আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"রূপালী রাত" মেলায় এসেছে- ইয়াও!

http://profiles.google.com/mshahriar
গত দুই দিন বই মেলায় খুব বিষণ্ণ দিন গেছে৷ অবশ্য বিষণ্ণতা শুধু আমার জন্য, কারণ আমার নতুন বই এখনো আসেনি৷ প্রকাশক বলেছে নতুন বই আসতে আসতে পাঁচ তারিখ হয়ে যাবে৷ আমি আরেকটু তাড়াতাড়ি করার জন্য বলেছিলাম, বিদ্যাপ্রকাশের ম্যানেজার জানিয়েছিলো সে চেষ্টা করবে৷ আজ সকালে ম্যানেজারকে ফোন করলাম৷ সে জানালো কাল নাগাদ বই আসতে পারে৷ নতুন বই না আসলে মেলায় ভালো লাগে না, তাই মেলায় গেলাম অনেক গড়িমসি করে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ৷ গিয়ে দেখি বিদ্যাপ্রকাশের ডিসপ্লেতে "রূপালী রাত"৷ বুকের মধ্যে একটা ব্যাঙ লাফ দিয়ে পড়লো৷ এক ঝলক রক্তেরা নাচানাচি করে উঠলো বুকের ঠিক মধ্যিখানটায়৷ শুনলাম গুপি সেখানে বসে গান গাইছে- আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে! বই প্রকাশের আনন্দের এই অনুভূতির সঙ্গে আমি গতবারও পরিচিত হইনি৷ গতবার বই কবে আসবে সেটা আগে জেনে গিয়েছিলাম৷ এবার ধরেই নিয়েছিলাম, পাঁচ তারিখের আগে বই পাবো না৷ অপ্রত্যাশিতভাবে তিন তারিখেই বই পেয়ে বড় ভালো লাগলো৷ বিদ্যাপ্রকাশের ম্যানেজারকে ফোন করলাম- “কি ব্যাপার, সকালে বললেন বই আজকে আসবে না৷ এখন দেখি চলে এসেছে!” ম্যানেজার হেসে বলল, “সারপ্রাইজ দিলাম৷" সারপ্রাইজ নামক এই অতি আকাঙ্খিত বস্তুটার প্রত্যাশা জীবনে বহুবার করে এসেছি৷ পাওয়া হয়নি৷ আমি ধরেই নিয়েছিলাম, হয় পৃথিবীতে এই বস্তুটার দেখা পাওয়া যায় না, এর কথা শুধু শোনা যায়, অথবা আমি বেশী বেশী প্রত্যাশা করি, তাই পাই না৷ আজ হঠাৎ অপ্রত্যাশিতভাবে সেই বস্তুটার দেখা পেয়ে মনটা বড় ভালো হয়ে গেলো৷ দেখলাম, গতো দু'দিনের বিষণ্ণতাবোধ মুহূর্তে বিদায় নিয়েছে৷ গতো দু'দিন যেমন মেলায় ঢুকলেই আমার ঘুম পেয়েছে, সে ঘুম শূণ্যে ডানা মেলেছে৷ গুপি না, এবার আমিই গাইলাম, আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে! স্টলের ওরা বলল, “আরে এতো দেরী করে আসলেন কেনো? এতোক্ষণে অনেকগুলো বই বিক্রি করে ফেলেছি৷" আরে খাইছে! বলে কি? গতোবার তো প্রথম কয়দিন আমার বই দুই তিন কপির বেশী বিক্রি হয়নি৷ এবারে প্রথম দিনেই অনেক কপি? বললাম, “নাকি?” “হ্যাঁ৷ পনেরোটা গেছে৷" “এহ!” “আহা আপনি কি ভাবেন আমরা আপনার কাছে মিথ্যা বলি? এই দেখেন না, খাতায় লেখা আছে, দেখেন৷" আমি দেখলাম না৷ খাতায় যদি পনেরোটা না থাকে, তাহলে মন খারাপ হবে৷ তার চাইতে না দেখাই ভালো৷ ভুল জেনে আমার যদি একটু আনন্দ হয়, তো হোক না৷ আনন্দ জিনিসটার বড় দেমাগ, রূপবতী মেয়েদের মতো, সহজে তার দেখা পাওয়া যায় না৷ এভাবে যদি একটু তার দর্শন পাওয়া যায়, তো মন্দ কি? বইটা হাতে নিয়ে মন ভালো হয়ে গেলো৷ এবারের কভারটা ঝকঝকে হয়েছে৷ গতোবারে ম্যানেজারকে বলেছিলাম, বইয়ের কভার এমন হতে হবে যেনো বই হাতে নিলেই মন ভালো হয়ে যায়৷ তা সে বইগুলোর কভার তার ধারে কাছ দিয়েও যায়নি৷ বরং যতোবার ও দু'টো বই হাতে নিই, মনটা বিষণ্ণ হয়ে যায়! অথচ আমি আমার পরিচিতদের দিয়ে বইয়ের প্রচ্ছদ করিয়েছিলাম৷ দু'টা প্রচ্ছদই সুন্দর ছিলো, কিন্তু শেষ পর্যন্ত্য প্রিন্ট ভালো হয় নি৷ সে তুলনায় এবারের আউটপুট অনেক ভালো৷ যদিও সম্পূর্ণ আমার মনের মতো না৷ তবে পুরাপুরি আমার মনের মতো জিনিস বের করা যথেষ্ট কঠিন! রূপালী রাতের ছাপাও দেখলাম অনেক ভালো৷ ঝকঝকে প্রিন্ট৷ আগের বই দুইটার প্রিন্ট এতো ভালো ছিলো না৷ ম্যানেজার বলেছিলো, ফন্ট বেশী ছোট বলে প্রিন্ট ভালো হয়নি৷ আমি তার কথার সাথে একমত হতে পারিনি৷ কলকাতার আনন্দ পাবলিশার্সের খুদে খুদে লেখাও অনেক ঝক ঝকে৷ তবু ম্যানেজারের কথা মেনে নিয়ে এবারে ফন্ট বড় করে দিয়েছিলাম৷ আগেরবার ছিলো বিজয় সুতনী এম.জে. ১২ ফন্ট৷ এবার দিলাম সুতনী এম.জে. এর ইউনিকোড ভার্সন সুতনী ও.এম.জে. এর ১৩ পয়েন্ট ফন্ট৷ ফলাফল বেশ ভালো৷ এই ঝকঝকে বইটা দেখে বেশ ভালো লাগছে৷ বইটা হাতে নিয়ে বড় আনন্দ হচ্ছে৷ সত্যি, মাঝে মাঝে এক একটা দিন আসে, যা সম্পূর্ণ অন্যরকম। ---- ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বই সম্পর্কিত তথ্যঃ রূপালী রাত মাহবুবুর শাহরিয়ার প্রকাশকঃ বিদ্যাপ্রকাশ একুশে বইমেলা ২০১০ (কালকে রাতে এটা একবার দিছিলাম, আবার দিলাম৷ বিজ্ঞাপনে ন' দোষায়!!!)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।