আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফারাক্কার কথা ভাবতে গিয়ে আমার অবাক লাগে.. আমরা কি স্বাধীন না পাকিস্তানি তস্করদের হাত থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনার পর আমরা ভারতের অধীনে গেছি

aurnabarc.wordpress.com

বাড়ী পাবানার পাকশীতে । ঈদের ছুটিতে গ্রামে গেলে বন্ধুদের নিয়ে মোটর বাইকযোগে বেড়াতে গেলাম পদ্মার তীরে । কিন্তু অনেকক্ষন লাগলো নদীর পানি খুজেঁ পেতে কারন আজ আর সেই প্রবল প্রমত্তা পদ্মা নদী নাই । একে কোন খাল বললেও বোধকরি অতিরঞ্জন হবে না। ফারাক্কায় আমাদের তথাকথিত দরদী রাষ্ট্র ভারতের নির্লজ্জভাবে পানি প্রত্যাহারের ফলে পানিশূন্য হয়ে সোনার বাংলাদেশ ধীরে ধীরে রাজস্থানের মরুভূমি হতে চলেছে তা স্পষ্টতো বোঝা যায় এখানে বেড়াতে এলে ।

কুষ্টিয়াতে গড়াই নদী বা কালিগাঙের যেখানে নৌকা চলবে, সেখানে বাঁশের সাঁকো যা দেয়া হয় খালে। ভারতের পানি রাজনীতির বিশেষত উজানে নির্লজ্জভাবে পানি প্রত্যাহার কারণে আমরা আমরা নদীতে সাঁকো দিতে বাধ্য হচ্ছি। পানির অভাবে উন্মত্ত পদ্মা শুকিয়ে আজ শুধু ধু-ধু বালুচর নিয়ে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে । পদ্মার করুন অবস্থা গুগল ইমেজে দেখলে আশাকরি ভারতের দালাল বাদে দেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিকই বুঝতে পারবেন । আমরা চুক্তি করেছিলাম ,হয়েছিলাম আশাবাদী কিন্তু ফলাফল শূন্য ।

কি পেলাম আমরা । কোথায় পাওয়ার কথা পানি আমরা সেখানে পেলাম রাজস্থানের বালিয়াড়ির আদলে বিশাল বালুর চর । আশার আলো দেখেছিলাম ভারত রাজি হয়েছে তিস্তা নিয়ে বৈঠক করতে কিন্তু এবারও হতাশ হলাম ,আমরা ভারতের যেকোন ঘটনাতে একটা ঘটনাই লক্ষ্য করি জো হুকুম জাহাপনা । ভারতের আদেশ অলঙ্ঘনীয় । মাঝে মাঝে ভাবি আমরা কি স্বাধীন ।

না পাকিস্তানি তস্করদের হাত থেকে বিজয় ছিনিয়ে আনার পর আমরা ভারতের অধীনে গেছি । বিপ্লবী মেজর জলিলের কেন বলেছিলেন অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা তা আজ বুঝি। এ ধরনের বৈঠক তো হয় মাঝে মধ্যে। ‘ফটোসেশন’-এর মধ্য দিয়ে ওই সব শেষ হয় ঠিক যেমনটি ঘটেছিল টিপাইমুখ পর্যবেক্ষক দলের বৃষ্টির অজুহাতে পরিদর্শন না করেই রাজধানীতে প্রত্যাবর্তনের ঘটনা। ঢাকা বৈঠকে কিন্তু আমরা ভারতকে ইছামতি নদীতে ড্রেজিং করার অনুমতি দিয়েছি।

তাতে করে ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার বিশাল এলাকা ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে। একই সঙ্গে আমরা রাজি হয়েছি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুমে সুপেয় পানির জন্য একটি শোধনাগার নির্মাণ করতে ফেনী নদী থেকে ভারতকে ১.৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার। এতে করে লাভবান কে হল? ভারত না বাংলাদেশ? ভারত তার প্রাপ্য আদায় করে নিল। আর আমরা তিস্তার পানির ভাগ চাইলাম, বলা হল শীর্ষ পর্যায়ে এ ব্যাপারে কথা হবে। কথা তো হল।

কিন্তু কোন সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি আমরা আদায় করতে পারিনি। অথচ আমাদের জন্য তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮৭ সালের আগ পর্যন্ত তিস্তা নদীই ছিল উত্তরবঙ্গের প্রধান নদী। কিন্তু পানি বণ্টনের ব্যাপারে ভারতের একগুঁয়েমি, ঢিলেমি ও হঠকারিতার ফলে তিস্তা এখন রুক্ষ হয়ে উঠেছে। নদীর তলদেশে অজস্র পাথর, নুড়ি, বালু আর পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

ফলে তিস্তার বুকজুড়ে এখন শুষ্ক মৌসুমে কেবল বালু আর বালু। অন্যদিকে বর্ষাকালে মূল গতিপথ বদলে তিস্তা প্রচণ্ডভাবে আছড়ে পড়ে দুই তীরে। ফলে নির্দয় ভাঙনে ফি বছর ২০ হাজার মানুষ বাড়িঘর, গাছপালা, আবাদি জমি হারিয়ে পথের ভিখারি হয়ে পড়েছে। ১৯৮৫ সালে ভারত তিস্তার উৎসমুখে এবং তিস্তার ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের মাত্র ৬৫ কিলোমিটার উজানে গজলডোবা নামক স্থানে ব্যারেজ নির্মাণ করে। এর ফলে প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পটি সেচ প্রদানে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

এ প্রকল্পের উপকৃত এলাকা ৭ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর। এ অঞ্চলে প্রবাহিত বুড়ি তিস্তা, যমুনেশ্বরী, দেওনাই, চাড়ালকাটা, বুড়িখোড়া, বাগযোগড়া, ঘাঘটের এখন দুঃসময়। এর প্রধান নদীগুলো নাব্যতা হারিয়ে এখন পানিশূন্য। ফলে এ অঞ্চলের প্রধান সেচনির্ভর ইরি-বোরো চাষাবাদ এখন হুমকির মুখে, যা কিনা আমাদের খাদ্য সংকটকে ঘনীভূত করছে এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে আরও ঝুঁকির মাঝে ঠেলে দিয়েছে। তিস্তা নদী এখন শুধু নামে আছে।

পানি নেই বললেই চলে। ভরাট হয়ে গেছে ৬৫ কিলোমিটার নদী। আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লালমনিরহাট জেলার নদীতীরবর্তী ১২টি ইউনিয়ন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২০ সালে এ অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে। উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টনে শতকরা ৩৬ ভাগ বাংলাদেশ, ৩৯ ভাগ ভারত ও ২৫ ভাগ নদীর জন্য সংরক্ষিত রাখার একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল।

কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ তিস্তার পানির ৮০ ভাগ দু’দেশের মধ্যে বণ্টন করে ২০ ভাগ নদীর জন্য রেখে দেয়ার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু ভারত সে প্রস্তাব গ্রহণ না করে উল্টো তিস্তার কমান্ড এরিয়া তাদের বেশি, এ রকম দাবি তুলে বাংলাদেশ তিস্তার পানির সমান ভাগ পেতে পারে না বলে যুক্তি দেখায়। শুধু তাই নয়, ভারত তিস্তা ব্যারেজের সেচ এলাকা কমিয়ে দ্বিতীয় প্রকল্প বাতিল করার জন্য বাংলাদেশের ওপর চাপ দেয় এবং সর্বশেষ এক চিঠিতে তিস্তার মাত্র ২০ ভাগ পানি ভাগাভাগি করার বিষয়টি জানিয়ে দিয়ে হঠকারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় । গত ৮ বছরে কর্ণফুলীতে পলি জমা হওয়ার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ গুণেরও বেশি।

এর ফলে কর্ণফুলীর মোহনা থেকে উজানে ১৫ কিলোমিটার এলাকায় প্রচুর ডুবোচরসহ নদীর দু’পাশে ছোট-বড় অনেক চর পড়তে শুরু করেছে। নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় বর্তমানে দিনের বেশির ভাগ সময় ৩টি জনগুরুত্বপূর্ণ ঘাট দিয়ে নৌযোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় জাহাজ এখানে ভিড়তে পারে না। বাংলাদেশ নিরাপত্তা ঝুঁকির পাশাপাশি অর্থনৈতিক ঝুঁকির পাশাপাশি বাংলাদেশ আজ আর্থিক ক্ষতি ও পরিবৈশিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন । আর ট্রানজিট সহ নানা বিষয় তুলে ঈদের আনন্দ মাটি করার ইচ্ছে আমার নাই ।

তাই সময় এসেছে সবাই মিলে বাস্তবতা বুঝে সোনার বাঙলাদেশ গড়ে তোলার দাবিতে সোচ্চার হওয়ার । দেশের বিরুদ্ধে দানা বাঁধা সকল ষড়যন্ত্র কে রুখে দাড়ানোর । বোধকরি তা না হলে ত্রিশ লক্ষ্য শহীদের রক্ত আজ বৃথা যাবে। যা আমাদের স্বাধীন দেশের একটি নাগরিকের ও কাম্য নয়। দেশের আপামর জনতার প্রান সংহারের প্রশ্ন যেখানে সেখানে কোন ইস্যু নয় কোন লাভ লোকসান বা রাজনৈতিক মতাদর্শে দোহাই দেওয়ার সুযোগ নেই রুখে দাড়াতে হবে সবাই মিলে একসাথে ।

দেশ আমার আপনার সবার । দেশের এই করুন সংকটে এক হতে হবে আমার আপনার সবাইকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.