আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিডন্সের ভাবনায় পাওয়ার প্লের ব্যাটিং



১৯৯৬ সালের শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনাটা খুব শোনা যায়। ক্রিকেটাররা ঠারেঠোরে বললেও আমজনতা উচ্চকণ্ঠ। বিশেষত নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার পর। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশার পারদ এখন আকাশচুম্বী। 'বাঘ'দের সঙ্গে 'কালো ঘোড়া' উপমাটি ইদানীং তাই যাচ্ছে খুব।

কোচ জেমি সিডন্স সেই প্রত্যাশার আগুনে ঝপ করে পানি ঢেলে দেন কিভাবে? তবে আকাশকুসুম কল্পনায় বুঁদ হয়ে থাকাদের দলে যে তিনি নেই, 'বাংলাদেশ বিশ্বকাপের ডার্ক হর্স কি না'_প্রশ্নের জবাবে তা বুঝিয়ে দিতে দ্বিধা করেননি, 'আমরা সম্ভবত তা-ই। কেননা র‌্যাংকিংয়ের প্রথম আট দলের বাইরে আমাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা আছে প্রতিপক্ষ দলগুলোতে ভীতি ছড়ানোর। বেশির ভাগ দল আমাদের বিপক্ষে সতর্কতার সঙ্গে খেলবে। বিশেষত এটা যেহেতু আমাদের নিজেদের মাঠে খেলা। ' আত্মবিশ্বাসের ঝিলিক আছে কোচের কথায়।

পাশাপাশি র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের কথা বলে বাস্তবতাও মনে করিয়ে দিয়েছেন এ অস্ট্রেলীয়। তাই বলে ভাববেন না যে সিডন্স নৈরাশ্যবাদী। শিষ্যদের সামর্থ্যে প্রবল আস্থা তাঁর। কাল জাতীয় দলের প্র্যাকটিস শেষের কথোপকপনে ঠিকরে বেরিয়েছে তা, 'বিশ্বকাপে ছেলেদের কাছে প্রত্যাশা থাকবে, তারা যা শিখেছে, তার প্রতিফলন যেন মাঠে থাকে। দলটি আসলে উন্নতির ধারায় আছে।

তবে আমরা এখনো পরিপূর্ণ ক্রিকেট খেলতে পারছি না। কখনো কখনো হয়তো ভালো ব্যাটিং করছি। কখনো ভালো বোলিং। কিন্তু সব একসঙ্গে হচ্ছে না। কোনো এক ম্যাচের দিন যদি সবগুলো উন্নতির প্রতিফলন দেখা যায়, তাহলে যেকোনো দলকে হারাতে সক্ষম আমরা।

' তবে দল হিসেবে সরাসরি কোনো লক্ষ্যের কথা বলানো গেল না সিডন্সের মুখ দিয়ে। হয়তো দলকে বাড়তি কোনো চাপে ফেলতে চান না বলেই। বাংলাদেশের মতো দলের উন্নতির জায়গা যে অফুরান, সেটি সবার জানা। জানা কথাটিই কাল আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন কোচ, 'ওয়ানডে ম্যাচে তিন-চার-পাঁচটি পর্যায় আছে। আমরা সবগুলোতেই উন্নতি করতে চাই।

টপ অর্ডার ব্যাটিং, নতুন বলে বোলিং, পাওয়ার প্লে ব্যাটিং_সব জায়গায় উন্নতির দিকে মনোযোগ দিচ্ছি আমরা। ' এর মধ্যে আলাদা মনোযোগের দাবি রাখে পাওয়ার প্লে ব্যাটিং। বাংলাদেশ দলকে প্রায় প্রতি ম্যাচেই ভোগাচ্ছে যা। সিডন্স অবশ্য এ জায়গায় দেখছেন আশার আলো, 'পাওয়ার প্লে ব্যাটিংয়ে আমাদের আরো স্মার্ট হতে হবে। প্রিমিয়ার লিগে রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) ও মুশফিক ধারাবাহিকভাবে ভালো করেছে।

সেটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য দারুণ খবর। আসলে ওই সময়টায়ও আমাদের নিয়মসম্মত ক্রিকেট খেলতে হবে, স্লগ করলে হবে না। ' প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বের ম্যাচগুলো খেলেছেন ক্রিকেটাররা। এখন জাতীয় দলের ক্যাম্পে চলে আসায় ম্যাচ প্র্যাকটিসটা আর হচ্ছে না। ভরসা বলতে বিশ্বকাপের আগে কানাডা-পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি অফিশিয়াল প্র্যাকটিস ম্যাচ।

মাঝের সময়টায় ম্যাচ প্র্যাকটিসের অভাবটা কি বোধ করছেন না সিডন্স? উত্তর যতটা হ্যাঁ-সূচক, উল্টোটা তার চেয়ে বেশি, 'প্র্যাকটিস ম্যাচে যদি তামিম-সাকিব-জুনায়েদরা ১০-এর কম করে আউট হয়, তাহলে তো সারা দিন তাদের আর কিছু করার নেই। এ কারণেই আমার মনে হয়, প্র্যাকটিস সেশনটাই ভালো। এতে সবাই অনুশীলনের জন্য যথেষ্ট সময় পাবে। হ্যাঁ, যদি কোনো আন্তর্জাতিক দল পাওয়া যায়, তাহলে আমি তাদের বিপক্ষে খেলতে আগ্রহী। নইলে বাংলাদেশের অন্য ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া দলের বিপক্ষে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলার ইচ্ছা নেই।

' এসব তো গেল বাংলাদেশ দলের কথা। ব্যক্তিগত হিসেবেও তো সিডন্সের কম রোমাঞ্চিত হওয়ার কথা নয়। গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলের সহকারী কোচ ছিলেন। এবার মূল কোচ হিসেবে বিশ্বমঞ্চে পুনঃপ্রবেশ। রোমাঞ্চটা গোপন করলেন না সিডন্স, 'বিশ্বকাপ খুব দ্রুতই এগিয়ে আসছে।

মাত্র দুই-তিন সপ্তাহ বাকি। ছেলেদের নিয়ে সেই বিশ্বকাপে যাওয়ার সম্ভাবনায় আমি রোমাঞ্চিত। তাতে আরেকবার আমার বিশ্বকাপে ফেরা হবে। ' ফেরাটা সুখকর হলেই হয়। গতবারের অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্বজয়ী হয়তো হবে না বাংলাদেশ।

'ডার্ক হর্স' উপমার মর্যাদা রাখলে নিশ্চয়ই খুশি হবেন সিডন্স। মুণ্ডিতমস্তক এ অস্ট্রেলীয়র সেটি না বললেও চলছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.