আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ: একটি আধুনিক কর্পোরেট বাদঁরামি ও ধান্ধাবাজি!!

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!

"বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করা দরকার" এ ধরনের একটি কথাবার্তা ইদানীং শোনা/দেখা যাচ্ছে। তবে কাজটা এখনো সমাজের একেবারেই মগডালে বসে থাকা কতিপয়ের আড্ডা আখড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যেমন- সম্প্রতি র‌্যাডিসন হোটেলে হয়ে গেল সে ধরনেরই একটি সেমিনার। মূল্যবান ভাষন দিয়েছেন দেশ বিদেশের নামী প্রতিস্টানের অনেক দামী কর্তাব্যক্তি। একজনের নাম মনে পড়ছে, মার্কেটিং প্রফেসর জেইন।

আর এ সেমিনার আয়োজনের গুরুদায়িত্ব পালন করেছে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম নামক একটি কাগুজে সংস্থা, যাদের মূলকাজ হল সংস্থার নামেই ইংরেজীতে ব্র্যান্ড বিষয়ে একটি আধা-নকল পত্রিকা বের করা এবং কায়দা করে বড় অফিসগুলাতে গছিয়ে দেয়া। এর বাইরে আ্যাওয়ার্ড ও সেমিনার ব্যবসাটা চালু করার একটা চেস্টাও তারা করছেন। সেমিনার ব্যবসাটা খুব জমজমাট। তবে লাইন ঘাট ভালো লাগবে। করতে হবে র‌্যাডিসনে, এখন আর সোনারগাঁ, শেরাটনে লেখাপড়া জমে না! বিষয়: লিডারশীপ, ক্লাইমেট চেন্জ এরকম কিছু।

বক্তা/ট্রেইনার হিসেবে থাকবেন ভারত, সিংগাপুর ও মন্দার কারনে ইউএসএ ফেরৎ মস্ত বড় 'কনসালটেন্ট!' আপনি দু'ভাবে নাম লেখাতে পারেন। রেভিনিউ নিয়ে চিন্তা করতে হয়না এমন কোম্পানির ততধিক আকাইম্মা ডিপার্টমেন্টের (যেমন- কর্পোরেট এফেয়ার্স, ইনফরমেশন, পাবলিক রিলেশন, এইচ আর, মার্কেটিং) কেউকেটা ধাঁচের বা তাদের বাহুডোরে থাকা সুন্দরী অফিসার বা ব্যাপক তেলমর্দনকারী পুরুষ কর্মী হলে। অথবা গাঁটের পয়সায়। বলা-বাহুল্য কদাচিৎই এমনতর মদন সমাজে পাওয়া যায়! কারন রেটটা চড়া। যাহোক আয়োজকদের চ্যালেন্জটা হল- ২/৪ টা অফিস কোন না কোন ভাবে ম্যানেজ করা।

তাহলেই পর্তা পড়ে যায়। খুবই হাস্যকারভাবে এসব কাজে রংবেরংয়ের পার্টনার পাওয়া যায়। মিডিয়া পার্টনার (ডেইলী স্টার), নলেজ পার্টনার (ইউল্যাব), অফিসিয়াল ড্রিংক (মাম), রেডিও পার্টনার.......ইত্যাদি! জাতীয়ভাবে অতি তুচ্ছ ন গন্য হওয়ার পরও পরদিন ফলাও করে পার্টনার পত্রিকায় এসব বস্তাপঁচা সেমিনারের বপু বহুল রিপোর্ট হবে। জাতি তাগধিন তাগধিন করে নাচতে থাকবে- আহা কত সুন্দর কথা, কত জ্ঞানের বহর! কথায় কথা বাড়ে। তাই মূল কথায় আসি।

ব্র্যান্ডিং যতটা না করা যায়, হয়ে যায় তার চেয়ে বেশী। নেহায়েৎ ভোগ্যপণ্য বাদে বাদবাকী ক্ষেত্রে 'ফালতু, থার্ড ক্লাশ' মালকে 'ব্র্যান্ডিং' কৈরা বেশীদুর আগানো যায় না। জার্মান টেকনোলজী বললেই যে মানসপটে অতিউন্নত কলকব্জা ভেসে উঠে তা কোকাকোলা বা লাক্সের গ্রামারে নয়! যেকোন মটরসাইকেলকেই যে মানুষ হোন্ডা বলে তার পেছনেও গুরুতর কোন মডেল, মার্কেটিং, জিংগেল নেই। নেই ঢাউস সাইজের বিজ্ঞাপন। এমআইটি/হার্ভাডের নামও ছড়িয়েছে নি:শব্দে।

ইন্টেলের প্রসেসরের পসারটাও আহামরি প্রচার কৈরা হয়নি। যাহোক যে কথা বলতে চাচ্ছি- ব্র্যান্ডিং করা যায় না, নানান গ্রাউন্ডে ব্র্যান্ড (ভালো বা মন্দ) খাড়া হৈয়া যায়। আর কোন দেশের ক্ষেত্রে এটা সর্বাধিক প্রযোজ্য! যে যে কারণে বাংলাদেশ ১টি বাজে ব্র্যান্ড সে কারণগুলো সত্য সত্য দূরীভুত হয়ে নানাবিধ ভালোগুন দ্ধারা রিপ্লেস হয়ে গেলে এমনি সারাবিশ্বে বাংলাদেশ ভালো ব্র্যান্ড হয়ে যাবে। কথায় বলে, ধর্মের ঢোল আপনি বাজে বা চিনির খবর পিপড়াঁ এমনিতেই পায়!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.