আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কর্পোরেট এর সাথে সহমত রেখে দ্বিমত


আমার এক ব্লগীয় বড় ভাই কর্পোরেট সম্পর্কে সুন্দর সহমত রেখে দ্বিমত পোষণ করেন। এই আমিও উনার সাথে একমত একমত একমত। ইভেন্ট করাকালীন সময়টায় এক কর্পোরেট জগতের উঁচু গোত্রের বন্ধু শুনিয়েছিল একটি লাইন- বন্ধু আমরা মসজিদ করার জন্য অর্থ প্রদান করি না, আমরা কোন দুঃস্থদের জন্য হাত বাড়িয়ে দেই না সাহায্যের, যদি না তা বেশিরভাগ লোক অবগত হওয়ার কোণ সুযোগ থাকে। আমরা অর্থ দেই নাম ফুটাতে। আমরা অর্থ খরচ করি- প্রচারে।

সেখানে মানবতার কোণই সুযোগ নাই। আমি চাইলেও আমার উপরওয়ালা চাইবেন না। কে চায় তার পয়সা বেহুদা জলে ফেলতে যদি না তা থেকে তার রিটার্ন না আসে? হাসতে হাসতে সেদিন শুনছিলাম বন্ধুটির কথা। এই আমিও হেসেছিলাম একটানা। আসলেই তো কর্পোরেটদের মূল ই তো হচ্ছে- ব্যবসায় পুঁজি খাটাও আর লাভ বের করে আনো তা থেকে যত পারো।

আরও বেশি আরও বেশি। মেনে নিয়েছি তার কথা। ভাবনায় আসলো প্রথমেই- ভাই টাকা উনার। উনি যদি তা থেকে তার লাভ খুঁজে। কার কি করার আছে আসলে।

মানবতা কি আর সব জায়গায় খাটে? প্রশ্নবোধক পর্যন্ত আমি আমাকেই বললাম তাদের মতের গোত্রীয় হওয়ার জন্য। ভালো না লাগলেও নিবো কর্পোরেট এর স্বাদ। এর নামই হচ্ছে মনে হয় অভিনয়। আরও বাজে ভাবে বলতে গেলে ভণ্ডামি! কর্পোরেটদের দরকারও আছে আবার দরকারটি নিয়ে প্রশ্নও আছে অনেক। তা’ই বলার চেষ্টা করছি।

না হয় ভুলই কিছু বললাম নিজের মতো করে। আমার সৌভাগ্য হয় নি মাকাল ফল দেখার। এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না- যে তা দেখতে কেমন। বাহিরে টসটসে আর ভেতরটা হচ্ছে ভাল না বলেই জানি। কিন্তু তার যে একটা নাম আর সুনাম যাই বলি।

যুগ যুগ ধরে চলছেই- মাকাল ফল। কখনও তা ব্যবহার হয় মানুষকে ডমিনেট করার উদ্দেশ্যে অথবা তার ফাকা অবস্থা বোঝানোর জন্য। হয়ত আমার মতো বেশি বুঝনে ওয়ালার জন্য মাকাল ফলই ভাল উদাহরণ হতে পারে। তবু সান্ত্বনা যে আছি কর্পোরেট এর সাথেই থুক্কু মাকাল ফল এর গোত্রীয় হয়ে বিশেষণের মালা গলায় ঝুলিয়ে। সাহায্য করবে না ঠিকই।

কিন্তু শ্লোগান এর ভন্ডামী দেখাবে। কোটি টাকা দিয়ে ঝুলাবে বিজ্ঞাপন সারা ঢাকায়! দেখেন কি বলতে কি বলে ফেলছি। মাকাল ফল হলে যা হয়। না হলে কি আর যারা বলে “বদলে যাও বদলে দাও” সে কর্পোরেটগনরা নিজেরাই বদলান না। কি হাস্যকর কথা।

আসলেই হাস্যকর। যে পথ দেখাচ্ছে সেই নিজে অন্য পথ দিয়ে হাঁটছে! অবাক লাগেই আসলে। মূল বিষয় হলো গিয়ে, এই যে মাকাল ফল “কর্পোরেট” দের স্পন্সরে ঢাকার প্রতিটি খোলা জায়গায় একটি করে জায়ান্ট স্ক্রিন আর সাথে জেনারেটর দিলেও মনে হয় কোণ কর্পোরেট এরই অর্থের কমতি হবে না। এই বাংলাদেশে যখন কেউই বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে না। সে কোণ ভাবেই ট্যাক্স ফাকি দেন নাই।

হালের কর্পোরেটগনরা তো আরও পাপী। তা জানাই আছে। নাহলে কি কর্পোরেট একজন চাকরের কি থুক্কু চাকুরী করনে ওয়ালা একজন হিসাবরক্ষক এর বেতন হতে পারে লক্ষাধিক অথবা তারও বেশি। সে অনুযায়ী একজন সরকারী চাকরের সর্বোচ্চ বেতন কত তা নাই উল্লেখ করলাম। সবাই জানি আমরা।

সে কর্পোরেট চাকরদের কাউকে কাউকে রাখাই হয়- কিভাবে টাকা ফাকি দেয়া যায় বেশি করে সরকারের। এ জানা কথা। তারমতো উদাহরন আরও আছেই বাস্তব। তবে কেন এই ইচ্ছেটা পূরণ হবে না আমাদের। জানি আপনারা আমাদের টাকা দিয়েই পুঁজিপতি হন।

আমরা নেই সেবা আর আপনারা বাজারের গতানুগতিক মূল্যের চেয়ে নিয়ে নেন বেশি। এমনিতেই কম আমাদের তাও আবার চুষে নিচ্ছেন বেশি। এমন ব্যবসার মজা যে কি, কথা কইলেই টাকা। আবার টাকা জমা রাখলেই তা থেকে বাচ্চা বের হওয়া টাকা। হালে ট্রেন্ড হচ্ছে তুমি সংবাদের টেকনিক বেচো।

ভুল সংবাদ বেচাও নাকি টাকা। তাহলে আর চাইতে সমস্যা কি। হতে পারে তা চাঁদা। হতে পারে দাবী। হতে পারে জোর করে নেয়া।

হাওয়া বেচা টাকা আরেকদিকে স্মল নামে চড়া হারের মতো সুদে ঋনপ্রদানকারীর মতো কর্পোরেট-গন কেন এ সামান্য কাজটুকু করবেন না। হয়ত করবেন। তবে কেন তা ব্যাপক আকারে হবে না। তার অনুরোধের জন্যই এত কিছু উপর থেকে বলে আসা। কথায় আছে না- সমালোচনাকারী বন্ধুই তোমার প্রকৃত বন্ধু।

তা থেকে তুমিই বেছে নাও। মানবতার নাম নিয়ে অমুক দাতব্য আর অমুক জনহিতকর কাজ করে ট্যাক্স রিবেট নেয়ার জন্য ফাঁকিবাজি। কেউ কেউ তো প্রয়োজনে ৫০০ ল্যাপটপ দিয়ে দেন জেনারেলের হুকুমে। তবে কেন বিশাল আকারে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করবেন না। এক কাজে দুই কাজ হবে।

বিজ্ঞাপনও হবে সাথে জনহিতকর কাজ। লাভ তো আপনাদেরই বেশি কর্পোরেটগন! হাস্যকর কথা কি জানেন বলছি পাঠকদের, যত-বেশি এ নিয়ে বলবেন ততবেশি তাদের চোখ চকচকে লোভী একটি প্ল্যাটফর্ম হবে আর আমাদের লাভ হবে দেখতে পারবো বিপদের সঙ্গী এই জায়ান্ট স্ক্রিনে ফ্রি সবার সাথে খেলা দেখা। নিজের লাভের কথা না হয় নিজেই বলে ফেললাম। হাজার হলেও আমজনতা। কাজের ফাকে কেউ কেউ একটু স্টেডিয়ামের আবেশ নিবেন।

টিকিট না পেয়েছেন তো কি হয়েছে। কাছাকাছি ভাল পরিবেশ থাকলে তো ঢু মারবেনই। কেন জানি মনেই হয়। হালে তো জায়ান্ট স্ক্রিন মানে কি বড় পর্দা, নাকি বড় পর্দা মানে জায়ান্ট স্ক্রিন। দেখেন তো কোন শব্দটি বেশি প্রচলিত হয়ে আছে।

পাবেন কিন্তু ভিনদেশী শব্দেরই প্রচলন- জায়ান্ট স্ক্রিন। কর্পোরেট কি না করতে পারে আসলে। আমার ভাষায়ও তাহলে তাদের ঢুকে যাওয়ার অনুমতি আমরা দিয়েছি। কষ্ট করে না হয় একবার একটু ভাবুন। হায়রে কর্পোরেট তোমরা আর ছারবানা আমাদের বুঝছি।

এখন তো একুশ আর বিজয় কোন কোন কর্পোরেট এর! আমাদের তাহলে কোনটি? সামনের বিশ্বকাপও না হয় হয়ে যাক কর্পোরেটদের। প্রতিবাদ যখন কেউই করেন না। না হয় দৌড়াই নিজে নিজেই। জানি এ দৌড়ে কর্পোরেটদের সাথে কেউই পারবেন না। আপনারা কেউ কি পারবেন?
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.