আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতাল নিয়ে কথকতা ঃ খাদ্যমন্ত্রী এবং লে জে হারুন



উপদেশ খয়রাত করা খুব সহজ কাজ । তাই প্রতিটি মানুষ অন্যকে উপদেশ দিতে খুব পছন্দ করে। কিন্তু এসব উপদেশ বা নীতিবাক্য জীবণে বাস্তবায়ন করা সহজ কাজ নয় । যার ফলে সমাজে খুব কম উপদেশ দানকারী পাওয়া যাবে যারা নিজের জীবনে উপদেশ বা নীতিবাক্য বাস্তবায়ন করেন বা করতে সক্ষম হয়েছেন। কোরআন শরীফেও এধরনের অসাধু উপদেশ দানকারীদেরকে ভর্ৎসনা করে বলা হয়েছে, "তোমরা নিজেরা যা করনা তা অন্যকে কেন করতে বল !" আমাদের দেশের রাজনীতিকরা হচ্ছেন এমনি অসাধু উপদেশপ্রদানকারী।

তারা আরো বহু বিশেষণের অধিকারী । কিন্তু আজকের আলোচনায় আমি সেদিকে যাব না। এসব অসাধু উপদেশ দানকারী রাজনীতিকরা ভয়ংকর রকমের কপট। তারা নিজেদের স্বার্থে আজ যা বলছেন কালই তা উল্টে ফেলছেন। ধরুন আজ আওয়ামীলীগপন্থী শতাধিক সাবেক সেনা কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, বিএনপি সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।

কয়েকদিন আগে বিএনপিপন্থী সাবেক সেনা প্রধান মাহবুবুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে সরকারকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন, তারই জবাবে আজ আওয়ামীপন্থী সাবেক সেনাপ্রধান লে জে হারুন তার দলবল নিয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপিকে সাবধান করে দিলেন। অবশ্য লে জে হারুন বিএনপিকে আজ এটাও বুঝিয়ে দিলেন যে সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে আওয়ামীপন্থীদের পাল্লা বিএনপির চেয়ে ভাড়ী। আগে কখনো আমি লেজে হারুনকে কপট বা অসাধু উপদেশ দানকারী মনে করি নি । কারণ লে জে হারুন কখনো তার নীতি আদর্শ লুকিয়ে কথা বলেন না। তিনি একজন একনিষ্ঠ আওয়ামী লীগার, একজন সেক্যুলার, একজন ইসলাম বিদ্বেষী, প্রচণ্ড ভারত প্রেমী – এসব তিনি কখনো লুকাবার চেষ্টা করেন না।

কিন্তু আজ তার বক্তব্যে সবার কাছে মনে হবে তিনিও কপট এবং অসাধু উপদেশ দানকারীদের দলে রয়েছেন। কারণ তিনি আজ বলেছেন, " খালেদা জিয়ার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়ার পর একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে বসে আইএসপিআরের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা হয়েছে। আইএসপিআর সেনাবাহিনীর একটি নিজস্ব প্রতিষ্ঠান , কাজেই আইএসপিআরের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা মানে সেনাবাহিনীকেই বিতর্কিত করা"। (সূত্র) লেজে হারুনের এই বক্তব্যে আমাদের মত সাধারণ মানুষ বিষ্মিত হয়েছে। কারণ আইএসপিআরকে তো কেউ বিতর্কিত করেনি।

খালেদা জিয়াকে তার বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করার দিন আইএসপিআরের মত সেনা সংস্থাটি যা করেছে তাতে সেনাবাহিনী যে বিতর্কিত হয়েছে শুধু তাই নয় বরং সেদিন জনগনের সামনে এটাও প্রমানিত হয়েছে যে আওয়ামী পন্থী সেনা কর্মকর্তাদের মাথায় গোবর ছাড়া আর কিছু নেই। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা যে যুক্তি বা তথ্য প্রমাণ ছাড়া কথা বলেন তা আজ জনগণের কাছে সুস্পষ্ট। পিলখানা ঘটনার পর বাণিজ্য মন্ত্রী প্রতিদিন যেভাবে মিথ্যাচার করে গেছেন তাতে তিনি এখন মানুষের কাছে হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছেন। এছাড়া আইন প্রতিমন্ত্রীও একই পর্যায়ে গিয়ে পৌছে গেছেন। কিন্তু খাদ্য মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে মানুষ একজন সৎ ও সহজ-সরল মানুষ হিসেবেই মনে করতো।

আমার পরিচিত একজন বলছিলেন, এত সহজ সরল মানুষ কি ভাবে আওয়ামীলীগের খপ্পড়ে পড়তে পারে ! যাই হোক তিনি আজ হরতাল সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, "আওয়ামী লীগ অনেক হরতাল করেছে, তবে কখনো গাড়ি ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের মত ধংসাত্বক কর্মকাণ্ড করেনি। যদি হরতালের নামে বিএনপি গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটায়। তাহলে জনগণের জান মালের নিরাপত্তা রক্ষার্থে সরকার আইন শৃংখলা বাহিনীর দ্বারা তা কঠোর ভাবে দমন করবে"। (সূত্র) এই যে রাজ্জাক সাহেব বললেন আওয়ামীলীগ হরতাল ডেকেছে,কিন্তু কখনো ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে নি , একথা শোনার পর বাংলাদেশী একজন মানুষ রাজ্জাক সাহেব সম্পর্কে কি ভাববে ? এটাই কি ভাববে না যে কপট বা অসাধু উপদেশ দানকারী না হলে আওয়ামীলীগ করা যায় না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.