আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

২০শে ফেব্রুয়ারী, ২০১০

"Man is disturbed not by things, but by the views he takes of them.”—Epictetus.

বাংলাদেশে ২১শে ফেব্রুয়ারী শুরু হয়ে গিয়েছে। আমাদের এখানে আগামীকাল। অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে আগামীকাল একুশ উপলক্ষে কিছু আয়োজন করা হয়েছে। আমি জানলাম টিটোর কাছ থেকে। সে আমাদের এক ছোট ভাই মত।

সে গান বাজনার সাথে জড়িত তাই সব ধরনের অনুষ্ঠানের খবর রাখে। আমি কখনও একুশে ফেব্রুয়ারীতে কোন স্পেশাল কিছু করিনি। কিন্তু আমি গভীর মমতায় স্মরন করি যে অনেক ভাষাপ্রেমী নিঃস্বার্থ মানুষের অবদানে আজ আমরা এত মিষ্টি এবং সমৃদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারি। আমি দ্বিমত পোষন করি তাদের সাথে যারা ভাবেন এই একটি দিন আমাদের শুদ্ধ বাংলায় কথা বলা উচিত। সেটা আমার কাছে ফেক মনে হয়।

এই যেমন ফেক শব্দটি যত সাবলীল ভাবে আমার মাথায় আসে, তেমন করে কিন্তু নকল শব্দটি আসে না, কিংবা এক্ষেত্রে নকল শব্দটি ব্যাবহার করলে আমার কাছে সেটা বেসুরো মনে হয়। তাই আমার কথা হল, নিজের ভাষাকে ভালবাসি বলে রিজিড হতে হবে এমন কোন কথা নেই, সেটা একটি দিনের জন্যেও নয়। আমরা অনেকেই যেমন রোজার মাসে রোজা করে মনে করি অনেক পুন্য করে ফেললাম আর কেউ যদি রোজা না রাখে তার দিকে তীব্র দৃষ্টি দিই যেন তার চেয়ে পাপী কেউ নেই। এটা কি? আমাদের রিজিডিটি। স্যরি, রিজিডিটির বাংলাটি এই মুহুর্তে মাথায় আসছেনা এবং দিনলিপি লেখার সময় আমি যদি থেমে থেমে মাথার মাঝে তর্জমা করি সেটা আমার কাছে কৃত্রিম মনে হয়।

এই যে পেয়েছি, ফেক শব্দটির যথাযোগ্য বাংলা এখানে কৃত্রিম হলে মানায়। তো যাহোক, ওই যে বললাম, রোজার মাসে রোজা রাখলেই যেমন পুন্যবান হওয়া যায় না তেমনি একদিন কঠোরভাবে বাংলা বললে সেটা দ্বারা প্রমান হয় না আমি কতটা বাংগালী। আমাদের দরকার সব কিছুকে সহজভাবে নেয়া। সেটা প্রমান করে আমরা মানসিকভাবে কতটা ফাংশনাল। এই যাহ, লেকচার দিচ্ছি।

স্বভাব কি সহজে যায়? আসল কথা হল, আমি বাংলা ভাষা ভালবাসি। আমি যে এই একটি ভাষায় দক্ষ (যেমন লিখতে পড়তে বুঝতে এবং বলতে পারি) তাতে আমি অতি গর্ব বোধ করি। এনভায়রনমেন্টাল কারনে আমার বাংলায় চিন্তা বা লেখা কিছুটা মিক্স হয়ে পড়ে ইংরেজীর সাথে। কিন্তু তুমি যদি ভাব যে এটার মানে ভাষাটি অশুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে তাহলে আমি বলব তোমার চিন্তাটি সঠিক নয়। বরং এভাবে ভাব যে আমি একটি ইলিশ মাছ দিয়ে শুধু সরষে ইলিশ-ই রান্না করতে পারি না, স্মোক ইলিশ, ইলিশ পোলাও এবং আরও রকমারী খাদ্য তৈরী করতে পারি।

মানে হল, মেইন ইনগ্রেডিয়েন্টসটা একই রইল, কিন্ত আমি নানা কিছুর মিশ্রনে সেটাকে অনেক উপাদেয় করতে পারি। এই যে এনালজি দিচ্ছি, এটা বুঝতে পারবে যদি তোমার এবস্ট্র্যাক্ট চিন্তার ক্ষমতা থাকে। আর যদি তুমি কনক্রীট চিন্তা ছাড়া চিন্তা না করতে পার, তাহলে এর মর্মার্থ উদ্ধার করতে পারবে না। সবাই বুঝবে আমি এই আশা করি না, সবাই আমার মতে মত দেবে তাও আমি আশা করি না। সবাই কি সরষে ইলিশ পছন্দ করে? আমি স্রেফ আমার মত জানালাম।

যাহোক আমার মেয়ে চমৎকার বাংলা বলে এবং বোঝে। এখানকার বাংগালীদের অনেকেই বাচ্চাকে বাংলা শেখায় না। কেন? এর পেছনে অতি চমৎকার মানসিক কারন আছে। সেটা হয়ত অন্য কখনও বলব কিংবা বলব না। আমার নিজের যে ব্লগটি আছে সেখানে এ নিয়ে এত কচকচানী করেছি যে আর লেখার ইচ্ছে নেই।

মোটকথা অতি সেলফিশ না হলে এবং নিজের সেলফ এস্টিমের অতি অভাব না হলে কেউ যদি নিজের ভাষা জানে, সে কখনও তার স্বন্তানকে সেই ভাষা শেখা থেকে বঞ্চিত করবে না। আমি একটু রেগে যাচ্ছি মনে মনে এটা লিখতে যেয়ে। কারন অনেক বলেও এই বাংগালীগুলোর এই স্বভাব আমি দূর করতে পারিনি। আমারই ভুল। আমি গাছের গোড়ায় সার ঢালতে বলছি, পানি দিতে বলছি যেন গাছটি সুন্দরভাবে বড় হয়, কিন্তু যে সার দেবে, পানি ঢালবে তার সারও নেই, পানিও নেই এবং কারও কাছ থেকে এই সার বা পানি চাইতে তার আতেঁ ঘা লাগে।

অতএব তার অক্ষমতার কারনে তার গাছটি সেইভাবে বড় হবে না যেভাবে হতে পারত। কি আর করা। মানুষের সমস্ত ক্ষমতার কি আর প্রকাশ ঘটে এক জীবনে? যাহোক, আজ প্রথম লিখছি এখানে অতএব বেশি মতামত না দেয়াই ভাল। তাছাড়া সময়ও নেই এই মুহুর্তে। পরে আবারও লিখব।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.