আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খলিল ও তার গার্লফ্রেন্ড উইশ (খলিল সিরিজ- ১)

কিছু মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে। কিছু মানুষ স্বপ্নটা সত্যি করার জন্য ঘুম থেকে জেগে উঠে। জীবন আপনার কাছে সেভাবেই ধরা দিবে আপনি যেরকম থাকবেন।

All characters including Khalil appearing in this work are fictitious. Any resemblance to real persons or Khalil, living or dead, is purely coincidental. আদিকথাঃ খলিল সিরিজ আমি ফেসবুক এ নোট আকারে লিখতাম। আমার ফেসবুক একাউন্ট (Rash Zics) বাতিল হয়ে যাওয়ায় লেখাগুলাও হারিয়ে গেছে।

খলিল সিরিজ সেখানে খুবি জনপ্রিয় ছিল। সবার দাবিতে এটা এখানে আবার শুরু করলাম। ফেসবুক এ ইংরেজি হরফে লিখতাম এখানে বাংলা করে দিচ্ছি দেখে সবগুলা দিতে একটু সময় লাগবে। খলিল-৪ এবং খলিল-৫ আমার কাছে নেই সেগুলার থিম মনে আছে আবার নতুন করে লিখে দিব। যারা নতুন পাঠক তাদের বলছি খলিল-১ পরে ভাল না লাগলেও পরের গুলা পড়বেন।

কারন এখানে প্রতিটা সিরিজ এ নতুন গল্প এবং নতুন চরিত্র। এটা অনেকটা লাভ ফিকশন তাই খলিল বাদে সব চরিত্র কাল্পনিক। ভবিষ্যতের পর্বগুলাতে Shakespear, Aladin, Shahrukh Khan, Spiderman, Himu, Einstein এর মত চরিত্রের আবির্ভাব ঘটবে খলিলকে সাহায্য করার জন্য। আর হা নতুন নতুন পর্বের মেয়েচরিত্র গুলাও পরিবর্তন হয়ে যাবে। ছোটবেলা থেকেই তার একটা ব্যাপার নিয়ে খুব মন খারাপ থাকত।

সেটার পেছনের কারনটাও একেবারে ফেলে দেওয়ার মত নয়। তার বাবা-মা আদর করে নাম রেখেছিল ফয়সাল। বাবা মায়ের আদরের আরেকটা নাম যা একটু সমস্যা ছিল তার কাছে। খলিলুর রহমান থেকে খলিল। সবাই সেটাকে বিকৃত করে ডাকত খইল্লা, খইলসা কিন্তু সে সব সময় চাইত তার নাম হবে ফয়সাল।

যাক এই সমস্যার সামান্য কুল কিনারা করতে পারলেও আরেকটা সমস্যার কোনোই কুল কিনারা করা যাচ্ছিল না। কারন খলিল এর যায়গায় ফয়সাল হলেই তো আর রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস চেঞ্জ হয়ে যায় না। তার কিছু কারন ও ছিল বৈ কী। কোনো মেয়ের নাম জানার আগেই কন ছেলে যদি আই লাভ ইউ বলে ফেলে সেখানে প্রেম হয়াটা স্বাভাবিক ভাবেই একটু কঠিন। তার উপর আবার ছিল তার অদম্য লালিত স্বপ্ন, মেয়ে যেমন ই হোক, মেয়ে হতে হবে এক্স-ভিএনসি, অর্থাৎ ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল অথবা কলেজ।

এর একটা কারন সম্ভবত এই যে তার মা ও ছিলেন ভিএনসি এর টিচার। তাই জাতি ধর্ম বর্ণ তেমন ব্যাপার না হলেই ভিএনসি একটা ব্যাপার বটে। ভিএনসি থেকে পাস করা মেয়ে দেখলেই তার মন বড়ই খুশি হত। যতদিন রবে পদ্মা-মেঘনা বহমান, ততদিন তাদের ভালোবেসে যাবে খলিলুর রহমান। ছেলে হিসেবে সে কতটুকু সফল সেটা মাপার মাপকাঠি এখনো আসেনি।

প্রতিভার ঝলক যে তার মধ্যে ছিলনা সে কথা বলা যাবেনা, কিন্তু সমস্যা অন্য যায়গায়। অঙ্ক না পারা কন ছাত্র ভাল অঙ্ক পারা কোনো ছাত্রকে অঙ্ক মিলাতে দেখলে যেরকম অবাক হয় ফয়সাল এর অবস্থাটা ছিল সেরকম। মেয়েরা কেন ছেলেদের সাথে প্রেম করে! তার থেকে খারাপ খারাপ ছেলেদের সাথে করে কিন্তু তার সাথে কেন করেনা? এইসব ভেবে নষ্ট করার মত সময় ছিল তার অফুরুন্ত। সেরকম পরিসংখান ও আমরা তার কাছ থেকে পাই। মেয়েরা কেন বুয়েট এর ছেলেদের পছন্দ করে, কেন টাকাওয়ালা ছেলেদের পছন্দ করে এমন আক্তা হিসাবের গ্রাফিকাল প্রেজেন্টেশন আমরা সব সময় তার কাছ থেকে পাই।

হৃদয় এর গভির লালিত স্বপ্ন তার এক্টাওই। তার একটা জিএফ হবে আর সেটা হবে ভিএনসি এর। জিএফ পাওয়ার চেস্টা চরিত্র সে অনেক করেছে। বাংলার স্টুডেন্ট হওয়া সত্তেও তার ইংরেজিটা বেশ ভাল। ডেইলি স্টার এ তার লেখা তেখা পাওয়া যায়।

সেটার পিছনেও কিন্তু কারন আছে। একজন ছেলের সাফল্যের পেছনে যেভাবেই হোক একটা মেয়ে থাকবেই। বাংলায় পরে দেখে কোনো একবার এক মেয়ে (এক্স-ভিএনসি) তাকে বেশ অপমান করেছিল। সরাসরি মুখের উপর বলে দিয়েছিল বাংলায় পরেন আবার আমাকে পছন্দ করতে আসছেন!! এরপরেই ডেইলি স্টার এ তার সেই লেখা প্রকাশ পায় Why Bangla is neglected in Private Universities ............. মিথিলা নামটা লোভনীয় হলেও এটার একটা সমস্যা ছিল। The name doesnt represnt VNC. তাই মিথিলার সাথে খলিলের সম্পর্ক্তা কেমন কখনো বুঝা যায়নাই।

আসলে একটা মেয়ের সাথে খলিল্কে নিয়ে চিন্তা করাটা আমাদের জন্য খুব সহজ ছিলনা। আমরাও অন্য মেয়েদের নামের মত এই নামটা খুব বেশি শুনিনি। আর খলিল ত খলিল ই। দুনিয়ার সব মেয়েদের খবর, কার কবে প্রেম হইসে , কার বিএফ কি করে, কার প্রেম ভাংসে বা কারটা ভাংতে পারে এসব খবর দেওয়ার জন্যই খলিল। মাঝখানে রিমি নামক আক্তা মেয়ের সাথে খলিলের সম্ভাবনার কথা বেশ শোনা গিয়েছিল।

সত্যি কথা বলতে কি, এইখানেই যা একটু ১০% সম্ভাবনার কথা আমরা ভেবেছিলাম............কিন্তু অইজে বললাম খলিল ত খলিল ই, পুরা কাহিনি আমরাও জানিনা তবে খলিলের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে বুঝা গেল ঘটনা গুরুতর, “আজকাল ১ টাকাতেও মেয়ে পটে যায়............” এই জাতিয় কিছু। এরপর আবার “আমি কখন বিয়া করবনা”। সিনেমাতে অনেক দেখতাম তারা ছুটে গেলে সেই সময় যে কোনো ইচ্ছা করলে ইচ্ছেপুরন হয়। ব্যাপারটা সিনেমাতে সম্ভব, বাস্তবেনা। তবে খলিলের ক্ষেত্রে বাস্তবেও সম্ভব।

কারন ঐযে, খলিল তো খলিল ই, একবার একটা ধুমকেতু তাও আবার সেটা হ্যালির (?) না জ্যাক কালিসের ধুমকেতু (!) সেটাও জানিনা, এরকম একটা ধুমকেতু দেখে খলিল উইশ করল, ৭ দিনের জন্য হলেও জানি একটা প্রেম তার হয়। খলিল এর উইশ টা মনে হয় খুব সৎ উইশ ছিল। তাই উপরওয়ালা যিনি ছিলেন তিনি চিন্তা করলেন উইশটা পুরন করা যাক। তবে তিনি খলিলকে তার প্রয়োজন থেকে অনেক বেশি দিয়ে দিলেন। এত বড় উইশ যে আমরাও হিংসা করা শুরু করলাম।

কারন পরেরদিন ঘুম থেকে উঠার পর আলোর সরলরৈখিক গতি সিস্টেমে তার প্রেম হওয়া শুরু করল। ব্যাপারটা মনে হয় পদার্থবিজ্ঞান দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে হবে, আলোর কনা তত্ত্ব অনুযায়ী কোনো বস্তু থেকে আল এসে যখন আমাদের চোখে এসে আঘাত করে তখন আমরা বস্তটিকে দেখতে পাই। খলিলের ক্ষেত্রে এটা হয়ে গেল প্রেম তত্ত্ব। খলিলের চোখের দিকে তাকানো মাত্র মেয়েদের প্রেম হয়ে যাইতেসে। যদিও প্রেম তত্ত্বের শুরুটা মোটেও সুখকর হলনা।

কারন খলিল ঘুম থেকে যখন সকাল ১১ টায় উঠল তখন অইখানে ঘর ঝারু দিচ্ছিল কাজের মেয়ে জরিনা। জরিনা ভাইয়া উঠেন বলা মাত্র খলিলের চোখ খুলল আর প্রেম তত্ত্ব তখন থেকে শুরু হয়ে গেল। পুরা কাহিনি আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব হয় নাই তবে খলিল আমাকে বাঁচাও আমাকে বাঁচাও বলে বাথরুম এ পালায় গেল। সমস্যা আরো শুরু হল। রাস্তা ঘাট এ যাওয়া মাত্র আর কিছু অসুবিধা হল।

যেহেতু উইশটাতে কোনো নির্দিষ্ট বয়সসীমা উল্লেখ করে দেওয়া হইনাই তাই যে কোনো বয়সী মেয়েরাই, মহিলারাই খলিলের প্রেম এ পড়ল। বয়স্ক আন্টিরা যখন তার প্রেম এ পরবে, স্বাভাবিক ভাবেই আঙ্কেলরা খেপে যাবে। আংকেলরা খেপে যখন তাকে পুলিশ এর কাছে দিয়ে আসলো সেখানেও তো আবার মহিলা পুলিস ছিল। মহিলা পুলিস ও যেরকমি হোক মহিলাই। তাই তারা খলিলের চোখের দিক তাকানোতে এই যাত্রায় পার পাওয়া গেল।

আস্তে আস্তে ঘটনাটা বুঝার পর খলিল একটা বুদ্ধিমানের মত কাজ করল। একটা সানগ্লাস কিনে চোখ উঠেছে বলে চলা শুরু করল। এবার সে তার বিশেষ ক্ষমতা ব্যাবহার করা শুরু করল। যেসব ছেলেরা তাকে গাধা গর্দভ মনে করত তাদের জিএফ দের বেশ সহজে কাবু করা শুরু করল। মেয়েজগতে কদিন ধরে খালি একটাই নাম।

খলিল, খলিল এবং খলিল। খলিল যেই মেয়ের দিকে তাকায় সেই মেয়ের সাথেই খলিলের প্রেম হয়ে যায়। সে বড়ই মধুর সময়। পুরা ব্যাপারটাতে মিথিলা বেশ অবাক হল। সে একবার খলিলের কাছে জানতে চাইল কি হয়েছে তার।

খলিল এর কোনো ভাবান্তর অবশ্য তাতে হলোনা মিথিলার ও না। ৭ দিন পর খলিল আবার আগের খলিল এ রুপান্তর হল। আখন আবার দিন যায় খলিলের প্রেম যায় বেড়ে। উইশ এর আছর এখন আর নাই। কাজেই কোনো মেয়ের ঠ্যাকাও পরেনাই আর খলিলের প্রেমে পরার।

১ বছর পরের ঘটনা। মিথিলার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। ৩ দিন পরেই বিয়ে। আমরা বন্ধুরা খলিল সহ ধানমন্ডি লেক এ বসে আছি। যেভাবেই হোক অই উইশ তা খলিল পাইসিল আমরা কেন পাইনাই সেটা নিয়ে বেশ দুঃখ করছিলাম।

খলিলের সানগ্লাসটা এখনো আছে। খলিল কোন কোন মেয়ের সামনে সানগ্লাস খুলেছিল সেটা বলতে লাগল। হঠাত একটা ব্যাপার আমরা বুঝলাম না। মিথিলার সাথে যখন দেখা হয় তখন সানগ্লাস ছিল না। সব মেয়েরা খলিলের প্রেম এ পরল মিথিলা পরল না কেন?!? তাহলে কি মিথিলা আগেই প্রেম এ পরেছিল দেখে অই ৭ দিন তার আচরন এ কোনো পরিবর্তন আসেনি!!! যাক গল্পটা এখানেই শেষ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.