আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'অনিশ্চিত সময়'

স্বপ্নগুলো সত্যির প্রত্যয়ে পথচলা ............
চুপ করে দাঁড়িয়ে,দৃষ্টি সবুজের দিকে। কি ভাবছে জানি নে, দেয়াল জুড়ে সবুজ পাতা। তার মাঝে কয়েক টা ভ্রমর ঘুর ঘুর করছে। ২ টো চড়ুই পাখি উড়ে গেলো। হঠ্যাত কোথা থেকে সাদা ২টি পালক বাতাসে ভাসছে।

কি আশ্চর্য! কোন শব্দ মনে ডুকছে না। চারপাশের শুধু শব্দ? আবার কবুতরের দেখা, একটি সাদা আরেকটি কালো। কি সুন্দর তারা, কি সুন্দর তাদের ঠোট, চোখ! বাতাস বয়ে গেলো, গাছের পাতা গুলোকে নাড়িয়ে দিলো। কিন্তু কাছে আসতে পারলো না, সরে গেলাম! একটা চিন্তা খুব ঘুর ঘুর করছে, হঠাৎ দেখা মিলল একটি শালিকের! তাহলে কি হবে? আজ বিপদ অপেক্ষা করছে! কিন্তু কি বিপদ হবে বুঝতে পারছি না। ভ্যাপসা গরম এ অসহ্য লাগছে।

মাথা থেকে আগের চিন্তা টা বের হয়ে এবার শুধু ঘুর ঘুর করছে নতুন চিন্তা। আজ কি বিপদ হবে। কেন যে এক শালিক দেখলাম! এক শালিক দেখা টা কুসংস্কার হিসেবে, কোন দিনো কেন জানি উড়িয়ে দিতে পারি না। ক্লাস শেষ করে বের হলো নীড়া, গাড়িতে বসলো। মুহূর্তে ভুলে গেলো এক শালিক দেখার ঘটনা।

গাড়িতে বসে আছে, ভিড়-জ্যাম ঠেলে গাড়ি ফাকা রাস্তায় এসে, দ্রুত যাচ্ছে। একটু পর গ্লাস দিয়ে বাহিরে তাকাতেই দেখলো একটা মোটর সাইকেলে ২ টা বাচ্চা বসে আছে তার বাবার সাথে আর তাকে দেখে হাত নাড়াচ্ছে! বাচ্চা গুলো এমন করলো কেন বুঝলো না, তবুও হাত নাড়িয়ে বাচ্চাদের সাড়া দিলো। গাড়ি খুব দ্রুত যাচ্ছে, হঠ্যাৎ খুব জোরে হার্ড ব্রেক করলো। কি জানি একটা জিনিষ পড়ে যেতে দেখলাম, গাড়ির সামনে দিয়ে! মানুষ বলে উঠলো ধর ধর! গাড়ি চালক মজিব মিয়া গাড়ি টা কে খুব দ্রুত টান দিলো। কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না, কিন্তু সাথে বুঝেও গেলাম কি হয়েছে! পিছনে তাকালাম দেখলাম একটা মানুষ পড়ে আছে আর রাস্তার পিচ ভিজে যাচ্ছে, একটু ক্ষনের মধ্যে মানুষ ভীড়ে গেলো, কিছু দেখা গেলো না আর গাড়ি তো দ্রুত গতিতে যাচ্ছে।

হঠ্যাৎ করে নিজের ভিতর টা শূন্য হয়ে গেলো। নিজে কে অপরাধী মনে হলেও চোখের সামনে ভেসে উঠলো একটি শালিক। মজিব মিয়ার দিকে তাকালাম। তার সারা শরীরে ঘাম ঝরছে, এসির মধ্যে থেকেও ঘাম জিনিষ টা অদ্ভূত লাগল। মজিব মিয়া কে বললাম কি হয়েছিল? মজিব মিয়া বলল জানি না, আমি তো থামালাম কিন্তু কিভাবে যে লেগে গেলো বুঝলাম না আপা! মানুষ একটু দেখে হাটবে না, রাস্তা পাড় হবে না।

খুব বেশি ব্যাথা পাইছে না কি বুঝতে পারি নাই। নীড়া বলল;- গাড়ি থামালেন না কেনো? মজিব মিয়া বলল;- পাবলিকের মার খেতে আপা? গাড়ি থামালেই পাবলিক তো কিছুই বুঝতে চাবে না উলটা গাড়ী ভাংচুর আর মারধর করবে। এটা কি বাংলা বা হিন্দী সিনেমা না কি? কেউ একটু ব্যাথা পেলো আর গাড়ি থামিয়ে, নেমে তাকে হাসপাতাল বা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া। নীড়া মজিব মিয়া বলল ঠিক আছে, বুঝলাম। সাবধানে চালান।

মজিব মিয়া একটু কথা বলার সুযোগ পেলে একটু বেশি বলে ফেলে। যে টা নীড়ার কাছে বিরক্তি কর! নীড়ার দৃষ্টি এবার গ্লাসের বাহিরে আকাশের দিকে। মন খারাপের মনে অনেক প্রশ্ন উকি দিলো! যে মানুষ টার আজ এমন একটা ঘটনা ঘটল তার পরিবার জানবে তো? জানলে কি করবে? লোকটা বেচে আছে, না কি মারা গেছে ,না কি বেচে থাকলে ও পঙ্গত্ত্ব জীবন বহন করতে হবে। লোক টার যদি সন্তান থাকে তাহলে কি হবে............? প্রতিটা মানুষের জীবনে কত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। কেউ জানি না সামনের সময় টুকু আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে...........? আজকের দিনের এমন ঘটনার কারনে কি লোকটার বাকি জীবন টা অন্য রকম হয়ে গেলো? অনেক প্রশ্ন মনের মধ্যে এসে ভীড় করলো, কিন্তু! দীঘ নিশ্বাঃস! এ, প্রশ্নের উওর গুলো নীড়ার কাছে চিরজীবনের জন্য অজানা হয়ে গেলো!
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।