আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভ্রমণ বিষয়ক ব্লগঃ শেখ জায়িদ মসজিদ আবুধাবী (বিশ্বের ৮তম মসজিদ)

জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই।

গত ১০.১২.২০১০ আমাদের প্রিয় ব্লগার আবু ফয়সল (লোকমান ভাই) এর আমন্ত্রনে আবুধাবীস্থ শেখ জায়িদ মসজিদ পরিদর্শন করেছি ও নামায আদায় করেছি। লোকমান ভাইয়ের কর্মস্থলের পাশেই এই সুন্দর মসজিদের অবস্থান। বিশাল এলাকা জুড়ে এই মসজিদের নান্দনিক স্থাপনা দেখতে প্রতিদিন বিশ্বের হাজারো পর্যটক ভিড় করছে.. তবে মহিলাদেরকে বোরকা পরেই মসজিদ পরিদর্শন করার অনুমুতি রয়েছে। লোকমান ভাই আমাকে মসজিদের চারপাশে ঘুরে ঘুরে দেখিয়েছে.. পরিদর্শন শেষে আবুবাধীর মোছাফ্ফা এরিয়ায় বাঙ্গালী হোটেলে আপ্যায়ন.... (ভাবী থাকলে বাসায় খাওয়ার সুযোগ পেতাম)..আমাদের এই প্রিয় ব্লগারের সান্নিধ্য পেয়ে ওনার আথিতীয়তায় আমি খুব খুশী হয়েছি.. তাই লোকমান ভাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আসুন এবার আমরা শেখ জায়িদ মসজিদের ছবি দেখিঃ আমার নিজের ক্যামেরা তোলা ছবি................................... এই সমজিদ টি সারা পৃথিবীতে ৮ম এবং নিজ দেশে ১ম । শেখ জায়িদ মসজিদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীতে অবস্থিত এই সমজিদ টি সারা পৃথিবীতে ৮ম এবং নিজ দেশে ১ম । শেখ জায়িদ এর নেতৃত্বের হাত দিয়েই এই দেশ প্রতিষ্ঠ হয়, তাই এই মসজিদের নামকরন তার নামে করা হয়। মসজিদটির বাইরের নিমার্ন কাজ এখনো চলছে, তথাপি এই মসজিদটিকে ২০০৭ সালের রমজান মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এই মসজিদের ডানপাশে রয়েছে শেখ জায়িদ এর সমাধি, সেখানে প্রতিনিয়ত কুরআন তেলাওয়াত চলতে থাকে।

কেউ যদি ক্যামের‌্যা নিয়ে যান তাহলে উক্ত মসজিদের সব কিছুই আপনি বিনা বাধায় ক্যামেরাবন্ধী করতে পারবেন, কিন্তু সমাধিস্থ কোন ছবি আপনাকে উঠাতে দিবে না। তাছাড়া বিধর্মী যে কেই এই মসজিদ দেখার জন্য প্রবেশ করতে পারে, শুধু মাত্র শুক্রবার ছাড়া, এছাড়াও মহিলা হলে কালো বোরকা পরিধান করে ভিতরে প্রবেশ এবং অমুসলিম নারী পুরুষ যেই হোক না কেন পবিত্র গ্রস্থ কুরআন কোনভাবেই স্পর্শ করতে পারবে না। নকসা শেখ জায়িদ মসজিদের পুরো নকসায় আরব, মুঘল এবং মুনরিস স্থাপত্যের একটি সংমিশ্রন দেখা যায়্। মসজিদটি মুঘল এবং মুনরিস স্থাপত্যের দিকে অনুপ্রানিত হয়ে করা হয়েছে, যা লাহোর এর বাদশাহী মসজিদ এবং কাসাব্লাংকার হাসান টু মসজিদের সরাসরি ছায়া পাওয়া যায়। গম্বুজের নকসা এবং ফ্লোরের নকসা প্রনয়নে বাদশাহী মসজিদ হতে অনুপ্রানিত হয়ে করা হয়েছে এবং স্থাপত্যের কাঠামোগুলোর নকসা প্রনয়নে অনুপ্রানিত করা হয়েছে মুগল এবং মুনরিস জিজাইন হতে।

এর খিলান গুলো দেখতে মুনরিস নকসার মতো এবং এর মিনারগুলোর নকসা করা হয়েছে আরবের ঐতিহ্যকে সামনে রেখে। প্রধান নামাজকক্ষের দেওয়ালে রয়েছে আল্লাহ গুনবাচক ৯৯টি নাম এবং এর নকসাগুলোতে বিশেষ এক ধরনের লাইটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, যা দেখে মনে হতে পারে প্রতিটি নকসার লাইনের সাথে বুজি আলো জালানো আছে। পুরো মসজিদের আগা হতো গোড়া পর্যন্ত কারুকাজ খচিত নকসা করা। আয়াতন এই মসজিদে একসাথে ৪০ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রধান নামাজ কক্ষে ৯ হাজার এবং এর সাথে অবস্থিত দুটো নামাজ কক্ষের প্রতিটিতে ১৫০০ করে মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারবে, যার মধ্যে উক্ত কক্ষ দুটি শুধুমাত্র মহিলাদের নামাজের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে।

মসজিদের চারপাশের রয়েছে ৪টি মিনার, যেটির উচ্চতা হলো ১১৫ মিটার বা ৩৭৭ ফিট। প্রধান বিল্ডিং এবং উঠানের সিমানায় চারপাশে রয়েছে ৫৭টি ছোটবড় গম্বুজ। গম্বুজগুলো উপর মার্বেল পাথর বসানো এবং এর নকসাতে ব্যবহার করা হয়েছে এই মার্বেল পাথর। এর উঠানের আয়তন হলো ১৭০০০ বর্গ মিটার বা ১৮০০০০ বর্গ ফিট। এর উঠানে প্রধান যে বৈশিষ্ট দেখলাম তা হলো পুরো উঠানটা মার্বেল পাথর দিয়ে ঢাকা এর মূল নামাজের বিল্ডিং এর দিকে ফুলেল রঙ্গিন নকসা করা, তবে সাবধান গরমের দিনে সাদা মার্বেল পাথরের উপর খালি পায়ে নির্ভয়ে পা ফেলতে পারেন, কিন্তু নকসা করা রঙ্গিন অংশে খালি পা রাখলে সাথে সাখে পায়ে ফোস্কা পড়ে যাওয়ার সম্ভবনা ৯৯% , বিশ্ব রেকর্ডসমূহ শেখ জায়িদ মসজিদ বেশ কিছু বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করেছে যা নিন্মরুপঃ বিশ্বের সবচেয়ে দামী এবং সর্ববৃহ‍ৎ কার্পেট এইখানে ব্যবহার করা হয়েছে, যা কার্পেট তৈরির বিশ্বখ্যাত দেশ, ইরান হতে আল খালিকি নামক ডিজাইনারে ডিজাইনকৃত।

এই কার্পেট এর আয়াতন ৫৬২৭ ঘন মিটার বা ৬০৫৭০ ঘন ফিট, যা তৈরি করতে ১২০০ তাতী, ২০ জন টেকনিশিয়ান এবং ৩০ জন্য শ্রমিক এর শ্রম ব্যায় করতে হয়েছে। কার্পেটটির মোট ওজন হলো ৪৭ টন, এর মধ্যে ৩৫ টন উল এবং ১২ টন কটন ব্যবহার করা হয়েছ। মোট কটন ব্যবহার করা হয়েছে ২২৬৮০০০০০০টি । এই মসজিদে জার্মানী হতে আমদানীকৃত যে ঝাড়বাতিগুলো ব্যবহার করা হয়েছে , তা আয়তনে বিশ্বের আর কোথাও নেই। এর ডায়ামিটার হলো ১০ মিটার বা ৩৩ ফিট এবং এর উচ্চতা হলো ১৫ মিটার বা ৪৯ ফিট।

এই মসজিদের আযান স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আবুধাবীর শুধু মাত্র একই টাইম জোন এলাকার মসজিদ থেকে প্রচারিত হয়। সূত্রঃ http://www.samasteel.net/it/?p=1 Click This Link ভিডিও দেখুনঃ http://www.youtube.com/watch?v=Drg71acXy_Q http://www.youtube.com/watch?v=l0GH-IwXqUw

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।