আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতারণার ফাঁদ ইউনিপে টু ইউ.................১০ মাসে দ্বিগুণ লাভ!!

বৃষ্টি যেরকম আসতে আসতে ফিরে যায়..তেমনি বৃষ্টির মতো আমিও ফিরেছি বহুবার...

মাল্টিলেবেল মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক মার্কেটিংয়ের নামে নতুন ফাঁদ 'ইউনিপে টু ইউ'। দশ মাসে দ্বিগুণ লাভের প্রলোভন দিয়ে দেশজুড়ে জমজমাট প্রতারণা শুরু করেছে এ সংস্থাটি। সহজ-সরল মানুষদের ভুলিয়ে প্রতিদিন বড় অঙ্কের টাকা জমা নিচ্ছে তাদের তহবিলে। আর জনগণের টাকা খাটিয়ে প্রতি মাসের ৮৯ শতাংশ লাভই হাতিয়ে নিচ্ছে কোম্পানিটি। অন্যদিকে প্রতি মাসে যে ১০ শতাংশ লাভ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে তা থেকেও পরে কেটে নেওয়া হচ্ছে সাড়ে ১২ শতাংশ।

আবার কোম্পানির গ্রাহক ও অর্থ আয়ের উৎস নিয়েও তাদের মধ্যে পাওয়া গেছে ভিন্ন মতামত। মাত্র দশ মাসেই সারাদেশে পাঁচশ'রও বেশি শাখা স্থাপন করেছে এ সংগঠনটি। ইউনিপে টু ইউর চট্টগ্রাম শাখার এজেন্ট তৈয়বুর রহমান জানান, মাত্র দশ মাসে গ্রাহকদের দ্বিগুণ টাকা ফেরত দেয় তার কোম্পানি। মূল টাকার ২০ শতাংশ করে প্রতি মাসে ফেরত দেওয়া হবে গ্রাহকদের। এই লাভ ছাড়াও আরও চারটি ধাপে লোভনীয় আয়ের সুযোগও রয়েছে গ্রাহকদের।

কোনো গ্রাহক তার রেফারেন্সে নতুন কাউকে কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত করে টাকা এনে দিতে পারলে এর দশ শতাংশ টাকা দেওয়া হবে তাকে। আবার কেউ একাধিক গ্রাহক সংগ্রহ করতে পারলে তার জন্য আছে আরও ১০ শতাংশ লাভের সুযোগ। এ ব্যবসায় অন্তর্ভুক্ত হতে প্রথমে সাড়ে ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৩৬ হাজার পর্যন্ত অফেরতযোগ্য টাকা দিয়ে একটি বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। পরে এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসায় ২১ হাজার থেকে ১২ লাখ ৬০ হাজার পর্যন্ত টাকা জমা দেওয়ার সুয়োগ রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। কোম্পানির আরেক এজেন্ট সুফিয়ান জানান, গ্রাহকদের কাছ থেকে এভাবে নেওয়া টাকা দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বর্ণের ব্যবসা করে তার কোম্পানি।

এতে প্রতি মাসে গড়ে কোম্পানিটির লাভ হয় ৮৬ শতাংশ। এ থেকে গ্রাহকদের দেওয়া হয় মাত্র ১০ শতাংশ। সুফিয়ানের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী লাভের ৮৯ শতাংশেরও বেশি নিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিটি। ফরিদুর রহমান ও মোতালেব হোসেন নামের দুই গ্রাহক জানিয়েছেন, লাভ দ্বিগুণ বলা হলেও তাতে ফেরত আসছে মূলধনসহ দ্বিগুণ টাকা। তারা জানান, দ্বিগুণ লাভ দেওয়ার প্রচার চালালেও লাভ দেওয়া হচ্ছে অর্ধেকেরও কম।

যে ১০ শতাংশ লাভের হাতছানি রয়েছে তা থেকেও সাড়ে ১২ শতাংশ কেটে নেয় কোম্পানিটি। অন্যদিকে ব্যাংক লেনদেন করতে গেলে বাড়তি খরচ হচ্ছে আরও ৫ শতাংশ। আবুল কাশেম নামের এক গ্রাহক বলেন, 'টাকা নেওয়ার সময় লাভের অংশ থেকে সাড়ে ১২ শতাংশ কেটে নেওয়ার কথা বলা হয়নি তাকে। কিন্তু পরে প্রতিবাদ করলেও কোম্পানির নিয়ম বলে জানায় তারা। ' কোম্পানির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ইব্রাহিম খলিল সমকালকে বলেন, 'মানুষকে দশ মাসে দ্বিগুণ লাভ দেওয়া হয়।

দেশে অন্য কোনো সংস্থা বা কোম্পানি এমন লাভ দিচ্ছে না। এতে আমাদের গ্রাহকসংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। ' মানুষের টাকার লাভের ৯৬ শতাংশই হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কোম্পানি কী পরিমাণ লাভ করবে তা আমাদের বিষয়। আমরা গ্রাহকদের ঠিকমতো টাকা দিলেই হচ্ছে। ' আগে না বলে লভ্যাংশ থেকে সাড়ে ১২ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়ার প্রসঙ্গে গ্রাহকদের কাছে কোনো কিছুই লুকানো হচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি।

কোম্পানির ব্যবসা সম্পর্কেও ভিন্ন মতামত পাওয়া গেছে তাদের এজেন্টদের কাছ থেকে। কেউ কেউ বলছেন তারা স্বর্ণ, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, ল্যান্ড বিজনেস এবং মডেলিংসহ নানা ধরনের ব্যবসা রয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন তাদের কেবল স্বর্ণের ব্যবসাই আছে। এদিকে দ্বিগুণ লাভের খবরে সারাদেশে এ সংগঠনটির শাখা কার্যালয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে লোকজন। এদের মধ্যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের জিইসি এলাকার ৮৬ ও আর নিজাম রোডের কার্যালয়ে গিয়ে লোকজনের ভিড় দেখা গেছে। কলেজ ছাত্র হাবিবুর রহমান বলেন, 'বন্ধুদের কাছে শুনে জানতে এসেছি। বিষয়টি সঠিক মনে হলে টাকা দেব। ' আজকের সমকাল থেকে সংগৃহীত........... Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।