আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অতঃপর ইশ্বর মুচকি হেসে শয়তানকে বললনে পারলে সামলাও

লাল তরঙ্গ, লাল বিপ্লবের বার্তা বয়ে আনে

ইশ্বর ব্যাপারটা খেয়ালই করেন নি। দুনিয়া পয়দা করার শেষ দিনে সব কাজ শেষ করে তিনি বিশ্রামের উদ্দেশ্যে নিজ কক্ষে প্রবেশ করলেন। ৬ দিনের কুল-মাখলুকাত সৃষ্টির যজ্ঞে তার বিরাট পেরেশানি হয়েছে। তাই বিছানা-পত্র ঝাট না দিয়ে কক্ষের দুয়ার বন্ধ না করে তিনি সটান শুয়ে পড়লেন। সবে তন্দ্রা লেগেছে।

এরই মধ্যে ইশ্বর বিরাটাকারের হাউকাউ শুনে শোয়া থেকে লাফিয়ে ওঠলেন। প্রচন্ড মেজাজ খারাপে তিনি থরথর করে কাপছেন। গোথ গোথ করছেন। বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে দেখলেন একদল মানুষ তিন-চারটা ভাগে বিভক্ত হয়ে কুস্তি লড়তেছে। ইশ্বর হুঙ্কার ছুড়লেন।

ফেরেশ্তাকুল দৌড়ে তার সামনে এসে হাটু গেড়ে বসলো। মাথা নিচু করে তারা ভাবতে থাকলো, বেখেয়ালে কি ঝামেলাই না পাকিয়ে ফেলেছি!!! সারা দুনিয়ার জন্য পয়দাকৃত মানুষ বিলি-বন্টনের ফাকে এক চিমটা মানুষ বাদ রয়ে গেছে। ওই হারামি গুলাই যে কোন ফাকে ইশ্বরের বেডরুমে চলে আসছে!!! ইশ্বরের হাউকাউ আর ফেরেশ্তাদের খতর নাক অবস্থা দেখে শয়তান বেশ মজা পাচ্ছে। ইশ্বরের বিশ্রাম কক্ষের বাইরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সে মজা নিচ্ছিল। সে দেখতে পেল ইশ্বরের চেহারা থেকে রাগের আগুণ সরে যাচ্ছে।

দয়া ও পেরেশানির এক কাতর চেহারার এক অপরূপ ইশ্বরকে দেখতে পেল শয়তান। শয়তান তার জীবনে এই প্রথম ইশ্বেরর প্রেমে পড়ে গেল। শয়তান মনে মনে ঠিক করে নিল আজ সে ইশ্বরকে সহযোগিতাই করবে। কোনভাবেই দুষ্টামি করবে না। তো ইশ্বর ফেরেশ্তাদের বললো ওই অনাথগুলারে কোন দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা কর।

ফেরেশ্তারা চেয়ে দেখল সারা দুনিয়ার দেশে দেশেই ভালো মন্দ মানুষ বিলি-বন্টন করা হয়ে গেছে। কোথাও কোন দেশই খালি নাই। ফেরেশ্তারা ভয়ে ভয়ে বললো, প্রভু সদাশয় দুনিয়াতে তো কোন দেশই খালি নাই। আর ওদের মধ্যে ভালো-মন্দ মানুষ থাকলেও কিছু মানুষ আছে, যারা অত্যন্ত ইতর প্রকৃতির। তাদেরসহ কাউরেও তো কোথাও ব্যবস্থা করা যাবে না।

ইশ্বর তখন চেয়ে দেখলেন পৃথিবীর যেই অক্ষাংশে/ দ্রাঘিমাংশে সাহারা মরুভূমির অবস্থান তার বিপরীতেও আরেকটা মরুভূমির উপস্থিত আছে। মহা প্রকৌশলী ইশ্বর ঠিক করলেন ওই মরুভূমির পাশে একটা যদি একটা উচু পাহাড় বসিয়ে দেই (যা বর্তমানে হিমালয়) এবং মরুভূমির লাগোয়া সাগরের উপর যদি মৌসুমী বায়ু প্রবাহিত করাই তাহলেই হয়। মেঘমাল্লা হিমালয়ের লগে ধাক্কা খেয়ে খেয়ে যে নদ-নদী তৈরি হবে এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে তাতেই তো একট সবুজ দেশ তৈয়ার করা যায়। ইশ্বর তাই করলেন। তিনি দেশটিতে ৬ টি ঋতুর ব্যবস্থা করে দিলেন।

তিনি মনে করলেন যেহেতু দেশটাতে ভালো-মন্দ মানুষের পাশাপাশি ইতর মানুষকেও পাঠাতে হবে সেহেতু তিনি দেশটার আবহাওয়া যেন সব সময় সহিষ্ণু এই ব্যবস্থাও করে দিলেন। এইবার ইশ্বর হিসাবের বাইরে থাকা মানুষগুলারে একে একে নিজের খাস কামরায় ডেকে নিলেন। সবাই ইশ্বরের আশীর্বাদ নিয়ে খুশি মনে বের হয়ে গেলেন। সাক্ষাত্কার পর্বের শেষের দিকে প্রথমেই ইশ্বরের কাছে প্রবেশ করলেন একজন মিতভাষী নারী। তাকে ইশ্বর জিজ্ঞেস করলেন বেটি কেমন আছো।

তিনি মুচকি হেসে বললো বড্ড ভালো আছি। তবে যাবার আগে আপনাকে একটা গোপণ কথা বলে যেতে চাই-জনাবা """"" মানুষ বেশি ভালো নয়। তিনি শয়তানের সঙ্গে আতাত করেছেন। আপনার অনুমতি ক্রমে আমি তাকে ও শয়তানকে দেখে নিতে চাই। ইশ্বর বললেন ডান।

অতঃপর মুখরা রমণী । তিনিও একই পদের কথা বললেন। ইশ্বর এবারও বললেন ডান। অতঃপর দুই জনই একে একে শয়তানের সঙ্গে গোপণে মিলিত হলো। দু'জনে একই কথা বললো-আমি আপনার খাস লোক।

ইশ্বরকে বলে এসেছি আমি তার লগে নাই। আছি আপনের লগে। শয়তান ভাবলো যাক বাবা। দু'জনই আমার লগে থাকবে। শয়তান বুদ্ধি করলো আমি শুধু ইশ্বরের কাছ থেকে ওই দেশে ক্ষমতা টার্মে টার্মে বদলের অনুমতি নিয়ে নেই।

তাহলে দুই জনকেই টার্মে টার্মে ক্ষমতার সুযোগ দিয়ে সুখি করা যাবে। ভাবনা অনুসারে কাজ। ইশ্বর শয়তানের আর্জি শুনে মুচকি হেসে বললেন যাও বেটা সামলাও। অতঃপর কলিকালে দেশটাতে দুই নারীর যুগ প্রবর্তিত হলো। সঙ্গে সঙ্গেই দুই নারী একে অপরকে শয়তানের দালাল বলতে লাগল।

শয়তানের হাড্ডি-গুড্ডি ভেঙ্গে দেওয়ারও ঘোষণা দিল তারা। শয়তান তার প্রতি এমন বিদ্বেষ পোষণকারী দুই নারীকেই রাগের চোটে ক্ষমতা থেকে টার্মে টার্মে সরাতে শুরু করলো। এরকম করতে করতে ত্যাক্ত বিরক্ত শয়তান মনে করলো দুই জনকেই মাইনাস করে দিয়ে দেশটাতে নতুন কাউকে ক্ষমতায় বসাই। তো ইশ্বর ক্ষমতাধর শ্রেণীর বিভিন্ন জনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে লাগলো। এবং হাউমাউ করে পল্টন ময়দানে বসে কাদতে লাগলো।

আর বলতে লাগলো। হায় প্রভু এ কোন তামাশা। দেশটার সবার খাসলতই দুই নারীর মতোই। কষ্ট কইরা সুশীল বানাইলাম তারাও ওদের খাসলত ছাড়তে পারেনি। উ উ উ উ ...



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।