আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইন্স অফ স্লিপ

এইখানে শায়িত আছেন বাংলা ব্লগ ইতিহাসের কলঙ্ক...

জাপান গার্ডেন সিটির একটি ভবনে আগুন লেগেছে। আমি উল্টো দিকের একটি এ্যাপার্টমেন্টের জানালা দিয়ে চেয়ে চেয়ে দেখছি। হঠাৎই আমার গার্লফ্রেন্ড ঐশ্বরিয়া রাইয়ের ফোন এলো। সে আটকা পড়েছে ঐ ভবনে। আমি কোনমতে দৌড়ে পৌঁছাতে দেখি দড়িতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে ঐশ্বরিয়া।

আমি কাঁদছি অঝোর ধারায়.......... কোন অর্থ খুঁজে পেলেন কি? না পাওয়ারই কথা। কারন এটি কোন বাস্তব ঘটনা নয় (তা আর বলতে) বরং গত রাতে ঘুমের মাঝে দেখা আমার স্বপ্ন। আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, দুনিয়ায় এতো কিছু থাকতে কেন আমি এই স্বপ্নটা দেখলাম। আপনি যদি একজন নিয়মিত স্বপ্নবাজ হয়ে থাকেন (তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের নাগরিকেরা যেই অর্থে ‌‌‍'স্বপ্নবাজ' হয়ে থাকেন সেই অর্থে নয়) এবং স্বপ্নজগতে আপনার আনাগোনাটা যদি সন্তোষজনক হয় তবে আপনার জানার কথা আমি যা দেখেছি তা মোটেও খুব একটা বিচিত্র নয়। এর চাইতেও বিচিত্র স্বপ্ন দেখি আমরা হরহামেশাই।

বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন আপনার দৈনন্দিন কর্মকান্ড আর চিন্তাভাবনার বিষয়গুলোর সরাসরি প্রভাব পড়ে আপনার স্বপ্নে। বিজ্ঞানীদের এসব বিষয়ে বিশ্বাস করা আজকাল খুব কঠিন কাজ, মাঝে মাঝে কল্পলৌকিক বিষয়গুলো সম্বন্ধে তাদের এমন সব থিয়োরী দিয়ে বসেন যা শুনলে ক্লাস ওয়ানের বাচ্চার কথার মতো লাগে। তবে স্বপ্ন বিষয়ে এই থিয়োরীটা কিন্তু অনেকটাই ঠিক। অন্ততঃ আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা তাই বলে। আমার কাল রাতের স্বপ্নটার কথাই ধরুন না....... প্রথমতঃ আমার স্বপ্নে ঐশ্বরিয়া রাইয়ের অনুপ্রবেশের ব্যাখ্যা হতে পারে গতকাল এক ঘরোয়া আড্ডায় উঠে আসা একটি রসিক মন্তব্য - "অভিষেকের চাইতে অমিতাভেরই যেন ঐশ্বরিয়াতে আগ্রহ বেশি"! (আপনার মনে হতে পারে আমাদের বাসায় হিন্দি ম্যুভি নিয়ে খুব আলোচনা চলে, কিন্তু আসলে তা নয়)।

ঐ একই আড্ডায় আরেকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিলো - সম্প্রতি জাপান গার্ডেন সিটিতে লাগা আগুন। এটাও আরেকটি Direct Reference বলা যায়। বাকি রইলো শুধু ফাঁসি আর আত্মহত্যা। এটার ব্যাখ্যা সেদিন সকালেই এক বন্ধুর সাথে থ্রি ইডিয়টসের জয়ের আত্মহত্যার দৃশ্যটি নিয়ে কথাবার্তা। না - আমি বলছি না স্বপ্নটার জন্ম এভাবেই, সেটা প্রমাণ আমি করতে পারবো না।

তবে তিনটি বিষয় একইসাথে মিলে যাওয়াটা Highly Unlikely. এটা অবশ্য এই প্রথম নয়। Back in those days - যখন আমার মন-প্রাণ-দেহ উপচে পড়ছে নব্য যৌবনের বাসনাগুলো তখন স্বপ্নকে আমি বলতে গেলে একরকম ব্যবহারই করেছি নিজের মনের সুপ্ত ইচ্ছেগুলো পূরণ করার যন্ত্র হিসেবে (যেগুলো বাস্তবে পূরণ করতে গেলে গালে লেডিস স্যান্ডেলের বাড়ি ছাড়া আর কিছুই জুটাতো না)। আমার একটা অদ্ভূত ক্ষমতা ছিলো প্রায় যা দেখতে চাইতাম স্বপ্নে ঠিক তাই দেখতে পাওয়ার। এ যেন কোন "বাসনা হোটেল এ্যান্ড রেস্টুরেন্টের" মেন্যু - একেকদিন একেক রকম, একেক জনের সাথে, একেক রকমভাবে। তবে সেই 'একেক' জনেরা যে কেউ নয় - ছিলো বাস্তবে ভালো লাগা কোন সুদর্শনা।

এখন আমার এ ক্ষমতাটা প্রায় নেই বললেই চলে। আজকাল স্বপ্নগুলো বেজায় খামখেয়ালী, শুধু নিজের কথা শুনে - আমার ইচ্ছের যেন কোন দামই নেই। মানুষের মনের ভয়গুলো স্বপ্নে এসে মানুষকে জ্বালাতে বড্ড ভালোবাসে। এদের আবার একটা ভয়ানক নামও আছে - 'দুঃস্বপ্ন'। আমার মাকে প্রায়ই বলতে শুনি একটা দুঃস্বপ্ন প্রায়ই দেখেন।

পরীক্ষার হলে লিখছেন তিনি আর তাড়াহুড়োয় কালির কৌটো উল্টে ফেলে দিয়েছেন খাতার ওপর (তখন ছিলো ফাউন্টেন পেনের যুগ)। এই কালির কৌটো উল্টে পরীক্ষার খাতায় ফেলার বিষয়টি তিনি তার স্কুল জীবনে আরেকজনের সাথে ঘটতে দেখেছিলেন। সেটি দেখার পর থেকেই মনে এই ভয়টার নাকি সূত্রপাত, আর তার থেকেই দুঃস্বপ্নে রূপান্তর মাত্র। আমার দুঃস্বপ্নগুলো বেশ বিরক্তিকর। আসলে কিছু কিছু স্বপ্ন এমন প্রকৃতির যে এগুলোকে ঠিক দুঃস্বপ্ন বললে ভুল হবে।

এমনই একটি স্বপ্ন আমি প্রায়ই দেখি যেখানে আমি একটি সাদাকালো ডোরাকাটা ঘূর্ণায়মান চাকতির দিকে তাকিয়ে থাকি অথবা আমার চারপাশের সবকিছু আমার চাইতে বড় আকার ধারণ করতে দেখি - একবার দু'বার নয়......বারবার......। স্বপ্নটা শুনতে আপনার কেন লাগছে জানি না - কিন্তু দেখার পর আমার কোন কোন সময় বমি পর্যন্ত হয়েছে। আরো কিছু দুঃস্বপ্ন আছে যেগুলোতে আমি স্কুলের দিনগুলোতে ফিরে যাই......... আজ সকালের স্বপ্নের শেষটাও বেশ মজার ছিলো। হঠাৎ "অনিন্দ্য" - ডাকটা শুনে ঘুম আর স্বপ্ন দু'টোরই ইতি ঘটেছে। ডাকটা দিয়েছিলেন আমার ভাবী।

ঘুম ভাঙা মাত্রই আমি উঠে চোখ খুলে দেখি সামনে কেউ নেই। কি ব্যাপার? এইমাত্র ডাকলো এতো কাছ থেকে তাহলে গেলো কোথায়। খাবার টেবিলে গিয়ে জানতে পারি ভাবী আমাকে একবারই ডেকেছেন তাও আমি ওঠার প্রায় ৩-৪ মিনিট আগে। মানে ডাকটা আমি খেয়াল করেছি ডাকার ৩-৪ মিনিট পরে। বাপরে আমার মাথার ক্যাশ মেমরী দেখি ভালোই! একটু পর হয়তো ঘুমাতে যাবো......বা নাও যেতে পারি।

ভোরে উঠে বাংলাদেশের খেলাটা দেখতে হবে। আজ মনে স্বপ্ন বাংলাদেশ টেস্টটা ড্র করবে নিউজিল্যান্ডের সাথে। আফসোস স্বপ্নগুলোর সাথে বাস্তবের যতোটা মিল পাওয়া যায় বাস্তবের সাথে স্বপ্নগুলোর ততোটা নয়!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.