আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বকাপে সিদ্দিকুরের চমক

গলফ রাজা বাদশাদের খেলা! আর গলফ বিশ্বকাপে খেলবেন মহারাজারা! -এমনই হওয়ার কথা। ঘটনা সত্যিই তো তাই, সিদ্দিকুর রহমান তো এখন বাংলাদেশের মহারাজাই! বিশ্বকাপের মতো আসরে বাংলাদেশের হয়ে একাই লাল-সবুজ পতাকা বহন করছেন -এটা চাট্টিখানি কথা নয়। কিছুদিন আগেও যে খেলাটির নাম অনেকেই জানতেন না, সেই খেলা থেকেই কিনা বিরল সম্মান বয়ে আনছেন সিদ্দিকুর রহমান। প্রথমবারের মতো বিশ্বের সর্বোচ্চ প্রাইজমানির এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম দিনেই বাজিমাৎ। প্রথম রাউন্ড শেষে সোনার ছেলে সিদ্দিকুর যৌথভাবে অষ্টম স্থানে রয়েছেন।

তবে ব্যক্তি হিসেবে ৩২তম অবস্থানে। সিদ্দিকুর সামনে আরও ৩১ জন গলফার রয়েছেন।

পারের চেয়ে পাঁচ শট কম খেলে যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছেন ডেনমার্কের গলফার থমাস বোর্ন ও যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্রিলম্যান। দ্বিতীয় অবস্থানে যৌথভাবে রয়েছেন তিনজন -ওয়েলসের স্টুয়ার্ট ম্যানলে, কোরিয়ার চো কে জে ও স্কোটল্যান্ডের মার্টিন লাইয়ার্ড। তারা পারের চেয়ে চার শট করে কম খেলেছেন।

এককভাবে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার জেসন ডে। এছাড়া চতুর্থ স্থান দুইজন, পঞ্চম স্থানে চারজন, ষষ্ঠ স্থানে আটজন, সপ্তম স্থানে ১১জন এবং সিদ্দিকুর রহমান ছয়জনের সঙ্গে যৌথভাবে অষ্টম স্থানে রয়েছেন। সিদ্দিকুরের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। প্রথম হোলেই পারের চেয়ে এক শট কম খেলে বার্ডি পেয়ে যান। দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম হোলে সিদ্দিকুর পারের সমান শট খেলেন।

ষষ্ঠ হোলে আবারও বার্ডি পেয়ে দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন। সপ্তম ও অষ্টম হোলে পারের সমান, কিন্তু নবম হোলে গিয়ে আবার বগি পান, অর্থাৎ পারের চেয়ে এক শট বেশি খেলে ফেলেন সিদ্দিকুর। ১০ম ও ১১তম হোলে সমান কিন্তু ১২তম ও ১৩তম হোলে গিয়েই যেন খেই হারিয়ে ফেলেন তিনি। এই দুই হোলে পারের চেয়ে মোট পাঁচ শট বেশি খেলে ফেলেন। একটিতে ট্রিপল বগি এবং আরেক হোলে ডাবল বগি পান।

১৪ তম ও ১৮তম হোলে অবশ্য বার্ডি পেয়ে আবারও লড়াইয়ে ফেরেন দেশসেরা এই গলফার। গলফ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড শেষে সব মিলে দুই শট বেশি খেলেন সিদ্দিকুর। অর্থাৎ ৭১ পারের খেলায় সিদ্দিকুর খেলেছেন ৭৩ শর্ট। খারাপ বলার উপায় নেই, শুরুটা যে দুর্দান্ত হয়েছে এটা বলাই যায়।

বিশ্বের সেরা সেরা ৬০ গলফার অংশ নিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ায় গলফ বিশ্বকাপে।

আর এই রথী-মহারথীর মধ্যে প্রথম দিনে অষ্টমস্থান দখল করা কিন্তু সোজা কথা নয়। অবশ্য সিদ্দিকুর যে ভালো করবেন তার ইঙ্গিতটা দিয়েছিলেন কয়েক দিন আগেই, দিলি্লতে হিরো ইন্ডিয়ান ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। অনির্বাণ লাহিরির মতো বড় তারকাকে অবাক করেছিলেন। তবে কাল ভারতীয় এই তারকা সিদ্দিকুরের চেয়ে এক শট করে খেলেন সপ্তম স্থানে রয়েছেন। কিন্তু ভারতের আরেক প্রতিযোগী গগনজিৎ পারের চেয়ে মোট ১১ শর্ট বেশি খেলে সবার শেষ স্থানটিতে।

তবে এতো ভালো খেলেও দিন শেষে আফসোস হতেই পারে সিদ্দিকুর রহমানের। ১২তম ও ১৩তম হোল দুটিতে যদি ডাবল ও ট্রিপল বগি হতো তাহলে হয়তো দ্বিতীয় স্থানেই থাকতেন তিনি। তারপরেও সিদ্দিকুরের প্রথম দিনের সাফল্য কিন্তু আশা জাগানিয়া। এখন দেখা যাক, বাকি তিন দিনের ফল কেমন হয়! আর ভালো না হলেই বা কি, বিশ্বকাপের মতো আসরে প্রতিনিধিত্ব করাই তো বিশাল কিছু। কিন্তু সিদ্দিকুর রহমান যে, ছাড় দেওয়ার পাত্র নন।

শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার মানসিকতা রয়েছে তার। তাই দ্বিতীয়, তৃতীয় কিংবা চতুর্থ দিনে যদি আরও ভালো কিছু করেন তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের টাইগার 'উডস' বলে কথা!

 

১ম স্থান

থমাস বোর্ন (ডেনমার্ক), কেভিন স্ট্রিলম্যান (যুক্তরাষ্ট্র)

২য় স্থান

স্টুয়ার্ট ম্যানলে (ওয়েলস), চো কে জে (কোরিয়া), মার্টিন লাইয়ার্ড (স্কটল্যান্ড)

৩য় স্থান

জেসন ডে (অস্ট্রেলিয়া)

৪র্থ স্থান

রিকার্ডো স্যান্টোস (পর্তুগাল), ডেনি উইলেট (ইংল্যান্ড)

৫ম স্থান

টনি লেসকুনা (ফিলিপাইন), ডেভিড হার্ন (কানাডা), মাইকো কোহোনেন (ফিনল্যান্ড), নিকোলাস কোলসার্ট (বেলজিয়াম)

৬ষ্ঠ স্থান

কিরাডেস অ্যাফিবার্নরেট (থাইল্যান্ড), ম্যাট কুসার (যুক্তরাষ্ট্র), ব্রাড ফ্রিটচ (কানাডা), হোসে ফিলিপ লিমা (পর্তুগাল), রিও ইসিকায়া (জাপান), বার্ন্ড ওয়েসবারগার (অস্ট্রিয়া), থরবন ওলেসেন (ডেনমার্ক), মার্সেল সিয়েম (জার্মানি)

৭ম স্থান

রোপ কাক্কু (ফিনল্যান্ড), অ্যাডিলসন দ্য সিলভা (ব্রাজিল), হিদেতো তানিহারা (জাপান), পিটার হ্যান্ডসন (সুইডেন), আলেজাঙ্ান্দ্রে রোচে (ব্রাজিল), ফ্যাবিয়ান গোমেজ (আর্জেন্টিনা), এসপেন কোস্টাড (নরওয়ে), অনির্বাণ লাহিরি (ভারত), গ্রেগরি বার্ডি (ফ্রান্স), প্রায়েড মার্কসায়েং (থাইল্যান্ড), গ্রায়েম ম্যাকডোয়েল (আয়ারল্যান্ড)

৮ম স্থান

সিদ্দিকুর রহমান (বাংলাদেশ), ভিক্টর বুবুইসন (ফ্রান্স), ব্রান্ডেন গ্রেস (রাশিয়া), ম্যাঙ্িিলয়ান কাইফার (জার্মানি), বিজয় সিং (ফিজি), মিগুয়েল জিমেনেজ (স্পেন)

 

 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।