আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রবিউল, এক্সট্রা ডটেড

পারলৌকিক হ্যাঙ্গারে হ্যাঙ্গ হয়ে আছে ইহকাল / পুনরায় জন্ম নেয়া এখন বিশেষ প্রয়োজন

আমাদের রবিউলের ঘনিষ্ট কোন বন্ধু নেই। একথা জানার পর থেকে আমার সামান্য মন খারাপ হলো। একদিন তাকে ছবির হাটে আসতে বললাম। ফোনে তাকে জানালাম অনেকদিন গুড়ের চা খাওয়া হয় না রবিউল, ছবির হাটে আয়, আড্ডা মারা যাক। রবিউল আসে, শাজাহান ভাইয়ের স্টলের বেঞ্চে বসে চা খায়, বিস্কিট খায়।

আড্ডায় কিছু লোক ঢুকে পরে যারা আমাদের সার্কেলের নয়। চা বিড়ি খাওয়ার খানিক বাদে তাদের তামাকের নেশা চাপে, তারা চলে যায়। তামাকের সন্ধ্যানে ছড়িয়ে পড়ে। এক চিত্রকর ফোনে বুথ হয়ে পড়ে তার যৌনসঙ্গীর সঙ্গে, হারিয়ে যায় অন্ধকারে। আমি আর রবিউল বসে থাকি।

রবিউল জিজ্ঞেস করে, আমার পড়ালেখার কি অবস্থা; পার্টটাইম কি করছি ইত্যাদি। নিজের সঙ্গে অনেক কসরত শেষে তাকে জিজ্ঞেস করি, রবিউল ঘনিষ্ট বন্ধু বলতে কি বোঝায়! রবিউল হঠাৎ চমকে ওঠে দম বন্ধ করে। এক মুহূর্ত পরে আবার স্বাভাবিক হয়। বলে, এই কথা ক্যান কইস, কি হইসে? আমি অভিযোগ মেশানো কৌতুকে তাকে বলি, তোর নাকি ঘনিষ্ট বন্ধু নাই শুনলাম। অনেক লোকের সঙ্গে মেলামেশা করিস তাদের কেউ তোর ঘনিষ্ট না, এইটা জাইনা মজা পাইসি।

আসলে আমি রবিউলের খুব ঘনিষ্ট একজন বন্ধু। সে মানুষের কাছে এ ধরণের কোন অভিযোগ করলে আমারই রাগ হওয়ার কথা বেশি। সেই রাগের বসে আমি তাকে আক্রমনের চেষ্টা করি। রবিউল একটা সিগারেট ধরায়, অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে ধোঁয়া ছাড়ে আর গুনগুন করে একটা হিন্দি গান ধরে। আমি বিরক্ত হয়ে অপেক্ষা করতে থাকি, ওই বিষয়ে কখন মুখ খোলে সে।

রবিউল একটা আমুদে ছেলে। বন্ধুবান্ধবের মধ্যে সে থাকে শিরোমনি হয়ে। যে কোন আড্ডা জমাতে তার লাগে দুমিনিট। যে কোন আড্ডায় সে ঢোকা মাত্র আড্ডার পরিবেশ বদলে যায়। সবচেয়ে বড় কথা আড্ডার নিয়ন্ত্রণ সে নিয়ে নেয়।

আমি খেয়াল করেছি, সে আড্ডায় বসলে আড্ডার পুরো খরচের টাকা দ্বিগুন হয়ে যায়। আড্ডায় সবাই অপেক্ষা করে খরচের খাতাটা কে খুলবে। এটা নিয়ে সবাই শঙ্কিত থাকে, কারণ প্রতিদিন প্রায় দেড়দুশ করে আড্ডা খরচ। আমাদের আড্ডায় প্রচুর অন্য লোকজন ঢুকে পড়ে, কারণ তারা আমাদের সঙ্গে আড্ডা মেরে মজা পায়। তারা আড্ডা দিতে এসে ভালো পয়সা খরচ করে।

আমরা রীতিমতো আড্ডা বিক্রি করি। এই সেদিনও এক বহুজাতিক কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর সেলিম ভাই এলেন, তিনি প্রায় হাজার দুয়েক খরচ করলেন। ওইদিন আমাদের আড্ডা বসে মিষ্টির দোকানে। সেলিম ভাই শুরু করেন মিষ্টি নিয়ে গল্প। তার গল্পগুলো খুবই শাদামাটা ও সাম্প্রদায়িক, কিন্তু বিনোদনমূলক।

তবে রবিউলের সামনে তার গল্প টেকে না। মঞ্চে যেমন জুনিয়র শিল্পী আগে গান করে, পরে ওঠে গুরুত্বপূর্ণরা, তেমনি যে কেউ গল্পের নারিকেল ভাঙলে পরে রবিউল টেনে নিয়ে যায়। রবিউল গল্পকে এত দূর টেনে নিয়ে যায় যে, সেখান থেকে সেটাকে আর কেউ টেনে ফিরিয়ে আনতে পারে না। গল্প ও আড্ডা শেষ হয়ে যায়। রবিউল নিজেও বহুদূর টেনে নিয়ে যাওয়া গল্প ফিরিয়ে আনে না।

সে শুধু বলে, এই লাস্ট বিড়িটা শেষ করে চলেন উঠি। সে কখনই আড্ডার বড় খরচ শেয়ার করে না। বরং বড় স্পন্সর পাওয়া গেলে সে নিজের মন মতো যা যা খেতে ইচ্ছে করে, অধিকার মনে করে খায়। নৌবাহিনী সিগারেটে অভ্যস্ত রবিউল তখন বেনসন লাইট খায়। সেলিম ভাই বললেন, ময়রারা যে এত মিষ্টি বানায়, এগুলো যায় কই? এইগুলা মানুষে খাইয়া শেষ করতে পারে না।

এইগুলা খায় জ্বেন, বুঝলা মিয়ারা। আমরা হেসে কুটি কুটি হই অকারণে। রবিউল হাসে না, সিরিয়াস হয়ে বলে-- ভাই, তাইলে জ্বেন মিষ্টি খাইলে জ্বেন হাগে কই? আমরা আবারো হাসতে হাসতে কুটি কুটি হই, সেলিম ভাই হাসতে হাসতে চেয়ার থেকে খসে পড়েন যেন। রবিউল সেদিন একহাড়ি দই, পাঁচটা কালোজাম খেয়ে ঘোষণা করে, জ্বেন মিষ্টি খায় এ কথা সত্য। কারণ তার মতো মানুষের পক্ষে এত মিষ্টিজাতীয় জিনিশ খাওয়া সম্ভব না।

তার উপর জ্বেন আসর করে জ্বেন এত মিষ্টি খাইসে। রবিউলের শারিরীক গড়ন রবিউলমার্কা। সারাবছরই তার পেটের ব্যামো থাকে, ডায়রিয়া আমাশয় তার স্বাভাবিক ব্যাপার। বরং এগুলো না থাকলে সে ঢাকা মেডিকেলে যায়, ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিন্তিত ভঙ্গিতে বলে, ডক্টর, আমি কি ওকে আছি? একটু ভালো করে দেখুনতো সব কিছু। রবিউল আড্ডায় এসে সবার জড়তা কাটায়।

কে আগে খরচের খাতা খুলবে এ অস্বস্থিতে ভুগতে শুরু করলে রবিউল নিজের পয়সায় তিনটা সিগারেট কেনে। যতজন লোকই থাকুক না কেন ওই তিন সিগারেট ভাগ করে খেতে হয়। এরপর আমাদের সিগারেটের তৃষ্ণা আরও বেড়ে যায়। তখন আরো সিগারেট আনতে আমরা বাধ্য হই। রবিউলের হাতের সিগারেট অর্ধেকে নামলে সে ওটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে শাজাহান ভাইকে পানি দিতে বলে।

আমি সিগারেটে একটা টান দিচ্ছি কেবল, এই মুহূর্তে রবিউল এমন এক কথা বলে, আমার গলায় ধোঁয়া আটকে যায়। আমি অসহায় বোধ করি। রবিউল বলে, গ্রুপসেক্স করছস কোনদিন? আমি কাশতে শুরু করলে শাজাহান ভাই পানি নিয়ে পৌঁছে যায়। রবিউল তার হাত থেকে পানির গ্লাস নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে দেয়, যেন আমাকে পরিকল্পিতভাবে কাশাতেই সে পানি আনতে বলে। আমি পানি দিয়ে কুলি করে গ্লাসটা নামিয়ে রাখি।

সিগারেটের পাছাটা হাত থেকে কখন খসে পড়ে টের পাই না। রবিউলের ওপর আমার যে রাগ ছিল, ওকে যে কিছু জিজ্ঞেস করেছি সেগুলো রীতিমতো ভুলে যেতে পারলে বাঁচি। ও আমার কলেজ জীবনের বন্ধু। আমরা এক সঙ্গে এইচএসসি পাশ করে অনার্স ভর্তি হয়েছি। ও অনার্স পড়াটাকে নিয়েছে সাইড ওয়ার্ক হিসেবে।

আমার সাইড ওয়ার্ক টিউশনি। রবিউল যে কী করে কাওকে কিছু বলে না। এটা তার এক ধরণের স্মার্টনেস হতে পারে। একজন মানুষ কি কাজ করে জনে জনে সেটা বলে বেড়ানো কোন কাজের কথা না। তবে ঘনিষ্ট বন্ধু হিসেবে আমার সেটা জানার অধিকার আছে।

অনার্স শেষ হলে আমি নিশ্চিত ওর থেকে কিছু মার্ক বেশি পাবো। মাস্টার্স ভর্তি হয়ে একটা চাকরিতে ঢুকবো। ও কি করে এটা আমি জানবো না তা হয় না। কিন্তু সম্প্রতি জানলাম, রবিউলের কোন ঘনিষ্ট বন্ধু নাই। রবিউলের ফোন আসে।

সে খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে কথা বলতে থাকে কলারের সঙ্গে, যেন খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক ডিল চলছে। দু একটা কথা আমার কানে আসে, আমি কৌতুহলী হয়ে উঠি। ওকে জিজ্ঞেস করা দরকার ও কি করে, কি ব্যবসা শুরু করেছে। কিন্তু তার আগে এ বিষয়ের একটা হ্যস্তন্যস্ত করা দরকার। কেন সে এসব প্রচার করে যে, তার কোন ঘনিষ্ট বন্ধু নাই! তার এ ঘোষণায় সার্কেলের নতুন ও সার্কেলের বাইরের লোকেদের কাছে আমার প্রেস্টিজ ইশ্যু হয়ে দাঁড়ায়।

আমি মারমুখি ভঙ্গিতে তাকে সরাসরি বলি, ফালতু আলাপ বাদ; তোর বোলে ঘনিষ্ট বন্ধু নাই! রবিউল আমার দিকে এমনভাবে তাকায় যেন ঘনিষ্ট বন্ধু সম্পর্কে আমার নির্বুদ্ধিতায় আমার প্রতি তার করুণা জন্মেছে। সে আমাকে বলে, বন্ধু এবং ঘনিষ্টতা কাকে বলে বল! সে এমনভাবে প্রশ্নটা ছুঁড়ে দেয় যেন, উত্তর দিতে না পারলে আমার মারাত্বক সাজা হবে। আমিও তেমনটিই বোধ করি, এ প্রশ্নের জবাব দিতে না পারলে যেন আমার কারাদ- হবে। অথচ আমি এ প্রশ্নের উত্তর জানি না, জানলেও বলতে পারবো না। রবিউল ফুসে ওঠে, কি কথা কস না ক্যান? সে আমার অসহায়ত্ব বুঝে নেয়।

শাজাহান ভাইকে ডেকে চাবিড়িবিস্কুটের বিল দিয়ে এমন ভাবে উঠে দাঁড়ায় যেন বিদায় নিচ্ছে। আমার অসহায় বোধ হতে থাকে। অনেকগুলো বিষয় মগজের মধ্যে সিগারেটের ধোঁয়ার মতো ঘুরপাক খেতে থাকে, আটকে আটকে যেতে থাকে। আমি প্রকৃত অর্থে অসহায় বোধ করতে থাকি। মনে হয়, আজ যদি আমাকে এ অবস্থায় রেখে রবিউল চলে যায়, আমি শিওর পাগল হয়ে যাব।

রবিউল যায় না। আমি বসে থাকি, সে দাঁড়িয়ে একটা দুটো ফোন কল করে। একজনকে কি যেন বলে যার মাত্র দুটো শব্দ আমার কানে আসে। আমি শুধু শুনতে পাই ‘এক্সট্রা’ আর ‘ডটেড’ শব্দদুটো। শব্দদুটো আলাদা আলাদা আমি কিছু ধরতে পারি না, একত্রে করেও কিছু ধরতে পারি না।

রবিউল কেন এ দুর্বোধ্য শব্দবন্ধ ব্যবহার করছে তাও ধরতে না পেরে আমার ব্রেন হ্যাঙ হয়ে যায়। ফোন শেষ করে রবিউল আমাকে নিয়ে হাঁটতে শুরু করে। বেশিদূর যায় না। বলে, চল ঘাসের উপর গিয়ে বসি। আমরা কবি নজরুলের মাজার বরাবর সরওয়ার্দীর ঘাসের উপর বসে পরি।

রবিউল তার গল্পের সিন্দুক ওপেন করে। তার গল্পের ভেতর থেকে তার প্রশ্নের উত্তরগুলো হয়তো আমি খুঁজে পাই। কিন্তু তার গল্প আমাকে নিঃসঙ্গ প্রমাণ করে। আমি আরো অসহায় বোধ করতে থাকি। রবিউল বলে, ছোটবেলায়, যখন স্কুলে পড়ি তখন আমার একটা বন্ধু ছিল।

কিন্তু কখনই তাকে আমি বন্ধু বলতাম না। নাম ধরে ডাকতাম। সে ছিল আমার ঠিক নিচের ক্লাসের ছাত্র। আমার বার্ষিক পরীক্ষার পর সে আমার বইগুলো নিয়ে পড়তে শুরু করতো। ক্লাস শুরু হলে যে বইগুলো সিলেবাসের সঙ্গে মিলে যেত তার মা আমার মাকে ওই বইগুলোর অর্ধেক দাম দিয়ে দিতো।

ওর নাম ছিল মঈনুল। আমি তার সঙ্গে ক্যারাম খেলায় কখনই পারতাম না। মঈনুলের ছিল ভয়ানক বিপদজনক এক শখ। ইংরেজীতে আমরা যখন রচনা লিখতাম মাই হবি, তখন সবাই ইংরেজী বইয়ের লেখকের হবিটাই মুখস্ত লিখতো। বেশির ভাগ ছাত্রের হবি ছিল লেখকের হবি।

লেখকের হবি ছিল গার্ডেনিং। মঈনুল যে হবি রচনা মুখস্ত করেছিল সেটা ছিল কালেক্টিং স্ট্যাম্পস। এ রচনা সে কোন বই থেকে সংগ্রহ করেছিল তা কোনদিনও বলেনি। তবে আমি জানতে পেরেছিলাম কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই তাকে ওটা নোট হিসেবে লিখে দিয়েছিল। আদতে মঈনুলের হবি ছিল ব্রা চুরি করা।

কলোনীর বারান্দা থেকে নিঝুম দুপুরে কিংবা ইলেকট্রিসিটি চলে যাওয়া রাতে সে এ কাজটি করতো। এজন্য কলোনীতে তার যাতায়াত বেশি ছিল, বন্ধু ছিল। তখন বৃষ্টি নামলে আমাদের একমাত্র কাজ ছিল ফুটবল নিয়ে কাদায় নামা। কাদায় ফুটবল খেলে পুকুরে সাঁতরানো। একদিন প্রচ- বৃষ্টির ভেতর আমরা ফুটবল খেলতে নামলাম।

সেদিন ফুটবলে হাওয়া ছিল না। আমরা দু’জনে গেলাম আমাদের পাড়ার সবচেয়ে কাছের সাইকেল মেরামতের দোকানে। সেখানে সাইকেলের প্রতি চাকায় হাওয়া দিতে আট আনা করে লাগতো। ফুটবলেও তাই। তবে নিজেরা হাওয়া দিতে কোন পয়সা লাগতো না।

আমরা হাফ প্যান্ট পরে খেলতে নামলে পকেটে কোন পয়সা রাখতাম না। সেজন্য বল নিজেদেরই হাওয়া দিতে হত। ওই দিন মজিদ ভাই দোকানে না থাকায় আমাদের আর খেলা হয় না। মঈনুল বগলে বলটাকে নিয়ে বলল, চল আজ সি লাইনে যাব। আমরা সি লাইনে গিয়ে দেখি কয়েকটি মেয়ে রাস্তায় বৃষ্টিতে ভিজছে।

তাদের উচু বুকের দিকে তাকিয়ে মঈনুল তার হাফ প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে তার নুনু চেপে ধরে রাখে। মঈনুল আমাকে বলে, চল তোকে আজ একটা জিনিশ দেখাবো। সে আমাকে নিয়ে যায় তার বাসার ছাদের চিলে কোঠায়। সেখানে একটা ছোট্ট ট্রাঙ্কের ভেতর মঈনুলের কত কিছু যে ছিল তার কোন শেষ নাই। ট্রাঙ্কের ভেতর থেকে সে একটা বাজারের ব্যাগ টেনে বের করে মেঝেতে ঢেলে দেয়।

বাজারের ব্যাগ থেকে গোটা বিশেক নানা রঙের ব্রা মেঝেতে পরে থাকতে দেখে আমার সারা শরীর থরথর করে কেঁপে ওঠে। আমি দুর্বল বোধ করতে থাকলে মঈনুল একটা ব্রা নিজে পরে ফেলে। আমি তখন থরথর করে কাঁপছি, বৃষ্টির পানিতে ঠান্ডা লেগে কাঁপছি তা নয়, অন্য কোনোও কারণে। রবিউলের গল্প শুনে আমার হালকা কাপুনি ধরে যায়। আমিও যেন আমার শৈশবে ফিরে যাই।

শৈশবে প্রথম যখন পাশের বাড়ির রোজী আন্টিকে গোসল খানায় হঠাৎ দেখে ফেলি তখন আমারও শরীরের ভেতরে যেমন কাপুনি দিয়ে উঠেছিল, রবিউলের কাপুনির সঙ্গে সেই কাপুনি মিলে যায়। রবিউল বলে, আমি প্রথম সেক্স শিখি আমার নিচের ক্লাসের মঈনুলের কাছ থেকে। আমার আর মঈনুলের ছিল একটা দারুণ সেকচুয়াল সম্পর্ক। আমরা দীর্ঘদিন একে অন্যের সঙ্গে সেক্স করতাম। একসময় দেখা গেল, আমাদের খেলাধূলা প্রায় বন্ধই হয়ে গেল।

খেলাধূলার দলটা থেকে আমরা আলাদা হয়ে গেলাম। মঈনুলের বাসার চিলে কোঠায় আর নানা জায়গায় আমি আর মঈনুল কত ভাবে যে এসবের মধ্যে দিয়ে গেলাম তার কোন শেষ নাই। আমরা যখন একটু উপর ক্লাসে উঠলাম, এই ধর সেভেন বা এইটে; তখন আমাদের রুচি সামান্য পরিবর্তন হলো। আমাদের দলে ভিড়ে গেল আমাদের পাড়ার একটা ক্লাস ফাইভে পড়া মেয়ে আর ড্রপ আউট এক বড় ভাই। আমরা এবার দুজনার কাজ তিনজন শুরু করলাম।

ওই বড় ভাই ছিল এসব ব্যাপারে রীতিমতো ব্লাকবেল্ট। তখন আমরা এসব বিষয়ে গভীরভাবে কিন্তু কিছুই জানতাম না। একদিন ওই বড় ভাই তার বাসায় নিয়ে এলো পাড়ার ওই মেয়েটাকে। আমরা সিনেমা দেখতে শুরু করলাম। বড় ভাই কিছু পকেট ক্যালেন্ডার বের করে আমাদের দেখালো, যেগুলোর একপাশে ক্যালেন্ডার আর অন্যপাশে উলঙ্গ নারী পুরুষের ছবি।

ওই দিন আমাদের কাপুনিতে যুক্ত হলো নতুন মাত্রা। আমরা দেখলাম বড় ভাই ক্লাস ফাইভে পড়া মেয়েটাকে আমাদের সামনে ক্যালেন্ডারের নারীগুলোর মতো উলঙ্গ করে ফেললো। আমি ছুটে পালাতে গিয়েও পারলাম না, আমার পা যেন সিমেন্টে গেথে গেছে। মঈনুল আর বড় ভাই মিলে মেয়েটাকে নিয়ে যা করলো এ বয়সে এসে তাকে সেক্স বলা যাবে না। কিন্তু ওটা ছিল কৈশোরের গ্রুপ সেক্স।

একপর্যায়ে আমরা চারজন গ্রুপ সেক্স করা শুরু করলাম। মেয়েটা তার বাবা মায়ের যৌনক্রিড়ার গল্প আমাদের কাছে এসে বলত। রবিউল থামলে আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে থাকি আর ভাবি, এ গল্পের সঙ্গে ঘনিষ্ট বন্ধুর কী সম্পর্ক! রবিউল আসলে থামে না, দম নেয়। রবিউল বলে, আমরা বড় হয়েছি। এখনও আমার গ্রুপ সেক্স করতে ইচ্ছে করে, কিন্তু আমি আমার আশেপাশের কাউকে বলতে পারি না, দোস্ত চল লাগাই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.