আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

.........অথবা অশ্লীল সমীকরন (গল্প, প্রথম অংশ)



এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো মেয়েটাকে সরিয়ে দিল ছেলেদের দলটা। তিনবারের প্রথমবার মেয়েটার কিছু দোষ দেয়া গেলেও বাকী দুইবার তার কোন দোষ ছিল না। যদিও মেয়েটার যে বেশ তাতে মেয়েটা কোন কথা বলার সুযোগও পায়নি। অথবা মেয়েটা বিড়বিড় করে একমনে কি বলেছে সেটা ছেলেদের দল শুনতে চায়নি। ছেলেদের দলটা যখন মাত্রই জড়ো হতে ছিল জায়গাটা ঘিরে তখন প্রথমবারের মতো মেয়েটাকে সরিয়ে দিয়েছিল তারা।

মেয়েটা বসে ছিল খুব দৃষ্টিকটু ভঙ্গীতে। মূল জড়ো হবার জায়গাটার ডানপাশে যে উচু ঢিবির মতো একটা সিমেন্টের বসার জায়গা আছে, যেখানে অন্যসময়ে প্রেমিক যুগল তাদের প্রেমের ভাব আদান-প্রদান করে সেখানে। দু একটা জুটি যে আশেপাশে ছিল না তা না, কিন্তু তাদের কিছু বলতে হয়নি, ছেলেদের দেখে তারা এমনিতেই সরে গেছে। মেয়েটা সরেনি। বরঞ্চ ছেলেদের চোখ আটকে যাওয়ার মতো অনেক দর্শনীয় বস্তু নিয়ে বসে ছিল পাশ ফিরে।

ওড়না ছিল না মেয়েটার গায়ে। তাই ছেলেদের দলের কারো কারো চোখ আটকে গিয়েছিল মেয়েটার ফোলা বুকে। একটু যেন বেশিই ফোলা ছিল তা। তাদের মধ্যে যারা তাদের একটূ আগে জড়ো হবার কারনের কথা ভুলে গিয়ে মেয়েটার ফোলা বুকের দিকে তাকিয়ে ছিল তারা তাদের একাগ্রতার ফল পেয়েছে হাতে নাতে। মেয়েটা তার ডান হাতের দিকে তাকিয়ে ছিল কিছুক্ষন, বোধহয় নখ দেখছিল।

তারপর বা হাতটা পড়নের জামাটাকে একটু উচিয়ে ধরে নখ দেখা হাতটা ডুকিয়ে দিল জামার মধ্যে। খুব বেশি খোঁস-পাঁচরায় ভরে গিয়েছিল মেয়েটার শরীরটা, তাইতো চুলকাতে হয় যখন তখন, যদিও এসব খোঁস-পাঁচরার ব্যাপার ছেলেদের দলটা পরে জেনেছে। ফোলা বুকটা আরও ফোলা হয় অন্তত জামার উপর থেকে তাই দেখা যায়। বুক আর হাতকে যায়গা দিতে গিয়ে টান পরে জামার নিচের অংশের। বেড়িয়ে যায় ধবধবা চামড়া।

সেটা দেখেই ছেলেদের কারো কারো মনের মধ্যে বলে উঠে, যদিও তা মুখ দিয়ে বের হতে পারে না, বয়সকালে মাল ছিল শালী। দুরের থেকে ধবধবা মনে হলেও পরবর্তিকালে ছেলেদের দলটা জেনেছিল তা ধবধবা ছিল না। লোহার উপরে মরিচা পড়লে যেমন হয় তেমন ছিল। উদহারনটা যুতসই হলো না। তারচেয়ে সরাসরি বলাই ভালো।

ধবধবা চামড়ার উপর ময়লা জমে আস্তর পড়ে গেছে। যাক সে কথা, ছেলেদের দলের উদ্দেশ্যতো আর ধবধবা চামড়ার উপর ময়লার আস্তরের পুরুত্ব পরিমাপ না, তার চেয়ে অনেক বড়। তাই প্রথমবারের মতো মেয়েটাকে সরিয়ে দিতে খুব একটা চিন্তা করতে হয় নি তাদের। মেয়েটাও গাই-গুই করেনি। খালি পাগলের মতো প্রলাপ বকেছে ‘লাগবি, লাগবি, আমারে লাগবি।

’ কেউ কেউ অবশ্য শুনেছে ‘লাগবি, লাগবি, মারে লাগবি। ’ ছেলেদের দলটা একটা অগ্রগামী দল। সামরিক বাহিনীতে এরকম দল থাকে যারা আগেভাগে গিয়ে জায়গাটা রেকি করে। সব কিছু ঠিকঠাক আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখে পরবর্তি দলকে খবর দেয়। এই দলটা অবশ্য সামরিক বাহিনীর কোন দল না।

এটা অন্য একটা দল। নাম, ধাম পরিচয় জানাটা খুব বেশি গুরুত্বপুর্ণ না। সামরিক-বেসামরিকে গন্ধ ছুটিয়ে দেই বরঞ্চ, ছেলেদের দলটাকে বলি ‘ভলান্টিয়ার’। আগে যাদের কাজ ছিল ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো, ইদানিং যারা পরের খেয়ে ঘরের মোষ তাড়ায়। মহামান্য অতিথী আসার আগে সব কিছু ঠিক-ঠাক আছে কিনা তা দেখার জন্য তারা কাজ করে।

আবার অনেকসময় মহামান্য অতিথীকে বিব্রত করে, হুমকি প্রদান করে, লজ্জিত করে এমন কিছু যাতে মহামান্য অতিথীর সামনে না পরে, সেরকম কিছু থাকলেও তাকে সরিয়ে দেবার কাজটা করে তারা। এই যে কিছুক্ষন আগে ছেলেদের দলটা ওরকম অশ্লীল ভঙ্গীতে বসে থাকা, খোঁস-পাঁচরায় ভরা শরীর নিয়ে বসে থাকা মেয়েটাকে সরিয়ে দিল সেটাকে তাই তাদের কাজের অংশ হিসেবেই ধরা যায়। যতই নিজেরা ফুলে ওঠা বুকের দিকে তাকিয়ে থাকুক, খোঁস-পাঁচরা সাড়ানোর জন্য কতটা নিমগাছ লাগবে হিসাব করুক, ময়লার আস্তরের নিচে বয়সকালের যতই মাল দেখুক, মহামান্য অতিথীকে নিয়ে যতই যা কিছু শোনা যাক, তবুও মহামান্য অতিথীর ডানে-বায়ে, সামনে-পিছনে মেয়েটাকে কি করে স্থান দেয়া সম্ভব? দ্বিতীয়বার মেয়েটাকে সরিয়ে দেয়াতে মেয়েটার কোন দোষ নাই। দোষ তার কপালের। আবার ছেলেদের দলেরও দোষ দেয়া যায় না।

প্রথমবার সরিয়ে দেবার পরে যেখানে গিয়ে মেয়েটা বসেছিল সেখান দিয়ে আসছিল ছেলেদের সাথের মেয়েদের দল। এরাও ‘ভলান্টিয়ার। ’ এরা ঘরের খেয়ে বনের মোষও তাড়ায় না আবার পরের খেয়ে ঘরের মোষও তাড়ায় না। এরা পরের খেয়ে পরের মোষ তাড়ায়। নিজেরা যেমন ছিল তেমন থাকে।

ছেলেদের দলের কাছে তারা হচ্ছে ভাগ্যবতীর দল। তারা আসে সেজেগুজে, এসে সেজেগুজে, যায় সেজেগুজে। এদের চামড়া থাকে মসৃন, ময়লার আস্তর দূরে থাক, ধুলাও পড়তে পারে না। তবুও তাদের জন্যই ছেলেদের দলটা মেয়েটাকে সরিয়ে দিয়েছে। যদিও এবার মেয়েটার বসার মধ্যে কোন অশ্লীল ভঙ্গী ছিল না এবং ছেলেদের সাথের মেয়েরা খুব অনায়াসেই ময়লার আস্তর পড়া মেয়েটাকে পাশ কাটাতে পারত।

কিন্তু প্রয়োজনটা যে ছেলেদের দলের, মেয়েদের দলের কাছে একটু ভালো থাকা। আস্তরহীন মসৃন তকতকে চামড়ার লোভ কে সামলাতে পারে, কিভাবে পারে? অশ্লীল মেয়েটা এবারও গাই-গুই করে না। খালি পাগলের মতো প্রলাপ বকে ‘লাগবি, লাগবি, আমারে লাগবি। ’ এবারও কেউ কেউ অবশ্য শুনেছে ‘লাগবি, লাগবি, মারে লাগবি। ’ তৃতীয়বার অবশ্য সসম্মানেই ছেলেদের দল মেয়েটাকে সরিয়ে দিয়েছিল।

......... (চলবে)


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.