আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিডন্সের কথা এবং আমাদের প্রতিক্রিয়া



জেমি সিডন্সের কথা শুনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা নাকি চটে গেছেন। কেউ কেউ তাকে এক হাত দেখে নেওয়ার কথাও বলছেন। তো জেমি কি বলেছেন? বলেছেন, এই দেশের ক্রিকেট কর্তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। এরা কাজ করতে চান না; সোজা কথায় অকর্মন্য। সবচেয়ে বেশি বলেছেন, আমাদের প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেট কাঠামো নিয়ে।

আমি মানুষ জেমি সিডন্স বা কোচ জেমি সিডন্স কারোরই ভক্ত কাতারে পড়ি না। বরং তাকে নিয়ে আমার ‘অ্যালার্জিটা’ এর আগে গোটা কতক লেখায় ফুটে উঠেছে বলেই আমার ধারণা। এমনকি তার বেফাস কথা বলাও আমি সমর্থন করি না। কিন্তু এখন জেমি সিডন্স আমাদের কোচ নন। একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে তার কথায় চটে না উঠে বরং গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত ছিল কথাগুলোকে।

আর কথাগুলো তো নিতান্ত মিথ্যে নয়। আমাদের বর্তমান ক্রিকেট বোর্ডকে বলা যায় বাংলাদেশের ‘বেস্ট পসিবল’ লোকদের নিয়ে তৈরি করা বোর্ড। এই বোর্ডে গাজী আশরাফ হোসন লিপুর মতো মেধা আছে, আহমেদ সাজ্জাদুল ইসলাম ববি আর মাহবুব আনামের মতো পরীক্ষিত ও যোগ্য সংগঠক আছেন। বোর্ডের সঙ্গে কোনো না কোনো ভাবে আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, হাবিবুল বাশারের মতো ক্রিকেটার আছেন। বিভিন্ন ফর্মে কর্মকান্ডে জড়িয়ে আছেন জালাল আহমেদ চৌধুরী, সারোয়ার ইমরানদের মতো ক্রিকেট মস্তিষ্ক।

তারপরও স্বীকার করতে হবে বোর্ডের কাজকর্ম অত্যন্ত গতিহীন এবং কার্যকর সিদ্ধান্তের বড় অভাব। কারণ কী? কারণটা পুরোনো, নতুন করে বলেছেন জেমি: পেশাদারলোকদের কাধে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না। সর্বজনাব লিপু, মাহবুব, ববিদের বুঝতে হবে; দিন বদলেছে। শুধু রোমান্টিসিজম দিয়ে আর খেলাধুলা চলে না। আপনাদের বয়স হচ্ছে।

এখন যে কর্মতৎপরতা দেখানো দরকার, তা দেখানোর বয়স ও সময় কোনোটাই আপনাদের নেই। আর নতুনরা জীবন-জীবিকা নিয়ে এতোই ব্যস্ত, স্বেচ্ছাশ্রম ব্যাপারটা তাদের কাছে আশা করে লাভ নেই। পেশাদার লোকের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। সব ক্ষমতা নিজেদের হাতে রাখার জন্য পেশাদার পদে অনভিজ্ঞ ও শক্তিবিহীন বড় কর্তা বসাবেন না। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগে ভুল করেছেন; ভুলটা সংশোধন করুন পারলে।

আর ক্ষমতা ভাগ করে দিন। লাখ লাখ টাকা বেতন দিয়ে ‘জি ভাই’ টাইপের লোক রেখে লাভ নেই। আর জেমির দ্বিতীয় আপত্তি উইকেট নিয়ে। খুব সত্যি কথা। এমন নখদন্তহীন উইকেট আর কতোকাল? কি হচ্ছে এই উইকেট দিয়ে? এই নিচু বাউন্স আর ধীর গতির উইকেটে খেলে খেলে স্পিনাররা কৃত্রিম আত্মবিশ্বাস পাচ্ছে।

নিজের শক্তি বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ তাদের ভিতর নেই। অবচেতন মনে তারা ভাবছে, দুনিয়ার সব জায়গায় বোধহয় এমন উইকেটে খেলা হবে। ভাই, ক্রিকেট দুনিয়াটা মিরপুর আর চট্টগ্রামে নয়। এই উইকেট স্পিনার ছাড়া আর কারো কাজে লাগে না। ব্যাটসম্যানরা মন খুলে শট খেলতে পারে না।

তারা বাধ্য হয়ে ডিফেন্সিভ হয়ে যাচ্ছে। যেটা বাইরের উইকেটে গেলে আবার উল্টো বিপদ তৈরি করবে। আর ফাস্ট বোলাররা? জেমি ভালো বলেছে, ‘এমন উইকেট থাকলে নতুন ক্রিকেটাররা ফাস্ট বল আর করতেই চাইবে না। সবাই স্পিনার হতে চাইবে। ’ কথা হল, আর্ন্তজাতিক ম্যাচে রনকৌশল হিসেবে এমন উইকেট চলতে পারে।

কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেট কেন এই নখ-দন্তহীন উইকেট। ঘরোয়া ক্রিকেটে একটা উইকেট বানান গতিসমৃদ্ধ। যেখানে বল করে ফাস্ট বোলারদের উত্তেজনা বাড়বে। যে পেস খেলতে ব্যাটসম্যানরা ভয় পাবে। একটা স্পোর্টিং উইকেট হোক, যেখানে ব্যাটে বলে লড়াই হবে।

বল মুভ করবে। ***** ধুর! এসব কথা বলে লাভ কী! ওয়াসিম আকরাম, পিটার রোবাক, সুনীল গাভাস্কাররা এসব বলে মুখে ফেনা তুলে ফেললেন; তাদের কথা কেউ শুনল না। আর দেবব্রত মুখোপাধ্যায়!!!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.