আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তগদ্যঃ মূলত আমি এই “দের” কে কবিতা বলি

আমার হাতদুটো পা হয়ে গেলে আর পা হাত; তাহলে কি তুমি করমদর্নের সজ্ঞাটা পালটে দিবে

মুক্তগদ্যঃ মূলত আমি এই দের কে কবিতা বলি ----------------------------------------------------------------------- ক) দৈত্যের কথা শুনিয়ে তখন আর ঘুম পাড়ানো গেলোনা আমাকে বয়স না মেলার অঙ্কটা শিখে গেলেই দুয়োসুয়োরানীরা বৃদ্ধ হয়ে যায় বালিশ বড় হয়ে যাওয়া রাতে দাদীর সাথে আর থাকতে পারিনা। টুনিদের কলাবেনীর চাঁদে দিগভ্রান্ত নভোচারি হয়ে সবুজগোঁফ গজানো গোপন রাতবিরাতে আগুনে জ্বলেছি কতবার অথচ টোনাটুনির একটা রূপক গল্পের চর্চায় আমরা কেউ পিঠা বানাতে পারিনা এখন জানি বহুবচনের কলহে পিঠার উনুনে আঁচ ধরেনা ( টোনাটুনির দর্শন প্রান্তস্বর ছোট কাগজে প্রকাশিত) বয়স যখন আমাকে আয়না চিনিয়ে দিল, ঠিক করে দিল চুলের সিঁথি তখন থেকেই টোনাটুনির একটা রূপক গল্পের চর্চা চলছিল গোপন রাতের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায়। আমার সেই গল্পের নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে টুনিদের মুখ পাল্টাতো, রঙ পাল্টাতো রূপ গজাতো একেকটা রূপের শেষ থেকে। কিন্তু টোনাটুনি (মিথ) গল্পের শেষ দৃশ্যে আর যাওয়া হতোনা আর পিঠা খাওয়া হতোনা আমার। টুনি শব্দের সাথে লেপ্টে থাকা দের আমার গল্পের রঙ বদলে দিত, আমার চুলের সিঁথি-জামা- উরু ঢেকে গোড়ালি ছুঁয়ে যাওয়া প্যান্ট একলা দুপুর আকাশের রঙ সব বদলে দিত।

আমার আর পিঠা খাওয়া হতোনা টুনিদের সাথে। কোন এক বাসন্তি রাতে ঘরে প্রজাপতি ঢুকে গেলে টুনি শব্দের শরীর থেকে গলে গলে হারিয়ে যায় দের শব্দটি। সেই থেকে এখনব্দি টুনি পিঠা বানায় আমি পিঠা খাই, খুনসুটি করি ঝগড়া শিখে গেছি। টুনি লাল পাড়ের শাড়ীর আঁচল বিছিয়ে দেয় বিকেল ভাসানো মেঘে, করতলে নেমে আসে গভীর যুবতী রাত গলে-গলে পরে পাহাড়ে বনে। কি আশ্চর্য্য ! এক নিস্তব্ধতায় রাতকে ভালোবেসে জোনাকের উড়াউড়িতে আমরা টোনাটুনি পিঠা খাই।

তবুও দের আমার পিছু ছাড়েনা; আমাকে বড্ড ভাবায় প্যাঁচকাটা ঘুড়ির দোলনায়। আমার কবিতায় দের চলে আসে। মূলত আমি এই দের কে কবিতা বলি। খ) সেই জন্মের পর থেকেই তো হাত পা নাড়ছি। ধোঁয়া টেনে ছেড়ে দেয়া বাতাসের বয়সে নাড়ি ছেঁড়া নারীর বুক থেকে গিয়েছি অন্য নারীর কাছে যার খোঁপার কালো রাতের বাগানে ফুটেছিল গোলাপ; এইতো এই হাত-পা নড়েচড়েই তো গিয়েছিলাম।

প্রতিটা সকালে দেখে নিচ্ছি মুখ আয়নায় দাঁড়িয়ে; দাড়ি কাপানো অথবা নাকামানো মুখে হাত দিয়ে মুছে নিচ্ছি গেলরাতের জমে থাকা শিশির। মাঝেসাজে একলা ঘরের জানলা পেরিয়ে আসে যে দুপুর তার কাছে আমি খুলে রাখি আমার সব অঙ্গপ্রতঙ্গ। এ যে একই রুটিন। একই রুটিন মেনে চলে রোবট বা মেশিন। আমি মানুষ বলেই অন্ধকার ভেঙ্গে অজস্র জোনাকির বন পেরিয়ে চলে যাই হান নদীর কিনারে।

বুকের উষ্ণতা কেড়ে নেয় হাওয়া। অন্ধকারে নির্মান করি অঙ্গহীন আমার শরীর। আকাশের দিকে চোখ রাখি রাতের কানে পৌছে দেই গান। [হানঃ কোরিয়ার একটা নদীর নাম] গ) দাপ্তরিক কাজকাম শেষে বাড়ি ফেরার পথে মিনিট ত্রিশেক আমাকে পাতাল ট্রেনেই সময় কাটাতে হয়। এই সময়টা আমার হাতে থাকে কবিতার বই।

কবিতা আমার কাছে হাসনাহেনা ফুল; আমি তার সৌরভে কেবলি এক মাতাল শঙ্খচূড়। কর্পোরেট প্রলেপে আচ্ছাদিত যে যুবতি আমার পাশে এসে বসে সেও সুন্দর যদি রাখি তারে উপমায়। তবুও তারে ঘুরেফিরে আমার দেখা হয়না। কেননা; মানুষ এক করতলে দুই সুন্দর কখনো বেছে নিতে পারেনা । অথচ যখন আমার প্রবল ইচ্ছা জাগে চলতি পথে একটা কবিতা রচনার; যখন ঝোলা থেকে বের করে আনি বাঁশি তার অবয়ব থেকে বেরিয়ে আসে যেন রাধা।

কখনো সে মনসা -চোখে তার আগুন আর আমি স্বেচ্ছায় যেন এক লক্ষিন্দর। -------------------------------- আল্লাইয়ার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।