আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশে ভ্রমনের শিল্প।



বাংলাদেশে ভ্রমনের শিল্পটা নাই। কত মানুষ মরে যায় বয়সের ভারে, সারাজীবন নিজের গ্রামেই বাস করে। বাংলাদেশের এই সুন্দর প্রকৃতি না দেখেই চলে যাওয়ার মানে কি হয়, জানি না। রুশরা প্রতি বছর কোথাও না কোথাও বেড়াতে যায়। জীবনটাকে উপভোগ করে।

সেটা টাকা থাকুক আর না থাকুক। তারা তাবুতে পর্যন্ত থাকে টাকা না থাকলে। আমি প্রায়ই রাশিয়ার উদাহরণ দেই, কারণ এ দেশ সম্পর্কে আমার ধারণা কিছুটা আছে এবং আমি তাদের সংস্কৃতিকে পছন্দ করি। অন্য দেশ থাকে যদি ভালো কিছু পারি নিজের দেশের জন্য কল্যান বয়ে আনতে, তো সেটা আমাদের জন্য লাভজনক। নিজের বাড়িটা দেখতে কেমন, জানতে হলে, নিজের বাড়ী থেকে বের হতে হবে।

ঘরে বসে বসে কল্পনা করলে হবে না। ঠিক সেভাবেই নিজের দেশটাকে দেখতে হলে, দেশ থেকে বের হতে হবে। রুশ মহাকাশ যাত্রীরা যখন পৃথিবীতে ফিরে আসে, তারা বলেন, পৃথিবীটা কতই না সুন্দর কিছুদিন আগে পোল্যান্ডের কিছু অগ্রগামী ছেলে মেয়েরা একটি প্রকল্প করেছে। মানুষ মারা গেলে কি রকম অনুভূতি পায়। তা জানার জন্য তারা মাটি খুড়ে কবর বানিয়ে শুয়ে ছিল।

এ থেকে তারা জীবন সম্পর্কে বুঝতে পেরেছে কিছুটা। জীবন কত সুন্দর, তা বুঝতে পেরেছে। জীবন থেকে বের হয়ে যেমন জীবনের সৌন্দর্য্য উপলব্ধি করা যায়, ঠিক সেরকমই দেশ থেকে, নিজের গতানুগতিক জীবন, অন্চল থেকে বের হওয়া, বাতাস পরিবর্তন করা জরূরী। এতে কর্মক্ষেত্রে, স্ব-জীবনে গতির সন্চার হয়। রোগ-বালাই হয় না।

সমাজের মধ্যে বৈচিত্র্যতা আসে। বাংলাদেশে বিনোদন নাই। যা আছে, সেটা বিনোদন না। পৃথিবীর সব জাতির কিছু বিষয় আছে, আমাদের দেশে তা আমি আমার স্ব-দেশ জীবনের ২৩ বছর দেখি নাই। সম্ভবত এখনও নাই।

যেমন- পারিবারিক ভ্রমন, নাচ, উৎসব, সংবর্ধনা ইত্যাদি। ধর্মীয় কারণে এসব ভালো নয় বলা হয়। অথচ, সব (৯৯% - পা ক ই স তো ন বাদে) দেশের মুসলিমরাই নাচে, গায় গান। বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মটা ইউনিকাল। যদিও নবী করিম বলেছেন সুদূর চীনে যেতে।

রূশ দেশে প্রতিটি নাগরিকের জন্য বছরে ২ বার সরকার ভ্রমনের জন্য উৎসাহ দিয়ে থাকে। ১ বার (সানাটরি = স্বাস্হ্যনিবাসে) ২য় বার দুরে কোথাও। যেমন আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্বাস্হ্যনিবাস আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সবাই এবং ছাত্রছাত্রিরা সাগর পাড়ের স্বাস্হ্যনিবাসে ১-২ সপ্তাহ যাপন করতে পারবেন ভতুর্কী সহকারে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমস্যা আছে, স্বীকার করি।

সুষম অর্থনৈতিক বন্টন যদি হয়, তাহলে আমার এই লেখার কোনো প্রয়োজন হবে না। মনে করি, একটি সংস্হার ৫০ জন লোক তাদের বেতনের ২-৫% সবাই মিলে জমালো ১ বছর। স্বামী-স্ত্রী দুজনে বছর শেষে কোথাও না কোথাও ৫-৭ দিনের জন্য বেড়াতে যেতে পারেন। যেখানে যাবেন, যানবাহন, হোটেল, খাবার, সে অন্চলের যাদুঘর, নাটকঘর, কুটির , হস্ত শিল্প কিছু টাকা পাবে। সে অন্চলের কিছু আয় হলো, সরকার কর পেলো, আর সবচেয়ে বড় পাওয়া, ঐ দুজনের বিনোদন।

তারা তাদের অন্চলে এসে পাড়া প্রতিবেশীদের, কর্মক্ষেত্রের সহকর্মীদের গল্প করলো, এতে গীবতের চর্চা চলে যাবে। আসবে নতুন সব তথ্য জীবনে। সেখানে হয়তো আরও নতুন লোকেরা যাবেন। বাংলাদেশে সব অন্চলেই রান্নায় বিভিন্নতা আছে। গড়ে উঠতে পারে চট্রগ্রামের, সিলেটের, লোয়াখালীর, দিনাজপুরী, রংপুরী, ময়মনসিংহ, কুমিল্লার খাবারখানা (রেস্তোরা) সংস্কৃতি।

এসব খাবারখানা (রেস্তরাতে) স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা পার্ট টাইম কাজ করবে। শীতকালের ছুটিতে বিভিন্ন অন্চলের ছাত্রছাত্রীরা চলে যাবেন কাজ করতে কক্সবাজার, মংলা, কুয়াকাটা, সিলেট। এরপর কাঠামো গড়ে উঠলে আমন্ত্রন জানানো হবে ভারতীয়, নেপালী, শ্রীলংকানদের। আমরা যাবো তাদের দেশে। আসলে আমার এই অভিজ্ঞতা ইউরোপ থেকে।

সত্যি বলতে কি, আমাদের বেশীই আছে ওদের চেয়ে। কিন্তু আমরা অন্ধ বলে দেখতে পাই না। অথবা আমাদের রাজনীতিবিদরা চায় না। কারণ তাদের চেয়ে জাতী বেশী বুদ্ধিমান হলে আর তারা আমাদের নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন না মানুষ বুদ্ধিমান হলে হরতাল, মিছিল করবে না। ছেলেরা বিজ্ঞানে মেতে উঠবে, নতুন নতুন আবিস্কার হবে, রাজনীতিবিদরা হায় হায় করবে।

দেশে খেলাধুলা নেই। নেই। কেনো? আমাদের কত খেলা আছে, যা কিনা আমি নিজেই জানি না। প্রতিটি শহরে ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা জায়গা থাকা দরকার। সাইকেল প্রতিযোগীতা করা দরকার।

সাইকেলে করেও ভ্রমন করা যায় বিভিন্ন শহরে, গ্রামে। আমাদের পুরাকীর্তি কি কম আছে বাংলাদেশে? আসলে সব কিছু করতে গেলে একটা বিপ্লব দরকার হবে। ভ্রমন আমাদের জীবন আনবে এক বিশেষ শক্তি, যা কিনা দেশের উন্নতির জন্য অপরিহার্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.