আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইন্স ফেয়ার

চাপা মারাই আমার কাজ স্কুলে আমরা একবার সাইন্স ফেয়ার করসিলাম। তখন পড়ি ক্লাস নাইনে। আনসার ভিডিপি হাই স্কুলে। আমরা কয়েকজন মিলে এইট থেকে টেন পযর্ন্ত ক্লাসে ক্লাসে ঘুরে আগ্রহীদের নাম কালেকশন করতাম। কাজটা করতামপক্লাস টাইমে।

ক্লাস ফাকি দেয়াও হত আবার কেউ কিছু বলতোও না। আমাদের ক্লাসে কয়েকটা গ্রুপ হইসিল। প্রজেক্ট ছিল কচুরিপানা দিয়ে শ্যাম্পু, কুইজ বোর্ড, ক্ল্যাসিকাল কম্পিউটার, কাঠের গুঁড়া থেকে হার্ডবোর্ড এই সব হাবিজাবি। আমি ছিলা...ম শ্যাম্পু গ্রুপে। দুই ঘন্টার কাজ করতে সাত দিন লাগাইসিলাম।

প্রথম দিন স্কুলের ১ নং গেটের কাছের লেক থেকে একগাদা কচুরি তুলে এনে স্কুলের ছাদে শুকাতে দিলাম। এইটুক কাজের জন্য সারাদিন কোনো ক্লাস করি নাই। পরের দিন কচুরী বাদে বাকি জিনিস জোগাড়ে সারাদিন লাগালামপএবং যথারীতি ক্লাস ফাকি। এভাবে সাতদিন প্রতিদিন কাজ ছিল ক্লাসে হাজিরা দিয়ে স্কুলের ছাদে চলে যাওয়া আর ছুটির আগ পযর্ন্ত ওখানে আড্ডা দেয়া। স্যারদের নাকের ডগায় এই কাজ করসি, ভাবতেও এখন অবাক লাগে।

যাই হোক, এত কাহিনীর পর শেষ পযর্ন্ত দেখা গেলো যে শ্যাম্পু যুতমত হয় নাই। কেমন যেন শুকনো একটা জিনিস বানাইসি আমরা, যেটাকে ফেস পাউডার হিসাবে চালাতে পারলেও শ্যাম্পু বলা সম্ভব না। এদিকে পরের দিনেই মেলা। নতুন করে কচুরী তুলে, শুকিয়ে বানানোর টাইম নাই। কি আর করা, বাজারে যত ব্রান্ডের শ্যাম্পু পাওয়া যায় সব কিনে আনলাম।

এনে ওটার সাথে মিক্স করে বানিয়ে ফেললাম আমাদের শ্যাম্পু। সবই ঠিক ছিল কিন্তু সমস্যা বাধল SUNSILK মেশানোর কারণে। ওটার ঘ্রান ছিল বেশি, যে কারণে ধরা খাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু কেউ ব্যাপারটা খেয়াল করে নি, সবাই আমাদের বানানোর বিবরণ শুনেই খুশি। মেলার শেষ দিকে ঝামেলা বাধাল এক বদ ছেলে।

সে এসে বলে, ‘SUNSILK' এর ঘ্রান আসে কেন? নিশ্চই SUNSILK মিশাইছেন। ’ আমরা বললাম, ‘আরে এটা খুব ভালো শ্যাম্পু হইসে তো, একেবারে SUNSILK কোয়ালিটির, তাই এরকম ঘ্রান। ’ সে তারপরও গাইগুই করতেসে দেখে বললাম, ‘বিশ্বাস হয় না? লাগায় দ্যাখো। ’ কিছুক্ষণ দোনোমনা করে বললো যে ‘দেন একটু লাগাই। ’ আমরা তার মাথায় এক খাবলা শ্যাম্পু লাগায় দিলাম।

চুল গেল জট পাকায়ে। সেই জট আর খোলে না। কি আর করা, ওকে বললাম বাসায় গিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলতে। পরের দিন দেখি ছেলেটা মাথা ন্যাড়া করে স্কুলে আসছে, ভাবলাম জিজ্ঞেস করি হঠাৎ করে মাথা ন্যাড়া করসে কেন, কিন্তু সাহস হল না। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.