আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুঁজিবাজারে দরপতন এবং আমরা

তারা ভরা রাতের নিষাচর...

আমার একবন্ধু ব্যংক লোন নিয়ে শেয়ার বাজারে নামছিল। অল্পসময়ের মধ্যেই বিশাল লাভ, প্রতিদিন ক্যলকুলেটরে যেন আর হিসাব মানে না। এখন অবশ্য কম বেশি সবার কাছেই ধার দেনা। সারাদিনই মুখ গোমরা করে বসে থাকেন। মনে মনে বোধহয় শেয়ার ব্যবসার চৌদ্দ গুস্টি উদ্ধার করেন।

শেয়ার বাজারে দর পতন এখন নিত্য দিনের ঘটনা। সরকার বহু কারিসমা করেও আর ফেরাতে পাচ্ছেন না। পুঁজিবাজারে দরপতনে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে কয়েকদফা বিক্ষোভ ও ভাংচুর হয়। ওই ঘটনায় বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পুঁজিবাজারে অনিয়ম তদন্তে সরকার একটি কমিটিও গঠন করেছে।

বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়। রোববার দেশের দুই পুঁজিবাজারেই দরপতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেন শুরুর ২০ মিনিটেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাধারণ সূচক ১৭৭ পয়েন্ট কমে যায়। দিন শেষে সূচক ৪০৬ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বা ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ কমে ৬৭১৯ দশমিক ০৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২৩৮টির দামই কমেছে, বেড়েছে ১৩টির।

৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত ছিলো। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনের প্রথম ২০ মিনিটে সূচক ১৮৬ পয়েন্ট কমে যায়। লেনদেন হওয়া ১৯৪ টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মধ্যে দাম কমেছে ১৮৯টির বেড়েছে মাত্র ৫টির এবং কোনো শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত ছিল না। অবশ্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, অল্প সময়ের মধ্যে সরকারি ২৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার পুজিবাজারে না ছাড়া হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পদত্যাগ করতে হবে। তবে এই অল্প সময় ঠিক কতটা সময় তা ব্যাখ্যা করেননি তিনি।

অর্থমন্ত্রী রোববার সচিবালয়ে ঢাকা চেম্বারের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, "বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার বাজারে আসছে না। এতে আমি হতাশ। " "অল্প সময়ের মধ্যে ২৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার যদি বাজারে না আসে, তবে ওই সব প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পদত্যাগ করতে হবে", বলেন তিনি। পুঁজিবাজারে অস্থিরতা নিয়েও কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, জেড ক্যাটাগরির শেয়ার নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে।

এরা বছরের পর বছর ডিভিডেন্ট দেয় না। নামসর্বস্ব এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম তারপরও হু হু করে বাড়ছে। "জেড ক্যাটাগরির শেয়ার বাজার থেকে আলাদা করার চিন্তাভাবনা আমরা করছি", বলেন মুহিত। তিনি বলেন, "পুঁজিবাজার এখন বিপজ্জনক জায়গায় চলে গেছে। কিছুক্ষণ আগেই শুনলাম, আজও গোলমাল হচ্ছে।

" গত সপ্তাহের তিন কার্যদিবস ও চলতি সপ্তাহের প্রথম দিনের দরপতনের ফলে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। পুঁজি হারানোর আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা ডিএসই এলাকায় জড়ো হয়ে বেলা সোয়া ১২টায় বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। এ সময় মতিঝিলের ইত্তেফাক মোড় থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ করে দেয় বিনিয়োগকারীরা। বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এসইসি, ডিএসইসহ সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন। ডিএসই এলাকায় বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ করলেও পরবর্তীতে বেলা পৌনে চারটায় বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ ডিএসইসংলগ্ন এলাকায় স্থিতিশীল ও উৎপাদনমুখী পুঁজিবাজারের লক্ষ্যে মানববন্ধন করে।

বেলা চারটায় ডিএসই এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে এবং যানচলাচল শুরু হয়। কিন্তু এত কিছুর পর বলতে হয় প্রাথমিক ব্যবস্থা না নিয়ে এখন গোড়া কেটে আগায় পানি ঢেলে কি সমস্যা সমাধান সম্ভব। আর এর ওর উপর দোষ দিয়ে আর কতকাল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.