আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিএনপির জ্যেষ্ঠ(বুড়া) নেতারা কার্যকলাপ

কালবৈশাখীর পর বাগানে গিয়ে যে হাল চোখে পড়বে, শাপলা অভিযানের পর প্রধান বিরোধী দল বিএনপিরও একই অবস্থা। দলটির নেতাকর্মীরা এখন বলাবলি করছেন, ঘরেই শত্রু থাকতে বাইরে খুঁজে কি লাভ? বেহাল বিএনপির সর্বশেষ চিত্র ফুটে উঠেছে শনিবারের স্থায়ী কমিটির রাতের বৈঠকে। সেখানে চেয়ারপারসনের উপস্থিতিতে জ্যেষ্ঠ নেতারা তর্কে জড়িয়েছেন। একে অন্যকে সরকারের হয়ে কাজ করছেন বলতেও ছাড়েননি। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বৈঠক চলাকালে হঠাৎ করেই র‌্যাব উপস্থিত হলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থায়ী কমিটির নেতারা।

তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আজই দলীয় চেয়ারপারসনকে ‘গ্রেপ্তার’ করা হবে। আর এই পরিস্থিতির জন্য খালেদা জিয়ার সামনেই জ্যেষ্ঠ নেতারা একে অন্যকে দোষারোপ করতে থাকেন। কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে সরকারের সঙ্গে ‘অমুক অমুক’ নেতা লিয়াঁজো করছেন বলে অভিযোগের তীর ছুঁড়ে দেন। শুরু হয় বাক-বিতণ্ডা। পরে স্বয়ং খালেদা জিয়ার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

তিনি রীতিমত নেতাদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিতে বাধ্য হন। যার ফল স্বরূপ কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামের এই বৈঠক। সূত্র জানায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়ে সরকারকে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম নিয়েই মূলত বিপাকে পড়েছে বিএনপি। বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে সরকার দাবি তো মানেই নি, উল্টো হুমকি দিয়ে রেখেছে। ভেস্তে গেছে সংলাপের আশাও।

কিন্তু এর জবাবে বিএনপি কোনো আন্দোলন দাঁড় করাতে পারেনি। বরং আরো চুপসে গেছে। এমনিতে দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূলে র্তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। এর সঙ্গে যোগ হলো বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের দ্বন্দ্ব আর পরস্পরের প্রতি সন্দেহ-অবিশ্বাস। গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দুজন জেষ্ঠ্য নেতা দলের চেয়ারপারসনের সামনেই ‘বাকযুদ্ধে’ লিপ্ত হন।

আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ও তা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা একের পর এক ফাঁস হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তিনি ব্যারিস্টার মওদুদকে ইঙ্গিত করে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেন, ‘ম্যাডাম দলের শীর্ষ মহলে সরকারের ‘গুপ্তচর’ ঢুকে পড়েছে। তাই কোনো কিছুই গোপন থাকছে না। আমরা যা সিদ্ধান্ত নেই, তা ফাঁস হয়ে যায়। ’ কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে যে এ ধরনের দূরত্ব আছে, তা এই ঘটনাকেই প্রথম বলা যাবে না।

এই ক’দিন আগেও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে দলের মধ্যে অভিযোগ ওঠে, তিনি কারাবন্দি অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের পাশে গোয়েন্দাগিরি করান, যাতে কে কে তার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তা জানা যায়। তবে সর্বশেষ রবিবার সরকার সব ধরনের সভা-সমাবেশের ওপর এক মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এটি আপাতত দিনের বেলায় একমাস হলেও রাতের জন্য অনির্দিষ্ট। ফলে বিএনপি চাইলেও এখন সভা-সমাবেশ কিংবা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে খুব সহজে সফল করতে পারবে না। আর এর প্রভাব দলের নেতাকর্মীদের ওপর পড়বে।

নিস্ক্রিয় নেতাকর্মীরা আরো নিস্ক্রিয় হবে পড়বে বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। আপাতদৃষ্টিতে এই অবস্থার উত্তরণও নেই। কারণ জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে মাঠে সক্রিয়রা জেলে অথবা জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য বাইরে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খুব সহসা আসছেন না। তরিকুল ইসলাম, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খান: উল্টো খুব শিগগিরই মির্জা ফখরুলের পথ ধরে বাইরে যাচ্ছেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নজরুল ইসলাম খান।

ড. আরএ গনি, বেগম সারোয়ারি রহমান, এম. শামসুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার :স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে ড. আরএ গনি, বেগম সারোয়ারি রহমান, এম. শামসুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বয়োজ্যেষ্ঠ এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ। তারেক রহমান:তারেক রহমান শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী: সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কারাগারে। এমকে আনোয়ার:এমকে আনোয়ার গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে রয়েছেন। এর পরের সারির বেশিরভাগ নেতাও কারাগারে।

ফলে বিএনপিকে এখন এক হাতে চালাতে হচ্ছে খালেদা জিয়াকে। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকেও দেখভাল তাকেই করতে হচ্ছে। একদিকে সরকারের রোষানল, হামলা-মামলা অন্যদিকে দলীয় কোন্দল-বিরোধ। সবকিছু কাটিয়ে বিএনপি আন্দোলন কর্মসূচি বাস্তবায়নে কতদূর যেতে পারে সেটিই দেখার বিষয়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.