আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিষ্টাচার কি বিলুপ্তির পথে!!!!!!!!!!!!



শিষ্টাচার!!!! ভদ্রতা!! নম্রতা! এ শব্দগুলো কি অভিধান থেকে উঠে যাবে একদিন? প্রতিপত্তির প্রতিযোগিতায় আমরা কি হারাতে বসেছি আমাদের সভ্যতার অপূর্ব রূপ শিষ্টাচার? এর শুরু কবে থেকে সেটি হয়তো বলতে পারব না তবে মার্কেটিং এর ভাষায় এর যে গ্রোয়িং পয়েন্ট সেটি আর নতুন করে বলার কিছু নাই। আমরা এখন সম্মান করি অর্থবৃত্তকে মানুষকে নয়। সেই ছোটবেলায় শেখা সৃষ্টাচার যেটি দিয়েই চলছে আজ অবধি, প্রতিপত্তির প্রতিযোগিতায় যোগ হয়নি এতটুকুও। আজকের বিষয় রাজনীতির মাধ্যমে শিষ্টাচার পতন- রাজনৈতিক অঙ্গনে যাদের আসা যাওয়া বা খোজ খবর রাখেন তারা হয়তো বিষয়টি মনে করতে পারবেন, লেঃ জেঃ হু মু এরশাদ সাহেরব উদ্দেশ্যে জুতা নিক্ষেপের কথা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই স্বৈরাচারই যে সামান্যতম উন্নয়ন ঘটিয়েছে তা অস্বীকার করার মত যুক্তি আমার কাছে নাই।

দেশের বিভিন্ন হাইওয়ে ব্রিজ কালভাট থেকে শুরু করে যেখানেই তাকাবেন দেখবেন এই ব্যক্তিত্বের ছোঁয়া নাই এমনটি খুজে পাওয়া অনেকটাই মুশকিল। তারপরেও শুধু স্বৈরাচারের কারনেই সইতে হয়েছে নানাবিধ অপমান, খাটতে হয়েছে জেলের ঘানি, খেতে হয়েছে জুতাও। তৎকালীন বিএনপির এক উঠতি নেতা জুতা নিক্ষেপ করেছিলেন কুষ্টিয়া'তে জনসভায়। আর ঐ জুতা নিক্ষেপেই হয়ে ওঠে উঠতি নেতা থেকে নেতা, ফুলের মাল্য দিয়ে বরণ করা হয় তাকে। অপরূপ শিষ্টাচার কারনে কুষ্টিয়া বাসীও উন্নয়নের মুখ দেখেনাই যতদিন ছিলেন এরশাদ সাহেব।

এয়ারপোর্টের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমি আজঅবধি পড়ে আছে, এশিয়ার বৃহৎ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার কথা থাকলেও দেশীয় মানের বিশ্ববিদ্যালয়টি দিয়েই শেষ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পর্ব। এভাবে জাতীয় পর্যায় থেকেই বিলুপ্ত হচ্ছে আমাদের শিষ্টাচার। জুতা নিক্ষেপের পর বাহবা পেয়েছিলেন অনেক!! একটা জাতি হিসেবে কতটা নিকৃষ্ট হলে একজন ক্ষমতাসীনের জুতা নিক্ষেপকারীকে মাল্য দিয়ে বরণ করতে পারি। আমরা কি ভেবে দেখেছি, যে বেয়াদবিটা করা হয়েছিল উনার সাথে সেটি সে অন্য যে কারো সাথে যে কোন সময় করবে তার কোন নিশ্চয়তা নাই। এর ধারাবাহিকতায় অনেক বেয়াদপিই আমরা লক্ষ্য করে আসছি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মাঝে।

ছাত্র রজনীতিতে লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে বাংলাদেশের বৃহৎ দুইটি ছাত্র সংগঠনের অবস্থা। ক্লাসের যে ছাত্রগুলি সবচাইতে খারাপ তারাই এখন ছাত্র রাজনীতির মধ্যমনি। যে সব চেয়ে বেশী বেয়াদব তাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে আমাদের জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক কর্ণধারেরা। একবার আমাদের এলাকার এক ছাত্র নেতা (৩য় বারে এসএসসি ৩য় বিভাগে/এইচএসসি ৩বার বহিষ্কার/পুনরায় রেজিষ্ট্রেশন করে ৪বারের মাথায় ২য় বিভাগে অন্যের দিয়ে লেখিয়ে নিয়ে পাশ) থানা নির্বাহী অফিসারের গাড়ী ভাংচুর করায় বাহবা কামালেন অনেক। একদিনে সভাপতি বনে গেলেন।

শোনা যায় নেতা হতে হলে তার বিরুদ্ধে কয়েটি মামলা না থাকলে নাকি নেতাই হওয়া সম্ভব নয়। জাতীয় পর্যায়ের বেয়াদবী শেখানোর আরো একটি বিরল উদাহরণ শৃষ্টি করলেন গত বছরই আমাদের মাননীয় আইন প্রতিমন্ত্রী মহোদয়। রাজাকারদের উনি বলতে বলেছেন 'তুই রাজাকা' যা নিয়ে আমরা মাতামাতিও করেছি বেশ। মন্ত্রী মহোদয় ভেবে দেখেছেন কি ঐ শিশুটি অন্যকে সম্মান দেখাবে না একদিন আপনাকেও দেখাবে না। আজকে যে বেয়াদবি শেখাবে দু'দিন পর তার সাথেই বেয়াদবি করবে এটিই চিরন্তন সত্য।

যার ফলশ্রুতিতে এখন আর জুনিয়র নেতারা সিনিয়র নেতাদের সম্মান দেন না, দলের মধ্যে সমালোচকের অভাব নাই, নিজেদের মধ্যে মারামারি কাটা কাটি লেগেই আছে। আর এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মাঝ থেকে শৃষ্টাচার নামক বস্তুটি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.