আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাউন্ট এভারেস্ট

মাউন্ট এভারেস্ট বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। এটি হিমালয় পর্বতমালার একটি অংশ, এশিয়ার নেপাল এবং চীনের সীমানার মধ্যে এর অবস্থান। ২০০৮ সালের শেষ পর্যন্ত ২,৭০০ জন পর্বতারোহী সর্বমোট ৪,১০২ বার এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেছেন। ১৮৫২ সালে বাঙ্গালি গণিতবিদ ও জরিপকারক রাধানাথ শিকদার দেরাদুনে অবস্থিত জরিপ সদর-দপ্তরে বসে হিসাব-নিকাশ করে এভারেস্টের সঠিক উচ্চতা আবিষ্কার করেন এবং একে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি এনে দেন। তিনি নিকলসনের তথ্যের ভিত্তিতে ত্রিকোণমিতিক পদ্ধতিতে এই হিসাব সম্পন্ন করেন।

১৮৬৫ সালে রয়েল জিওগ্রাফিক সোসাইটি আনুষ্ঠানিকভাবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতচূড়ার নামকরণ করে মাউন্ট এভারেস্ট। ১৯৭৮ সালের ৮ মে অস্ট্রিয়ার পিটার হেবলার এবং ইতালির রেইনহোল্ড মেসনার প্রথম অক্সিজেন ছাড়া এভারেস্ট এর চূড়ায় সফলভাবে অরোহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৬ মে প্রথম নারী হিসেবে এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করার কৃতিত্ব লাভ করেন জাপানের জুনকো তাবেই। প্রথম প্রতিবন্ধী হিসেবে ১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টম হুইটেকার এভারেস্টের চূড়ায় উঠেন। একটি কৃত্রিম পা নিয়েও তিনি এভারেস্ট জয় করে বিশ্ববাসীকে চমকে দেন।

পৃথিবীর এই উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ সব ধরণের পর্বতারোহীদের আকর্ষণ করে- একেবারেই নতুন পর্বতারোহী থেকে শুরু করে বহু অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পোড়-খাওয়া পর্বত-অভিযাত্রীরাও এতে সফল আরোহণের জন্যে পেশাদার পর্বত পথ-প্রদর্শকদের পেছনে দেদারসে টাকা খরচ করতে দ্বিধাবোধ করে না। নেপালের আপা শেরপা সবচেয়ে বেশিবার এভারেস্ট জয় করেছেন। ১৯৯০ সালের ১০ মে থেকে ২০১১ সালের ১১ মে পর্যন্ত তিনি মোট ২১ বার তিনি এভারেস্টের চূড়ায় পা রেখেছেন। পর্বতারোহীরা নেপালের পর্যটন আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস, কারণ এভারেষ্ট পর্বতশৃঙ্গ আরোহণে ইচ্ছুক প্রত্যেক পর্বতারোহীকে নেপাল সরকারের কাছ থেকে ২৫,০০০ মার্কিন ডলার মূল্যের একটি ব্যয়বহুল পারমিট সংগ্রহ করতে হয়। এতে আরোহণ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ২১০ জন পর্বতারোহী প্রাণ হারিয়েছেন, এর মধ্যে ৮ জন ১৯৯৬ সালে পর্বতের অত্যন্ত উঁচুতে ঝড়ের কবলে পড়ে প্রাণ হারান।

বিশেষত ডেথ জোন এ আবহাওয়া এতোটাই প্রতিকূল যে বেশিরভাগ সময় হতভাগ্য পর্বতারোহীর মৃতদেহ সেখান থেকে উদ্ধার করা সম্ভবপর হয় না। ১৮৬৫ সালে স্যার জর্জ এভারেস্টের নামানুসারে পর্বতের নামকরণ করা হয় মাউন্ট এভারেস্ট। কিন্তু এ নামকরণে তাঁর ঘোর আপত্তি ছিল। গত ছয় দশকে প্রায় তিনশ অভিযাত্রী এভারেস্ট জয় করতে গিয়ে মারা গেছেন, যাদের কারো কারো দেহাবশেষ হিমালয়েই রয়ে গেছে। নেপালে হিমালয় পর্বতারোহনের সবচেয়ে ভাল সময় বলে মে মাসকে মনে করা হয়, কারণ এই সময়ে সেখানে আবহাওয়া থাকে পর্বতারোহনের অনুকুল।

প্রথম বাংলাদেশী হিসাবে মুসা ইব্রাহিম এভারেস্ট চূড়ায় ওঠেন ২০১০ সালের ২৪শে মে। ২০১১ সালের ২১শে মে দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসাবে এভারেস্ট জয়ের গৌরব অর্জন করেন এম এ মুহিত। এরপর গত বছর প্রথম বাংলাদেশী নারী হিসেবে নিশাত মজুমদার ১৯ মে এভারেস্ট জয় করেন। পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়া থেকে ফিরে আসার পথে বাংলাদেশী একজন পর্বতারোহী মোহাম্মদ খালেদ হোসেন (৩৫) মারা গেছেন। পঞ্চম বাংলাদেশি হিসাবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের লক্ষ্যে গত ১১ এপ্রিল নেপালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘কাজলের দিনরাত্রি’র পরিচালক খালেদ, যিনি সজল খালেদ নামেই পরিচিত।

খালেদ ও শৈলীর একমাত্র ছেলে সুস্মিতের বয়স আড়াই বছর। রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় তাদের বাসা। প্রকৌশলের ডিগ্রিধারী সজল খালেদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। পর্বতারোহণ নিয়ে এডমন্ড ভিস্টর্সেলের লেখা একটি বইও তিনি অনুবাদ করেছেন, যার নাম ‘পর্বতের নেশায় অদম্য প্রাণ’।

রক্ষণশীল দেশ সৌদি আরবের এক নারী এই প্রথম বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করেছেন। সৌদি আরবের বন্দর নগরী শহর জেদ্দায় জন্ম নেয়া রাহা বর্তমানে দুবাইয়ে থাকেন। এভারেস্ট জয়ের এই মিশনে চারজনের দলে ছিলেন রাহা, যার সঙ্গে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে একজন কাতারি ও একজন ফিলিস্তিনি পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে উঠার চেষ্টা করেন। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.