আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অমুসলিমদের ইসলাম গ্রহন ও তাদের ঈমানী দৃঢ়তা ।। নামধারী মুসলিমরা ভেবে দেখবে কি?



একটা সময় ছিল যখন অমুসলিমরা মুসলমানের বাস্তব জীবন থেকে ইসলাম সম্পর্কে ধারণা লাভের চেষ্টা করত। মুসলমানদের আচার-আচরণ, লেনদেন, চরিত্র ও নৈতিকতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করত। কিন্তু এখন অবস্থা বদলে গেছে। মিডিয়া ও প্রচারের নতুন নতুন মাধ্যম উদ্ভাবিত হওয়ার পর বিশেষত বিশ্ব যখন ইন্টারনেটের যুগে প্রবেশ করেছে তখন ইসলাম সম্পর্কে জানা আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। এখন ইসলামের সঠিক রূপটি অমুসলিমদের অন্দরমহল পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে।

সারা পৃথিবীতে দলে দলে মানুষ আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করছে। আর তা বিশেষভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে ইসলাম বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র ও প্রপাগাণ্ডার মূল কেন্দ্র-পাশ্চাত্যের অমুসলিম সমাজে। একই কথা ভারতের ক্ষেত্রেও বলা যায়। এই ভূখণ্ড এক সময় ছিল ইশকে ইলাহী ও আধ্যাত্মিক সাধনার উর্বর ভূমি এবং তা এমন সব কীর্তিমান ব্যক্তিত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ধারক, যারা ইসলামের জন্য সব ধরনের ত্যাগ ও কুরবানী স্বীকার করেছেন। সামান্য অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে যে, ভারতীয় নও-মুসলিমদের সংখ্যাও কম নয়।

বর্তমান এই বৈশ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে চিন্তা করলে তিনটি আশ্চর্য বিষয় আমাদের সামনে উঠে আসে : * এক. নও-মুসলিমদের ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে বর্তমান সময়ের মুসলমানদের প্রচেষ্টা বা দাওয়াতের প্রভাব খুবই কম। অমুসলিমরা সাধারণত প্রভাবিত হচ্ছেন ইসলামের মানবতা-উদারতা দ্বারা। ইসলামী আদর্শের স্বভাব-সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তারা ইসলাম গ্রহণ করছেন। অতঃপর ইসলাম বিরোধী প্রপাগাণ্ডাও তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করে তুলেছে। এমনও অনেক দৃষ্টান্ত আছে যে, নিজ ধর্মের কোনো রীতি বা নিয়ম-কানুন তাকে বীতশ্রদ্ধ করে তুলেছে এবং এর উত্তম বিকল্প তিনি খুঁজে পেয়েছেন ইসলামে।

* দুই. এই নও-মুসলিমদের ঈমানী দৃঢ়তা, আল্লাহর প্রতি অটল আস্থা এবং দ্বীনের জন্য সব ধরনের ত্যাগ স্বীকারের প্রেরণা ইসলামের প্রথম যুগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। যখন সাহাবায়ে কেরাম তাদের জান ও মাল ইসলামের জন্য কুরবান করেছেন এবং পৃথিবীর সকল প্রান্তে ইসলামের ঝাণ্ডাকে বুলন্দ করার জন্য অশ্রু ও রক্তের শেষ বিন্দুটি পর্যন্ত বিলিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের সকল জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এবং সমকালীন সকল উপায়-উপকরণ তারা ব্যবহার করেছেন বিভ্রান্ত মানবতাকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করার জন্য। বর্তমান যুগের নও-মুসলিমদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করলে ইতিহাসের ওই বিস্মৃত অধ্যায় নতুন করে মনে পড়ে। * তিন. আরো একটি বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা প্রয়োজন।

তা এই যে, একদিকে যেমন প্রচুর সংখ্যক অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করছেন অন্যদিকে অনেক মুসলিমকে ইসলামের বিধি-বিধান পালনে উদাসীন দেখা যায়। তাই মুসলিম-সমাজে জন্মগ্রহণ করেও যারা ইসলামের মূল্য অনুধাবনে সক্ষম হয়নি, তাদের উচিত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নও-মুসলিমদের ঈমান উদ্দীপক ঘটনাবলি ও ইসলামের প্রতি আনুগত্যপূর্ণ জীবন যাপন সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করা। এটা ইসলাম সম্পর্কে তাদের চরম অবহেলা ও গভীর ঔদাসীন থেকে মুক্ত হতে সহায়তা করতে পারে। তাঁদের ওই সব ঘটনাবলি একদিকে যেমন মুসলিম উম্মাহকে গভীর হতাশার মাঝেও আশার বাণী শোনায় অন্যদিকে তা এক কঠিন বার্তাও বহন করে, যে সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে বারবার সাবধান করেছেন। ইরশাদ করেছেন-‘তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক সমপ্রদায়কে নিয়ে আসবেন।

অতঃপর তারা তোমাদের মতো হবে না। ’-সূরা মুহাম্মাদ ৩৮ অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, (তরজমা) হে ঈমান আনয়নকারী সমপ্রদায়, তোমাদের মধ্যে যে কেউ যদি তার দ্বীন থেকে ফিরে যায় তাহলে অবশ্যই আল্লাহ এমন এক সমপ্রদায়কে নিয়ে আসবেন, যাদের তিনি নিজ ভালবাসবেন এবং তারাও তাকে ভালবাসবে, যারা হবে মুমিনদের প্রতি বিনয়ী এবং কাফিরদের প্রতি কঠোর, তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোনো ভর্ৎসনাকারীর ভর্ৎসনাকে ভয় করবে না। ’-সূরা মাইদা : ৫৪। সৌজন্যেঃ আল-কাউসার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.