আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের ফরিদ ভাই - ফরিদ bond 007 + mission impossible to be possible কিন্চিত ১৮+ { অধ্যয় =০৬ }

বল আমায় সেই সময়ের নেই কেন অস্তিত্ব, বোঝাও আমায় সেই কল্পনার নেই কোন সমাধান.....আমারি স্বপ্ন আজো জেগে রয় আধারো শুন্য চোখে ...

(যারা পড়েনি তারা আগের অধ্যয় গুলো পড়ে নিন) অধ্যয় ০৫ এর লিংক- Click This Link অধ্যয় =০৬: সকাল থেকেই মন ভালো নেই। এটা আমার পুরোনো অভ্যাস। শুক্রবার সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই খালি খালি লাগে ঘরটা। মনে হয় আব্বা, মা, ভাই, বোন সবার কথা। আবার এই শুক্রবারের জন্যই এত অপেক্ষ্যা করি।

৬ টা দিন টানা কাজ করার পরে কেন জানি এই একটা বন্ধের দিনকে সোনার হরিন মনে হয়। ডিউটির কারনে সকাল বেলা ঘুমাতে পারিনা। আমার ডিউটি সকাল ৭টা থেকে। ঘুমথেকে উঠতে হয় ৫ টা ৪৫ মিনিটে। সত্য বলতে গেলে বলতে হবে ৬ টা দিনই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠার পরে মনে মনে বলি - সমস্যাকি, শুক্রবার এলে সকাল মানে এমন সময়টা বেলা করে ঘুমিয়ে কাটাবো।

এভাবে মনটাকে ধোকা দিয়ে দিয়ে মেরে ফেলেছি। মন এখন আর ঘুম চায়না। পানির বোতলটাতে পানি নেই । পানি আনতে বাইরে গেলাম। দোকানে।

আমার বাসা হতে ২০০ মিটার হবে দোকান গুলোর দুরত্ব। ৬ বোতল মানে ১ বক্স কিনলাম। দোকানী বললো দাম বেরেছে। আগে ৯ দেরহামে ৬ বোতল পাওয়া যেত, তা এখণ ১০ দেরহাম এ্যান্ড ৫০ ফিলস। মাথা গরম হয়ে গেল।

এমনিতেই সপ্তাহে এমন দুবক্স লাগে। আর এদেশে যেভাবে সব কিছুর দাম বাড়ছে তাতে আমার মত মানুষের বসবাস অসম্ভব হয়ে পরছে। বুজতে পারলেন না আমার কথা । বুজিয়ে দিচ্ছি / ১ লিটার পানির দাম ১.৭৫ হলে ৬ বতলে ৯ লিটার = ৯ গুন ১.৭৫ = ১৫.৭৫ দেরহাম। আর 'ই+' অকটেনের দামটা কত জানেন? শুনলে মাথায় হাত উঠবে।

১ লিটার অকটেন ১.৬১ হলে ৯ লিটার এর দাম = ১.৬১ গুন ৯ = ১৪.৪৯ দের হাম। হায়। সমপরিমান পানির দাম ১৫.৭৫ দেরহাম। এবার বলুন কোন দেশে বাস করছি। এসব চিন্তা করছি আর ধীরে ধীরে হাটতে লেগেছি।

আমার বাড়ির ৭০ মিটারের মধ্যে একটা মসজিদ আছে। প্রায় মসজিদটা ক্রস করছি এমন সময় আমার পকেটে থাকা মোবাইলটা বেজে উঠল। বাংলাদেশী নাম্বার। ফরিদ ভাই। মিস কল ।

তার মানে আমাকে কল করতে বলছে। আমি আমার হাটার স্প্রিড বাড়িয়ে দিলাম। সরাসরি কোন কথা না বলে রুমে ঢুকলাম। কম্পু অন করে নেট কলে বসলাম। ফরিদ ভাই : হ্যালো কেমন আছেন রোহান ভাই।

সকাল বেলা থেকে ট্রাই মারছি আপনার মোবাইলে ...। সুইচ অফ দেখায় কেন। ঘুমাইছেন নাকি। রোহান : নারে ভাই, ঘুম থেকে উঠেছি অনেক আগেই। তখণই ফোন অন করেছিলাম।

যাইহোক আপডেট বলেন। পরে তো কিছু জানালেন না । ফরিদ ভাই: আপনি আজ মেইল পরেন নি? গত কাল রাতে আমি একটা মেইল করেছিলাম। ওটার জবাবটা খুবি দরকারি। ফোনে তো সব কথা বলা যায় না।

তাই মেইল দিয়ে ছিলাম। ওটার শেষে আমার রিকোয়েস্ট চটজলটি দুএক ঘন্টার মধ্যে রিপ্লাই দেবার জন্য। তাই সকালে আপানকে ফোন দিলাম। মেইলটা পড়ে আমাকে ব্যাক করেন। অথবা মোবাইলে মিস দেন আমি ব্যাক করবো।

রোহান: হুম। বুজতে পেরেছি। আসলে আমি কাল দুপুরেই অফিস থেকে চলে এসেছি। আর বাসার নেট এর অবস্থ্যা তো আপনার অবগত। আচ্ছা আমি এখনি খুলে দেখে আপনাকে ফোন ব্যাক করে জানাচ্ছি।

ফোন রেখে দিলাম। আসলে উপরে যা লেখা আছে তাই যে কথা হয়েছিল তা নয়। এসব ঘটনা অনেক দিন আগের। ঠিকমত সব বিষয় বা কথা গুলো মনে নেই তবে যত দুর সম্ভব কাছাকাছি লেখার চেস্টা করলাম। সেদিন ফরিদ ভাই এর সাথে আমার কথোপকথোন এমনি ছিল।

মেইল খুলে তো একটা বিরাট উস্টা খাইলাম। এ আবার এমন কি প্রতিদিনিই তো খাই। কিন্তু সেদিনের উস্টা তো ভোলার না। …………………………………………………………………………… …………………………………………………………………………… …………………………………………………………………………… The situation is going worst than day by day. I need technical support but I do not able to choose anyone to believe on such case. I heard you planned to visit Bangladesh as a vacation on next onwards. Kindly, I refer you to note my mail as a requesting to Re-schedule your vacation on this month. I need you here. Call me tonight on skype 9.00pm to 11.00pm. Please try to understand my situation, I will provide you return air ticket with all other expenses on Etihad Airlines. Just give me 7 days from your time and hope you do not say ‘No’. Waiting for your kind reply soon dear…. bye Warm Regards, Farid Abduallah ফরিদ ভাই এর সেদিনের মেইল ছিল এটা। আউটলুক থেকে খুজে খুজে বের করে দিলাম।

আমি তো পুরাই 'থ'। বাংলাদেশ যে আমাকে ডাকছে তা আমার চেয়ে ভাল কে জানে। আর এমন সুযোগ তো হাত ছাড়া করা যাবে না। বছরে এক টিকিট পাই কিন্তু এবছর মনে হচ্ছে পুরাই যাবে। ২ বার।

তাই সুযোগটা হাত ছাড়া করবো না বলে ঠিক করলাম। নিজেকে কেমন জানো অতিউতসাহী মনে হল। এখন একটু শান্ত হয়ে বসে চিন্তা করা উচিৎ। কি করতে হবে সেখানে আমাকে । আমি কোথায় থাকবো তা জানা দরকার।

এছাড়া ফরিদ ভাই এর যে কাজের জন্য আমি যাবো তা আমি কতটুকু পারবো তাও বোঝা দরকার। এমনিতে লাফিয়ে লাভনেই। বাথরুমে চায়ের কাপ ধুবার জন্য ভিজিয়ে রেখে এসেছিলাম । মোবাইল ফোনটা হাতে নিয়েই বাথ রুমে গেলাম আর কাপ ধুতে ধুতে ফরিদ ভাই এর সাথে কথা বল্লাম। ফরিদ ভাই বল্লেন তুমি যদি রাজি থাকো তাহলে তাকে জানাতে, তিনি পরে আমাকে বিস্তারিত মেইলে জানাবেন।

তার কম্পুটারে বিজয় নেই তাই লিখতে পারছেন না। তবে আজ বিজয় কিনবেন। আমি অভ্রের কথা বলতই তিনি রিপ্লাই দিলেন তিনি শুধু বিজয়ই পারেন। যাই হোক তারপর থেকে আমার শুরু হল অপেক্ষ্যা। আমি অপেক্ষ্যায় ছিলাম কবে তার বিস্তারিত মেইল গুলো পাবো।

এদিকে সময় এর অবদানে আরও দু-একটা দিন চলে যায়। আমিও মনে করি ফরিদভাই তো কল দিলনা আমার দেওয়া দরকার। আবার মনে করি আমি দিলে উনি যদি আমাকে অতি উতসাহীমনে করে তাহলে আমার ভাল লাগবে না। আমি ছোট হব না। উনার দরকার উনিই ফোন দিবেন।

কিন্তু তার পরেও কি মনে করে যেন আমি সেদিন বিকেলে ফোন দিই তার বাংলাদেশের নাম্বারে। কিন্তু আমাকে আচ্যর্য্য করে দিল তার ফোনের ঐ আওয়াজটা- " দুক্ষ্যিত এই মুহুর্তে আপনার কাক্ষ্যিত মোবাইলে সংযোগ" । ফোন বন্ধ। ভাল কথা। মনে হল যে আমাকে আসলে উনি ভোগাস মারছেন।

একটা লোক কি এত টাকার ব্যাপারে ফাও উরাতে পারে। কখনো না। এতটা সিরিয়াস মানুষ তিনি না। তার পরেও মনের আশা মরে না। মনে হতে লাগলো হয়ত হটাৎ করেই আমাকে কলদিবেন।

এদিকে আমি আমার বসকেও জানিয়ে রেখেছিলাম যে আমার হটাৎ করেই ইমার্জেন্সি ছুটিতে যেতে হবে। তিনিও আমার উপর রেগে আছেন। যেই ফরিদ ভাই এর জন্য এত কিছু করি সেই ফরিদ ভাই কেমন যেন মাঝে মাঝে বড় অচেনা হয়ে যায়। এসব ভাবতে ভাবতে ১ সপ্তাহ চলে যায়। কিছুদিন পর একদিন সকালে মনে হয় ১০ বা ১১ টা হবে আমি তার কনফারমেশন মেইল পাই।

বিস্তারিত অনেক কিছুই বাংলায় লেখাছিল। (বিবিধ কারনে মেইলটা আমি দিতে পারলাম না। খুজে পেলে পরের পর্বে দিবো। ) তিনি বল্লেন ইমারজেন্সি টিকেট করে চলে আসতে। টাকার বিষয়টা পরে দেখা যাবে।

আমি অফিস থেকে টিকিট করালাম। সেদিনি-ই রাত ৯টা ২৫ মিনিটের ইতিহাদ এয়ার লাইন্সে রওনা করলাম। সকাল ৫টায় বাংলাদেশ এয়ার পোর্ট পৌছালাম। সকাল হয় ৫ টা ১৫ এরপর বা আরও পর। আমি কাউকে জানিয়ে আসিনাই তাই বাসায় এখনি যাবো না চিন্তা করেছি।

কিছুক্ষন অপেক্ষ্যা করে ৬ টার দিকে এয়ারপোর্ট থেকেই ট্যাক্সি ভাড়া করলাম। গন্তব্য মোহনা পেট্রল পাম্প। সেখানে পৌছালাম আনুমানিক ৭টা বার তারও কিছু পরে। পাবনা এক্সপ্রেস এর একটা কাউন্টার আছে সেখানে। পাবনা এক্সপ্রেস এ ৮টা ৪৫ এর গাড়িতে টিকিট করলাম।

এর মধ্যেই ফরিদ ভাই এর সাথে আমার কথা হচ্ছিল মোবাইলের মাধ্যমে। প্রায় দপুর ১ টা ৩০ এর দিকে পৌছালাম পাবনা সিটিতে। দেখলাম এখানেও পেট্রল পাম্পে গাড়ি থামিয়েছে। ফরিদ বোধহয় এই পাম্পের কথাই বলেছিলেন। সংগত কারনে সম্পুর্ন ঠিকানা দিতে বিরত হলাম।

আমি উনাকে ফোন দিয়ে আমার বর্তমান অবস্থ্যান জানালাম। একটু পর দেখি উনি একটা ইজি বাইকে করে এসে হাজির। আমি আসলে গাড়ি থেকে নেমে একটু দুরেই ব্যাগ স্যাগ নিয়ে চা খাচ্ছিলাম। উনি সরাসরি গাড়ি খুজতে লেগেগিয়েছিলেন। আমি ফোন দিয়ে কাছে ডেকে নিয়ে একসাথে রিকশায় উঠলাম হোটেল এর উদ্দশ্যে।

মাত্র ১৫ হয়েছে ফরিদ ভাই ছুটিতে এসেছেন কিন্তু তাকে চেনার কোন উপায় নেই। এতটা পরিবর্তন মানে পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছেন। মনে হল শুকিয়ে গিয়েছেন। রিকসায় বসে বসে গল্প করবো কি উনি দেখি উনার ফোনেই ব্যাস্ত্য। ভাগিনার সাথে কথা বলছেন।

ব্যাস্ত খুবিই মনে হল। আর এদিকে আমার মাথা দিয়ে প্রচন্ড ঘাম ঝরছে। এতটা পথ কন্টিনিউ জার্নি, উফফ-ইম্পসিবল । আমার ফিলিংস টা তখন আসলে বিছানাতে একটু গা হেলাবার। একটা আবাসিক এলাকার পাশ দিয়ে যাচ্ছি ।

আসলে যাচ্ছি বলতে গেলে তো অনেকক্ষনি হবে কিন্তু কোন বাজার দেখতে পারছি না কেন? সাধারনত এমন মফস্সল শহরের হোটেল গুলো আবাসিক এলাকায় হয় না। জিগেস করলাম ভাই কোথায় যাচ্ছেন । কিন্তু ফোনে ব্যাস্ত ভাই হাত দেখিয়ে বললেন চুপচাপ বসে থাকতে। আমি বসে থাকলাম । একটা বাসায় ঢুকলাম।

তিনতলা বাসা। বাইরে দিয়ে পুরান মনে হলেও ভিতর দিয়ে বেশ নতুন। বাসাটার তিন তলার উঠলাম। ফরিদ ভাই চাবি দিয়ে দরজার তালা খুলে আমাকে বসতে বললেন। শুয়ে আছি।

পায়ে মোজা পরা। ফরিদ ভাই কোথাও গিয়েছেন। মনে হচ্ছে ফ্লাটটা একদম খালি এখন। আমি ছাড়া এখন কেউ নেই। আমার গায়ে শক্তি পাচ্ছিলাম না।

আমি যেইরুমটাতে আছি সেই রুমটা খুব সুন্দর আসবাবে সাজানো। মনে হচ্ছে একটা কোন পরিপক্ক রমনি মনের রুপক হাত দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে আসবাবের মাধ্যমে। সোফাসেট, কার্পেট বক্সখাট যাই বলিনা কেন সব কিছুতেই আছে একটা নান্দনিকতার ছাপ। আসবার গুলো কালার মিলিয়ে কেনা তা সহজেই বোঝা যায়। হটাৎ যে কখন ঘুমিয়ে পরেছি মনে নেই ঘুম ভাংল টিভির শব্দে।

আমি ঘুরে এক কাত হয়ে শুয়ে ছিলাম। এপাশ ঘুরলাম দেখি টিভি চলছে। ফরিদভাই রিমোট হাতে লুংগি পরে সোফায় একপা নিচে দিয়ে বসে আছেন। টিভিতে খবর হচ্ছে। সেটাই দেখছেন।

হটাৎ ঘড়ির দিকে চোখ গেল আমার প্রায় ৮ টা বাজে । একি আমি ৫ ঘন্টা ঘুমিয়েছি। চুপচাপ উঠলাম বিছানা থেকে। ব্যাগ থেকে গামছা বের করে টয়লেটে কথা জিগেস করলাম ভাইকে। ভাই কোন কথা বল্লেন না।

হাত দিয়ে টয়লেট দেখিয়ে দিলেন। এতটা সময় আমি এসেছি এর মাঝে কয়েকটা জিনিস খুবি অবাক লাগলো। আমি বাথ রুমে না গিয়ে আবার বিছনায় বসলাম। উদ্দেশ্য একটু গেজানো। এটা আমার পুরানো অভ্যাস।

জীবনে অনেক ধরা খেয়েছি। অনেক উদ্ভব লোকের সাথে চলেছি তাই এই গেজানো Experience, আর স্বভাব গতজাত হিসেবে সেই সাথেই আছে সাবধানতা। তাই তার সামনে বসলাম । উদ্দশ্য যেভাবেই হোক একটু গেজানো চাই। প্রথমে আমি মনে করেছিলাম আমাকে হোটেলে উঠাবে যেহেতু বাড়িতে উনার বউ আছেন।

সেখানে তো আমাকে উঠানোর প্রশ্নই ছিলনা। তাই আমি মনে করেছিলাম হোটেল এ নিবেন। কিন্তু যখন দেখলাম আবাসিক এলাকাতে নিয়ে এলেন তখন বুঝলাম হয়ত এটা তার বাসা বা তার বন্ধুর বাসা হবে। সাধারনত এই ধরনের মানুষরা একটু রিজার্ভ টাইপের হয়ে থাকে। নিজের বাসার আসে পাশে বন্ধু বান্ধবদের আসতে দিতে চান না।

জানতে পারলাম এটা ফরিদ ভাই এর ভাড়া করা ফ্লাট। সরাসরি বাসায় নিয়ে আসাতে আমি একটু সংকোচ বোধ করেই বলেছিলাম কেন আনলেন আমাকে এখানে। সেই সময় উনি পাদ মার্কা একটা ছোট হাসি দিয়ে বল্লেন আগে খাওয়া দাওয়া কর পরে সব বলছি, সময় নাই তারাতারি কর। আমি কিছুই বুঝলাম না উনার এই হটকচিত উত্তর শুনে। আসার পর থেকেই দেখছি ফরিদ ভাই খুবি তারাহুরা করছেন।

সবকিছুতেই। এযেন ছাত্রাবাসে টয়লেটের জন্য সকালে উনাকে লাইন ধরতে হবে। উনাকে তো বলেছি আমি ৭ দিনের জন্য এসেছি। তার পরেও কি কোন দরকার আছে এভাবে হুঠাট করার। রাতের বেলা খাবার খেতে বসে জানলাম সব কথা।

আমি আসবো বলে ভাবিকে বাপের বাড়ি পাঠিয়েছেন নিজে ঢাকায় যাবার কথা বলে। তার মানে এখন ভাবি জানেন যে ফরিদ ভাই জরুরী কাজে ঢাকায়। খাবার টেবিলে তখনও একটা গুমোট গন্ধ। মনে হল এই বাড়িটা সব সময় বন্ধ থাকে- একে তো এখানে গুমোট গন্ধ, তার উপর এই রুমে মানে খাবার রুমের যত আসবাব আছে সব কিছুতেই এমন ধুলো পরেছে যে দেখে মনে হচ্ছে ৫-৬ মাস এই ঘরে কেউ আসে না। বাথ রুমগুলোও ব্যাবহার না হতে হতে সাদা দাগ পরে গেছে।

শুনলাম এখানে আসলে কেউ থাকেন না। পাশেই শশুর বাড়ি । ফরিদ ভাই এদেশে এলে বউকে এখানে নিয়ে মাস ২-৩ থাকেন আবার চলে যান। শুধুমাত্র আসবাব রাখার জন্যই এই ফ্লাটটা ভাড়া নেয়া। খেতে বসে খাবারের প্যাকেট দেখে বুজলাম খাবার হোটেল থেকে আনা।

ঠান্ডা একদম। গরম করার জন্য বললাম। উনি বল্লেন দেখ মাইক্রো ওভেন নাই, বউ তার মার বাসায় থাকেন তাই সেখানে নাকি সাথেই নিয়ে রেখেছেন। আর ঘরে ম্যাচ নাই। আমার কাছে ছিল।

আমি কথা বারালাম না। ইলেক্ট্রনিক্স পন্যের মধ্যে শুধু টিভিটাই এই বাসাতে আছে। সেটাও নাকি বাচত না, বেচে গেছে ডাবল ছিল বলে। খাবার খেতে বসার পর বুজতে পারলাম এ এলাকার লোকেরা ঝাল প্রচুর খায়। সে কথা আর বলি কি করে।

সেদিন খাবার পর থেকে যে কয়দিন ছিলাম সবকটা দিনই পেটের সাইজ খারাপ ছিল...। উফ.। মানুষ এত ঝাল খেতে পারে এখানে না আসলে তো আমি কোনদিনি জানতামই না। অংক করতে বসে গেলাম ক্লাশ সিক্স এর ছাত্রে মত- মনে করি, বরিশালের মানুষ যদি ৫৫ ভাগ ঝাল খায় আমি বলবো এখানকার মানুষ মিনিমাম ১১০হবে...। ১১০ কম হয়ে গেল ২২০ হলে ভালো হয় ২২০ ভোল্টের ঝাল।

ঝালের পাল্লা পেরিয়ে রাত ১১ টা ছুই ছুই সময়ে আমরা কম্পুটার নিয়ে বসলাম। ভাবতে অবাক লাগে ফরিদ ভাই এর ধারনা করেছিল যে এই কাজ গুলো আমি আজ রাতেই শেষ করে দিব। ১ রাত মানে ৫-৬ ঘন্টার মধ্যে করা হার্ড ড্রাইভ গুলো চেক করা যাবে। তাই তিনি আমার সাথে পিরাপিরি করছিলেন কাজে বসানোর জন্য। আমি বলেছিলাম আজ ঘুম দেই কথা বলি কাল কম্পুটারকে দেখবো।

তিনি তো একথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে আগুন। কথা না বারিয়ে বল্লাম কই ভাই, যাইয়া নিয়া আসেন। এরমাঝে অবশ্য আমরা কথা বলেছি। আরো অনেক কিছু জানতে পারলাম। বুজলাম।

কিন্তু সব কিছুর মাঝে বিশাল বিশাল ফাক । আমি কিছুই বুজতে পারছিলাম না। আবার অনেক কিছুই বুঝেছিলাম। আবার পরেই আমি যা বুজলাম তা আমি ঠিক বুজেছিলাম কিনা সেটাই বোধগম্য মনে হচ্ছিল না। এভাবেই একে একে আমার সামনে হাজির হল কম্পুটার, কিছু সিডি, পেন ড্রাইভ।

আমার হিসাব মতে আমাকে এখানে আনা হয়েছে একটা হার্ড ড্রাইভ অপারেশন করতে। মনে মনে ওটাকেই আশা করছিলাম। কিন্তু ওটাকে না দেখায় ফরিদ ভাইকে জিগাসা করলাম । উনি আমাকে পাশেই একটা তিন পাল্লার আলমারি দেখিয়ে বিছানা থেকে উঠে সোফার কাছে গেলেন। সোফার গদি উচিয়ে চাবি নিয়ে আলমারিটা খুললেন।

আলমারির ভেতর থেকে গয়নার বাক্সের মত একটা সিন্দুক নিয়ে আসলেন। আলমারিটা বন্দ করে আমার হাতে সিন্দুকটা দিয়ে আমার পাশেই হাটু গেড়ে নিচে বসলেন। আমাকে বল্লেন এর ভিতরেই হার্ড ড্রাইভটা আছে। খুজে বার কর। আমি বাক্সটা নিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখতে লাগলাম।

অসম্ভব সুন্দর কারুকাজ করা আছে এতে। দেখে মনে হয় কোন দামি কাঠ দিয়ে বানানো। সামনের দিক বলে মনে হয় সবদিকদিয়েই। কিন্তু সবদিক সামনের দিক নয়। বুজলাম বাক্সটার প্রধান কারুকাজই এটি।

মানুষকে একটা ধাধায় ফেলে দেয়া। কোন দিক দিয়ে বাক্সটা খুলবে তা বার করতে পারলাম না। ব্যার্থ হলাম....। ফরিদ ভাই বললেন আরেকটু চেস্টা করে দেখ। এবার আমি বাক্সের নিচের দিক দিয়ে দেখতে চেস্টা করলাম ।

দেখলাম উপর নিচ - ডান বাম ঘুরিয়ে । কিন্তু ৬ দিকেই হাতল সেকারনে ধাধায় পরে গেলাম। কিন্তু চাবি ঢুকানোর পোর্ট আছে দুই দিকে। চাবি দিলেন। চাবি আছে মোট ৮ টি।

প্রায় একি রকমের চাবি গুলো। আর এর মাঝেই আছে সেই হার্ড ডিস্ক। যার জন্য একজন মানুষ আমাকে বিদেশে থেকে দেশে এনেছেন। আমি বাক্সটাকে দেখছিলাম যে কিভাবে খুলা যায় - আর মনে মনে ভাবছিলাম কি আছে সেই হার্ডডিস্কে যার জন্য ফরিদ ভাই এত টাকা পানিতে দিলেন? ( আগামি পর্বেই হার্ড দিস্কের লুকায়িত খবরেরে জটলা ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করবে ) ( সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা তবে চরিত্রর নাম গুলো অন্য নামে দেওয়া হয়েছে..........। ) চলবে _.....



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.