আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এভারেস্ট এখন ডালভাত

একটা গোপন কথা বলি আজ। সবাই আমাকে যতটা চুপচাপ আর বোকা মনে করে আমি আসলে ওমন না। কথা বলিনা, হয়ত সাহস পাইনা; কিন্তু কথা ঠিকই জানি। বলতে পারিনা তো কি, ভাবছি না বলা কথাগুলো লিখব এখন। এবার বুঝবে মজা।



চলেন ভাই এভারেস্টে যাই। শুনলাম এভারেস্ট এখন ডালভাত। অবাক হইলাম আইজ; আমরা কত বেকুব! মুসা কইরা ফেল্লো আর আমরা এতক্ষনে টের পাইলাম। ধেত, আগে কেন পারিনাই। কালের কন্ঠে আজ দেখলাম মই দিয়া লোকজন মুড়ি মুড়কির মতো এভারেস্টে উঠতাছে।

চলেন, দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টে যাই। বিস্তারিত পরামর্শের জন্য কালের কন্ঠের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। স্বপরিবারে অবকাশ যাপন করে আসুন এভারেস্টের চূড়ায়। http://www.kalerkantho.com/ তিন দিনে চূড়ায় উঠেছেন তিন শতাধিক প্রযুক্তি ও আবহাওয়ার কল্যাণে এভারেস্ট জয়ের হিড়িক কালের কণ্ঠ ডেস্কস্যার এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগে এভারেস্ট জয় করার পরও অনেক বছর বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়াটি অনেকটা রহস্য হয়েই ছিল মানুষের মাঝে। ১৯৫৩ সালের পর দীর্ঘ ৫০ বছরে এভারেস্ট জয় করেছিলেন প্রায় ৫০০ জন আরোহী।

সেখানে গত সাত বছরে ২৯ হাজার ৩৫ ফুট উঁচু চূড়াটি জয় করেছেন আড়াই হাজার মানুষ। কেবল চলতি সপ্তাহেই এভারেস্টজয়ী হিসেবে নাম লিখিয়েছেন তিন শতাধিক অভিযাত্রী। তাঁদেরই একজন আমাদের দেশের গর্বের সন্তান মুসা ইব্রাহীম। 'এভারেস্টকে আমার আর বিশেষ কোনো স্থান মনে হয় না। কারণ অন্য পাঁচটা ব্যস্ত এলাকার মতোই সেখানে এখন মানুষ গিজগিজ করে।

' কয়েক বছর ধরে বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়াটি বিজয়ের 'হিড়িক' পড়ে যাওয়ায় এ মন্তব্য করেছেন পাঁচবার এভারেস্টজয়ী যুক্তরাষ্ট্রের জেক নরটন। মূলত ২০০৩ সাল থেকেই এভারেস্টজয়ীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ২০০৭ সালে সর্বোচ্চ ৬৩০ জন বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়াটি জয় করেন। চলতি বছরেও এ সংখ্যা চার শর কম হবে না। জয়ীদের তালিকায় কেবল পুরুষই নয়, রয়েছেন নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরাও।

গত রবিবারেই মাত্র ১৩ বছর বয়সে চূড়ার ওঠার রেকর্ড গড়ে আমেরিকার শিশু জর্ডান রোমেরো। ২০০৭ সালে জাপানি নাগরিক কাতসুকে ইয়ানাগিসাওয়া ৭১ বছর বয়সে চূড়ায় উঠে চমক লাগিয়ে দেন। একই বছরে চূড়ায় ওঠেন কৃত্রিম হৃদযন্ত্র স্থাপন করা এক কানাডীয় নারী। এবার সহ আপা শেরপা চূড়া জয় করলেন ২০ বার। হঠাৎ করেই এভারেস্ট জয়ে সফলতার হার বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিকে 'প্রযুক্তির আশীর্বাদ' হিসেবেই অভিহিত করছেন জেক নরটন।

তাঁর ভাষায়, 'এভারেস্ট চূড়ায় আরোহণের মানচিত্র এখন আমাদের মুখস্থ। গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) আরোহীদের হাতে হাতে। তা ছাড়া পথপ্রদর্শক ও দেহরক্ষী হিসেবে সার্বক্ষণিক শেরপা তো রয়েছেই। রয়েছে আধুনিক সরঞ্জাম। ' আরোহীদের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করা ব্রিটিশ নাগরিক কেনটন কুল বলেন, 'হিলারি ও নোরগে যখন এভারেস্টে যান, তখন তাঁরা সম্পূর্ণ অচেনা এক জগতের খোঁজে ছিলেন।

এখন কিন্তু বিষয়টি আর তেমন নেই। এমনকি আরোহীদের সহায়তার জন্য বিভিন্ন স্থানে স্থায়ীভাবে দড়ি ও মই লাগানো রয়েছে। ' কুলের মতে, উন্নত প্রযুক্তির পোশাক ও সরঞ্জাম পর্বতারোহণের কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, 'পাহাড়ের চূড়ায় ভালো দস্তানা, জুতা ও কাপড় বড় ব্যবধান গড়ে দেয়। এসব বিশেষায়িত কাপড় প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যেও আরোহীদের উষ্ণ রাখে।

তা ছাড়া কৃত্রিম অক্সিজেনের ব্যবস্থাও এখন অনেক আধুনিক হয়েছে। রয়েছে স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত আধুনিক আবহাওয়ার পূর্বাভাস। এসব কারণেই এভারেস্ট জয় আগের চেয়ে এত সহজ ও নিরাপদ হয়েছে। ' এ মৌসুমে (এপ্রিল-মে) অবশ্য অনুকূল আবহাওয়াও আরোহীদের অনেক সহায়তা করেছে। এ পর্যন্ত ২১৬ জন অভিযাত্রী এভারেস্ট চূড়ায় আরোহণের পথে প্রাণ হারালেও এ বছর এখনো পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

অভিযাত্রীদের সফলতার হারও ছিল অনেক বেশি। নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, এ বছর এভারেস্টে আরোহণের জন্য অনুমতি নিয়েছেন ২৩৩ জন বিদেশি। দেশটির পর্বতারোহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা তিলক পান্ডে এএফপিকে বলেন, 'চলতি সপ্তাহের শনি, রবি ও সোমবার_এ তিন দিনেই চূড়া জয় করেছেন ২৩০ জন। ' তবে তিব্বত অংশ থেকে যাত্রা করা এভারেস্ট আরোহীদের পরিসংখ্যান এ হিসাবের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এ বছর তিব্বত অংশ থেকে যাত্রা করে এভারেস্টজয়ের সফলতার হার নেপালের তুলনায়ও বেশি।

সেখানে কারো ব্যর্থতার তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। মুসা ইব্রাহীম এ পথেই চূড়ায় উঠেছেন। তাঁর ২৬ জনের দলের সবাই সফলভাবে এভারেস্ট জয় করতে সক্ষম হয়েছেন। বেইস ক্যাম্প ফিরে মুসা জানিয়েছেন, কেবল সোমবারেই তাঁর সঙ্গে তিব্বত অংশ দিয়ে চূড়া জয় করেছেন ৬০ জন। মুসার এক দিন আগে তাঁর ব্যবহৃত পথ ধরেই সবচেয়ে কম বয়সে এভারেস্ট জয়ের রেকর্ড গড়ে শিশু রোমেরো।

সোমবার কানাডার নাগরিক সেইন্ট জার্মেইন তো কোনো রকম কৃত্রিম অক্সিজেন সঙ্গে না নিয়েই এভারেস্ট জয় করেছেন। বছর বছর শতাধিক আরোহী এভারেস্ট চূড়ায় উঠছেন বলে গুরুত্ব কমে যাচ্ছে জয়ীদেরও। ১৯৫৩ সালে হিলারি ও নোরগের এভারেস্ট জয়ের পর পুরো বিশ্বেই আলোড়ন উঠেছিল। অথচ গত রবিবার রোমেরো মাত্র ১৩ বছর বয়সে এভারেস্ট জয় করার পর তার নিজ দেশের পত্রপত্রিকায়ও তেমন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। একই দিনে সবচেয়ে কম বয়সী ভারতীয় হিসেবে এভারেস্ট জয় করা ১৬ বছর বয়সী অর্জুন বাজপেয়িকে নিয়েও তেমন মাতামাতি হয়নি।

তবে নরটন মনে করেন, স্বাভাবিক হয়ে এলেও মানুষের এভারেস্ট জয়ের আকাঙ্ক্ষা চিরদিনই থাকবে। যদিও ইচ্ছে থাকলেই সেটি সম্ভব হবে না সবার পক্ষে। কারণ নেপাল বা তিব্বত থেকে এভারেস্টে আরোহণের অনুমতি সংগ্রহ করতেই মাথাপিছু ফি দিতে হয় ১০ হাজার ডলার। এ ছাড়া আরোহণের অন্যান্য ব্যয় তো আছেই।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.