আরেকটি স্বপ্নের অপমৃত্যু। স্বপ্নচারীর নাম খন্দকার খানজাহান সম্রাট। ছোটবেলা থেকে মনের গহীনে অনেক বড় ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নকে লালন করত সম্রাট। ইচ্ছে ছিল নিজের মেধা দিয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে সে। সে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে অনেক অধ্যবসায়ের মাধ্যমে দেশের বৃহত্তম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেল সে।
আচরণের দিক দিয়ে খুবই নাছোড়বান্দা ছিল খানজাহান। তাইতো পরিবার থেকে বিশেষ করে তার বাবা শাহ আলমের পক্ষ থেকে বারবার ডাক্তার হওয়ার জন্য তাগিদ করা হলেও তা উপেক্ষা করে নিজ ইচ্ছায় বুয়েটে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আসা। তারতো অনেক দায়িত্ব। উচ্চ মধ্যবিত্ত বাবা-মার সংসারে সেই একমাত্র ছেলে। বাবা-মার মুখ তাকে উজ্জল করতেই হবে।
৪ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। পরিবারে অনেক আদুরে হওয়ায় তার ইচ্ছা কখনো অপূরণ থাকেনি। কিন্তু তার জীবনের সবচেয়ে বড় ইচ্ছাটিই যে আর পূরণ হবে না সেটি কি জানত খানজাহান ! ঘাতক বাস নিমিষে শেষ করে দেবে তার স্বপ্ন ! ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন !
গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার নেজারাউলফুল গ্রামে জন্ম নেয়া খানজাহান বড় হয়েছে ওখানে। পরে বাবার চাকরিক্ষেত্র খুলনাই এইচএসসি পর্যন্ত পড়ে সে। গতমাসে বুয়েটে ভর্তি হয়ে মাত্র এক সপ্তাহ কাস হয় তার।
যন্ত্রকৌশল বিভাগের ‘এ’ সেকশনে ভর্তি হয় সে। বিভাগের ৯ম ব্যাচে তার রোল নম্বর ছিল ০১৯১০০৪। কয়েকদিন আগে বুয়েটের আহসানুল্লাহ হলের ১৩৪নম্বর রুমে সিট পেয়ে সেখানেই থাকতে শুরু করে। নতুন জায়গায় মন না টেকায় একদিন ছুটি পেয়ে বড় বোনের বাসায় বেড়াতে যাওয়াটিই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাড়ালো তার জন্য। ঢাকা শহরের মূর্খ বাস ড্রাইভারদের রোষের শিকার হতে হয় তাকে।
কবে থামবে এসব অশিক্ষিত বাস ড্রাইভারদের দৌরাত্ম্য? আর কত চার বছরের ফুটফুটে শিশু হামিম ১৯ বছর বয়সী মেধাবী ছাত্র খানজাহানকে অকালে প্রাণ হারাতে হবে। এই প্রশ্নই বারবার করছিল তার হতবাক সহপাঠিরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।