আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তগদ্যঃ অনাগত বৃষ্টি ও আলস্যের চিঠি

লিখি ১. তুমি পারবে না রঙ্গনা? তুমি যাবে রঙ্গনা আমাদের বাড়ি? স্নেহময়ী রূপ নিয়ে ফুটে রইবে তুমি। তোমাকে কখনো ছিঁড়বো না। ব্যথা দেবো না। খরা থেকে বাঁচাবো, আলো দেবো, খেতে দেব জল। শুধু বিকেলের আলোয় যখন আমাদের বাড়িতে বিষন্ন একটা সুর বয়ে যয় গ্রামোফোনে, আল্লারাখার তবলা আশাহত মানুষগুলোর পিঠ চাপড়ে দেয়, তখন সময় পেলে পুষ্প ফুটিয়ে দিও আগত চড়ুইগুলো যেন হেসে ওঠে কিচ কিচ করে।

পারবে না রঙ্গনা? পারবে না? ২ রিমঝিম ক্যাফে হিমেলদের সঙ্গে রিমঝিম ক্যাফেতে বসে গল্প করতাম। ক্যাফের নামটা শুনলেই বৃষ্টি মনে হয়। ছাতা মাথায় কিশোর হয়ে যেমন বৃষ্টি দেখেছি। হিমেল বলতো বৃষ্টি হলো দেবীর চোখের জল। দেবীরা কি তাহলে কাঁদে? দেবীর কি মন খারাপ হয়? অনেক দিন হলো আড্ডাটা ভেঙে গেছে।

পথ ভুলে বরফভিলায় যেতে একটা একটা কানা গলি দিয়ে পথ থেমে গেছে নোনা ধরা দালানে, কতগুলো অপরিচিত লোক স্ট্যাচুর মত দাঁড়িয়ে থাকে, রং ওঠা সাইনবোর্ডে ছেঁড়া ডাকটিকেটের মত লেখা রিমঝিম ক্যাফে। ৩ ছুটি তরতাজা ঘণ্টাগুলো ধরা ছোঁয়ার বাইরে কর্মজীবি মানুষের। দ্বিপ্রহরে রোদের কোণ বদলে যায়। প্রতিবেশী জলপাই রোদে শুকোতে দিতে এলে জিভে জল আসতো এমন রোদে । কড়া নজরে থাকায় যেমন রসনা নিবৃত হতো না।

আজকে কর্মজীবি রোদ ঘণ্টা মেপে খেতে দেয়। দুপুরের ভর্তা ভাজি সেরে, পিঞ্জিরায় ঢুকে যেতে কারো কি ভাল লাগে? ঘণ্টা বাজে, কিন্তু তখনও বাড়তি কাজের অনুনয়। সন্ধ্যা হারিয়ে বিষণ্ণ রাত্রিতে বাড়ি উড়ে আসতে মন চায় তাদের। ওরা নেমে আসে পথে; ছুটতে ছুটতে স্থলচারী বাসের উঠে পড়ে আর তখনই বাড়ি ফেরা স্বপ্নটা প্রকট হয়। বছরে দু তিনটা উৎসবে লুডোর দান উল্টে যাবে।

বাড়ি ফিরে যাবার সময় ঘাসের উপর ছুটে উঠোনে এসে দেখবে বাঁশঝাড় নেচে উঠছে। কালো গাভী খড়ের পুঞ্জি থেকে মাতৃস্তনের মত খড় টেনে নিলে পুকুরের দিকে স্যাণ্ডেল পা বাড়াবে। ইটের ঢেলায় জুতো ডুবিয়ে পরিত্রান চেয়ে যায় বোতামের মানুষ, হঠাৎ বায়োস্কোপের মত অন্য রাজ্যে আসতেই উঠোন ডাকে তাকে। কালো বউ উৎসবের মত চাল কোটে, ন্যাংটো বাচ্চা মাটি কাদা করে। যদিও সেই বিলাসী রাখাল নেই তবু কচি কলাপাতায় ডালে মেঘের ফোঁটার মত গ্রামত্যাগী মানুষ সারা বছরের অপেক্ষা সঞ্চয় করে রাখে ।

এখনো কিছু নিজের থাকে বলে মেঘগুলো ফিরে আসে নীল উঠোনে, ঘুড়ি উড়তে উড়তে সন্ধ্যায় নেমে আসে। ঘণ্টা বাজতেই ছুটি শেষে পরিচয়পত্রের ঠিকানায় ঢুকে পড়ে মানুষ। তারপর কলম পিষতে পিষতে ঘাম ঝরায়। ৪ মায়া মায়া এত তোর জন্য, এই রেশমী চুড়ি, এই কপালের টিপ, আকাশের সব টুকু বৃষ্টি এক সাথে যেন চোখে এসে পড়ে। মায়া এত তোর জন্য শর্ষের ক্ষেত, দিকে দিকে হলুদ রঙ ছড়িয়েছে, বসন্তের এত রঙ নেই, বৈশাখের এত ঝড় নেই, নদীগুলো সব এক হয়ে বয়ে যায় তোর দিকে, মায়া, আমার দুষ্টু মেঘের ছায়া মনের জমিতে।

৫ সে যে বসে আছে একা একা ছবির মত সে। চুলগুলো গড়িয়ে পড়ছে ডান থেকে বামে। ইচ্ছে হবে সরিয়ে দিয়ে সিঁথির চুল এক গোছা, গড়িয়ে পড়ুক কপালে। দুটো কান ভরে আছে তারায়। মেয়েটির গয়না নেই।

কানে অধুনা গয়নার মত বড় রিং নেই। গাঢ় অন্ধকার তার চোখে। বাঁকা চোখে ভাসিয়ে দিতে কেউ কি তাকে পরিয়ে দেবে গাঢ় কাল পেন্সিল? উপত্যকার মত উঠে গেছে তার সূচারু নাক। দু পাশে পর্বতের ভাঁজ। ধনুকের মত উপরের ঠোঁট একটু বেঁকে আছে হৃদপিন্ডের মতো, এক্ষুনি সে হেসে দেবে।

হাসতেই নিচের পুরুষ্ঠু কাল ঠোঁট ভারসহ নেমে আসবে গভীরে । মেয়েটির আঙুলগুলো বড়, স্পষ্ট পাখির ডানার মত চোখে চেয়ে থাকে। হাত এগিয়ে দিলে এক হাতের নখে রঙ, অন্য হাত খালি। ধরে আছে নিজের চিবুক। আর কি যেন চেয়ে দেখছে আনমনা।

উদাসিনী এক যতদূর চোখ যায় শুধুই চেয়ে থাকে। -- ড্রাফট ১.৫ লেখালেখিটা আনন্দের জন্য, এসব খসড়া কাগজের অনুশীলন। আপডেট: সবগুলো প্যারা আলাদা, এ জন্য আলাদা শিরোনাম যোগ করে দিলাম। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।