আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘরমুখো যাত্রীদের বিড়ম্বনা

গণমাধ্যমকর্মী, চেয়ারম্যান - উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান, সদস্য সচিব - সম্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলন।

ঘরমুখো যাত্রীদের বিড়ম্বনা ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছরই ঘরমুখো যাত্রীদের বিড়ম্বনার শেষ নেই। এবারো দূরপাল্লার বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু না হতেই তা কালোবাজারিদের হাতে চলে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রেলে ই-টিকেটিং চালু হলেও তাও ইতিমধ্যেই শেষ। ফলে রেলযাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

এবারের ঈদে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে ৩ শতাধিক লঞ্চ। ২২টি নৌ-রুটে এসব লঞ্চ যাতায়াত করবে। লঞ্চের টিকেট নিয়ে তেমন চাপ না থাকলেও ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় যাত্রীরা হতাশ। এ অবস্থায় যাত্রী সাধারণ যেন বাস, ট্রেন ও লঞ্চে বাড়ি ফিরতে কোনোরকম বিড়ম্বনার শিকার না হয় সেটি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপকে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতি বছরই ঈদ এলেই শেকড়ের টানে বাড়ি ফেরে ঢাকায় বসবাসকারী লাখো মানুষ।

একসঙ্গে এতো মানুষের বাড়ি ফেরার জন্য সঙ্গত কারণেই পরিবহন কাউন্টারগুলোতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়, ভিড় লেগে যায়। আর এ অবস্থার সুযোগে অসাধু চক্র নানারকম ফন্দিফিকির করে থাকে। সক্রিয় হয়ে ওঠে সিন্ডিকেট চক্র। ভাড়া বাড়ানো ছাড়াও টিকেট চলে যায় কালোবাজারিতে। অসহায় যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পড়ে।

সরকার বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা, কাউন্টারগুলোতে সেনাসদস্যদের নিয়োগসহ নানারকম উদ্যোগ নিয়ে থাকে। কিন্তু তবু বিড়ম্বনা যেন পিছু ছাড়ার নয়। এরই মধ্যে বাসের অগ্রিম টিকেট ছাড়া শুরু হয়েছে। তবে তা কালোবাজারিদের দখলে চলে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় যাত্রীরা কাক্সিত দিন-ণ-সময়ে ঘরে ফিরতে পারবে কিনা তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

ঈদে বাস ও রেলের টিকেট কালোবাজারি রোধে রাজধানীর কাউন্টারগুলোতে ভিজিল্যান্স টিম ঝটিকা অভিযান চালাবে বলে জানা গেছে। এ সময় কারো বিরুদ্ধে টিকেট কালোবাজারির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে কালোবাজারি আইনে শাস্তি দেয়া হবে। কিন্তু টিকেট কালো বাজারির কারণে কারো এ ধরনের শাস্তি হয়েছেÑ এমনটি সচরাচর দেখা যায় না। এ কারণেই কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপ ও মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা নদীবন্দরসহ দেশের প্রধান প্রধান নদীবন্দরে লঞ্চের ভাড়ার তালিকা টাঙানো হবে।

নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধেই এ ব্যবস্থা। সে জন্য শুধু ভাড়ার তালিকা টাঙালেই চলবে না, সেটি যেন মালিক সমিতি মেনে চলে সে ব্যবস্থাও করতে হবে। ঈদ মৌসুমে দুর্ঘটনার হার বেড়ে যায়। বিশেষ করে নৌপথে ফিটনেসবিহীন নৌযান, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকেÑ এ ব্যাপারে সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে। সর্বত্র তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে ট্রেনের টিকেট মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও বিক্রি করা হচ্ছে।

শুধু ট্রেন নয়, বাস ও লঞ্চের টিকেটও যদি এভাবে বিক্রির ব্যবস্থা করা যায় তাহলে যাত্রীরা যারপরনাই উপকৃত হবে। এতে স্টেশনের ভিড় কমবে, কালোবাজারিও রোধ হবে। শুক্রবার ছুটির দিন থেকেই শুরু হয়েছে বাড়ি ফেরার পালা। কিন্তু যাত্রীদের তীব্র যানজটের মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে ঘরমুখো যাত্রীরা।

উত্তরবঙ্গ থেকে গরু বোঝাই ট্রাক এ রোডে চলাচল করায় এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে কার্যকর পদপে গ্রহণ করতে হবে। ঈদের আনন্দটুকু পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার জন্য মানুষ ঘরে ফেরে। এ জন্য তাদের যাত্রাপথটি যেন নির্বিঘœ হয় সেটি নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। ঈদের আনন্দটুকু যদি যাত্রাপথের পদে পদে নানা বিড়ম্বনায় শেষ হয়ে যায় সেটা হবে খুবই দুঃখজনক।

আমরা চাই ঈদে ঘরমুখো মানুষজন সবাই যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে। এ ব্যাপারে সবাইকে যার যার দায়িত্ব আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।