আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উত্তরাঞ্চলের ৪ জেলায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, আতঙ্ক

কিন্ত যে সাধেনি কভু জন্মভূমি হীত স্বজাতির সেবা যেবা করেনি কিঞ্চিত, জানাও সে নরাধম জানাও সত্বর অতীব ঘৃনীত সেই পাষন্ড বর্বর

বুধবার দুপুরের পর উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও লালমনিরহাটে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি ছাড়াও ঠাকুরগাঁওয়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি। পঞ্চগড়ে হঠাৎ করে রাতের অন্ধকার নেমে আসায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান বার্তা২৪ ডটনেটকে জানান, বালিয়াডান্ডি ও হরিপুর উপজেলায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উপজেলা দু’টির নির্বাহী কর্মকর্তাদের তথ্য অনুসারে তিনি বলেন, পাঁচ শতাধিক ঘর-বাড়ির ক্ষতি হতে পারে। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক বনমালি ভৌমিক বার্তা২৪ ডটনেটকে জানান, বুধবার দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে হঠাৎ আকাশ কালো হয়ে আসে। সেসময় শিলাবৃষ্টি হয়। ফসলের ক্ষতি হলেও মানুষ আহত হয়নি। আমাদের ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, বুধবার পৌনে চারটার এ ঘটনায় এসব এলাকার মাঠের গম, আলুসহ বিভিন্ন ফসল বিনষ্ট হয়েছে।

জেলার প্রায় দেড় হাজার কাঁচা বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হওয়া ছাড়াও গাছপালারও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসময় দুই উপজেলায় ২০০ জন ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফসলের মাঠে বরফ জমে যায়। বালিয়াডান্ডি উপজেলার চেয়ারম্যান প্রবির কুমার রায় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আমাদের পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, পঞ্চগড়ে ঘটে গেছে প্রকৃতির বিরল ঘটনা।

দুপুরের পর আবহাওয়ার এই বিরল ও অদ্ভূত অবস্থা দেখল নবীন-প্রবীণ সবাই। হঠাৎ করেই অন্ধকার নেমে আসে। বাইরে কোনো কিছু দেখা যাচ্ছিল না। বৃষ্টি, শিলা বৃষ্টি আর অন্ধকার- সব মিলিয়ে এ অবস্থা ছিল ১০ থেকে ১৫ মিনিট। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সময় তখন বিকেল তিনটা।

বৃষ্টি হচ্ছিল। হঠাৎ রাতের অন্ধকার হয়ে গেল। শুরু হলো শিলাবৃষ্টি। শিলাবৃষ্টি ছিল পাঁচ থেকে সাত মিনিট। অন্ধকার ছিল ১০ থেকে ১৫ মিনিট।

এরপর আস্তে আস্তে অন্ধকার কেটে গিয়ে আকাশ পরিষ্কার হয়। বৃষ্টি তখনো চলছিল। অদ্ভুত ও বিরল এই আবহাওয়ায় সবাই স্তব্ধ। কখনো এমন আবহাওয়া দেখেননি নবীন-প্রবীণ কেউই। গৃহবধূ নাজমা আকতার বলেন, “সকাল থেকেই আকাশ মেঘে ঢাকা ছিল।

টিপটিপ বৃষ্টি হচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে বিকেল তিনটায় এমন আবহাওয়া। ছেলে সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ” এটাকে ২০০৯ সালের ২২ জুলাইয়ের সূর্যগ্রহণের সঙ্গে তুলনা করে মহাজাগতিক ঘটনা হিসেবে উল্লে­খ করেন অনেকে। ব্যবসায়ী নাসিরুল কাদের বলেন, “দিনের বেলা এমন কালো অন্ধকারে ছেয়ে যাওয়া আগে দেখিনি।

এটাকে সূর্যগ্রহণের সঙ্গে তুলনা করা যায়। ” একই কথা বললেন পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র মো. তৌহিদুল ইসলাম। জেলা প্রশাসক বনমালী ভৌমিক পঞ্চগড় শহর অন্ধকারে ছেয়ে যাওয়া স্বীকার করে জানান, অন্ধকার দুই-এক মিনিট স্থায়ী ছিল। আবহাওয়ার এমন অবস্থা কেটে যেতেই শীত অনূভুত থাকে সবার। কোথাও কোথাও ঝড়ে ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া যায়।

আরডিআরএস বাংলাদেশের কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. এমজি নিয়োগী জানান, জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তন অব্যাহত রয়েছে। এটাও সেরকম একটি ঘটনা। হিমালয় থেকে জলরাশি উচ্চতায় উঠে অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় জমে গিয়ে সূর্যের আলোক রশ্মিকে ঢেকে ফেলায় অন্ধকার নেমে আসতে পারে বলে জানান তিনি। আমাদের দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বুধবার বিকেল চারটায় হঠাৎ করেই পুরো আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়।

অসময়ে হঠাৎ করে তীব্র বাতাস বইতে শুরু করলে লোকজন ছোটাছুটি শুরু করে। এসময় বৃষ্টির সঙ্গে শিলা পড়লে কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। প্রায় আধাঘণ্টা ঝড় ও বৃষ্টিতে দিনাজপুরের সদর ও এর আশেপাশের এলাকার আলুসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় আবারো ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করলে শহরের দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়। তবে কারো আহত হবার খবর জানা যায়নি।

আমাদের লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, বুধবার সন্ধ্যায় লালমনিরহাটে আকষ্মিক ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, সন্ধ্যায় জেলার কালিগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ঝড় হয়। ওই দুই উপজেলার নামড়িহাট, শিয়ালখোওয়া, গোড়ল, চাপারহাট, বারাজান, কাকিনা, নামুড়িসহ প্রায় ১৫টি গ্রামের সহস্রাধিক হেক্টর জমির আলুসহ উঠতি রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। শিয়ালখোয়া গ্রামের কৃষক জয়নাল বার্তা২৪ ডটনেটকে বলেন, “হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বড় বড় শিল পড়ায় তাদের পাঁচ বিঘা জমির আলু ক্ষেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। ” কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিলাবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “প্রকৃতির ওপর কারো হাত নেই"।

সূত্র:বার্তা২৪ ডটনেট

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.