আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলা মুভি বাংলা রিভিউ- “মনের মানুষ”



কবে পাবো সেই মনের মানুষের দেখা?? আদৌ কি পাবো?? নাকি থেকে যাবো মনের মানুষের থেকে বহু দূরে?? অসীম শূণ্যতার দৃষ্টিতে লালন তাকায় অথৈ পানির নদীটির দিকে। হঠাৎ ভেসে আসে তার কন্ঠে : “মিলন হবে কত দিনে?? আমার মনে মানুষেরও সনে ... “ এভাবেই সমাপ্তি হয় মনের মানুষ মুভিটির। কিন্তু লালনের ন্যায় সকল দর্শকেরই যেন অপূর্ণ থেকে যায় সেই প্রশ্নের উত্তরের জন্য। কবে পাবো মনের মানুষের দেখা?? এভাবেই সম্পূর্ণ মুভিটিতে দর্শকদের এক জীবন দর্শনের নৌকায় ভাসিয়েছেন পরিচালক গৌতম ঘোষ। মুভিটির কাহিনীর শুরু হয় গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় ভাই শ্রী জ্যোরিন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সময়ের বিখ্যাত দার্শনিক কবি লালন ফকিরের আলাপচারিতার মাধ্যমে।

জীবন দর্শনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জ্যোরিন্দ্রনাথের কৌতুহল এবং লালনের অবাক করা সব উত্তর!! এবং মুভিটি চলে এর ফাঁকে বিভিন্ন সময়ে লালনের জীবনের অতীত কাহিনীগুলির মাধ্যমে। কীভাবে লালনের সাধারণ জীবন হয়ে ওঠে এক বাউলের জীবন। কীভাবে শিমুলতলায় তিনি গড়ে তোলেন অদ্ভূত এক স্বপ্নের সমাজ। কীভাবে মানুষের প্রতিহিংসার শিকার হতে হয় তাকে। এভাবেই গড়ে ওঠে মনের মানুষের কাহিনী।

লালন ফকির এবং তার দর্শনের উপর দিয়ে কথা বলা স্পর্ধা আমার নেই। তবে মুভি হিসেবে “মনের মানুষ” কে বেশ বিরক্তিকর একটি মুভি বলবো। গৌতম ঘোষ যদিও কোন সাধারন মানের বাণিজ্যিক মুভি পরিচালক নন। তবে তার প্রত্যেকটি মুভি বেশ রোমাঞ্চকর হয়ে থাকে। এ জন্য মুভিটির উপর আমার আশার পাহাড় জমে ছিল যেটা খুব একটা পূরণ হয়নি।

মুভিটিতে কোন কাহিনীর শুরু এবং সমাপ্তি নেই। শুধুমাত্র অসাধারণ কিছু দৃশ্যের পুষ্পগুচ্ছ!! অভিনয়ের দিক দিয়ে বলবো অসাধারণ বললে কম হবে লালন ফকির চরিত্রে প্রসেনজিতের অভিনয়। এটাই প্রসেনজিতের সেরা অভিনয় নিঃসন্দেহে। যুবক লালন এবং বৃদ্ধ উভয় চরিত্রে দারুন অভিনয় করেছেন। এরপরই যার নাম নিতে হবে সে হলো কালুয়া চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী।

বিশ্বমানের অভিনয় করে সকলের মন জয় করে নিয়েছে চঞ্চল। এছাড়া বেশ ভালো করেছেন কমলী চরিত্রে পাউলি দাম। সিরাজ সাই চরিত্রে রাইসুল ইসলাম আসাদের চরিত্র বেশ সংক্ষিপ্ত হলেও প্রশংসা করে শেষ করা যায় না। এছাড়া জ্যোতিরিন্দ্রনাথ চরিত্রে প্রিয়াংশু চট্টোপধ্যায় বেশ ভালো করেছেন। মুভিটি মোট ২ ঘন্টা ৩০ মিনিটের।

সুতরাং বেশ ধৈর্য সহকারে দেখতে হয়েছে। মোট ১৮টি গান আছে মুভিটিতে। সুতরাং মরমি লালন সংগীত যাদের খুব একটা পছন্দ নয় তাদের জন্য বেশ কষ্ট হতে পারে মুভিটি। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে মুভিটি সকলের ভালো লাগার মত হয়নি। এছাড়া জীবন দর্শনের ভাবের মধ্যে মানুষের জৈবিক চাহিদার প্রয়োজনীয়তাকে একটু বেশি গুরুত্ব দিয়ে দৃশ্যগুলিকে বেশ বেখাপ্পা বলে মনে হয়েছে ।

তবে বাংলাদেশের মানুষেরা যে কতটা মুভি পাগল এই মুভির প্রতি আগ্রহে সেটা প্রমাণিত হয়। এক কথায় মুভিটি দেখার জন্য একরকম ঝাপিয়েই পরেছে যেটি খুবই আশাবাদী একটা দিক। আশা করি এ দেশের সকল মেধাবী পরিচালকদের নজরে সেটি আসবে। সব মিলিয়ে একটু অধিক ভাব-গাম্ভীর্যপূর্ণ মুভি। রেটিং – ৩/৫



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.