<<মধ্যরাতের হাইওয়ে>>
বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রস্তুতি ম্যাচ, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং বাংলাদেশ-ভারত ওয়ানডে ম্যাচ সরাসরি দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। সেজন্য নিজেকে সৌভাগ্যবানও মনে করি। উক্ত ম্যাচগুলো এবং অনুষ্ঠানের দিন অনেক কিছুই নজরে এসেছে। সেগুলোর অনেকগুলোই মজার, আবার কিছু কষ্টেরও আছে।
>>
>>
>>
প্রথমেই আসি সিগারেটের কথায়।
স্টেডিয়ামের ভিতরে এই বস্তুটির প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি বস্তুটি ধরানোর যন্ত্রও। আপাতদৃষ্টিতে দেখতে নিরীহ টাইপের হলেও জায়গামত এর এক ঘষাতেই বাংলাদেশের মান-সম্মান ধূলিষ্যাত হয়ে যেতে পারে। অন্যান্য খাবার-দাবারের দাম অত্যন্ত চড়া হলেও পাওয়া যায়। কিন্তু সিগারেট ? না , এটি বিক্রির কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
তাই বলে কি সিগারেট খাওয়া বন্ধ থাকবে? এই জিনিস এমনই এক নেশার মত, যিনি টানেন তিনিই বুঝেন। আর শুধু সাধারণ দর্শকরাই যদি খেতেন, তাহলে না হয় একটা কথা ছিল। তা তো না। এই জিনিস তো আর জাতিভেদ মেনে চলে না ! আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবাই টেনে থাকেন। কি পোশাক আলা, কি পোশাক ছাড়া ! এত কড়াকড়ি শাসনের মাঝেও যদি ভিতরে (গ্যালারীর বাহিরে) গিয়ে দেখেন চারিদিকে ধূম্র উদগীরণ হচ্ছে, তখন কিছুটা অবাক না হয়ে যাবেন কোথায়? বিশেষ করে, আপনার শখের লাইটারখানা আর বেনসনের প্যাকেটখানা যদি গেটেই রেখে দেয়া হয়!!
নিজের চোখে দেখা একটি ঘটনা বলি।
এটা বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রস্তুতি ম্যাচের দিনের ঘটনা। এক চ্যাংড়া টাইপের ছেলে খুব কসরত করে সিগারেটে টান দিচ্ছে। অনেকেই তার দিকে তাকিয়ে আছে, কেননা যেখানে সিগারেটই পাওয়া যায় না, সেখানে তার কাছে এক প্যাকেট। একজন এগিয়ে গিয়ে বলল,
>একটি সিগারেট হবে?
>> না।
> আছে যখন একটি দিন না।
উপযুক্ত দাম দিব।
>> ৫০০ টাকা (হাসতে হাসতে)
ভেবেছিল, লোকটি আর চাইবে না। লোকটিও নাছোড়বান্দা।
> ৫০০ নয়, আমি ১০০ টাকা দিব
অবশেষে ১০০ টাকায় একটি ৬ টাকা দামের বেনসন বিক্রি হল!! তবে এখানে সিগারেটর নেশাই একমাত্র ফ্যাক্ট হিসেবে কাজ করেনি কেননা, যাওয়ার সময় লোকটি বলল, ইতিহাসের সাক্ষী হয় রইলাম !!
এমন এমন লোক এসে সিগারেট চায়, দেখলেই অবাক হতে হয়। কেউ আবার লজ্জায় অন্যকে দিয়ে চাওয়ান।
আর কেউ কেউ , "বস, শেষের দুই টান দিয়েন"
নিরাপত্তা ব্যবস্থার কড়াকড়ি নিয়েও অনেকের ক্ষোভ। কেননা, একই জিনিস আপনাকে যদি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গচ্চা দিয়ে আসতে হয়, আর অন্য কাউকে দেখলেন দিব্যি সেটা নিয়ে ঢুকে পড়ল, ক্ষোভতো একটু আধটু হবেই। উদ্বোধনীর দিন দেখলাম অনেকের ক্যাপ রেখে দেয়া হয়েছে। এটা কেন করল বুঝলাম না। আর সিগারেটতো আছেই।
মজার ব্যাপার হল, ফেলে দেয়া সিগারটের প্যাকেট "পোশাকআলা" কয়েকজনকে পকেটে ঢুকাতে দেখেছি! অনেকের হেডফোন নিয়ে ঢুকতে দেয়নি। সবচেয়ে কষ্ট লেগেছে, ক্যামেরা নিষিদ্ধ করায়। এটা করা একেবারেই উচিত হয়নি। উদ্বোধনীর দিন যেটা দেখলাম, প্রচুর গ্যাঞ্জাম, ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। অনেকেরই মোবাইল হাওয়া হয়ে গিয়েছে।
আবার অনেকের টিকেট। বিশেষ করে মেয়েদের অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। চেকিংয়ের জন্য লোক ঢুকানোর গতি অত্যন্ত ধীর ছিল বলে, বাহিরের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘায়িত হচ্ছিল। প্রথমে গেইটের একপাশ দিয়ে, পরে অপর পাশ দিয়ে এবং শেষে সামাল দিতে না পেরে মাঝখান দিয়ে আরকটা পথ করে লোক ঢুকাতে হয়েছিল। এগুলো ৩ নং মেইন গেইটের কথা বলছি।
৩ নং গেইট
সবগুলো গেইট দিয়ে গ্যালারীত লোক ঢুকলেও, কি এক অদ্ভুত কারণে "ভিআইপি -৪, জুঁই" গেইটটি বন্ধ ছিল। পাশ থেকে কাকে যেন বলতে শুনলাম, এর চাবি নাকি হারিয়ে গিয়েছে !! সত্য-মিথ্যে বলতে পারব না।
নিরাপত্তার কড়াকড়ি দরকার ছিল, আছে। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে কিছু অতি উৎসাহীর জন্য অনেকের কাছেই সেটা কষ্টের কারণ হয়ে দাড়িয়েছিল। হোস্ট হওয়া যেমন আনন্দের , দেশের জন্য সম্মানের।
তেমনি এই সম্মান টিকিয়ে রাখতে হলে ব্যবস্থা নেয়াওতো জরুরি। তাই একটু-আধটু কষ্ট স্বীকার করতেই হবে। তবে অনুষ্ঠান শেষে আশা করি কারো মাঝেই সেই ক্ষোভ ছিল না। সকলেই উপভোগ করেছিলেন এবং আনন্দ পেয়েছিলেন। শুধু আমাদের পাশের দাদারা ছাড়া।
তাদের ক্ষোভের কারণটা বুঝি। তারা চেয়েছিলেন, উদ্বোধনীসহ সকল আয়োজনই নিজেরা করতে। অথচ নিজেদের এত নামকরা মাঠটাকেই কিনা ঠিক করতে পারেননি!! হায় দাদা ! আপনারা এমন কেন??
বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রস্তুতি ম্যাচের দিনের একটি ঘটনা
আমার বন্ধুর তোলা
পরবর্তীতে আরও লিখার আশা রাখছি। বাংলাদেশের জন্য শুভকামনা রইল। অন্তত, কোয়ার্টার ফাইনালে যেন তারা যেতে পারে।
বিদ্র : রিলায়েন্স, এলজি, পেপসি, হিরো হোন্ডা, এমিরেটস, ইয়াহু, রিবুক, ক্যাস্ট্রল, মানিগ্রাম, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, হুন্দাই এবারের বিশ্বকাপের কমার্শিয়াল পার্টনার। এগুলো ছাড়া অন্য কোন ব্র্যান্ডের লোগো দেয়া পোশাক পরে আসবেন না। সবচেয়ে ভাল হয় লোগোআলা পোশাক না পরলে। কেননা, এগুলো খুলে রাখা হয় কিংবা উল্টা করে পরানো হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।