোটায় মনোনীত দুই আওয়ামী লীগ নেতা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রান ও পূনবার্সন সম্পাদক মীর মো: ইউনুছ,এবং জেলা যুবলীগের সহসভাপতি আনন্দমনি চাকমা । তবে এই কমিটির একটি সূত্র দাবী করেছে,কমিটির সুপারিশে নয়,ডিলার নিয়োগ হয়েছে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের সুপারিশের ভিত্তিতে। এখানে যোগ্যতা বা অন্য কোন কিছু বিবেচনায় আনা হয়নি। ডিলার নির্বাচন কমিটির সভাপতি রাঙামাটি জেলা প্রশাসক হলেও তিনি অনুপস্থিত থাকায় তার পক্ষে দায়িত্ব পালন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ খলিলুর রহমান।

ডিলার নিয়োগে দলীয় প্রভাব প্রসঙ্গে খলিলুর রহমান বলেন,রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়,যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। কমিটির সবাই সর্বস্মতিক্রমে এই নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর সুপারিশ ছিলো কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,এইরকম কিছু আমার জানা নেই। ফেয়ার প্রাইস ডিলার নির্বাচন কমিটির সদস্য সচিব এবং জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তপন কুমার দাস বলেন,ডিলার নিয়োগে আমাদের উপর কোন চাপ ছিলোনা,আমরা নিজেদের সিদ্ধান্তেই ডিলার নিয়োগ করেছি। ডিলার নিয়োগে কোন অনিয়ম হয়নি বলেও দাবী করেন তিনি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।