আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পকেটে ঋণের টাকা

লিখি বেশ অনেক বছর আগে তখন শ্যাওড়াপাড়ায় থাকতাম। ডবলডেকার বাসে শ্যাওড়াপাড়া নেমে আমি টের পেয়েছিলাম আমার মানিব্যাগটা খোয়া গেছে। তেমন কিছুই ছিল না মানিব্যাগে। ১৫০ টাকা ও একটি এনভেলাপ। এনভেলাপে মাকে লেখা চিঠি ...আমি হঠাৎ করে চাকরিটা হারিয়েছি, আমি তোমাকে এ মাসে টাকা দিতে পারবো না..." চিঠিটি এক সপ্তাহ ধরে আমি পকেটে নিয়ে ঘুরছি।

পোস্ট করিনি। টাকা নেই জানলে তার মন খারাপ হবে এটা ভেবে আর পোস্ট করা হলো না। সপ্তাহ ঘুরলেও টাকা যোগাড় হলো না। ১৫০ এখন আর বড় অংক না। তখন ঢাকা শহরে মাথা গুঁজতে মেসের ভাড়া দিতে হতো আটশো, নাইট শিফটে ক্লাসের বেতন আর তেল নুনের খরচে ১৫০ টাকা এখনকার ১৫০০ টাকার চেয়ে বেশি! কিন্তু দুদিন বাদে মায়ের চিঠি পেয়ে চোখ কপালে..."বাবা, তোর পাঠানো ৫০০ টাকা পেয়েছি।

তুই নিজের যত্ন নিস" আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না কেমন করে এটা হলো। আমার মাথায় খেলছিল না কোন ভগবান এই টাকাটা মাকে দিয়েছেন। এক সপ্তাহ পর মায়ের কাছে দ্বিতীয় চিঠি পেলাম, "বাবা, তোকে মনে হয় কেউ চিঠি দিয়েছিল। খামে তোর নাম। কিন্তু ছোট করে লেখা হাতের লেখা চশমা ছাড়া ভাল দেখতে পাই না।

দেখতো জরুরী কোন চিঠি কিনা" আমি এনভেলাপের ভিতর আরেকটি এনভেলাম পেলাম। চিঠি খুললাম - "জনাব, আপনার মানিব্যাগে রাখা চিঠি পড়ে আমি জেনেছি আপনার মাকে দেবার টাকা নাই। আপনার মা কষ্ট পাবেন। আমার মনে হলো আমারও ত মা আছে। মানিব্যাগের ১০০ টাকার সাথে আমার ৪০০ টাকা যোগ করে সর্বমোট ৫০০ টাকা মাকে পাঠালাম।

দয়া করে জরুরী ভিত্তিতে চাকরী খোঁজ করুন। মায়ের যেন কষ্ট না হয়! ইতি আপনার পকেট মার" আমি এরপর অনেক বড় চাকরী পেয়েছি। বেতন পেয়ে মানিব্যাগে টাকা নিয়ে ডবলডেকারে ঘুরেছি যদি ফের পকেটমার এসে টাকাটা তুলে নেয়। আর তাতে আমার ঋণমুক্তি হয়! - একটা ইংরেজী নেটগল্প অবলম্বনে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।